নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে \"আমার কবিতা নামে\" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন

আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চেরাগ আলী ও তান্ত্রিক - ভৌতিক গল্প (৪র্থ ও শেষ পর্ব )

০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:১১



গভীর রাত্রিরে ঢাক, ঢোল, কাসা, বাজিয়ে পূজা শুরু হল । সে এক দেখবার মতো ব্যাপার ।
বাবা ঠাকুরের মূর্তির সামনে কাঠ কয়লা দিয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে । তান্ত্রিক কি সব মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে একটু পর পর এটা, ওটা ছুড়ে মারছে আগুনে আর তাতে দাউদাউ করে জ্বলে উঠছে আগুন । ঢোলের শব্দের সাথে তান্ত্রিকের উচ্চারিত মন্ত্র মিলে মিশে ভয়ার্ত এক আবহের সৃষ্টি করেছে । সে আবহ রাত্রির নির্জনতা ভেদ করে বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে । আমার শরীরের লোমকূপগুলো ফুলে গেছে । বারবার শরীরে কাটা দিয়ে উঠছে। হঠাৎ করেই শীত করতে লাগলো । আমি কাপড়টা ভাল করে জড়িয়ে নিয়ে নড়েচড়ে বসলাম। আকাশে তখন সার বেঁধে কালো মেঘের দল ভেসে যাচ্ছে । দূরে কোথাও মাঝে মাঝে দু'একটা শেয়াল ডেকে উঠছে । বুকের ভেতরের হৃদপিন্ডের কম্পন পরিস্কার শুনতে পাচ্ছি । ভয়ানক কিছু একটার আশঙ্কায় বারবার কেঁপে উঠছিল মন ।

গোছল দিয়ে শালীনি আমাকে মন্দিরের সামনে একটা বড় আসনে বসিয়ে দিয়েছে। সেখানে বসে এটা ওটা ভাবছি আর চারদিকে নজর বুলাচ্ছি । আগুনের লেলিহান শিখায় মূর্তিটিকে এখন আরও বেশি জীবন্ত ও ভয়ংকর লাগছে। চোখে মুখে ফুটে উঠেছে নিষ্ঠুর এক শয়তানি হাসি । মনে হচ্ছে, জগত সংসারকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করার জন্য সে উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছে। দিনের আলোয় দেখা চোখ দুটো এখন অনেক বেশি জীবন্ত । ঠিকরে বের হয়ে আসছে আগুনের ফুলকি। সে চোখে বেশিক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থাকা যায় না । আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম ।

আমার পেছন থেকে গোল হয়ে মন্দির ঘিরে তান্ত্রিকের চেলা চামুন্ডারা দাঁড়িয়ে আছে । বাজনার তালে তালে তারা মাথা নাড়ছে, আর একটু পরপর চিৎকার করে উঠছে । তান্ত্রিক মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে মন্ত-পুত বিভিন্ন দ্রব্য ছিটিয়ে দিচ্ছিলো আমার উপর । সে সব চোখে, মুখে এসে পরায় মুখের ত্বক জ্বালা করতে শুরু করেছে। ইচ্ছে করছিল ছুটে পালিয়ে যাই ।

ধীরে ধীরে পুরো ব্যাপাটা পরিষ্কার হয়ে গেছে আমার কাছে। এরা আসলে শয়তানের উপাসক । শয়তানকে তুষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পূজার আয়োজন করছে । নিজের ভুল,বোকামি বুঝতে পেরে আফসোস করতে লাগলাম। কেন যে তান্ত্রিকের পিছু পিছু এসেছিলাম তার জন্য এখন নিজেকে মারতে ইচ্ছে করছিল।

যখন এসব আকাশ পাতাল ভাবছি ঠিক সে সময় একটা ঘটনা ঘটলো। মন্দিরের ডান পাশ দিয়ে নদীর যে অংশটি দেখা যায় সেখানে কয়েক মুহূর্তের জন্য সেই মেয়েটিকে দেখতে পেলাম । প্রথমে মনে হলো চোখের ভুল । কিন্তু না , ভাল করে তাকাতেই দেখতে পেলাম ঝোপের আড়ালে প্রকাণ্ড এক কুকুরকে পাশে নিয়ে সত্যি সত্যি মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে ।

কুকুরের চোখ দুটো ও মূর্তির চোখের মতো জ্বল জ্বল করে জ্বলছে । আধ হাত লম্বা জিহ্বাটা মুখ থেকে বের হয়ে লকলক করছে । আমার সাথে চোখাচোখি হতেই মেয়েটি অসম্ভব সুন্দর করে হাসলো। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম । মনে মনে ভাবলাম, মানুষ এতো সুন্দর করে হাসে কি করে?

