নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ হিশেবে সৎ, নির্লোভ, সত্যান্বেষী, সত্যবাদী হওয়াটা জরুরী হয়ে পরে বিশ্বমানবতার জন্য, সমাজের জন্য।একজন মানুষ হিশেবে সৎ, নির্লোভ, সত্যান্বেষী, সত্যবাদী হওয়াটা জরুরী হয়ে পরে বিশ্বমানবতার জন্য, সমাজের জন্য।

মৌতাত গোস্বামী শন্তু

মানুষ বলে ভুল করলেও নিজেকে মানুষই বলব আমি।

মৌতাত গোস্বামী শন্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"পরীক্ষার কবিতা- আগস্ট\'১৬" / "আমার চোখ নেই, আমার অশ্রু নেই"

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৭


"ছুঁয়ে দাও মোর হাত"
সূর্যকে সাথী করে, কখনও পথের পরে
যাও যদি ভুলে মোরে, মনে কোরো না।
ভুলগুলো সব শুধরে নিয়ে, কষ্টসব ভুলে গিয়ে
থাকে সেথা মাঝে মাঝে ভাললাগা হাত
শুধু ভালবেসে ছুঁয়ে দাও হাত দুটি মোর
কেন হাত খানি ধরে থাক রাত্রি প্রহর।

শত শত পথ, সাথে কত শত মত
এরই মাঝে চলে যায় জীবনেরই রথ।
রাত্রির আঁধারেতে, কষ্টময় বিদায়েতে
দু’ফোটা চোখের জলে, ধুয়ে ফেলো না।

মনে যদি পড়ে কভু, গুন গুলো ভেব শুধু
দোষ গুলো মনে করে কষ্ট পেয় না।
মনে মনে ভেবো শুধু, প্রানে প্রাণে পেয়ে যাবে
কোথায় কেমন আছি সেই ঠিকানা।


"প্রস্তাব"
এতোই যদি লেগেছে টান
দূরে দূরে কেন বোকারাম

সেদিন পথে মুখোমুখি চোখাচোখি
বুকের মাঝে ধুপধাপ দাপাদাপি,
হঠাৎ থমকে তাকে দিলাম চমকে
বলেই ফেললাম বড্ড সাহস নিয়ে-
"এক্সকিউজ মি"
কিছু কি বলবেন নাকি?
আমি অতোটা সাহসি নই যে
আপনাকে কিছু বলতে পারি।
তাতো বুঝতেই পেরেছি ক'মাসে
শুধুই যে দেখেছেন চুপিসারে!
তা জনাব,জানতে কি পারি কারন খানা
নাকি জনাবের ঐ কারন টাও অজানা।
বলবো কি আর দেখলেই অবস্থা শেষ
বুঝে নেননা হৃদয়ের টান যে অশেষ!

পিছে কেন আসুন না পাশে
ভীরুতা কি পুরুষের সাজে?


"আড়ষ্ট"
যে আগুন আজো বিরাট আকার ধারন করেনি-
সে আগুন পুড়িয়ে ফেলেছে
নগর, জনপদ, বনজঙ্গল
এই আমি ভাবি।

সে গাছ যার এখনো ভ্রুন জন্মেনি
আমি তার অজস্র ডালপালার
আমি আমাকে ভুল করে কবি ভাবি
যখন তখন লিখতে বসি
যৎসামান্য ভাব এলেই।
ঝিকিমিকি রোদের সাথে প্রেম করতে দেখি;
ছায়া দেয়ার সহানুভূতি অনুভব করি।

সে মেয়ে যে পৃথিবীর মুখ দেখেনি
আমি তার কন্ঠে ভালোবাসার কথা শুনি।
যে ফুল আজো ফোটেনি
তার মনের ভাব পড়ে ফেলি অনায়াসেই।

