নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

#মফিজ_মিঞার_কথা

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১২

#রম্য_রচনা
#পর্ব_২

সন্ধ্যায় খাটের উপর বসিয়া চা পান করিতে করিতে মফিজ মিঞা ১৪ নভেম্বরের ইত্তফাকের পাতায় চোখ বুলাইতেছে । (টেবিলের চেয়ে খাটের উপর বসিয়া পা ছড়াইয়া চা পান করিতেই মফিজ মিঞার অধিক পছন্দ – বেশ একটা আরাম আরাম ভাব রহিয়াছে ।) এই ডিজিটাল যুগেও খবরের কাগজ পড়িবার অভ্যাসটা ত্যাগ করিতে পারিল না । এই দুর্মূল্যের বাজারে এই ঘোড়া রোগটা ত্যাগ করিতে পারিলে কিছু অর্থের সাশ্রয় হইতো । কিন্তু কথায় বলে, “শখের তোলা আশি টাকা।“ আর শখটা হইতে প্রাপ্তি যে একেবারেই নাই, তাহা নয় । শেষের পাতার “অন্যরকম” বিষয়টি তাহাকে অন্য রকম আনন্দ দেয় – অফিসের গৎবাধা কাজের শেষে কিছুটা নির্মল আনন্দ । সেই আনন্দটুকু আরো বহুগুণ বাড়িয়া যায় যখন মাঝে মাঝে কাজের ফাঁকে গিন্নি চা নিয়া পাশে বসে । বহুকাল গত হইয়াছে তাই আগের মত গদ গদ ভাবটা এখন আর আসে না । তবে একটা ভালোলাগা কেমন করিয়া যেন তাঁহাকে ঘিরিয়া ধরে । সেই আবেশটুকু লইয়া মফিজ মিঞা গিন্নির সহিত কিঞ্চিত কথাবার্তাও চালাইয়া যাইতেছে পত্রিকা পাঠ ও চা পানের ফাঁকে ফাঁকে ।
বেশীর ভাগ কথা গিন্নিই বলিতেছে । মফিজ মিঞা ‘হু’ ‘হা’ করিয়া কথা চালাইয়া যাইতেছে । হঠাত কথার মাঝখানে মফিজ মিঞা হাসিয়া উঠিল । গিন্নি বিরক্ত সহকারে বলিল:
-হাসিতেছো কেন? পাগল হইলে নাকি?
-না, পাগল হই নাই । একটি সংবাদ পাঠ করিয়া হাসির উদ্রেক করিল ।
-কী এমন সংবাদ যে হাসির ফেয়ারা ছুটাইয়া দিলে?
মফিজ মিঞা একটু নড়িয়া চড়িয়া বসিল । তারপর বলিল,
-কখনো ডাকাত বা ছিনতাইকারীর কবলে পড়িয়াছো?
-না, পড়ি নাই । পড়িলে কী তুমি জানিতে না?
-তুমি সৌভাগ্যবতী, যাহারা পড়িয়াছে তাহারা জানে মারধোর, ভয় কী জিনিস?
-হু, তাহার সহিত তোমার হাসির সম্পর্ক কী?
বলিতেছি, তাহার আগে একটু ভূমিকা যোগ করি । মনে কর, তুমি একটি রেস্টুরেন্টে খাইতে গিয়াছো । এমন সময় সেখানে মুখোশ পড়া তিন ডাকাত প্রবেশ করিল, একজনের হাতে অস্ত্র । তোমার অবস্থা কী রূপ হইবে?
গিন্নি আঁতকিয়া উঠিল ।
-বল কী গো? আমি তো ভয়েই মরিয়া যাইবো ।
-কিন্তু মনে কর অস্ত্র হাতে ডাকাত যদি খুব স্বাভাবিক ভাবে, যেন কিছুই হয় নাই – এমন স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় পায়চারী করিতে থাকে, তখন কী তুমি ভয় পাইবে?
- না, সে ভয় না দেখাইলে আমি ভীত হইবো কেন? তবে ডাকাত বলিয়া কথা, একটু ভয় তো করিবেই ।
মফিজ মিঞা বিজ্ঞের মতো মাথা নাড়া,
-যথার্থ বলিয়াছো । কিন্তু মনে কর সে যদি রেস্টুরেন্টের মধ্য হইতে এক প্যাকেট মিষ্টি আনিয়া তোমাকে দেয়?
গিন্নি এবার মফিজ মিঞা উপর রাগিয়া যায়,
-তুমি কী আমার সাথে মস্করা করিতেছো?
মফিজ মিঞা জিহ্বায় একটা কামড় দিয়ে বলে,
-তওবা, তওবা । কী যে বলেন বেগম? ঘটনাটি এইরূপ ঘটিয়াছে । বলিয়া মফিজ মিঞা তাহা সংক্ষেপে বর্ণনা করে:
একটি রেস্টুরেন্টে তিন যুবক মাথায় হুডি আর মুখে মুখোশ পরিয়া নিজেদের চেহারা ঢাকিয়া ডাকাতির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে । তিন যুবক এমনভাবে রেস্টুরেন্টে ঢুকিয়া ডাকাতি করিতেছিল যেন ইহা একটি খুব সাধারণ একটি ঘটনা । তিন যুবকের একজন একটি অস্ত্র লইয়া চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল । অন্য এক যুবক ক্যাশ কাউন্টার হইতে সমস্ত কিছু লুট করিয়া লইতেছিল । আর তৃতীয় যুবক রেস্টুরেন্টের দুই কাস্টমারের স্মার্ট ফোন দুইটি হাতাইয়া নেয় । মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে তাহারা ডাকাতি সুসম্পন্ন করিয়া কাটিয়া পড়ে । শুধু তাহাই নয় । যাইবার আগে ডাকাতদের একজন দুই কাস্টমারকে রেস্টুরেন্টের ভিতর হইতে মিষ্টি আনিয়া মিষ্টিমুখ করায় – যেন কতকালের আত্মীয় ।
দীর্ঘক্ষণ কথা বলিয়া মফিজ মিঞা হাপাইয়া উঠে । চায়ের কাপে একটা চুমুক দিয়া গিন্নির দিকে তাকাইয়া মিটি হাসিতে থাকে ।
গিন্নি হাসিয়া বলে,
-বাহ্, বেশ তো । এমন ভদ্র ডাকাত আমাদের দেশে আছে?
মফিজ মিঞা একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলে,
-না গো গিন্নী আমরা কী আর সেই কপাল নিয়া জন্মাইছি । আমেরিকার টেক্সাসে এই অভিনব ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়াছে ।
গিন্নিরও মন খারাপ হইয়া যায় । তারপর নিজেই মফিজ মিঞা বলে,
-আচ্ছা, আমাদের দেশের যুবকরা তো আমেরিকা বলিতে পাগল । ওই দেশের কত কিছু তাহারা অনুসরণ করে । মিষ্টি বিলাইয়া যদি ডাকাতি,ছিনতাই করিতো – মানুষ কত খুশি হইতো, তাহাদের জন্য প্রাণ ভরিয়া দোয়া করিতো ।
মফিজ মিঞাও গিন্নির কথায় সায় দেয় । একটু উচ্ছসিত হইয়া যোগ করে,
-আমাদের দেশের কোন এনজিও যদি ডাকাত/ছিনতাইকারীদের বন্ধুবৎসল এই ডাকাতির বিষয়টা প্রচার করিতো, তাহাদের ট্টেনিং দিতো, শক্রতার বদলে মানুষ আর ডাকাতের মধ্যে একটা বন্ধুর সম্পর্ক গড়িয়া উঠিত ।
দুজনেই সেই অনাগত ভদ্র ডাকাতদের কথা চিন্তা করিতে করিতে টিভি খুলিয়া দেখে দুই ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত ।

