নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কমবখত সাহেবের কুরবানির ঈদ এবং আক্কেল আলীর ষাঁড়

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

[ লেখাটি অনলাইন বাংলাতে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ এ প্রকাশিত]

কমবখত সাহেবের মেজাজ খানা কিছুকাল পূর্বহইতে খুবই খোশ হইয়া রহিয়াছে। এই খোশ মেজাজ আনয়নের জন্য তাঁহার নতুন সহকারীর ভূমিকা প্রশংসার দাবী রাখে। কারন এই সহকারী মুকুন্দ বাবু না হইলে যে তিনি আজকের দান খানা মারিতেই পারিতেন না। এত দিন তিনি ঠিকাদাররা স্পীড মানি হিসেবে যাহা দিত তাহাই টেবিলের নিচ দিয়া গ্রহন করিতেন। কিন্তু মুকুন্দ বাবু আসিয়া তাহাকে একখানা জব্বর বুদ্ধি দিয়াছেন যাহার বদৌলতে তাঁহার বহুদিনের স্বপ্ন বারিধারার ডুপ্লেক্স বাড়িখানা হয়ত আগামি কয়েক মাসের স্পীড মানি দিয়াই সম্পূর্ণ হইয়া যাইবে। মনে মনে তিনি ভাবিতে লাগিলেন মুকুন্দ বাবুকে তিনি কেন আরও আগে তাহার সহকারী রুপে পাইলেন না। মুকুন্দ বাবু না থাকাতে তাঁহার এই চাকুরি খানা করিয়া গত চার বছরে মাত্র দুইখানা জমি ক্রয় করিয়াছেন তাও কত টানা হেঁচড়া করিয়া। শেষের জমি খানা ক্রয় করিতে গিয়া তো শেষ পর্যন্ত শ্বশুর মহাশয়ের দ্বারস্থ হইয়া শাশুড়ির অলংকার বিক্রয়ের টাকা টুকুন নির্লজ্জের মত যৌতুকের বাকি টাকা হিসেবে নিতে হইয়াছে। যাহা হউক যদি বেশি কামাই রোজগার হয় তাহা হইলে বউরে দিয়া শাশুড়ির জন্য একখানা গহনা গড়াইয়া দেওয়ার কল্পনা করিবার মুহূর্তে মুকুন্দ বাবুর ডাকে বড়বাবু কমবখত সাহেবের দিবাস্বপ্ন কাটিয়া গেল। মুকুন্দ বাবু হাক ছাড়িলেন “ছার অফিসের সবাই তো চইলা যাইতেছে আপনে যাইতেন না”। মুকুন্দ বাবুর ডাকে উঠিয়া কমবখত সাহেব স্পীড মানির ব্যগখানা বগল দাবা করিয়া বাহির হইয়া গেলেন।

