নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহারে যদি এমন হইত......

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:২২

দুটি পরস্পর বিচ্ছিন্ন কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশের সমসাময়িক ঘটনাবলীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ গল্প দিয়েই লেখা শুরু করলাম।

প্রথম গল্প-

আক্কাস আলী ও শিউলি বেগমের সুখের সংসার। ১৪ বছরের সংসার জীবনে তাঁদের দু সন্তান নিয়ে সুখেই কেটেছে। আক্কাস সাহেব ১২ বছর একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর পর দু বছর হল ব্যাবসা করছেন। ব্যাবসা ও ভালই চলছে। এই দু বছরেই তিনি দেশের সৎ ও বুদ্ধিমান ব্যাবসায়ী হিসেবে পরিচিতি কুড়িয়েছেন। এসব চিন্তা করলেই শিউলির মনটা গর্বে ভড়ে উঠে কারন ১৬ বছর আগে এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে দু বছর আক্কাসের সাথে প্রেম করার পর পরিবারের অনেকরই অমতে তাঁদের বিয়েটা হয়। তখন যারা বিরোধিতা করেছিলো আজ তারাই তার কাছে আক্কাসের প্রশংসা করে আর নিজের স্বামীর প্রশংসা শুনতে কার না ভাল লাগে?

আজ শিউলির বিবাহ বার্ষিকী আক্কাস কথা দিয়েছে প্রতিবারের মত এবার সারাদিন কাছে থাকতে না পারলেও বিকালে তারা একত্রে ঘুরতে বেরোবে কিন্তু বিকাল গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো আক্কাস কি তাহলে ভুলেই গেলো? কোন উপায় না পেয়ে শিউলি রাত ১০ টায় নিকটস্থ থানা পুলিশকে অবহিত করে। রাত ১১ টায় তার মোবাইল এ ফোন এল থানা থেকে ও সি সাহেব বললেন তাঁদের গাড়িটা কদমতলি বাজারের কাছে পার্ক করা পেয়েছে কিন্তু আক্কাস সাহেব ও ড্রাইভার দুজনেরি কোন খোজ নাই। রাত ১২ টায় এক অপরিচিত নম্বর হতে কল আসে এবং বলা হয় আক্কাস ও ড্রাইভার কে তারা অপহরন করেছে ২ কোটি টাকা হলে তারা ছেড়ে দিতে পারে। শিউলির সুখের সংসারে হঠাৎ বাজ পরল যেন। কি করবে শিউলি ভেবে উঠতে পারছে না। পরদিন তার এক আত্মীয় কে নিয়ে সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় এর কাছে গেলো তাঁকে সব বলার পর তিনি বললেন কিসের অপহরন আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশে এমন কোন ঘটনার নজির নাই। তার পরেও আপনি যখন বলেছেন আমার মনে হয় এটা বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র কারন তারা জানে আপনার স্বামী আমার বন্ধু ছিল। আমি সকল বাহিনীকে জানিয়ে দিচ্ছি আগামি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আক্কাস কে আমরা উদ্ধার করে ছাড়বই। শিউলি আকাশ থেকে পড়ল যেন মনে মনে সে আক্কাসের উপর একটু রাগ ই হল কারন আক্কাস তো তাঁকে কখনই বলেনি যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তার এত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কৌতূহল বশত শিউলি মন্ত্রী মহোদয়কে জিজ্ঞেস করেই বসলো যে আপনি ও আমার স্বামী যে এত ভাল বন্ধু তাতো আমার জানা ছিল না। মন্ত্রী মহোদয় হেসেই খুন কি বল শিউলি তুমি আমাকে চিনতেই পারলেনা? আমি সেই তোমাদের ক্লাসমেট কুদ্দুস। লজ্জাই পেল যেন শিউলি দ্রুত বলল তোমার চেহারা যে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে তাতে তোমাকে চিনার উপায় আছে বল? এ কথা বলেই সে তার স্বামীকে খুঁজার তাগিদ দিয়ে দ্রুত বেড়ীয়ে পড়ল কুদ্দুসের অফিস থেকে।