আমি প্রেমান্ধ ছিলাম না বলেই
আমার ভাব সংক্ষিপ্ত
তারপরও তোমাকে ভাবি।
সে মানুষ যাকে আমি ভালোবাসি
স্বপ্নে তার ছবি আঁকি।


"প্রেতাত্মার কষ্ট"
মুমূর্ষ পিতা আমার বিনা চিকিৎসায় দু'চোখ
বুজেছিল এই খুটির গোঁড়ায়;
নরপশুর হাতে ছিন্নভিন্ন ফুটেফুটে অবুঝ
কিশোরী বোন আমার চিরআশ্রয় ভেবেছিল একে
সঙ্গে করে কেবল প্রিয় খেলার দড়ি;
অসহায় মা আজো নীরব অশ্রুতে ভিজিয়ে
আকুল সিজদায় নত হয়;
জননেতার ফসকে যাওয়া গুলিতে
পা হারানো সোমত্ত ভাই; অযথাই অশ্রাব্য
গালি ছোঁড়ে ক্রমাগত।

নিত্যদিনের সংগ্রামে ব্যর্থ সময়ের সর্বংসহা
অক্ষম আমার সমস্ত অব্যক্ত আক্রোশ
জ্বলন্ত চোখে ভস্বীভূত করে শতবার স্বভাবত।

প্রেম প্রেম প্রেম; ভুলেও এসোনা আর
উঁকি দিওনা নড়বড়ে দোচালা টিনের ফাঁকে
হা-ভাতের মতো এসে বসোনা বৈশাখী ঝড়ের থাবায়
পড়পড় বাঁশের খুটির গোড়ায়;
কালো মাটি কামড়ে পড়ে থেকোনা বেহায়ার মতো
পাপিষ্টের হাসি হেসোনা অমায়িকের ছদ্মবেশে
আসতে পারবোনা আর অনাবিল হেসে।

এসোনা প্রেম ,এসোনা আর
বেবুশ্যে নর্তকীর নিক্বণ শোরে
নারীখেকো নিশাচরের অর্থের ঘোরে
ছয় ঋতুর ছয় সঙ সেজে
এসোনা আর প্রেতাত্মার কেষ্ট হেসে
আসতে পারবোনা আমি আর অনাবিল হেসে।


"প্রিয় উয়াই"
পুড়িয়েছিলাম আমার মন
অনন্ত অনলে,
সেই আগুনে পুড়াসনি তুই
তোর জলে ভেজা মন
তাই জ্বলেনি দাবানল।

গহীন অধরে ডুব দিতে চেয়েছিলাম কতবার
তুই চাসনি ডুবতে
আমাদের জলে ভাসা হয়নি,
যুগল পদ্ম হয়ে উঠা হয়নি আমাদের।

আমি হয়েছিলাম তোর
সবটুকুই তোর,
তুই হোসনি কখনোই আমার
আমাদের তাই এক আকাশে উড়া হয়নি।

আমার কিছুই তোর হয়নি কোনদিন
আমার কিছুই তুই তোর নিজের করে নিসনি
তাইতো পুর্বসম একা আমি
অনন্ত আধাঁরে
নিরুদ্দেশের পথযাত্রী।
মায়াবতী মেঘের ছায়া
সরে গেছে সেই কবে কোন দূরে
আমার আসমানে এখন
একলা চিল শুধু উড়ে।



"তুমি যেন এমন না হও"
তুমি যেন এমন না হও
যাকে দেখে আমি সোনালী ভোরের কমলতা
ভুলে তার দাবদাহে জ্বলি!

তুমি যেন এমন না হও
যার রূপ দেখে আমি পূর্ণিমার সৌন্দর্য ভুলে
রাতের নিরঙ্কুশ কালোকে দেখি!

তুমি যেন এমন না হও
যার জন্য বসন্তের আবেশকে মারিয়ে
শীতের তীব্রতায় কাঁপি!

তুমি যেন এমনও না হও
যাকে দেখার আশায় আমি অম্বর পানে চেয়ে
ধ্রুবজ্যোতির বিপরীতে শুধু অন্ধকার দেখি!