অফিসের গাড়িতে বসিয়া তিনি ভাবিতে লাগিলেন বাড়ি গিয়া ফ্রেশ হইয়া আজকের আয়ের টাকাগুলো গুনিবেন। নিজের আয়ের টাকা গুনার মজাই আলাদা। তৎক্ষণাৎ তাঁহার স্মরন হইল মুকুন্দ বাবুর ৫% এর ব্যাপারে। আসলে মুকুন্দ বাবুর নির্দেশিত বুদ্ধি মোতাবেক ঠিকাদার যত টাকার কাজে ফাঁকি দিবে তাহার ৩০% কমবখত সাহেব, ৫% মুকুন্দ বাবু এবং ৫% ভবিষ্যতে ঝামেলা এড়ানো ফাণ্ডে রাখা হইবে বলিয়া সিদ্ধান্ত হইয়াছিল। একসাথে এত টাকা আয়ের আনন্দের ভিড়ে তিনি মুকুন্দ বাবুকে তাহার ভাগের স্পীড মানি প্রাপ্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেই ভুলিয়া বসিয়া আছেন। যাহা হউক বাড়ি গিয়া মুকুন্দ বাবুকে একখানা ফোন করিতে হইবে মর্মে সদ্য ক্রয় করা আইফোনে “টু ডু” লিস্ট করিলেন। আজকের পার্টি ১০ কোটি টাকার কাজের ৫ কোটি টাকার কাজ করিয়াছে এবং ২ কোটি টাকা বিভিন্ন খাতে কাজ পাইতে ব্যয় করিয়াছে তাই তাহাদের লাভের ৩ কোটি টাকার ৩০ শতাংশ অনেক টাকাই হইবার কথা। এই টাকা দিয়া এইবার জম্পেশ একখানা কোরবানির পশু ক্রয় করিবার ইচ্ছাও মনের মাঝে উঁকি দিচ্ছে বারেবারে। হঠাৎ করিয়া তাঁহার মনে হইল অফিসের মিলন সাহেবের কথা, বোকা মানুষ তবে কথা বেশি বলে। বলে স্পীড মানি নাকি ঘুষ। কি জ্বালা ঘুষ হইলে ঘুষ খাইয়া মাপ চাইলেই তো হইব। কমবখত সাহেব খুব চালাক লোক। এই পাপের কথা তিনি আগেই বিবেচনা করিয়া রাখিয়াছেন। এই বার ঘটা কইরা কোরবানি দিবেন এবং এই এক বছর মানুষের কাজ দ্রুত কইরা দিয়া দুহাতে স্পীড মানি কামাই করিয়া বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করিয়া আগামি কোরবানিতে হজ্বে গিয়া আল্লাহের কাছে মাপ চাইয়া আসিবেন। বাড়িও হইল, বিলাস বহুল জীবন হইল আবার ধর্ম কর্ম ও হইল। মিলন সাহেব তো চাইলেই হজ্ব করিতে কিংবা এত ঘটা করিয়া কোরবানি দিতে পারিবে না। উপরন্তু একজন স্বল্প শিক্ষিত ঠিকাদার যদি ৩ কোটি টাকা এই কাজ হইতে লাভ করিতে পারে তাহা হইলে তিনি একজন প্রকৌশলী হইয়া ঐ টাকার ৫০% নেওয়ার বৈধ হকদার বটে। গতকাল এক অনুষ্ঠানে একজন মন্ত্রী মহোদয় ও বলিয়াছেন প্রকৌশলীগন একটি জাতির সর্বাপেক্ষা মেধাবী সন্তান তাই একজন মধ্যম মেধাবীর লাভের অংশ হইতে এই ৪০% টাকা আদায় করিয়া তিনি অত বড় কোন অপরাধ করেন নাই।

বাসায় আসিয়া তিনি ফ্রেস হইয়া খাওয়া দাওয়া করিয়া স্পীড মানি গুনিয়া দেখার কথা বেমালুম ভুলিয়া ঘুমাইয়া পরিলেন। ঘুমের ঘোড়ে তিনি স্বপ্ন দেখিলেন তাহার দাদার বলা জমিদার দের গল্প। তাহার দাদা কুদ্দুস আলি এক জমিদারের গোমস্তা ছিলেন। সেই জমিদাররা কত বিলাস বহুল জীবন যাপন করিতেন তাহা অনেক সুন্দর করিয়া নাতির নিকট গল্প করিতেন কুদ্দুস আলি। দাদার গল্পের জমিদারের স্থলে নিজের স্বপ্নে কমবখত নিজেকেই দেখিতে লাগিলেন। সকালে ঘুম হইতে উঠিয়া কমবখত সাহেবের মনে হইল সেই জমিদারদের ঢঙে এইবার হাটে গিয়া পশু ক্রয় করিবেন এবং স্বর্গীয় দাদা কে দেখাইবেন তাহার নাতিই এখন জমিদার। এই কথা ভাবিয়া তিনি টাকা গুনিতে লাগিলেন এবং দেখিলেন পার্টি তাহাকে পুরা ৩০% দেয় নাই। দিয়াছে ৬৫ লক্ষ টাকা। ইহাতে তাহার মেজাজ কিঞ্চিৎ গরম হইলেও নিজেরে সংবরণ করিয়া মুকুন্দ বাবুকে একখানা ফোন দিলেন। মুকুন্দ বাবুকে টাকার ব্যাপার খানা বলাতে তিনি বলিলেন “স্যার, স্পীড মানির ব্যাপার তো চাপিয়া জাউন, পরের বার দেখাইবাম”। মুকুন্দ বাবুর কথার যুক্তি রহিয়াছে দেখিয়া কমবখত সাহেব অন্য কথা পারলেন। কাল পশুর হাটে যাইতে তিনি মানুষের পিঠে চড়িয়া যাইবার আকঙ্খা ব্যক্ত করিলেন এবং কহিলেন ইহা আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। তিনি মুকুন্দ বাবুকে এক খানা পালকি এবং জনা ১৫ মানুষের ব্যবস্থা করিতে কহিলেন। মুকুন্দ বাবু সাহেব কে ব্যাবস্থা হইয়া যাইবে বলিয়া আশ্বস্ত করিয়া ফোন রাখিয়া দিলেন।