বাসাতে ফিরে এসে তার কিছুই ভাল লাগতেছিল না কেন যেন মনে হচ্ছিল এতে কোন কাজ ই হবে না। আনমনে সে টেলিভিশনে সংবাদ দেখতেছিল যে কোন নতুন সংবাদ পাওয়া যায় কিনা। হঠাৎ তার চোখ ছিয়াশি চ্যানেলে এসে আটকে গেলো কুদ্দুস সংবাদ সম্মেলন করে তার স্বামীর অপহরনের জন্য বিরোধী দল কে দায়ী করে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিতেছে। তার বক্তব্যের সারমর্ম মোটামুটি এমন যে, বিরোধী দল দেশের অবস্থা অস্থিতিশীল করতে গুম খুন শুরু করেছে। আক্কাস কে অপহরন করে তারা এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছে আর তা হল প্রথমত আক্কাস সাহেব একজন স্বনামধন্য ব্যাবসায়ী তাঁকে অপহরণ করলে ব্যাবসায়ী সমিতি ক্ষুদ্ধ হবে এবং তার উদ্ধারের জন্য তারা ধর্মঘট ডাকলে সরকার বেকায়দাতে পরবে। দ্বিতীয়ত, আক্কাস সাহেব মন্ত্রী মহোদয় এর অনেক পুরনো বন্ধু তাঁকে অপহরণ করে বিরোধী দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর গৃহীত দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের যে রোড ম্যাপ তা হতে মন্ত্রী মহোদয় কে বিচ্যুত করতে চায়। সবশেষে তিনি ব্যাবসায়ী সমিতিকে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বলেন এবং এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আক্কাস সাহেবকে উদ্ধারের আশ্বাস দিয়ে সংবাদ সম্মেলন সমাপ্ত করেন। শিউলির মনটা আবারও গর্বে ভরে উঠে এই ভেবে যে কুদ্দুস এত বড় মানুষ মানুষ হয়েও তাদের ভুলে নি। সে চিন্তা করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ফেলে আশা দিনগুলোর কথা। কুদ্দুস, শিউলি ও আক্কাস একই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল ২০ বছর পূর্বে। প্রথম দিন হতেই তাদের মধ্যে ভাল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের এ বন্ধুত্বের তালিকাতে আরও ছিল রহিমা ও সাজু। এদের মধ্যে কুদ্দুস ও আক্কাস দুজনেই একই কলেজ হতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। কুদ্দুস প্রথম থেকেই রাজনীতি করার ইচ্ছা পোষণ করত তাই ও তেমন একটা ক্লাসে আসত না। কিন্তু বিকেলের আড্ডাতে ঠিকই সবাই একত্রিত হত। দেখতে দেখতে প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন ধার্য হল। সবাই ফরম ফিলাপ করলেও কুদ্দুস করবেনা বলে ঘোষণা দিল তার বক্তব্য ছিল হলের পলিটিকাল বড় ভাইয়েরা বলেছে দু একটা ইয়ার ছাড় না দিলে বড় নেতা হওয়া যায় না। তাই সে এবার পরিক্ষা দিচ্ছে না। শিউলিরা সবাই মিলে তাকে বুঝানোর পরেও সে তার সিদ্ধান্তে অটল রইল ও মধুর ক্যান্টিনের উদ্যেশে রওনা দিল। এতক্ষন আক্কাস চুপ থাকলেও কুদ্দুস যাওয়ার পর সে বলল, “কুদ্দুস সর্বদা তার চেয়ে অনেক মেধাবী ছেলে ওকে কেন যে এই রাজনীতির ভুতে পেল? ও নাকি এখন চাদাবাজি করে, নেশাও খায়। জিজ্ঞেস করলে বলে দল চালাতে কিছু চাদা নিতেই হয়।“ কথা শেষ করেই সে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এভাবেই দিন কেটে যেতে লাগল। শিউলিরা যখন তৃতীয়বর্ষে তখন কুদ্দুস প্রথম বর্ষ পরীক্ষা দিবে। একদিন শিউলি, সাজু, আক্কাস ও রহিমা একত্রে বসে কারজন হলের সামনে আড্ডা দিতেছিল এমন সময় হটাৎ করে কুদ্দুসের আগমন। নতুন বাইক কিনেছে সে এসেই শিউলি কে বলল চল তোমাকে ঘুড়িয়ে নিয়ে আসি। শিউলি বলল নাহ এখানে সবাই আড্ডা দিতেছি বস এখানেই কিছুক্ষন গল্প করা যাক। তুমি তো এখন বড় নেতা আমাদের আড্ডাতে আসনা বললেই চলে। তাতে কুদ্দুস রাজি হল এবং বলল এক শর্তে বসব আর তা হল তুমি তো জান এ বছর আমি পরীক্ষা দিব ছোটদের কাছে নোট চাইতে লজ্জা লাগে তুমি যদি আমাকে কিছু নোট যোগাড় করে দাও তবে আমি বশতে পারি। একথা শুনে সবাই হেসে উঠল। শিউলি বলল এই শর্তে তাইলে নিশ্চিত থাকো কালই তুমি নোট পেয়ে যাবে। কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর কুদ্দুস আবারো শিউলিকে নিয়ে বাইকে বেড়ানোর প্রস্তাব দিল। তাতে সাজু বলে উঠলো কেনরে আমার আর রহিমার মত কোন স্পেশাল কথা আছে নাকি? কুদ্দুস হেসে বলল স্পেশাল কথা আর স্পেসালি বলতে দিলি কই ঠিক আছে এখানেই বলে ফেলি, আর তা হল আমি শিউলিকে ভালবাসি। একথা শুনে শিউলি কি বলবে বুঝে উঠতে পারতেছিল না। কেমন যেন একটা অদ্ভুত নিরবতা চলে এল আড্ডাতে। নিরবতা ভেঙ্গে আক্কাস বলে উঠলো আমি উঠিরে আমার টিউশনি আছে। সাথে সাথে সকলেই উঠলো। কুদ্দুস কিছু না বলে চলে গেলো। আক্কাস শিউলি কে বলল আমি তোমার সাথেই যাব কারন আমার টিউশনি টা নীলক্ষেতের দিকেই। যেতে যেতে কিছু কথা বলে পরিস্থিতি হালকা করে আক্কাসও কুদ্দুসের কথার পুনরাবৃত্তি করল এবং বলল সে অনেকবার বলতে চেয়েছে কিন্তু পারেনি। আজ সে বলতে বাধ্য হল কারন সে চায় না কুদ্দুসের মত একটা ছেলের সাথে শিউলি জড়িয়ে যাক।



