নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরবানি, ঈদুল আযহা এবং কাউফি, ছাগলফি, বরকিফি, ভেরাফি ইত্যাদি সমাচার

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:৫৭

আদি পিতা আদম (আঃ)-এর দুই পুত্র কাবীল ও হাবীলের দেওয়া কুরবানী থেকেই কুরবানীর ইতিহাসের গোড়াপত্তন হয়েছে। তারপর থেকে বিগত সকল উম্মতের উপর এটা জারী ছিল। আমাদের উপর যে কুরবানীর নিয়ম নির্ধারিত হয়েছে, তা মূলতঃ ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক শিশু পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-কে আল্লাহর রাহে কুরবানী দেওয়ার অনুসরণে ‘সুন্নাতে ইবরাহীমী’ হিসাবে চালু হয়েছে।

ঈদুল আযহার মূল আহবান হ’ল সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য প্রকাশ করা। সকল দিক হ’তে মুখ ফিরিয়ে এক আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া। সম্পদের মোহ, ভোগ-বিলাসের আকর্ষণ, সন্তানের স্নেহ, স্ত্রীর মুহাববত সবকিছুর ঊর্ধ্বে আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রতি আত্মসমর্পণ করে দেওয়াই হ’ল ঈদুল আযহার মূল শিক্ষা। স্বামী, স্ত্রী ও শিশুপুত্রের গভীর আত্মবিশ্বাস, অতলান্তিক ঈমানী প্রেরণা, আল্লাহর প্রতি নিশ্চিন্ত নির্ভরতা ও অবশেষে আল্লাহকে খুশী করার জন্য তাঁর হুকুম মোতাবেক জীবনের সর্বাধিক প্রিয় একমাত্র সন্তানকে নিজ হাতে যবহ করার কঠিনতম পরীক্ষায় উত্তরণ-এসবই ছিল আল্লাহর প্রতি অটুট আনুগত্য, গভীর আল্লাহভীতি এবং নিজের তাওহীদ ও তাকওয়ার সর্বোচ্চ পরাকাষ্ঠা। ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর হুকুমে পুত্র কুরবানী করেছিলেন। মূলতঃ তিনি এর দ্বারা পুত্রের মুহাববতকে কুরবানী করেছিলেন। আল্লাহর ভালোবাসার চাইতে যে পুত্রের ভালোবাসা বড় নয়, এটিই প্রমাণিত হয়েছে তাঁর আচরণে। আল্লাহ এটাই চেয়েছিলেন। আর এটাই হ’ল প্রকৃত তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি।

কিন্তু পরিতপের বিষয় আমরা মুসলমানগণ এই আল্লাহ ভীতি মূলক কাজটিকেও আমাদের লোকদেখানো ঐতিহ্যের মধ্যে সামিল করিয়ে নিয়েছি। গরুকে সাজিয়ে কিংবা কোরবানির পশুর গলাতে দাম লিখে ঝুলিয়ে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসা শহরের মানুষদের জন্য এক নিরব অহঙ্কারের ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। অথচ আল্লাহ্‌ বলেছেন অহংকার করার একমাত্র হক রয়েছে মহান আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিনের। সুরা আন- নিসার ১৭৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেন-

فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَيُوَفِّيهِمْ أُجُورَهُمْ وَيَزِيدُهُم مِّن فَضْلِهِ وَأَمَّا الَّذِينَ اسْتَنكَفُوا وَاسْتَكْبَرُوا فَيُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَلَا يَجِدُونَ لَهُم مِّن دُونِ اللَّهِ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
But to those who believe and do deeds of righteousness, He will give their (due) rewards,- and more, out of His bounty: But those who are disdainful and arrogant, He will punish with a grievous penalty; Nor will they find, besides Allah, any to protect or help them.
“অতঃপর যেসব মানুষ ইমান এনেছে এবং ভালো কাজ করেছে, তাদের প্রতিদান আল্লাহতায়ালা পুরোপুরি দেবেন। তিনি তাঁর অনুগ্রহের মাধ্যমে তা আরো বাড়িয়ে দেবেন। অন্যদিকে, যারা আল্লাহর বিধান মেনে নিতে কুণ্ঠাবোধ করল এবং অহংকার করল, তাদের তিনি কঠোর শাস্তি দেবেন।তারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো অভিভাবক পাবে না, সাহায্যকারীও পাবে না”।


