নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ হিশেবে সৎ, নির্লোভ, সত্যান্বেষী, সত্যবাদী হওয়াটা জরুরী হয়ে পরে বিশ্বমানবতার জন্য, সমাজের জন্য।একজন মানুষ হিশেবে সৎ, নির্লোভ, সত্যান্বেষী, সত্যবাদী হওয়াটা জরুরী হয়ে পরে বিশ্বমানবতার জন্য, সমাজের জন্য।

মৌতাত গোস্বামী শন্তু

মানুষ বলে ভুল করলেও নিজেকে মানুষই বলব আমি।

মৌতাত গোস্বামী শন্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের এক অকৃত্রিম বন্ধুর নাম জর্জ হ্যারিসন, বিশ্বমানবতার বিমূর্ত এক প্রতীক।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪

জর্জ হ্যারিসনের জন্ম ইংল্যান্ডের লিভারপুলের ওভারট্রিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ সালে। জর্জ হ্যারিসনের বড় ভাই হ্যারি, অপর ভাই পিটার আর মা লুইস এবং বাবা হ্যারি সকলেই আইরিশ অরিজিন ছিলেন। ডোভডেল প্রাইমারি স্কুল লেভেলের পড়াশোনা শেষ করে লিভারপুল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন জর্জ হ্যারিসন এবং স্কুলের বাসে পল ম্যাকাটনের সাথে পরিচয় হয়। ১৩ বছর বয়সে সাড়ে তিন পাউন্ডের একটি পুরনো গিটার কিনে দেন তার মা। জর্জ স্কুলের পথে সেই গিটারের গল্প করলেন পল-এর কাছে। পল তখন জন লেননের ব্যান্ড ‘কোয়ারিমেন’-এর সদস্য তাই জর্জকে নিয়ে গেলেন লেননের কাছে। লেনন জর্জকে পছন্দ করেন এবং ‘কোয়ারিমেন’-এর সদস্য করে নেন। ১৯৬০ সালে ‘কোয়ারিমেন’ ব্যান্ড চুক্তিবদ্ধ হয় ইন্ড্রা ক্লাবের সঙ্গে এবং তখন ‘কোয়ারিমেন’ ব্যান্ড-এর নাম বদল করে রাখা হয় ‘দি বিটলস’। কিন্তু তখন জর্জ-এর বয়স ১৭ হওয়াতে মিউজিক করার ওয়ার্ক পারমিট পাননি। ওয়ার্ক পারমিট পেতে বয়স হতে হয় আঠারো। ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই জর্জ মিউজিক বাজাতে শুরু করলে পুলিশ তাকে বাধা দেয়। ১ বৎসর পর জর্জ ইন্ড্রা ক্লাবের অডিয়েন্সের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন এবং সেই সময় তিনি গান লিখা শুরু করেন। ব্যাপক সফলতার পর ‘বিটলস’ ভেঙ্গে গেলে ১৯৬৩ সালে জর্জ ‘বিটলস’ ত্যাগ করে নিজের মত করে এগিয়ে চললেন। ১৯৬৬ সালে জর্জ বিয়ে করেন পেট্রিকে। ১৯৬৭ সালে জর্জের পরিচয় হয় পন্ডিত রবিশংকর এবং মহাঋষি মহেষ যোগির সাথে। রবিশংকরের সাথে থেকে জর্জ ভারতীয় মিউজিকের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন আর মহেষ তাকে শেখান মেডিটেশন। এদিকে বিটলস ব্যান্ড জর্জের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠে। ‘সামথিং’, ‘টেক্সম্যান’, ‘হেয়ার কামস দ্যা সান’, ‘আই নিড ইউ’, ‘হোয়াইল মাই গিটার জেন্টলি উইপস’ প্রভৃতি জর্জের নিজের হাতে করা গান এবং গানগুলো বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। বিটলস ভেঙে যাওয়ার পরও তাঁর জনপ্রিয়তা কমেনি। সত্তুরের পরবর্তী সময়ে তাঁর অনেক গান প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য ‘মাই সুইট লর্ড’, ‘গিভ মি পিস অন আর্থ’, ‘আল দোজ ইয়ার্স এগো’, ‘গট মাই মাইন্ড সেট আন ইউ’। পেট্রিকের সাথে ছাড়াছাড়ির পর ১৯৭৭ সালে জর্জ বিয়ে করেন তার সেক্রেটারি অলিভিয়াকে। ১৯৭১ সালে নিউইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ‘দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ ছিল জর্জ হ্যারিসনের শেষ কনসার্ট- যা দীর্ঘদিন রেকর্ড বিক্রির চার্টে এক নম্বর স্থানে ছিল। অক্লান্ত পরিশ্রমে হ্যারিসন শিল্পী ও যন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি এই কনসার্টের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানের গানের অ্যালবামটি সে বছর গ্যামি পুরস্কার লাভ করে। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ (বাংলাদেশে ’৭১-এর এই ২৩ মার্চ অগ্নিঝরা দিনে সারাদেশে বাংলাদেশের লাল-সবুজের মধ্যে সোনালি মানচিত্র খচিত নতুন পতাকা উড়ানো হয়েছিল) এই কনসার্ট ফিল্ম হিসেবে মুক্তি পায় এবং পরবর্তীতে হোম ভিডিও হিসেবে প্রকাশিত হয়।