শিউলি খুব দুশ্চিন্তা করতে লাগল এখন সে কি করবে? কুদ্দুস একটা ছাত্র রাজনৈতিক দলের নেতা এবং চিহ্নিত ক্যাডার। তাকে না বলে দিলে সে কি যে করে বসে আল্লাহ্‌ ই জানে। এমনি চিন্তার মাঝে ব্যাঘাত পরে তার রুমমেট নিশির ডাকে। নিশি তাকে বলল কি এমন চিন্তা করিস এত বার ডাকলাম শুনলই না? জবাবে শিউলি তাকে আজকের ঘটনা বিস্তারিত বলল। শুনে নিশি বলল তোর আক্কাস কেই বেছে নেওয়া উচিৎ কারন ক্যাডারদের কি ভরসা আজকে আছে কাল নাই। শিউলি কিন্তু এত সহজ সমাধান দেখছে না কারন আক্কাস কে হ্যাঁ বললে কুদ্দুস আক্কাসের যদি কোন ক্ষতি করে বসে। একথা মনে হতেই সে নিজের অজান্তে আঁতকে উঠলো এবং তখনি সে বুঝতে পারল সে আক্কাস কে সত্যিই ভালবাসে। তিন দিন পর সে কুদ্দুস কে না বলেছিল তারও কিছুদিন পর আক্কাসের সাথে জীবন বাকীটা পথ পাড়ি দেবার সিধান্ত টা আক্কাস কে জানিয়েছিল। এর দু বছর পর তারা বিয়ে করল। কিছু দিন পরেই সাজুর বিসিএস এ সহকারি কমিশনার পদে চাকুরি হল। রহিমাও সরকারি একটা কলেজে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেল। ওরা দুজন ও বিয়ে করল পরের বছরেই। আজ কেন যেন খুব করে রহিমার সাথে দেখা করতে ইচ্ছা করছে। শিউলি জানেনা ওরা কোথায় আছে। আক্কাসের কাছে শুনেছিল সাজুর শততার জন্য অনেকের সমস্যা হয় বলে আরও ২ বছর পূর্বে ওকে ও এস ডি করে রাখা হয়েছে। এর পর আর কিছু জানা নাই।