এমন সময় বেশ কয়েকজন লোক দল বেঁধে মন্দিরের দিকে এগিয়ে এলো । তাদের মধ্যে সাদা পাজামা, পাঞ্জাবী পড়া এক ভদ্রলোককে দেখলাম মধ্যবয়স্ক এক নারীর হাত ধরে তান্ত্রিকের সামনে এসে হাঁটু ঘেরে বসে পড়লেন। মহিলাটি কালো কাপড়ের একটি পুটলি বুকের সাথে জরিয়ে ধরে আছেন । লোকটা তান্ত্রিকের সামনে হাঁটু ঘেরে বসে করজোড়ে বললেন, বাবা উদ্ধার করুন, আর পারছি না । আর পারছি না। মহিলাটি তখন উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলো ।

উনি জমিদার হরিপদ রায় । প্রজাদের মেরে,কেটে নির্যাতন করে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন । কিন্তু নি:সন্তান। প্রতি বছর সন্তান হয় আর মরে যায় । এবারও ওনার স্ত্রী মৃত পুত্র সন্তান প্রসব করেছেন। সেই মরা ছেলেকে নিয়ে এসেছে বাবার কাছে । আজ রাতে মৃত সন্তানটিকে জীবিত করা হবে । সে জন্যই এই পূজার আয়োজন । আমার বা'পাশ থেকে ফিসফিস করে কথাগুলো বলল চিনু । কখন যে সে পাশে এসে বসেছে টের পাইনি । লোকটা তান্ত্রিকের হুকুমে এক মুহূর্তের জন্যও আমাকে চোখের আড়াল করছে না। যেখানেই যাই আঠার মতো লেগে আছে । আমি ওর দিকে তাকাতেই ও হেসে নমস্কার করার ভঙ্গি করল।

তান্ত্রিক চোখের ইশারায় জমিদার হরিপদ রায়কে আশ্বস্ত করে আরও জোরে জোরে মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে লাফ দিয়ে মন্দির থেকে নিচে নেমে এসে মহিলার কোল থেকে ছো মেরে পুটুলিটা কেড়ে নিতেই মহিলাটি দু হাত তুলে বিকট সুরে বিলাপ করে উঠলো। তান্ত্রিক তাতে ভ্রুক্ষেপ না করে মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে পুটলিটা মূর্তির পায়ের কাছে রেখে শিশুটির শরীর থেকে কাপড়টা সরিয়ে ফেলতেই নিথর দেহটা উম্মুক্ত হয়ে পড়ল। রক্তহীন,বিবর্ণ সে মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো কেউ যেন শিশুটির শরীর থেকে সব রক্ত বের করে নিয়েছে । শিশুটির জন্য আমার বুকের ভিতরটা ক্যামন করে উঠল।

তান্ত্রিক শিশুটার শরীরের উপর এটা ওটা ছিটিয়ে দিতে দিতে মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে মূর্তিটির উদ্দেশ্যে কি সব বলতে লাগল । হঠাৎ শালিনীকে দেখলাম কোথা দৌড়ে এসে একটা শিশি থেকে কিছু তরল শিশুটির শরীরে ঢেলে দু’হাতে মালিশ করতে লাগলো । আগুনের শিখায় মুহূর্তে শিশুটির শরীর চকচক করে উঠলো ।

তান্ত্রিক'কে এখন আর চেনা যাচ্ছে না । সে এখন আর আমার দেখা সেই তান্ত্রিক নেই। আমূল বদলে গেছে। সামান্য মুখের আদল ছাড়া আর কোন মিল নেই । পিঠের কুজটি ও গায়েব হয়ে গেছে । লোকটা সোজা হয়ে দাঁড়াচ্ছে,হাটছে লাফাচ্ছে। কুজের জায়গায় বের হয়ে এসেছে ধারালো একটা শিং। বয়স ও কমে গেছে । দেখে ত্রিশ, পঁয়ত্রিশ বছরের যুবক বলে মনে হচ্ছে। মন্দির ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা নর, নারীরা তান্ত্রিকের মন্ত্র উচ্চারণের সাথে সাথে চিৎকার করে উঠছে । আকাশ, বাতাস প্রকট হয়ে উঠছে তাদের সেই চিৎকারে ।

হঠাৎ তান্ত্রিক টান দিয়ে নিজের শরীর থেকে পোশাক খুলে আগুনে ছুড়ে ফেললো । সাথে সাথে তাতে আগুন লেগে দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো । চারিদিকে হুড়োহুড়ি চিৎকার শুরু হয়ে গেল । আগুনের শিখায় তান্ত্রিকের উলঙ্গ শরীরটাকে কুৎসিত ও কদাকার দেখাচ্ছিল । হঠাৎ খেয়াল করলাম তার পুরুষাঙ্গ নেই । সে আসলে একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ । তান্ত্রিকের দেখাদেখি একে একে উপস্থিত সকলে পোশাক খুলে ফেলে উলঙ্গ হয়ে নাচতে শুরু করেছে। সে এক বীভৎস দৃশ্য । ভেতরটা গুলিয়ে উঠলো । মনে হলো বমি করতে পারলে ভাল লাগতো ।