একখানা পালকি সমেত ১৬ জন সঙ্গি নিয়া কমবখত সাহেব কোরবানির পশু ক্রয় করিতে চলিলেন। চ্যালাদের কেহ একজন কহিল জনাব আপনার মত উঁচু দরের একজন মানুষ হাটে না গিয়া অভিজাত পশুর ফ্যাশনশো হইতে পশু ক্রয় করা উত্তম। কমবখত সাহেব ভাবিয়া দেখিলেন ফ্যাশনশোতে মানুষ আর কয়জন হইবে ইহার চেয়ে হাটে গেলে বেশি লোকে তাহার অভিজাত্য দেখিতে পারিবে, তাই তিনি সকলকে হাটের পানে রওয়ানা দিতে কহিলেন। হাটের কাছাকাছি পৌঁছাইয়া চ্যালাদেরকে কহিলেন “আমাকে ভালো একখানা জায়গা দেখিয়া নামাইয়া রাখিয়া তোমরা চারজন ব্যাক্তি ব্যতিত সকলে পশুর হাটে চইলা যাইবা, যাইয়া দামি ও চোখে পরার মত পশু দেখিয়া আমাকে নিয়া ঐ সকল নির্বাচনকৃত পশু দেখাইবা”। চ্যালারা তাঁহার কথামত কাজ করিল। একজন ফিরিয়া আসিয়া কহিল “জনাব একখানা জবর খাসী উঠিয়াছে, দাম ৬৬ লাখ চায়”। কমবখত সাহেব বলিলেন “কি সব কথা কও মিয়া, খাসী আর কত বড় খাসী তো ষাঁড়ের মত বড় হইব না, তাইলে এত দাম ক্যান? ঐ খাসী আমি ক্রয় করিব না অন্য ভালো কিছু দেখ”। ইতোমধ্যে অন্য চ্যালাগণ আসিয়া কহিল তাহারা খুবই ভালো মানের ভালো দামের কিছু ষাঁড় পাইয়াছে। কমবখত সাহেব হাতের ইশারাতে চ্যালাদের নিয়া ঐদিকেই রওয়ানা হইলেন। যাওয়ার পথে তিনি দেখিলেন সেই ঠিকাদার একখানা খাসী নিয়া যাইতেছে এবং পিছনে লোকজন এর ভির লাগিয়া আছে। চ্যালা কহিল “জনাব এই খাসী খানার কথাই বলিয়াছিলাম”। কমবখত সাহেব মনে মনে ভাবিল মেধা না থাকিলে কিভাবে মানুষ টাকার অপচয় করিয়া বেড়ায়। তিনি এই সকল বোকামি করবেন না কারন তিনি ইঞ্জিনিয়ার।