মোবাইল ফোনের শব্দে শিউলির ভাবনাতে ব্যাঘাত ঘটে, অপরিচিত নম্বর হতে ফোন এসেছে। শিউলি ভয়ে ভয়ে রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে এক ভরাট কণ্ঠের আওয়াজ, কেমন আছো শিউলি? শিউলি কিছুক্ষণ ভেবে চিনতে না পেরে বলল কে আমি তো আপনাকে চিনি না। লোকটা বলল আমি সাজু, মন্ত্রী মহোদয় আমাকে তোমার নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছেন। তিনি তোমাকে নিশ্চিন্ত থাকতে বলেছেন এবং সকল বাহিনিকে যেকোন মূল্যে আক্কাসকে উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি ই ব্যাপারটা দেখতেছি। শিউলি সাজুর কথাতে কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে সাজু কে জিজ্ঞেস করল তুমি এখন কোথায় আছো? সাজু বলল আমি তো ও এস ডি ছিলাম প্রমোশন ও পাচ্ছিলাম না তাই একদিন কুদ্দুসের সাথে দেখা করতে যাই তখন ও বলে নেক্সট টাইম ও নির্বাচন করবে এবং অর দল ক্ষমতাতে আসতে পারলে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হবে এটা নিশ্চিত তখন ও আমাকে ওর মন্ত্রণালয় এ সচিব করে নিবে। ও ওর কথা রেখেছে। আর রহিমাকে ইডেন কলেজে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কুদ্দুস ই বদলি করিয়ে দিল। এখন ভালই আছি আমরা। শিউলি বলল খুবী ভাল হইছে তাইলে আচ্ছা সাজু দেখ ভাই কি করা যায় আক্কাস কে যত দ্রুত পার উদ্ধার কর। ওপাশ হতে আক্কাস কে উদ্ধারের আশ্বাস দিয়ে ফোন রাখে সাজু।



শিউলি আনমনে আবার ভাবতে থাকে আহারে আজ কুদ্দুসের কত ক্ষমতা, কত প্রভাব, কত সম্মান। সে যদি ঐদিন কুদ্দুস কে ফিরাইয়া না দিত তবে আজ সে কতজনেরি না উপকার করতে পারত। কতই না সম্মান থাকত তার। হঠাৎ ছেলের ডাকে সম্বিৎ ফিরে পেয়ে সে নিজেকে তিরস্কার করতে লাগল, কি সব আবল তাবল ভাবছে সে।



রাত দশটার দিকে শিউলির মোবাইলে আবার ফোন দিল সাজু, জানালো আক্কাস কে পাওয়া গেছে দ্রুত মতিঝিল থানাতে চলে আসতে। শিউলি ছেলে মেয়ে সহ থানাতে এসে আক্কাস কে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। স্বয়ং মন্ত্রী মহোদয় ও সাজুকে নিয়ে থানাতে হাজির। কুদ্দুস সাহেব সাজু, আক্কাস, শিউলি ও শিউলির ছেলেমেয়ে কে নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সেরেই তার দপ্তরের উদ্যেসে রওনা হলেন। সেখানে তিনি সংবাদ সম্মেলন এর ব্যাবস্থা আগেই করে রেখেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা দিলেন বিরোধী দলের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরাই আক্কাস কে অপহরণ করেছিল গুম করার উদ্যেশে কিন্তু তার নির্দেশনাতে চৌকস র‍্যাব সন্ত্রাসি মুরগি মিলন ও অপহরণ জামাল কে ক্রস ফায়ারে হত্যা করে তাঁর বন্ধু স্বনামধন্য ব্যবসায়ী আক্কাস সাহেব কে উদ্ধার করেছেন। উপস্থিত একজন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করল মুরগি মিলন ও অপহরণ জামাল ক্রস ফায়ারে মারা গেলো আপনার বন্ধু কিভাবে অক্ষত রইলেন? এতে মন্ত্রী মহোদয় যার পর নাই বিরক্ত হইয়া উত্তর দিলেন এটা আমাদের অপারেশন এর সিক্রেট এটাতো বলা যাবে না বলেই একপ্রস্থ হাসি দিয়া সম্মেলনের ইতি টানলেন। অতঃপর তিনি সাজুকে বললেন সকলে তাঁর রুমে যাচ্ছেন সাজু যেন চাপানি নিয়ে বেয়ারা কে পাঠিয়ে দেয় এবং চাইলে সেও আসতে পারে। মন্ত্রী মহোদয়ের রুমে বসে আক্কাস সাহেব তাঁর পরিবার ও সাজুকে নিয়ে বহুদিন পরে সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আড্ডার মত করে আধা ঘণ্টা প্রাণবন্ত আড্ডা দেবার ব্যার্থ চেষ্টা করলেন। কিন্তু তারা সবাই বুঝতে পারলেন কুদ্দুস এখন অনেক সন্মানিত ব্যাক্তি তাই তারা কেউই মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে বন্ধু কুদ্দুসের মত আচরন করতে পারলেন না। শিউলি কুদ্দুস সাহেব কে জিজ্ঞেস করেই বসল তুমি না ছাত্র জীবনে অন্য আরেকটা একটা দল করতে আর বর্তমান ক্ষমতাশীল দলেরই অনেক প্রাক্তন নেতাদের নামে বিভিন্ন অপরাধের জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিতে। বলতে তাদের চামড়া দিয়া ডুগডুগি বাজাবা বা তাদের পোষ্টার নিয়ে তাদের নেতাদের মুখে জুতা দিয়ে পিটাতে অথবা থুতু ছিটাতে, তাইলে আজ তুমি ই কেন আবার ওই দলের সরকারের মন্ত্রী? কুদ্দুস সাহেব হেসে বললেন এগুলো রাজনীতির খেলা তোমরা বুঝবে না বলেই কুদ্দুস সাহেবের মুডটা অফ হয়ে গেলো। আড্ডাতে রস না থাকাতে সাজুই বলে উঠল আজ রহিমার শরীর টা ভাল ছিল নাতো আমাকে একটু দ্রুত ফিরতে হবে। একথা শুনেই আক্কাস তার স্বভাব সুলভ দুষ্ট হাসি দিয়ে বলল এখনও দেখি তুই রহিমার সেবা ভালই করিস রে। একথা শুনে সবাই হাঁসতে হাঁসতে যে যার যার গন্তব্যে রওয়ানা হওয়ার মুহূর্তে মন্ত্রী মহোদয় সাজু কে আক্কাসদের বিদায় দিয়ে কিছু কথা শুনতে বললেন। আক্কাস ও শিউলি কে বিদায় দিয়ে সাজু মন্ত্রী মহোদয় এর রুম এ গেলে মন্ত্রী মহোদয় তাকে অল্প কিছু কাজের কথা বলে মন্ত্রী মহোদয়কে ভাল করে এক কাপ কফি দিতে বেয়ারাকে বলতে বলে তাকে চলে যেতে বললেন।