এরপর তান্ত্রিক জমিদার হরিপদ রায়কে টানতে টানতে মূর্তির কাছে নিয়ে গিয়ে তার হাতে একটা দিয়ে ছুরি বলল, নে উৎসর্গ কর , বাবাকে রক্ত দে, তবেই বাবা তোকে শান্তি দিবে । জীবিত হবে তোর সন্তান, দে দে … দেরি করিস নে….রক্ত দে ......দে .....।।দে

জমিদার হরিপদ বাবু এক মুহূর্ত ইতস্তত করে কাঁপা কাঁপা হাতে তান্ত্রিকের হাত থেকে ছুরিটা নিয়ে নিজের ডান হাতের বৃদ্ধ আঙুলটা কেটে ফেলে তীব্র ব্যথায় আর্তনাদ করে উঠলেন । কিন্তু তার সে আর্তনাদ চারিদিকে বাজতে থাকে ঢোল, চাকি,হই-হুল্লর আর নগ্ন উল্লাসে রাত্রির স্তব্ধতা ভেঙে কারো কানে পৌঁছল না ।

তান্ত্রিক জমিদার হরিপদ বাবুর কাটা হাতটা মূর্তিটির মুখের উপর ধরতেই তীরের বেগে রক্ত ছুটে গিয়ে পরতে লাগলো মূর্তিটির উপর । ঠিক তখনি মূর্তিটি যেন একটু একটু করে নড়ে উঠলো । ভাবলাম দেখার ভুল , কিন্তু না, এরপরেই দেখলাম, মুতিটি হাসি হাসি মুখে সে রক্ত পান করছে । আহ! কি ভয়ংকর সে দৃশ্য ।

তান্ত্রিক মৃত শিশুটির শরীর তুলে নিয়ে মূর্তি'র সামনে বাড়িয়ে রাখা হাতটির উপর রেখে দিতেই অবাক বিস্ময় নিয়ে দেখলাম, মূর্তিটি আবারো নড়ে উঠল। ভেবে পেলাম না কোন মন্ত্র বলে নিরেট পাথরের একটি মূর্তি নড়ে উঠতে পারে । বিস্ময়ের তখনো অনেক কিছু বাকি ছিল । আগুনের লেলিহান শিখায় স্পষ্ট দেখতে পেলাম, মূর্তিটি ধীরে ধীরে মাথাটা নাড়াচ্ছে। একবার ডানে, তারপর বামে। এরপর সোজা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বাঁকা একটা হাসি দিয়ে মাথা ঘুরিয়ে তাকালো মৃত শিশুটির দিকে । সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি ট্যাঁ ট্যাঁ শব্দ করে কেঁদে উঠল।

শিশুটি কেঁদে উঠতেই তান্ত্রীর মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে ছুটে গেল বলি দেবার জায়গায় । লোকজন উন্মাদ হয়ে উঠছে । রক্তের নেশায় আদিম উত্তেজনায় সকলে ঝাঁপিয়ে পরতে চাইছে । উলঙ্গ কালো ঘামক্ত শরীরগুলো যজ্ঞের অগ্নি শিখায় ভুতের শরীর বলে মনে হতে লাগলো ।

বলি দেবার স্থানে আগে থেকেই কালো কুচকুচে একটা ষাঁড় প্রস্তুত করে রাখা ছিলো তান্ত্রিক সেখানে গিয়ে পাশে দাড়িয়ে থাকা লোকটির হাত থেকে বড় রামদা টা তুলে নিয়েই সাই করে এক কোপে ষাঁড়ের মাথাটা শরীর থেকে আলাদা করে ফেললো। মুন্ডুবিহীন শরীরে ষাঁড়টি কয়েকবার ঝাঁকি দিয়ে থেমে গেল। তীরের বেগে রক্তের ধারা ছুটলো । বেদির নিচে রাখা একটা পাত্রে রক্ত জমা হচ্ছিলো। সেটা ভরে উঠতেই তান্ত্রিক পাত্রটি নিয়ে মূর্তি ও ছেলেটির উপর ঢেলে দিলো । তারপর পাত্রটি মুখের সামনে নিয়ে ঢকঢক করে রক্ত পান করতে লাগলো । সে এক ভয়াবহ দৃশ্য । আমার কাছে মনে হল এ এক ভয়ানক বিভীষিকা । আমি আর সহ্য করতে পারলাম না । দৌড়ে পালিয়ে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ালাম ।

চারিদিকে একদল পুরোপুরি উন্মাদ, নগ্ন, নরনারী ঢোলের তালে তালে অদম্য নৃত্য করছে । আমার দিকে তাদের খেয়াল নেই । চিনুকে বলি দেবার বেদির নীচে রক্তে গড়াগড়ি খাচ্ছে । তাকে দেখে চেনার উপায় নেই । একের পর এক পশু, পাখি বলি হতে লাগল । একটা বলির পরেই লোকজন চিৎকার করেতে করতে ছুটে যাছে রক্তের পাত্রটার দিকে ।