মো: শামছুল ইসলাম

তাং: ১৭/১১/২০১৭ ইং



মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৫৭

ওমেরা বলেছেন: হি হি হি হি ———————

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।
হা..হা..হা..

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩৫

সুমন কর বলেছেন: আপনার লেখার ধরনে ভিন্নতা এবং লেখা পড়ে মজা পাইলাম।
+।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৩৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন দা ।

সব সময় একই ধরণের লেখা লেখতে লেখতে মনটা মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে উঠে । তাই একটু বৈচিত্রের সন্ধানে, একটু আনন্দের আস্বাদ পেতে একটু ভিন্নতর প্রচেষ্টা ।
প্রচেষ্টাটা আপনার ভালোলেগেছে দেখে উৎসাহ পেলাম ।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দুটো পর্বই পড়লাম। ভালো হয়েছে।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।
উৎসাহিত হলাম ।

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: রম্য রচনা ভাল লেগেছে। বিশেষ করে শেষের টুয়্যিস্ট টুকু।
লেখাটা দু'বার প্রকাশিত হয়েছে। সম্পাদনা করে পরেরটুকু বাদ দিতে পারেন।
গল্পে ভাল লাগা + +

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।
প্রথমে ঠিকই ছিল । গত বৃহস্পতিবার এডিট করার সময় ঝামেলাটা হয়েছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.