চ্যালারা সঠিকই বলিয়াছে দেখলে লোকে তাকাইয়া থাকিবে টাইপের কিছু পশু এখানে আছে। কমবখত সাহেব ইহার মধ্যে সর্বাপেক্ষা ভালো খানার সামনে গিয়া পালকি হইতে নামিয়া উহার দাম জানিতে চাইলেন। মালিক কহিল ৮০ হাজার টাকা। কমবখত সাহেব বুঝিতে পারিলনা তিনি কি ভুল শুনিলেন নাকি চোখে ক্যাঁতরা ষাঁড়কে তাগড়া ভাবিলেন? আশেপাশে তাকাইয়া এর চেয়ে ভালো ষাঁড় তিনি দেখিলেন না তাহা হইলে এর মালিক এত কম দাম চাইল ক্যান? এই ষাঁড় ক্রয় করিলে সকলে তাকাইয়া থাকিবে নিশ্চিত কিন্তু দাম শুনিলে অনেকেই ভাবিতে পারে সস্তাতে হয়ত তিনি রোগা বা চুরির মাল কিনিয়াছেন। তিনি ষাঁড়ের মালিকের নিকট গমন করিয়া তাঁহার নাম জানিতে চাইলেন উদ্দেশ্য কানে ভুল শুনিয়াছেন কিনা তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখা। ষাঁড়ের মালিক বলিল তাহার নাম আক্কেল আলি। কমবখত সাহেব চিন্তায় পড়িয়া গেলেন। ইহা হাটের সেরা ষাঁড় কিন্তু দাম তো মনপুত বা তাঁহার সামাজিক অবস্থানের সহিত মিলিতেছে না। কমবখত সাহেবের উশখুশ দেখিয়া দূর হইতে এক দালাল আসিয়া জানিতে চাহিল “জনাব কোন সাহায্য করিতে পারি কি”? কমবখত সাহেব কহিল গরু খানা ভালই কিন্তু দাম যে পছন্দ হইতাছে না হে বাপু। দালাল আক্কেল আলিকে সুধাইল দাম কত হে মিয়া। আক্কেল আলি এবারো কহিল ৮০ হাজার টাকা। দালাল বুঝিল সাহেবের ক্যান দাম পছন্দ হয় নাই, দালাল চিৎকার করিয়া কহিল “স্যার ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার কমে আইজকার হাটে এইরম ভালো ষাঁড় পাইবেন না, নিয়া নেন স্যার”। কমবখত কহিল “তিনলক্ষ মানে উহার মালিক তো শুধু ৮০ হাজার দাম চাইলো”। আক্কেল আলিও ইহার প্রতিবাদ করিতে যাইতেছে দেখিয়া দালাল তাহাকে গুঁতা দিয়া থামাইয়া দিল। দালাল কহিল “স্যার, দাম তো তিনলক্ষ ৮০ হাজারই বলিয়াছে আপনি ভুল হুনছেন”। কমবখত সাহেব কহিল “তাইই বল, আমরা খানদানি মানুষ হাটে আসিতেই আমার ৬০ হাজার টাকা খরচ হইয়াছে সেখানে যদি শুধু ৮০ হাজার টাকার ষাঁড় ক্রয় করি তাহলে কি আমার মান সম্মান কিছু থাকে”? দালাল সাথে সাথেই মাথা ঝাঁকাইয়া কহিল “তা কি করিয়া অইব স্যার তয় ৩ লক্ষ ৮০ হাজারে কিনিলে কিছুটা মান্সম্মান রক্ষা অইব”।