আমাকে উঠে দাঁড়াতে দেখে শালিনী এগিয়ে এলো । তার উলঙ্গ শরীর ঘামে ভিজে চকচক করছে । মুখটা বিকট আকৃতি ধারণ করেছে । আমার কাছে এসে একটানে আমার শরীর থেকে চাদরটি টেনে নিতেই আমি উলঙ্গ হয়ে গেলাম । কিছু বুঝে উঠার আগেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে উঠিয়ে নিয়ে গেল তান্ত্রিকের কাছে । তার শরীরে এখন অসুরের শক্তি । সর্ব শক্তি দিয়েও চেষ্টা করে ও নিজেকে ছাড়াতে পারলাম না। মূর্তিটির সামনে তখনো নত মস্তকে হাত জোড় করে বসে আছেন জমিদার হরিপদ রায় ও তার স্ত্রী । জীবন্ত শিশুটি তখনো চিৎকার করে যাচ্ছে । কিন্তু সেদিকে জমিদার বা তার স্ত্রী ফিরেও তাকাচ্ছে না ।

তান্ত্রিকের কাছে পৌঁছেতেই সে আমার মুখে রক্তের পাত্রটা ঢেলে দিতেই তপ্ত রক্তের ধারা নেমে গেল আমার আর শালিনীর শরীর বেয়ে । আচমকা রক্ত ছুড়ে মারায় কিছুটা রক্ত আমার মুখের ভেতরে ঢুকে গেল । আমি সড়ে যেতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না । শালিনী তখনও আমায় পেছন থেকে নিজের শরীরের সাথে চেপে ধরে আছে। সর্ব শক্তি এক করে খুব জোড়ে একটা ধাক্কা দিতেই শালিনী আমাকে নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলো জমিদার স্ত্রীর পায়ের কাছে । এক মুহূর্তে জন্য তার মুখটি দেখে আমার নিজের মায়ের কথা মনে হলো । মনে হল এ যেন জমিদার পত্নী নন এ যেনো আমারই গর্ভধারিণী মা ।

আমি পরে যেতেই চিনু পেছন থেকে ছুটে এসে টান দিয়ে আমাকে দাঁড় করিয়ে দিলো । আমি দাড়াতেই শালিনী ছুটে এসে জিহ্বা দিয়ে আমার শরীর চাটতে উদ্যত হতেই আমি তাকে প্রচন্ড একটা ধাক্কা দিয়ে সড়ে গেলাম। ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ আমার দু’হাত মোচড় দিয়ে টেনে ধরল । তীব্র ব্যথায় চিৎকার করে উঠলাম । মুহূর্তে দলে দলে লোক এসে আমার শরীরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো । প্রচণ্ড ব্যথায় চোখে পানি চলে এলো । এক চুল নড়ার শক্তি রইলো। একদল লোক ঝাপিয়ে পরলো আমার উপর । তৃষ্নাত কুকুরের মতো চেটে চেটে খেতে লাগলো আমার শরীরে লেগে থাকা রক্ত। উঠে দাড়াবার শত চেষ্টা করেও পারলাম না ।

এক সময় আমার শরীরটা টেনে নিয়ে যাওয়া হল মূর্তির পায়ের কাছে । ক্লান্ত শ্লান্ত দেহে সেখানে মরার মতো পরে রইলাম । প্রচণ্ড ঘৃণা নিয়ে তাকিয়ে রইলাম মূর্তিটির দিকে । ওদিকে একের পর এক বলি হচ্ছে । তান্ত্রিক সেই বলি করা পশুর রক্ত মূর্তির উপর ঢেলে দিতেই তা মূর্তির শরীর গড়িয়ে আমাকে ভিজিয়ে নেমে যাচ্ছি মাটিতে । উন্মাদের দল সেই রক্ত লুটোপুটি খেয়ে রক্ত স্নান করছে। কতক্ষণ যে এসব চলল তা বলতে পারবো না । হঠাৎ আমার ঘুম পেতে লাগলো । আমি ঘুমিয়ে গেলাম ।

ঘুম ভেঙ্গে দেখি কোমর ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছি ।
মাথা নাড়াতে পারছি না । গলা কিসের সাথে আটকে আছে । পর মুহূর্তেই বুঝতে পারলাম, বলি দেবার জন্য আমাকে বলির বেদিতে আটকে রাখা হয়েছে । ভয়ানক চমকে উঠে দু হাত দিয়ে নিজেকে মুক্ত করতে চাইলাম । কিন্তু এক চুলও নড়াতে পারলাম না । গলার সাথে আটকে থাকা কাঠ দু'টো আরো শক্ত করে আমায় খামছে ধরলো।