তুমি যেন এমন না হও
যার জন্য আমি প্রান্তর পর প্রান্তর চলে
দেখি শুধু রুক্ষতার সমাদ্রি!

তুমি যেন এমনও না হও
যার জন্য আমি আমার অসীম চাওয়ার আদলে
দেখি নিঃস্বতার ছড়াছড়ি!

তুমি যেন এমন না হও
যাকে ভেবে আমি প্রমোদিত হওয়ার বদলে
বিষাদে মুখ বাঁকিয়ে থাকি!

তুমি যেন এমনও না হও
যাকে আমি ভুলে গিয়ে নতুন স্বপ্নে
বাঁচার সাধ করি!

তুমি যেন এমন না হও
যাকে দেখে আমি ভালোবাসার কথা
ভুলে মনে অনুশোচনার ঝড় তুলি।


"শরতের শেষ প্রহরে"
ধ্রুবতারা ঝরলো হঠাৎ খেয়ালের হেলায়
শরতের ধূসর মেঘ অনুভূতিহীন অগোচরে
হৈমন্তীর আঁচল উড়েনি উত্তরী হাওায়ায়
নবান্নের রঙের আয়োজনে।

পৌষের কাঁচশিশির কষ্ট সুখের আভায়
সুর তুললো গাঢ় কুয়াশার আস্তরণে
প্রচন্ড অনিচ্ছায়;সূচালো আঁচড়ে রক্ত ফোটে
লুকোনো সুপ্ত বিরহের আতিশয্যে;
এখন...কুয়াশার অভেদী আস্তরে পুরো প্রান্তর
আঁধার সন্ধ্যার অহেতুক আগমনে
একটু ওমের জন্য উত্তাপহীন আগুন জ্বালি
আলোর তৃষ্ণায় একাকী রাত্রিজাগা চাদরে।

অদ্ভূত ভালোবাসা সেই বৃষ্টির রুপোলী ফোঁটায়
কদমের ঘ্রাণ তুলেছিলো অনায়াসে
তড়িত স্ফূলিংগের আকস্মিক রঙের ঝালর,ঝিলিক
স্পর্শে পুরো প্রান্তর জ্বলেছিল অপ্রয়োজনে
কি ভীষন বিরক্তি;হঠাৎ স্পর্শ ছিন্ন স্বর্ণ হাতে
অস্বস্তির আসর;আঁধারসন্ধ্যার প্রেম সময়ে
বনজোৎস্ন্যার সুরের মূর্ছনার মাতাল ছোঁয়ার
অভিমান ভাঙা ব্যঞ্জনায়।



"শ্রদ্ধাঞ্জলি - প্রভাকর"
গোয়াল পেরিয়ে ক্ষেতের আল, এই হাট হাট
পথিকের ডুলায় তড়পায়, বইচা সরপুঁটি ঝাঁক
নাড়া পোড়া বুনকা ধোয়া মিলায়, কুয়াশার চাদরে
হিম হাসে টুপটাপ ঝড়ে পড়া, শিশিরে
প্রভাতের জিম্মায় ওঠে উল্লাস, আলিফ যবর আ
ভালোবাসা গীতিতে, আমার সোনার বাংলা
চিরায়ত সবুজে দোলে ফসলী ঘাস, ফুলের নয়নতারা

বিনু'নের প্রজাপতি উড়ে বেড়ায় সর্ষের হলুদে
বাতায়নে ভাসে কিশোরী, ঝুমকো জবা-নোলক দোলে
দোলে ঐ বজরার গলুই হাল, পোয়াতী পাল
আরশির আঙিনায় বাড়ে কচি পাতা পুই শাক

ঊষা আসে মুগ্ধতায়, পূর্বাকাশে শত রং রাঙিয়ে
লাল সবুজের বাহারে
আজ জাত-শুদ্ধির হার না মানা হারে দিলাম
প্রভাকর, তোমায় বাংলা’র কচুপাতা শাড়ীর প্রণাম।