কমবখত সাহেব চ্যালাদের মুখপানে তাকাইলেন। মশার কামড়ে এবং দ্রুত ফিরার তাগিদে চ্যালারাও সমস্বরে চেঁচাইয়া কহিল “জনাব এই ষাঁড়েই আপনার এবং আপনার বংশীয় মর্যাদা রক্ষা হইবে, এই ষাঁড় না হইলে আপনাদের মর্যাদা ধুলিস্মাত হইয়া যাইবে”। চ্যালাদের সমর্থন পাইয়া আক্কেল আলি তিনলক্ষ ৮০ হাজার টাকা দালাল কে বুঝাইয়া দিয়া তাঁহার চ্যালাদের একজন কে কহিল “ওহে আর্টিস্ট দামখানা লিখিয়া আনো ষাঁড়ের গলাতে ঝুলাইয়া সবাই মিলিয়া একখানা ছবি তুলিব এবং ফেসবুকে দিব, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের জানাতে হইবে তো যে আমরা ষাঁড় ক্রয়ে সফলকাম হইয়াছি”। আর্টিস্ট দাম খানা লিখিয়া আনিয়া আক্কেল আলিকে ষাঁড়ের গলাতে ঝুলাইতে কহিল। কমবখত এবং তাঁহার কর্মকাণ্ডে বিরক্ত আক্কেল তাহা করিতে অপারগতা জানাইল। ইহা দেখিয়া দালাল নিজেই দাম ঝুলাইতে লাগিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ষাঁড় দালালকে গুঁতা মাড়িয়া তিন হাত দূরে পাঠাইয়া দিল। ইহাতে আক্কেল আলি ভয় পাইয়া কহিল “দাম ঝুলানোর কাম নাই, ষাঁড়ের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রখিয়া একখানা সেলফি তুলিয়া দাম লেখিয়া দিলেই হইবে”। ষাঁড়ের দাম বুঝাইয়া দিয়া দালালকে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা দিয়া আক্কেল আলি তাঁহার স্বপ্নের পালকিতে গিয়া আরোহণ করিল। পালকি চোখের আড়াল হইতেই দালাল আসিয়া আক্কেল আলীর হাত হইতে ছোঁ মাড়িয়া টাকার থলে খানা নিয়া গেল। দালাল আক্কেল আলিকে ১ লক্ষ টাকা দিয়া বাকি ২ লক্ষ ৮০ হাজার নিজে নিয়া নিল এবং কহিল “মনে কর তোমার থেইকা আমি ১ লক্ষ টাকাতে ষাঁড়টি কিনিয়া ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকাতে বিক্রি করছি। হালাল উপার্জনের এমন সুবর্ণ সুযোগ ডেইলি আসব না বুঝছ আক্কেল মিয়া”। এই কথা বলিয়া দালাল মনে মনে চিন্তা করিতেছিল এই বেআক্কেল এবং বোকা লোকদুইটা না হইলে আজ যে তাঁহার এই অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা হইত না। সে আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করিল হাটে যেন এমন ক্রেতা এবং বিক্রেতার পরিমান বাড়িয়া যায়। এমন ক্রেতা অনেকই আসিলেও এই মানের বিক্রেতার খুউব অভাব। ফলে এমন দান মারার সুযোগ অত বেশি পাওয়া যায় না।

দালালের ভাবনাতে বিচ্ছেদ ঘটাইয়া আক্কেল আলি কহিল “এই ২০ হাজার ও আপনেই রাখেন মিয়া, ২ লক্ষ ৮০ হাজার হারাম টাকা হজম করতে পারলে এই ২০ হাজার ও পারবেন, আমি গরিব মানুষ হইতে পারি হারাম খাই না”। দালাল কহিল “আরে কন কি মিয়া এই টাকা হারাম, এই টাকা পরিষ্কার আমি ব্যবসা কইরা পাইছি, না নিলে দেন আমি ই নিমু”। আক্কেল আলি টাকা ফিরত দিতে দিতে কহিল “আমি গরিব, আমার হয়ত ঐ সাহেব কিংবা আপনের মত সার্টিফিকেট নাই তয় আমি কিন্তু মূর্খ না, আমি কওমি লাইনে পড়াশুনা করছি, যে পরিমান হাদিস কোরআন জানি তার ভিত্তিতেই কইলাম। আপনের ব্যবসাও হালাল না আর ঐ স্যারের কোরবান দেয়াও কোরবানি না”। এইকথা বলিয়া আক্কেল আলি দ্রুত পা চালাইল। আক্কেল আলীর ছেলের কাল অপারেশন হইবে ডাক্তার বলিয়াছে রাইতের মইধ্যে ৬০০০০ টাকা লইয়া যাইতে। হয়ত এই টাকা দিয়াও এমন কোন নাটক হইবে। কিন্তু আক্কেল আলিকে তো টাকা দিতেই হইবে, বাকি ২০ হাজার টাকাতে কোরবানির পরে ভালো দেইখা আরেকখানা ষাঁড় ক্রয় করিয়া আগামি কোরবানির জন্য পালিতে হইবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.