নিজের মৃত্যুর শেষ দৃশ্যটা যেনো নিজে চোখে দেখতে পেলাম । মনে মনে স্রষ্টাকে স্মরণ করতে লাগলাম । ফিসফিস করে বললাম, হায়! ঈশ্বর এ আমি কাদের পাল্লায় পড়লাম। আর বুঝি বাড়িতে ফিরে যেতে পারবো না। বারবার মনে হচ্ছিলো বাচার আর কোন উপায় নেই । নিশ্চিত মৃত্যু অপেক্ষা করছে আমার জন্যে। যে কোন মুহূর্তে তান্ত্রিক এসে এক কোপে মাথাটা শরীর থেকে আলাদা করে ফলবে।

চিৎকার করে উঠতে চাইলাম। কিন্তু মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হল না । জগত, সংসার অন্ধকার হয়ে আসতে লাগল । মায়ের মুখটা ভেসে উঠলো বারবার । মনে হলো, মা’কে বুঝি আর কোনদিন দেখতে পাবো না । ছোট বোনের কথা মনে হল । বড় ভাইয়ের কথা মনে হল। বন্ধুদের কথা মনে হল । মনে হলো, কাল বড় দি’র বিয়ে । আমি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছি শুনে , দিদি নিশ্চয় খুব কান্নাকাটি করবে । কত শত কথা মনে পরতে লাগলো।

মানুষের মৃত্যুর সময় বুঝি এমই হয় । সকলের কথা মনে পরতে থাকে । পরমূর্হুতেই ভাবলাম, এমন ই কপাল আমার । মরার পর বাড়ির লোকজন জানতে ও পারবে আমার মৃত্যুর সংবাদ । দু'চোখ দিয়ে অঝর ধারায় পানি গড়িয়ে নামতে লাগলো ।

হায় খোদা! হায় খোদা । এ আমি কি করলাম। শালিনী কেন বলেছিল পালিয়ে যা । কেন বলেছিল, এখানে কেন মরতে এসেছিস? সেসব কথার অর্থ এখন বুঝতে পারছি । ইস! তখন যদি পালিয়ে যেতাম তাহলে এখন আর বলি হতে হতো না।

তান্ত্রিক মূলত আমাকে বলি দেবার জন্য এখানে নিয়ে এসেছে । ধোঁকা দিয়েছে সে আমাকে । আমাকে আনার জন্যই তান্ত্রিক হাটে গিয়েছিল। যাদু,মন্ত্র শেখাবার জাল বিছিয়ে কৌশলে আমাকে নিয়ে আসা হয়েছে শয়তানের উদ্দেশ্যে বলি দেবার জন্যে। এখন সব বুঝতে পারছি । প্রচণ্ড রাগে, ঘেন্নায় চিৎকার করে উঠলাম ,ছাড় ছাড় আমাকে । কিন্তু শত সহস্র নগ্ন মানুষের উল্লাস ভেদ করে আমার সেই ক্ষীণ চিৎকার কারো কানে পৌঁছল না ।

পরিশেষ

দীর্ঘ সময় এক অবস্থায় দাড়িয়ে থাকার কারণে হাত,পা অবশ হয়ে আসছে । অনেক চেষ্টা করেও শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো নড়াতে পারছি না । বিকার গ্রস্তের মতো ভাবছি, এই বুঝি রাত্রির অন্ধকারের মতো ঝুপ করে মৃত্যু নেমে আসবে । মানুষ আসলে সব পরিস্থিতিতেই মানিয়ে নিতে পারে । আমিও বাঁচার আর কোন উপায় নেই বুঝতে পেরে ধীরে ধীরে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে লাগলাম । চিন্তা করতে লাগলাম , কি করলে,কোন অবস্থায় থাকলে মৃত্যু যন্ত্রণা কম হবে।

বলির বেদি’র চৌকাঠে গলা আটকে থাকায় মাথা প্রচণ্ড ব্যথা করছে । মস্তিষ্কের ভেতরে চিনচিন করে যন্ত্রণা হচ্ছে। চারপাশের প্রচণ্ড হইহুল্লর, চিৎকার চেঁচামেচির কারণে কানের ভেতর শো শো শব্দ হচ্ছে। ঠিক মতো কিছু শুনতে পারছি না। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে । মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো ।

হঠাৎ চারিদিক বড্ড বেশি নিস্তব্ধ হয়ে গেলো ।

তান্ত্রিকের গুনগুন করে উচ্চারিত মন্ত্র ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। অজানা ভয়ে ভেতরটা কেঁপে উঠলো । তবে শেষ মূর্হুত হাজির হয়েছে । এক্ষুন্নি কি তবে নেমে আসবে মৃত্যু ।

ঠিক সে সময়, ধুপস করে কিছু একটা পরার শব্দ হলো । এরপর কয়েক মুহূর্তের নীরবতা । তারপর ই ধুপ, ধাপ, ধুপ শব্দ করে কিছু একটা পেছন থেকে আমার দিকে ছুটে আসতে লাগল । আমার কাছে মনে হলো, তান্ত্রিক বুঝি রামদা'টা নিয়ে এগিয়ে আসছে । মৃত্যু অবধারিত জেনে, চোখ বন্ধ করে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে শেষ প্রার্থনা শুরু করলাম । কোন কিছু মনে এলো না শুধু বললাম, “হে প্রভু, সকল ভুলের জন্য ক্ষমা করে দাও”।