কফির কাপে চুমুক দিয়ে মন্ত্রী মহোদয় হাসলেন আর ভাবলেন আজ তিনি এক ঢিলে কতোগুলো পাখি শিকার করলেন। আক্কাস, শিউলি, সাজু ও রহিমাকেও দেখানো হইল সে কত ক্ষমতাধর আবার মুরগি মিলন ও অপহরণ জামাল ও বেশি বাড়াবাড়ি শুরু করেছিলো লাস্ট কেসটাতে ওরা একাই এক কোটি রেখেদিয়েছিল এবং মালটাও খুন করে ফেলেছিল। আজ ওদের না মারলে নিশ্চিত ধরা পরলে কেঁচো খুরতে সাপ বের হয়ে আসত। আজ সে তার বুদ্ধিমত্তাতে নিজেই অবাক হইল এবং সিগারেটে এক অসম্ভব শান্তির একটা টান দিল।



দ্বিতীয় গল্প-

বাবুল স্বনামধন্য এক দৈনিক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি একজন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। মাঝে ক্রাইম রিপোর্ট ও করেন। সাম্প্রতিক কালে তিনি এক প্রভাবশালী আবাসন ব্যাবসায়ীর নদী দখল ও মানুষের জমি জবর দখল নিয়ে একটি দুঃসাহসী রিপোর্ট করেছেন। এ রিপোর্ট করার পর থেকে তিনি প্রতিনিয়ত বাহবার সাথে সাথে ওই প্রতিষ্ঠানের লোকদের নিকট হতে হুমকি ধমকি খেয়ে আসতে ছিলেন। সর্বশেষ কালও তাকে একজন ফোন করে গুম করে দেয়ার হুমকি দিল। এগুলো বাবুলের কাছে পানিভাতের মত মনে হয় কারন এমন হুমকি সে জীবনে সে বহুবার খেয়েছে কিন্তু আজও বহাল তবিয়ৎ এ বেচে আছে। যদিও এখন এগুলো শুনলে তার হাসি আসে।