"ভালো যদি বাসতে চাও"
ভাল যদি বাসতে চাও,
কস্ট পাওয়ার ঝুকি তোমাকে নিতেই হবে ,
অভিমান –অনুযোগ করতে পারবে না তুমি ।

ভাল যদি বাসতে চাও,
প্রতিদান কভু চাইতে পারবে না তুমি,
যদিও প্রকৃতি প্রতিদান তোমায় দিবে বহু গুন বহুগুন বেশী।
তোমার ভালবাসা পদদলিত হবে,
লাঞ্ছিত হবে তোমার অনুভুতি,
বিনিময়ে তোমাকে আরো বেশী আরো বেশী ভাল বাসতে হবে ।
তোমাকে কস্ট দিবে,
তোমাকে কাঁদাবেও বটে,
জেনে রেখ তুমি-
কাঁদতে পারবে না, জ্বলতেও পারবে না।

হেমলক সক্রেটিস কে নীল করে দিয়েছিল,
কিন্তু তার প্রেম ছিল টগবগে লাল।
যীশুর হ্রদয় বিশ্বাস ঘাতকতায় হয়েগিয়েছিল নীল,
ভালবাসা তার ছিল যত, হয়েছিল অমলিন ।
হোসাইন নিয়েছিল তেষট্টি টি ক্ষত,
ক্ষতে তার রক্ত ছিল বটে, ছিল না অভিশাপ এত টুকু ।
কবির কবিতার এক একটি শব্দ,
শব্দ গুলি শব্দ নয় জেনে নিও, হ্রদয় থেকে ঝরে পড়া এক এক ফোটা রক্ত,
তবুও তাতে অভিমান নেই কোনও , আছে বরং আরো বেশী ভালবাসা শক্ত ।

এরপরেও যদি তুমি ভালোবাসতেই চাও,
তোমাকেও হতে হবে নীল, নিতে হবে তেষট্টি টি ক্ষত,
তবেই তুমি করবে অর্জন ভালবাসা যত,
পারবে তুমি বাসতে ভাল, যত খুশি তত ।



"নিঃশব্দে খুঁজে ফিরি তোমাকে"
মাঝে মাঝে তুমি কোথায় উধাও হয়ে যাও?
নীরবে সন্ধ্যা নামে শীতের বিকেলে
পাখিরা আকাশে উড়ে, চলে যায় দূরের সীমানায়
পার্কে বেড়াতে আসে কপোত-কপোতীরা
আড্ডায় মেতে উঠে বিভিন্ন বয়সের মানুষ
বাজারে কেনাবেচার ধুম চলে
নাটকপাড়ায় চলে নাটকের শ্যুটিং
আস্তে আস্তে রাত নেমে আসে
খদ্দর বাড়তে থাকে বেশ্যাপাড়ায়
আজন্ম বেশ্যার দালাল হয়ে হাঁক ছাড়ে জনৈক আলাল
বনে বাদাড়ে শোনা যায় শেয়ালের ডাক
আমি বড় একা হয়ে যাই
ফিরতে পারি না আপন আলয়
ঠাঁই দাড়িয়ে থাকি তোমার বাড়ির সীমানায়
কখন শেষ হবে তোমার অজানা নির্বাসন?
কবে ফিরে আসবে তুমি?