ধুপ ধুপ ধুপ করে শব্দটা পেছন থেকে আমার মুখের সামনে এসে দাঁড়াল । তান্ত্রিক তখনো মৃদু স্বরে একটানা মন্ত্র পাঠ করে চলেছে । কয়েক মূর্হূত কিছু ঘটলো না । কি হচ্ছে, দেখার জন্য চোখ খুলতেই দেখি, ঠিক আমার মুখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মূর্তিটা। আমাকে তাকাতে দেখে, নোংরা এক হাসি হেসে মূর্তিটা কিন্নর কন্ঠে বলল, কি রে ,আমাকে চিনেতে পেরেছিস? আমি ই শয়তান ।

তারপর হো হো করে হেসে উঠল । সে হাসির শব্দে রাত্রির নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেল।

ভয়ে আতঙ্কে শামুকের গুটিয়ে গেলাম। চোখ বন্ধ করেও বুঝতে পারলাম আগুনের গোলার মতো চোখ দিয়ে শয়তানটা আমাকে দেখছে । তার নাক, মুখ থেকে নির্গত হওয়া দুর্গন্ধযুক্ত গরম বাতাস এসে পড়ছে আমার মুখে পড়ছে ।

অকস্মাৎ মুতিটা হাত খানেক লম্বা জিহ্বা বের করে আমার শরীর লেহন করতে শুরু করলো। সাথে সাথে তীব্র যন্ত্রণায় পুরো শরীর মুচড়ে উঠল। মনে হতে লাগল কেউ বুঝি শরীরে আগুনের ছেঁকা দিচ্ছে । যন্ত্রণায় চিৎকার করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারলাম না । আমার অসহায়ত্ব টের পেয়ে শয়তান'টা আবারো বিকট শব্দে হেসে উঠল ।

ঠিক সে সময়, কর কর কর কর করত করে কোথাও বাজ পরার শব্দে চারিদিক প্রকম্পিত হয়ে উঠলো । সেই সাথে বিদ্যুতের ঝলকানিতে মনে হলো চারিদিকে আগুন লেগে গেছে । বিদ্যুতের ঝলকানি নিভে যেতেই নেমে এলো গুমোট কালো অন্ধকার । সে অন্ধকার ভেদ করে দৃষ্টি বেশি দূর অগ্রসর হতে পারে না ।

মূর্তিটির দিকে তাকাতেই দেখি সেটা বাজের শব্দে ও ভয় পেয়ে ছিটকে পিছিয়ে গিয়ে ভয়ার্ত চোখে এদিক, ওদিক তাকাচ্ছে । কয়েক সেকেন্ড পরেই শুরু হলো প্রচণ্ড বাতাস। সে বাতাসে আশেপাশের সব কিছু উড়ে যেতে লাগল। গাছগুলো পাগলের মতো নৃত্য করতে করতে মাটি থেকে উপরে যেতে চাইছে । বাতাসের তাণ্ডব উপেক্ষা করে তখনো তান্ত্রিকের মন্ত্র উচ্চারণ করে চলেছে ।

বেঁচে যাবার ক্ষীণ আশায় চারিদিকে চোখে বুলাতে বুলাতে হঠাৎ আমার চোখ গেলো পূর্ব দিকের ছাতিম গাছটার দিকে। অবাক হয়ে দেখলাম, ছাতির গাছের নিচে ঝোপ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে সেই মেয়েটি। চোখে মুখে তার ভয়ানক রাগ ফুটে উঠেছে ।

আগুনের গোলার মতো জ্বল জ্বল করে জ্বলছে তার চোখ দুটো। প্রচণ্ড বাতাসে উড়তে থাকা অবাধ্য চুলের দঙ্গলে মেয়েটিকে রুদ্র কালির মতো মনে হলো। অথচ শরীর তার আশ্চর্য রকমের স্থির । তীব্র দমকা হাওয়ায় এক চুলও নড়েছে না।

এক দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে আছে শয়তানের অবয়বের দিকে । বিদ্যুতের ঝলকানিতে চোখে পড়লো মেয়েটির শরীর ঘেঁষে দাড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির অসংখ্য কুকুর । তাদের শরীর কালো কুচকুচে পশমে শরীর আবৃত। মাথার উপর শিং এর মতো বড় বড় দুটো কান খাড়া হয়ে আছে। গরগরর শব্দ করতে করতে কুকুরগুলো যেনো ঝাপিয়ে পরার জন্য হুকুমের অপেক্ষায় আছে ।