আজ শুক্রবার বাবুল জুমার নামাজ পরেই পত্রিকা অফিসের দিকে রওয়ানা হল। দ্রুত কিছু সংবাদ জমা দিয়ে বাসায় এসে জবার ও ছেলের সাথে একত্রে দুপুরের খাবার খাবে বলে বের হয়েছিল সে। পত্রিকা অফিসের কাছাকাছিই হঠাৎ একটা সাদা মাইক্রোবাস তাঁর ভেস্পার গতিরোধ করে দিল। কিছু বুঝে উঠার আগেই মাইক্রোবাস হতে ৪ জন লোক নেমে তাঁকে চ্যাংদোলা করে গারিতে উঠিয়ে নিয়েই তাঁর চোখ বেধে ফেলল। অতঃপর মাইক্রোবাসটি তাঁকে নিয়ে অজানার উদ্দ্যেসে রওয়ানা দিল। আনুমানিক ৪ ঘণ্টা পরে মাইক্রোবাসটি এক জায়গাতে থামল, লোকগুলো বাবুলকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি হতে নামিয়ে দিয়ে তাদের সাথে হাঁটতে বলল। কিছুক্ষণ পরে তারা বাবুলের চোখ খুলে একটা রুমের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। কিছুটা আতঙ্ক কাটানোর পর বাবুল লক্ষ্য করল ওখানে আরেকটা লোক ও আছে। তাঁর কাছে যেতেই সে আতংকিত কণ্ঠে বলল আপনাকেও ধরে নিয়ে আসলো! হ্যাঁ বলে বাবুল হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল আমি সাংবাদিক বাবুল। অপরিচিত লোকটি ও তাঁর হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল আমি আবুল আর আমি আপনার নাম অনেক শুনেছি। বাবুল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল কীভাবে? আবুল সাহেব হেসে বলল একজন নিতিবান সাংবাদিক তা ছাড়াও আমার স্ত্রী জাহান এর ক্লাসমেট আপনি তাই নাম শুনাটা মনে হয় স্বাভাবিক। বাবুল সাহেব কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে বললেন ওহ তাই বলেন কেমন আছে জাহান? আবুল সাহেব আবারও হেসে বললেন তাঁর স্বামী অপহৃত কেমন আর থাকবে বলেন। হ্যাঁ অন্য দিক চিন্তা করলে ভালই আছে একটা প্রতিষ্ঠিত এন জি ও এর কর্ণধার সে। দরজা তে তালা খুলার আওয়াজ শুনে তাঁরা তাঁদের আলোচনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। দুজন দীর্ঘদেহী লোক তাঁদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছে, খাবারের সিংহভাগ আইটেম আবুল সাহেবের সামনে দিয়ে বাবুল সাহেব কে একটা পাউরুটি ও একটা কলা দিয়ে খেতে বলল। যেতে যেতে নেতা গোচের লোকটা অন্যজনকে বলল আকাশী জামা পরা স্যারের দিকে বিশেষ যত্ন নিবি হের কোন শারীরিক সমস্যা হইলে আমরা একজন ও বাঁচতে পারুম না। শাগরেদ জিজ্ঞেস করল কেন? জবাবে লোকটা বলল হের বউ খুব প্রভাবশালি মহিলা মিডিয়া হ্যাঁগোর হাতে। তাদের কথোপকথন হতেই বাবুল সাহেব বুঝে নিলেন কেন আবুল সাহেবের এই ভি আই পি মর্যাদা। লোকগুলো যেতেই আবুল সাহেব বাবুল সাহেব কে ডেকে বললেন আসুন খেয়ে নেই সকাল হতে কিছু খাই নি আর চিন্তা করার কিছু নাই আমার স্ত্রী খুব প্রভাবশালী এরা আমাদের দু দিনও আটকে রাখতে পারবে না। বাবুল সাহেব আবুল সাহেবের কথাতে ভরসা পাচ্ছিলেন না কেন যেন তাঁর মনে হতে লাগলো এই কলা রুটিই তাঁর জীবনের সর্বশেষ খাদ্য। তাই তিনি বললেন আপনি খান আমার ক্ষুধা নাই। একথা বলে বাবুল সাহেব বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা চিন্তা করতেছিলেন, জাহানারা, সুমাইয়া, রাশেদ সহ অনেক সহপাঠী বন্ধুদের কথা মনে করতে লাগলেন। তাঁরা যখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তখন জাহানারা ওরফে জাহান তাঁকে প্রপোজ করে তখন এ কথা হেসে উড়িয়ে দিলেও ধীরে ধীরে জাহানারার পাগলামি বাড়তে থাকে। বিভাগের সকলের মুখে তাঁদের ঘটনাগুলো মুখরোচক গল্প হিসেবে ছড়িয়ে পড়ল। অবস্থা সহ্যের সীমা লঙ্ঘন করছে বলে বাবুল বাধ্য হয়েই জাহানারা কে একদিন বুঝানোর চেষ্টা করল যে সে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আর জাহানারা কোটিপতি বাবার একমাত্র সন্তান তাই এই আকাশ কুসুম কল্পনা কখনো বাস্তবে রূপদান সম্ভব না। জাহানারা কোন উত্তর না দিয়ে ড্রাইভার ডেকে গাড়ি নিয়ে চলে গেল। সেই দিনের পর আর সে বিশ্ববিদ্যালয় এ আসে নি। দু মাস পর খবর পেয়েছিল যে জাহানারা দেশের বাইরে পড়াশুনা করতে চলে গেছে। এর পর আর কখনো সে জাহানারার খোঁজ নেয়ার প্রয়োজন মনে করে নি। এসব চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে তা সে টেরও পেল না।