হঠাৎ করে তুমি ডুমুরের ফুল হয়ে যাও
কোথাও পড়ে না তোমার শরীরের ছাঁয়া
আমি চেয়ে থাকি পথের দিকে
তুমি আসবে বলে
কখনো কখনো বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে
সন্ধ্যা পেরিয়ে কুয়াশার রাত
রাত গাঢ় হয় চন্দ্রের অস্ততায়
নীরব হয়ে উঠে ব্যস্ততম সড়ক, হাটবাজার
ক্লান্ত-শ্রান্ত মানুষ নীড়ে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে
অদূরে দেখা যায় সাগরের তটভূমি
শান্ত সাগরে স্রোতের মৃদু ঢেউ খেলে যায়
নিদ্রায় আলুথালু হয়ে পড়ে বনভূমি, জ্যোৎস্নার আকাশ
শুধু ঘুমায় না আমার দু চোখ
নিঃশব্দে খুঁজে বেড়াই তোমাকে
কবে ছাঁয়া পড়বে তোমার নগরীর বুকে?


"কোন এক সুনামির পরে"
বপ্নগুলো নিরবে অশ্রু ঝরায়
বেদনার নীল কাব্য নিরাশার বানী শোনায়।
প্রতিটা মুহূর্ত একেকটি বছর মনে হয়!
সুখের প্রত্যাশায় দুঃখগুলো ভাষা খুঁজে পায়।
তবু রেখে যায় কিছু অন্ততহীন প্রত্যাশা!
এক দিন সুখ আসবেই।
বেদনার কালো মেঘ গুলো একদিন যাবে কেটে।
প্রানের সব স্পন্দনে সুখকর স্বপ্ন হয়ে দোলা দেবে।
দুঃস্বপ্নের ঘোর কেটে যাবে।
কেটে যাবে সুনামির ভয়াল রাত্রি।
কেটে যাবে বিভীষিকাময় ভয়ার্ত ক্ষণগুলী।

একদিন ভালোবাসা এসে জড়িয়ে নেবে।
প্রানের মায়ায় বুকেতে ঠাই দেবে।
সব হায়ানার চিৎকার পেছনে ফেলে
ভালোবাসাময় ভালোবাসায় কাছে টেনে নেবে।
বিধি বড় দেরি যেন না হয় জেনো!
অপেক্ষার প্রত্যাশায়
প্রান পাখি যেন উড়ে চলে না যায়!
ছোট এ জীবনে এতটুকু চাওয়া।



"লজ্জা"
হে আমার সুপ্রিয় নতুন প্রজন্ম,
কী বলে করবো সম্বোধন,
চল্লিশটি বছর তো গেল এই ভাবনায়
মনে তো পড়ে না -
কখনও লিখেছি তোমাদের
তাই আজ ভারী লজ্জা, তবুও লিখলাম
কোথা থেকে ছুটে এলো বিজয়ের মাস।

স্রোতের পাহাড়ে তৃষিত বক্ষ ছুয়ে
ঝাঁপিয়ে পড়ে ঝরণার অনুতে ভিজে
কঠিন পাথর ভেঙ্গে স্বাধীন করেছি দেশ
মানচিত্রখানা দিয়েছিলাম তোমাদের হাতে।

সাভার স্মৃতিসৌধে চূর্ণ হৃদয়দের কবরে
অশ্রুজলে উপুর হয়ে থাকি লজ্জায়
স্বাধীনতাটাকে দেখার সাধ ছিল বড়
সর্বনাশা আগুনের আনন্দাশ্রু সংবরণে।

আমার ধূসর স্মৃতিগুলো জেগে ওঠেছে
যদি দেখা হতো জগৎকর্তার সাথে
জড়িয়ে ধরতাম তাঁর চরণ দু'খানা
সেবা দিয়ে বলতাম মনের দু'টি কথা।

হে আমার ধর্ম সন্তান,
আমি মুক্তিযুদ্ধ করে শহীদ হয়েছি,
মনে করো না বিশাল কিছু করে ফেলেছি
যতটুকু করেছি, চিরকাল গর্ববোধ করবে
তোমার সামনে দীর্ঘ বিপ্লবের পথ
তোমাকেও হতে হবে বিপ্লবী
সবসময় থাকবে ন্যায্য দাবীর পাশে।