আমি অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম মেয়েটির দিকে । তার সাথে চোখাচোখি হতেই দেখতে পেলাম, অসম্ভব সুন্দর এক আলো খেলে গেলো তার চোখে মুখে । আমি বাঁচার আকুন্ঠ আকুতি নিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে।

আমার মনে হলো, মেয়েটি যেনো চোখের ইশারায় আমাকে আশ্বস্ত করে, ফিসফিস করে বলল, ভয় নেই, ভয় নেই। আমি আছি ,আমি আছি তোমার সাথে ।

বুক চিড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এলো আমার।

বাতাসের গতি যতো বৃদ্ধি পাচ্ছে তান্ত্রিকের মন্ত্র পড়ার গতিও ততো বেড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ মনে হলো, অসংখ্য ভুত, প্রেত, দৈত্য, দানো আমার চারপাশে ছুটে বেড়াচ্ছে । মূর্তিটা ভয় পিছিয়ে গেলেও আবার সেটা এগিয়ে আসতে শুরু করছে।

অন্ধকারেও স্পষ্ট দেখতে পেলাম কুৎসিত, লাল টকটকে লম্বা জিহ্বাটা লকলকে করছে । চোখ দুটো এখন আরো বেশি ভয়ংকর । হামাগুড়ি সেটি আমার দিকে এগিয়ে আসছে । ভয়ে পিছিয়ে যেতে চেষ্টা করেও পারলাম না । তীব্র আতংকে মুচরে উঠলাম।

হঠাৎ কি মনে হতে, দূরে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলাম, তুমি যেই হও না কেন, রক্ষা করো আমাকে। বাঁচাও এই শয়তানের হাত থেকে । আমাকে বাঁচাও সাহায্য করো ............................

সাথে সাথে একটা ঘটনা ঘটল,মেয়েটি যেনো এতক্ষণ আমার কাছ থেকে এটাই শুনতে চাইছিলো । আমার কথা শেষ হতে না হতেই সে সামান্য হেসে তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কুকুরটির মাথায় আলতো করে ছুঁয়ে দিতেই সেটি তীব্র গতিতে ছুটে এসে ঝাঁপিয়ে পড়লো মূর্তিটির উপর।

অতর্কিত আক্রমণের জন্য মূর্তিটি মোটেও প্রস্তুত ছিল না । হুমড়ি খেয়ে পরে গেল। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা আক্রমণ করলো কুকুরটিকে । কিন্তু বিশেষ সুবিধা করতে পারলো না। ছুটে পালাতে চাইলো । কিন্তু পারলো না । কুকুরটার তখন রাগ চেপে গেছে প্রতিটি কামড়ের সাথে খুবলে খুবলে ছিঁড়ে আনছে মাংস ।

অবস্থা বেগতিক দেখে তান্ত্রিক মন্ত্র পড়া বাদ দিয়ে রাম দা হাতে ছুটে গেল কুকুরটাকে আঘাত করতে । কিন্তু কোথা থেকে একটি নয়, দুটি নয় শত শত কুকুর এসে ঝাঁপিয়ে পড়লো। মুর্হুতের মধ্যে তান্ত্রিকের দেহটাকে ছিড়ে ছিন্নভিন্ন করে ফেলল।

শয়তানটা কিন্তু এতো সহজে কাবু হলো না । কুকুরের আক্রমণ থেকে কোনরকম নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ছুটে পালিয়ে গেল অন্ধকারে। আশেপাশে তখন তাণ্ডব বয়ে চলেছে । তান্ত্রিক মরা যেতেই তার সাঙ্গপাঙ্গরা যে, যেদিকে পারলো ছুটে পালাতে লাগল । মানুষ আর কুকুরের শোরগোল মিলেয়ে যেতে না যেতেই প্রচণ্ড ঝড় শুরু হলো। হঠাৎ মেয়েটির দিকে চোখে যেতে দেখলাম, সে খুব শান্ত ভাবে আমার দিকে এগিয়ে এলো । তার চোখে মুখে খেলে যাচ্ছে সেই অনাবিল শান্তির হাসি।

কাছে এসে একটা হাত দিয়ে আমার মাথা স্পর্শ করতেই গলা থেকে কাঠের খিলানটা খুলে পরে গেলো । সঙ্গে সঙ্গে আমিও পরে গেলাম । পরে যাবার ঠিক আগ মুর্হুতে টের পেলাম মেয়েটি আমায় ধরে ফেলেছে ।

এ পর্যন্ত বলে, চেরাগ আলী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন । তারপর বললেন, রঞ্জিত পানির বোতলটা এগিয়ে দাও তো । রঞ্জিত দাদু কিছু বলার আগেই, ঝন্টু টেবিলের উপর থেকে ছো মেরে পানির বোতলটা নিয়ে চেরাগ আলীর দিকে এগিয়ে দিতে দিতে জিজ্ঞাসা করলো, তারপর, তারপর কি হলো?

চেরাগ আলী এক ঢোক পানি গলায় ঢেলে মুখ মুছতে মুছতে বললেন, কি আর হবে?

যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখি , বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে আর আমি বাবা, মায়ের ঘরে শুয়ে আছি । আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে পরিবারের অন্য সবাই ।

বাড়িতে ! আপনি বাড়িতে পৌছালেন কি করে? সুবল প্রশ্ন করল।
চেরাগ আলি বলল, কি করে যে পৌছেছিলাম, সেটা তো বলতে পারবোনা । তবে আমি নিজে ও যে যাইনি সেটা তো নিশ্চিত ।
তাহলে, কে নিয়ে গেলো? সুবলের ঘোর যেনো কাটছে না ।
ঝন্টু হেসে বলল, কে আবার, এখনো বুঝতে পারছিস না?
আমরা সবাই তাকালাম ঝন্টুর মুখের দিকে ………
ঝন্টু একটু মৃদু হেসে বলল, সেই অপরূপ রূপবতী ।
ঝন্টু একটু মৃদু হেসে বলল, চেরাগ দা'র সেই অপরূপ রূপবতী .........

শেষ …………

১ম পর্বের জন্য এখানে ক্লক করুণ

২য় পর্বের জন্য এখানে ক্লিক করুণ

৩য় পর্ব পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুণ

চেরাগ আলী সিরিজের পরবর্তী গল্প - "চেরাগ আলী ও অন্য ভুবন" সকলকে পড়ার আমন্ত্রন রইলো ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:২৪

ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: আগের ২ পর্ব সহ পড়েছি।
পর্ব বাড়ুক পরিধি ছোট হোক।

০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৩৬

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: শুভ কামনা রইলো । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ .......।

২| ০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: বলি দেওয়া একটা জঘন্য কাজ।
এখন মনে হয় কেউ বলি দেয় না।

০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৪০

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: অবশ্যই জঘন্য কাজ । কিন্তু তবু্ও পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে লাখ লাখ নারী,পুরুষ,শিশু বলির শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে ।

৩| ০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:৪০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আগেও বলেছি এতো বড় পোস্ট হলে আপনার পাঠক কমবে।
আমি নিজেও আপনার শেষ দুই পর্ব পড়ি নাই।

আগামীতে ছোট পোস্ট করার কথা মাথায় রাখতে পারেন।

০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৪১

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ । আসলেই বড় পোষ্ট পড়া বিরক্তিকর ।

৪| ০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:০৩

অপু তানভীর বলেছেন: অনেক দিন পরে ব্লগে চমৎকার একটা তান্ত্রিকের গল্প পড়লাম । তান্ত্রিক বলতে কেবল তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প গুলো আমি দারুন ভাবে উপভোগ করি । আপনার গল্পটাও উপভোগ করলাম। তবে আগের পর্বে যে মন্তব্য টা করেছিলাম । এই পর্বে বলতে হচ্ছে যে প্রেডিকশন মিলেছে খানিকটা । আশা করেছিলাম যে ঐ রমনীই রক্ষা করবে !
তবে আপনি পুরো দৃশ্যের যে চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন সেটা সত্যিই চমৎকার ।

আশা করবো চেরাগ আলীর আরও গল্প আসবে !

০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৪৪

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: বাহ! আপনার গঠনমূলক সুন্দর মন্তব্যে মনটা ভরে গেলো । আপনার একটি মন্তব্যেই গল্প লেখার কষ্টটা লাঘব হয়ে গেলো । ভাল থাকবেন , শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য ।

৫| ০৬ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৯

গেঁয়ো ভূত বলেছেন:


কুকুরের বাচ্চাকে রক্ষা করার জন্য কুকুর ওয়ালী সুন্দরী একটা বড় উপকার করবে ধারণা করেছিলাম। চিতল মাছটাকে নদীতে ছেড়ে দেয়া হলো ওটাও কোনো একটা উপকার করবে এমনটা ভেবেছিলাম। কিন্তু একটা জিনিস বোঝা গেলোনা এত বড় জজ্ঞ হল কিন্তু দু চার মাইল আশেপাশের কেও জেনে দলবেঁধে আসলো এটা কিভাবে সম্ভব হল ?

পরবর্তী লেখার অপেক্ষায়।

০৬ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৩

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভুত ভাই, সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। গল্পে যে শ্মশানের কথা বলা হয়েছে, সেটি লোকালয় থেকে বহুদূরে বিষখালি নদীর তীরে অবস্থিত। তার আশে পাশে কোন গ্রাম নেই। দ্বিতীয়ত, তান্ত্রিকদের গ্রুপগুলো এভাবেই হুট করে কোথাও উপস্থিত হয়ে জজ্ঞ টজ্ঞ করে ভ্যানিস হয়ে যায়।

সেক্স পিয়ার বলেছিলেন, শত সহস্র দর্শকের চেয়ে একজন মনোযোগী পাঠক সব দিক দিয়েই শ্রেষ্ঠ। যদি সে প্রশ্ন করে। গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.