ঘুম হতে উঠে দেখতে পেল আবুল সাহেব তখনো বেঘোরে ঘুমাচ্ছেন। বাবুল সাহেব খুব ক্ষুধা অনুভব করলেন এবং তাঁকে দেয়া পাউরুটি ও কলা টুকুন খেয়ে মনে মনে আল্লাহ্কে ডাকতে থাকলেন। অনেকক্ষণ পর ঐ লোকগুলো আবারও এল এবং আবুল সাহেবকে উঠিয়ে তার হাত মুখ ধোবার কথা বলে তাঁকে নিয়ে গেল। নিয়ে যেতে যেতে লোকগুলো বলল সরকারের লোকের মাথা খারাপ আছে তানা হলে আপনারে উদ্ধারের জন্য এত তোর জোড় করে, ঐ ব্যাটার জন্য তো তেমন কোন সন্ধান ই চলতেছে না। যা অবস্থা দারাইছে আপনেরে তো বেশী দিন রাখা যাইব না আইজ বাড়িতে ফোন দিয়া ৫০ লাখ টাকা দিতে কইয়েন তাইলেই ছাইড়া দিমুনে। আবুল সাহেব কে নিয়ে যাবার অনেকক্ষণ পরেও তিনি আসলেন না দেখে বাবুল সাহেব ধারণা করলেন হয়ত ৫০ লাখ টাকা পেয়ে তাঁকে ওরা ছেড়ে দিয়েছে। এতে তার মন আরও খারাপ হল কারন তাঁর পরিবার তাঁকে মুক্ত করার জন্য বড়জোর ৫ লাখ টাকা যোগাড় করতে পারবে, কিন্তু যদি এ অপহরনকারীরা এরচেয়ে বেশী মুক্তিপন চায় তাহলে তো তাঁর আর মুক্তি মিলবে না। তাঁর ভাবনাতে ব্যাঘাত ঘটিয়ে লোক দুটির আবার আবির্ভাব ঘটল এবার তাঁদের হাতে একটি রিভলভার ও আছে। এসেই লোক গুলো বলল তোর শেষ ইচ্ছে কি বল? ঘটনার আকস্মিকতাতে বাবুল সাহেব বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। তাঁর বার বার স্ত্রী ও পুত্রের মুখগুলো দেখতে ইচ্ছা করতেছিল কিন্তু তিনি জানেন এ ইচ্ছা আর কখনোই পূরণ হবার নয়। তাই তিনি বললেন আমার দুটি ইচ্ছা আছে প্রথমত আমাকে কেন মরতে হচ্ছে দ্বিতীয়ত আমি দুই রাকাত নামাজ পড়ব। নেতা হেসে বলল হুনলি আব্বাস শালার বেটা কি কয় ঐ নাকি জানেই না অয় কেন মরব তইলে হুন, তোরা ফকিরনীরা ফকিরনীর মত থাকবি তোরা কেন রাজা-বাদশা গো কাম কাইজ নিয়া মাতামাতি করতে যাবি? এইবার বুইঝা ল। ঐ আব্বাইসা অজুর পানি দে নামাযের বিছানা দে শেষ নামাজ পইরা লউক। আব্বাস নামের লোকটার এনে দেয়া উজুর পানিতে উজু করতে করতে কেন যেন বাবুল এর একটা দীর্ঘশ্বাস বের হল এবং মনে হল আহারে ঐদিন যদি আমি জাহানারারে ফিরাইয়া না দিতাম তাহলে আবুল সাহেবের মত আজ আমাকেও এরা মুক্তি দিয়ে দিত। সাথে সাথে তাঁর মন ভালো হয়ে গেল এই ভেবে যে আবুল সাহেব তো তাঁকে চিনেছেন তিনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে মিডিয়াকে বলে দিয়েছেন বাবুল সাহেবের কথা। মরতে হবে জেনেও মরার পর এরা ছাড়া পাবে না এই ভেবে তিনি কেন যেন মনে কিছুটা প্রশান্তি পেলেন। অজু শেষ করেই নামাজে দাড়িয়ে গেলেন বাবুল সাহেব। নামজের শেষ ছালাম ফিরানোর সাথে সাথেই একটা গুলির আওয়াজ শুনলেন এবং গুলিটা তাঁর বুকের বাঁপাশটা ছিদ্র করে দিয়েছে।