২০০৫ সালে ‘দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ পুনরায় ডিভিডি হিসেবে ডকুমেন্টারি সহ প্রকাশিত হয়। এই ডিভিডি-র বিক্রয়লব্ধ অর্থ ‘জর্জ হ্যারিসন ফান্ড ফর ইউনিসেফ’-এ জমা হবে। কোনো দেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে আমেরিকার ইতিহাসে এধরনের কনসার্ট আর হয়নি। ব্যান্ডসঙ্গীতের আসর কিংবা বিখ্যাত জনপ্রিয় শিল্পীদের গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করে মানবকল্যাণমূলক কাজের জন্য তহবিল সংগ্রহ করার উপায়টি জর্জ হ্যারিসনই প্রথম শুরু করেন। আর সে কাজটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সহায়তার মাধ্যমেই শুরু হয়। জর্জ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনেক সঙ্গীত শিল্পীকে ঘরকোণো অবস্থা থেকে বাইরে নিয়ে আসেন। ২০০৫ সালে এবিসি টেলিভিশনের ‘গুড মর্ণিং’ অনুষ্ঠানে ‘দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ প্রদর্শন করা হয় যার মাধ্যমে আবারো বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক তা নতুন করে উপভোগ করেন। ডিভিডি-র উপর আলোকপাত করার সময় জর্জ হ্যারিসনের স্ত্রী অলিভিয়া বলেছিলেন, অনুষ্ঠানটির যে ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে তা হ্যারিসন তখনই বুঝতে পেরেছিলেন- সেজন্যই তিনি পুরো অনুষ্ঠানের ভিডিও করেছিলেন।
২০০১ সালের ৩০ নভেম্বর রাত দেড়টায় (২৯ নভেম্বর রাত ১২টার পর হওয়াতে ৩০ নভেম্বর উল্লেখ করা হল) লস এ্যাঞ্জেলসে দীর্ঘদিনের বন্ধু গ্যাভিন ডি মেফারের বাড়িতে জর্জ হ্যারিসন চিরদিনের জন্য সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যান। ক্যান্সার নামক মরণ ব্যাধি বিশ্বনন্দিত এই সঙ্গীত প্রতিভার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের বিজয়ের মাসের দ্বারপ্রান্তে আমরা তাঁকে হারালাম- কিন্তু তাঁর স্মৃতি, তাঁর কর্ম থাকবে চির জাগরূক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৮ বছর। স্ত্রী অলিভিয়া, ২৪ বছর বয়স্ক পুত্র ধ্বনি এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী অসংখ্য গুণগ্রাহী ও ভক্ত রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যু ছুঁয়ে গেছে লন্ডন থেকে লসএঞ্জেলস- বিটলস-এর জন্মস্থান লন্ডনের লিভারপুলে ব্রিটিশ পতাকাকে অর্ধনমিত করে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদিত হয়েছে। বিশ্ব কাঁপানো ব্রিটিশ পপ গ্রুপ বিটলস-এর জর্জ হ্যারিসনের মৃত্যুতে সারা ব্রিটেনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার বলেছিলেন, বাল্যকালে তিনিও বিটলস দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথও পৃথকভাবে শোক প্রকাশ করেছিলেন। বিবিসি এবং সিএনএন জর্জ হ্যারিসনের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাদের স্বাভাবিক প্রচার বন্ধ রেখে সারাক্ষণ ‘দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর বিখ্যাত গান ‘বাংলা দেশ, বাংলা দেশ’ গানটি বারবার বাজিয়েছিল। ৮২ বছর বয়সী রবিশংকর কন্যা অনুস্কাকে নিয়ে লস এ্যাঞ্জেলসে জর্জ হ্যারিসনের মৃত্যুশয্যাপাশে উপস্থিত ছিলেন। ২০০১ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলের নেত্রীও শোক প্রকাশ করেছিলেন। জর্জ হ্যারিসনের মৃত্যুতে বাংলাদেশে পতাকা অর্ধনমিত দূরের কথা- বাংলাদেশের ২০০১-এর তৎকালীন সরকার বাংলাদেশ টেলিভিশন ও রেডিওতে আইওয়াস করার জন্য তথা সাধারণ খবরের মত সংবাদটি দিয়েছিল। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই- অতীত-আত্মবিস্মৃত অকৃতজ্ঞ হিসেবে এটাই স্বাভাবিক।
মৃত্যুর পরও বিশ্বের সংবাদপত্রের পাতায় জর্জ হ্যারিসন ছিলেন শীর্ষে: “জর্জ হ্যারিসনকে মরোণোত্তর নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হবে- ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ এই উপাধি প্রদান করবেন।”-৩০ ডিসেম্বর ২০০১ ‘নিউস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ পত্রিকায় এএফপি-র মাধ্যমে এ সংবাদটি এভাবেই প্রকাশিত হয়েছিল।
‘জর্জ হ্যারিসনের উইল-এর অর্থের পরিমাণ ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার’- লন্ডন, ৩০ নভেম্বর ’০২ রয়টার্স-এর খবর ছিল। ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার উইলের অর্থ দেখভাল করছেন হাইকোর্ট। তবে হ্যারিসনের এই অর্থ তাঁর স্ত্রী অলিভিয়া, পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে।
‘জর্জ হ্যারিসনের গান মাই সুইট লর্ড ফের শীর্ষে’- লন্ডন, ২১ জানুয়ারি ২০০২, এপি। জর্জ হ্যারিসনের গান ‘মাই সুইট লর্ড’ প্রকাশের একত্রিশ বছর পর ব্রিটিশ পপ চার্টের শীর্ষে ফের চলে এসেছে। ইএমআই বলেছে ১৯৭১ সালে প্রকাশিত হ্যারিসনের গানের মাধ্যমে তাঁর বার্তা গোটা বিশ্বে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়া অব্যাহত থাকায় আমরা আনন্দিত।
‘জর্জ হ্যারিসনের গিটার ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫০ ডলারে নিলামে বিক্রি হয়েছে’- লস এ্যাঞ্জেলস, ১৪ সেপ্টেম্বর ’০৩, রয়টার্স। ১৯৬৯ সালে বিটলসের সর্বশেষ কনসার্টে জর্জ হ্যারিসন যে গিটারটি বাজিয়েছিলেন, সেটি হলিউডের এক নিলামে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫০ ডলারে বিক্রি হয়েছে। বিটলস-এর ‘লেট ইট বি’ ছবিটি চিত্রায়নের সময় হ্যারিসন গিটারটি বাজিয়েছিলেন। লন্ডনের ‘এ্যাপল রেকর্ডস’ এর ছাদে ১৯৬৯ সারের ৩০ জানুয়ারি বিটলস সঙ্গীত দলটি সর্বশেষ একত্রে সঙ্গীত পরিবেশন করে- হ্যারিসন সে অনুষ্ঠানেও গিটারটি বাজিয়েছিলেন।
‘জর্জ হ্যারিসনের আলোকচিত্র ও গানের মূল্যবান সংগ্রহ চুরি’- ৫ অক্টোবর ’০৪, এপি- বিটল তারকা জর্জ হ্যারিসনের স্মরণীয় ঘটনার ছবিগুলো ক্লিনটনের প্রেসিডেন্সিয়েল লাইব্রেরিতে জমা দেওয়ার সময় তাঁর বোনের গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে এক ব্যক্তি নিয়ে যায়। এই ব্রিফকেসে জর্জ হ্যারিসনের এবং তাঁর বোনের অনেক আলোকচিত্র ও জর্জের সুর করা বহু গান ছিল। লু হ্যারিসন বলেন, আমি আমার ভাইয়ের বহুমূল্যবান এই জিনিসপত্রগুলো আর পাব না। লু হ্যারিসন তাঁর দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলিয়নের বাসভবন থেকে শহরতলির লিটল রক লাইব্রেরিতে এই স্মরনীয় জিনিসগুলো দিতে যাচ্ছিলেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়েছিল- কতজনকেইতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংবর্ধনা দিয়ে কতরকম সম্মানজনক ডিগ্রি দিয়ে সম্মানিত করেছেন- কিন্তু এই কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী জর্জ হ্যারিসনকে একটিবারের জন্য স্মরণও করলেন না! ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ কি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে বিভিন্ন সড়ক অতিক্রম করার সময় একটিবারের জন্য জর্জ হ্যারিসনকে স্মরণ করতে পারেন না!