বর্তমানে এর সাথে নতুন বেদাত যুক্ত হয়েছে আর তা হল কোরবানির পশুর সাথে ছবি তুলে সেই ছবি সহজ ফেতনার মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া। এই ছবি দিয়ে আসলে একজন মানুষ কি প্রমাণ করতে চায়? নিজের বড়ত্ব, নিজের ক্ষমতা কিংবা নিজের অহংকার। লোক দেখানো এই সকল ইবাদত আল্লাহ্র কাছে কত টুকুন গ্রহণীয় তা তিনিই ভালো জানেন। যারা লোক দেখানো ইবাদত (বা রিয়া) করে তাঁদের ব্যাপারে আল্লাহ্‌ রাসুল (সঃ) বলেছেনঃ

“আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক থেকে খুব ভয় করছি। সাহাবীরা বললেন – ইয়া রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম! ছোট শিরক কি? রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তা হলো “রিয়া” বা লোক দেখানো ইবাদত। যেদিন আল্লাহ তাআ’লা বান্দাদের আমলের পুরস্কার প্রদান করবেন, সেদিন রিয়াকারীদেরকে বলবেনঃ যাও, দুনিয়াতে যাদেরকে দেখানোর জন্য আমল করতে, তাদের কাছে যাও। দেখো তাদের কাছ থেকে কোনো পুরস্কার পাও কিনা?” মুসনাদে আহমাদ, সহীহ ইবনে খুজায়মা, হাদীসটি সহীহ – শায়খ আলবানী।

বাদ দিলাম ধর্মীয় বিধি নিষেধ সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখি তাহলে দেখব সেলফি তোলাকে মনোবিজ্ঞানী গণ এক ধরণের স্বার্থপরতার সাথে তুলনা করেছেন যার উৎপত্তি হল নিজেকে সকল কিছুর মধ্যে যুক্ত রাখা হতে। এমনকি অতিরিক্ত সেলফি তোলাকে মানসিক রোগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সেখানে কোরবানির পশুর সাথে সেলফি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া কোন পর্যায়ের মানসিক বৈকল্যের উদাহরণ তা নিজের মনে চিন্তা করে দেখুন।

আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে এমন রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত এবং অহংকার থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:০৫

আগুনে পাখি বলেছেন: সকালে উঠে এই পোস্ট থেকে অনেক ভালো কিছু জিনিস জানলাম।
অনেক ধন্যবাদ :)

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২১

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: সুবহান-আল্লাহ্‌। সকালেই ভালো পোস্ট পড়লাম।

আল্লাহ্‌ আপনার ওপর রহম করুন @শেখ এম উদ্‌দীন ভাই।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হজ্জ্বে গিয়েও মানুষ সেলফি তুলে। এটাও এক ধরনের রিয়া। সবাইকে অনুরোধ এসব করবেন না। ফেসবুকে ডিজলাইক বাটন চালু হচ্ছে। এবার কাউফি'র খবর আছে।

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫১

আহলান বলেছেন: যদি রিয়ার উদ্দেেশ্যে ছাড়াই পারস্পরিক সংবাদ আদান প্রদান ও মুয়ামালাতের উদ্দেেশ্যে সেলফি তোলা হয় ও ফেবুতে পোষ্টানো হয়, তাহলেও কি রিয়া করার গোনাহ হবে হুজুর?

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৬

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: প্রথমত, আমি হুজুর বলতে বাংলাতে যা বুঝায় ঐ পরিমাণ ধর্মীয় জ্ঞানের অধিকারী নই।
দ্বিতীয়ত, যেকোনো কর্মের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। বাকিটা আশাকরি বুঝতে পারবেন আপনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.