এদিকে ছাড়া পেয়েই আবুল সাহেব থানাতে গেলে সেখানে তাঁর স্ত্রী সহ অনেকে আসলেন তাঁকে বাসায় নিয়ে যেতে। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতেছিলেন এমন সময় তাঁর স্ত্রী এসে বললেন উনি দুদিন ধরে অপহরণ কারীদের হাতে বন্ধী ছিলেন উনার রেস্ট দরকার। পরে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন। উপস্থিত একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন আপনার সাথে কি আর কাউকে অপহরণ করেছিল নাকি? আবুল সাহেব উত্তর দিতে যাবেন এমন সময় ই জাহানারা এসে তাঁকে থামিয়ে দিলেন এবং গাড়িতে করে তাঁরা চলে গেলেন নিজেদের বাসভবনে। রাতে ডিনার সারার পর জাহানারার সাথে বসে তাঁদের এই প্ল্যানের অর্জন সম্পর্কে আলোচনা করতে বসলেন। জাহানারা জানালো দারুন কাজ হয়েছে তাঁর এন জি ও এর নাম ও প্রচার হয়েছে আবার প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং আবুলকে জীবিত উদ্ধারের জন্য যে তোর জোড় চালালেন তাতে তাঁরা যা প্লান করেছেন তাঁর চেয়ে অনেক বেশী পেয়েছেন। হঠাৎ আবুল সাহেব জিব কেটে বললেন ও তোমাকে জিজ্ঞেস করাই হয় নি তোমার ক্লাসমেট বাবুলকেও কেন অপহরণ করিয়েছ? আবুল সাহেবের কথা শুনে জাহানারা অবাক হয়ে বলল নাহ ওদের সাথে তো আমি শুধু তোমার ব্যাপারে কন্ট্রাক্ট করেছিলাম বাবুলের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। আবুল সাহেব অবাক হয়ে বললেন তাহলে ওরা ওনাকেও কেন অপহরণ করল! আমাদের তো পুলিশ কে জানানো উচিৎ। একথা শুনে জাহানারা আঁতকে উঠল। বলল তোমার জ্ঞান বুদ্ধি কবে হবে বলতো, আমি এখন পুলিশকে বাবুলের কথা বলি আর কেঁচো খুড়তে সাপ বের হয়ে আসুক তাই না। আবুল সাহেব স্ত্রীর বুদ্ধিমত্তা দেখে যারপরনাই প্রীত ও চমৎকৃত না হয়ে পারলেন না।

পরদিন শীতলক্ষ্যাতে একটা লাশ ভাসতে দেখে লোকজন পুলিশ কে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বাবুল সাহেবের লাশ বলে শনাক্ত করে ও ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠিয়ে দেয়।



গল্পের আক্কাস সাহেব জীবিত ফিরলেও গত কয়েকবছর যাবত দেশের এমন কয়েক হাজার আক্কাস চলে গেছেন বাবুল সাহেবদের মত না ফেরার দেশে। তবু বাবুল সাহেবের স্ত্রী পুত্র কে ভাগ্যবান বলতে হবে কারন তাঁরা বাবুল সাহেবের লাশটা অন্তত পেয়েছেন কিন্তু এমনও অনেকে স্বজন আছেন যারা তাঁদের গুম হওয়া আত্মীয়দের লাশটাও শেষ কৃত্যার জন্য ফিরে পান নি।



মিলন, জামাল অথবা আব্বসেরা এই কুদ্দুস সাহেবদের মত সুবিধাবাদী অসৎ রাজনীতিবিদ গডফাদারদের কথাতেই এসকল অপহরণ, গুম বা খুন করে বলে বাংলার অপামর জনসাধারণের ধারণা। কিন্তু প্রয়োজন ফুঁড়িয়ে গেলে এই কুদ্দুস সাহেবারাই এদের ক্রস ফায়ারে দিয়ে জনগনের বাহবা কুঁড়াতেও কালক্ষেপণ করেন না।



আজ শিউলি বা বাবুল সাহেবদের মত বাংলার জনগণেরও দীর্ঘশ্বাস এই বলে যে, আহারে কবে যে এমন একটা বাংলাদেশ পাব যা হবে এই অপহরণ, গুম বা খুন এবং কুদ্দুস সাহেব টাইপের রাজনীতিবিদ বা জাহানারা টাইপের সুশীল সমাজ মুক্ত। বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে এমন এক বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার সরনিবন্ধ অনুরধ ব্যাক্ত করেই আজকের লেখার যবানীকা টানব।



পুনশ্চঃ এ লেখার সকল চরিত্র কাল্পনিক। কাকতালীয় ভাবে যদি কারো জিবনের/চরিত্রের সাথে মিলে যায় তবে লেখক দায়ী নয়।







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.