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য, ব্যাতিক্রমী অংশীদার জর্জ হ্যারিসনের কাছে পুরো বাঙালি জাতি ঋণী। আমরা কি জর্জ হ্যারিসনকে মনে রেখেছি? ’৭১-এ হিংস্র হায়েনা পাকিস্তানি বাহিনী যখন বাংলাদেশে গণহত্যা, নারীধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের উল্লাসে মেতে উঠেছিল- তখন জর্জ হ্যারিসনের হৃদয় কেঁপে উঠেছিল এবং তখন তিনি বাংলার স্বাধীনতাকামী, নিপীড়িত, শোষিত, লাঞ্ছিত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। আমরা কি এতই আত্মবিস্মৃত অকৃতজ্ঞ জাতি! একবারও কি আমাদের মনে আসে না মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে স্থায়ী পরিচিতি করে দেয়ার তাঁর কৃতিত্বের কথা? জর্জ হ্যারিসন প্রতিবেশি ভারতে কয়েকবার এলেও আমরা কি একটি বারের জন্য পারলামনা জীবিত অবস্থায় তাঁকে বাংলাদেশে এনে সম্মান করে সংবর্ধনা দিতে! এর চেয়ে দুঃখজনক, বেদনাকর ও লজ্জাজনক ঘটনা আর কি হতে পারে? যদিও বাংলাদেশ সরকার অনেক দেরিতে হলেও ২০১২-তে অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের সাথে জর্জ হ্যারিসনকেও স্বাধীনতা সম্মাননা দিয়েছেন।
এখন শত চেষ্টা করেও আমরা আর জর্জ হ্যারিসনকে না ফেরার দেশ থেকে আর ফিরিয়ে আনতে পারব না- তিনি হয়তো অভিমান করে এখন বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষদের উদ্দেশ্য করে কবি নজরুলের ভাষায় বলতে চাচ্ছেন- “তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু, আর আমি জাগিব না।/কোলাহল করি সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙ্গিব না।”
তাই বলে সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জর্জ হ্যারিসনের অবদানের জন্য তাঁকে মরোণোত্তর বাংলাদেশের নাগরিত্ব দিয়ে তাঁকে সম্মান করা হোক। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধরে রাখার জন্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখার জন্য জর্জ হ্যারিসনের পূর্ণ প্রতিমূর্তি বা ভাস্কর্য্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অথবা ঢাকার অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবিলম্বে স্থাপন করার জন্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রাবাসের নাম ও ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নাম জর্জ হ্যারিসনের নামে রাখার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে জর্জ হ্যারিসনের নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে- কারণ তিনি চিরকৃতজ্ঞতার বন্ধনে আমাদের আবদ্ধ করে গেছেন। জর্জ হ্যারিসন, তোমাকে আমরা ভুলিনি- অশ্রসিক্ত নয়নে কৃতজ্ঞতাচিত্তে তোমাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ করে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩২

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: সুন্দর শেয়ার।জানা অজানা অনেককিছু পড়লাম।শেষের কথাগুলোর সাথেও সহমত পোষণ করছি

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫০

মৌতাত গোস্বামী শন্তু বলেছেন: ধন্যবাদ রুদ্র

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.