এমাসে আর একবার পাশে
এসে দাঁড়াবে প্রিয়তম বর্বরেরা
খিটিরমিটির করেও জ্বালা নিয়ে থাকি
মনের আগুনে সিক্ত হয়েও কবুল করি
আমার তো আর কোনও জো নেই।

এচিঠি পেলে কি না তা জানা হল না।



"ভালোবাসার বেনোজলে"
রাতের এই মধ্যক্ষণে
রাতের শরীরকে বিদীর্ণ করে
বসে আছি একা
নীড়হারা পাখীর মত,
জানালার ওপারে চাঁদ ডুবে যায়
রেখে যায় বেদনার শিউলী যত
তারা মন্থিত হতে হতে ভেসে যায়
সঞ্চিত জলের স্রোতে
ছোট ছোট বোধের পানসি ডুবে যায়
বুকে নিয়ে কষ্ট থোকা থোকা,
তৃষিত এ মনের দেহে
রেখে যায় স্মৃতির শিশির
বোধের অণুতে আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে
জল হই, প্রণয়ের জল
তোমাকে ভিজিয়ে দিতে
হৃদয়ের উষর মরুতে।



"ধেই ধেই করে পার হয়ে যায় অমূল্য সব সময়"
(/ প্রতীক্ষা)

সময় পেরিয়ে যাচ্ছে,
একটি একটি করে ফুরিয়ে আসছে জীবনের দিনগুলো,
বহু প্রতীক্ষিত অমূল্য দিন।
ডাক্তারবাবু বলেছিলেন, আর খুব বেশি দেরী নেই,
বড়জোর দুই কি তিনমাস।
বড্ড কঠিন শুনিয়েছিল কথাগুলো,
কিসের কথা বলছিলেন ডাক্তারবাবু?
তবে কি আমার জীবন ফুরিয়ে এসেছে?
মরন ঘটছে আমার স্বপ্নের?
তাইবা কি করে হয়?
বহু সাধ যে অপূর্ণ রয়ে গেছে, অপূর্ণ রয়ে গেছে বহুস্বপ্ন।
আজকাল প্রতিটি মিনিটে, প্রতিটি সেকেন্ডে সবাই মনে করিয়ে দেয়,
তোমার সময় শেষ হয়ে এসেছে।
ওদের ঠাণ্ডা শীতল চোখে জেগে ওঠে অর্থহীন সহানুভূতি।
আবারও ভাবি এইতো বেশ, এইতো ভাল।
কেউ বুঝবেনা, কেউ জানবেনা,
হঠাৎই একদিন রওনা দেব নিজের পথে।
প্রতিদিন গোধূলিলগ্নে দখিনা বারান্দায় এশ দাঁড়াই আমি,
ভাবি, দিনের এই অন্তিমলগ্নের মতই একদিন হারিয়ে যাব আমি,
আর ভাবি, সময় পেরিয়ে যাচ্ছে,
একটি একটি করে ফুরিয়ে আসছে জীবনের দিনগুলো,
বহু প্রতীক্ষিত অমূল্য দিন।



"স্পর্শ- ৩৩৩৩ খৃষ্টপূর্বাব্দ"
আমার এতটুকু ভাবতেই ভালো লাগবে
কেউ একজন আমাকে প্রতি নিয়ত ভাবছে ।
নাইবা ভাবুক
সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমাকে ভাববে ।

আমার আঙ্গুলগুলো নিরাবরণ হয়ে গেলে
তার হাতের অংগুটি এগিয়ে এসে
আমার অনামিকায় আবরণ দেবে ।
আমার চোখে যখন পানি ছাড়া কিছু থাকবে না
তখন সে সামান্য হলেও
মুখে হাসি ফোটাবে ।

আমি যখন নিঃস্ব হবো
প্রতারিত হতে হতে আত্নবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবো
তখন সে আমায় সঙ্গ দেবে ।
চোখের পাপড়ি বন্ধ করতেই যখন
ভয়ানক দুঃস্বপ্নের ছায়া চোখে নামবে
তখন আমার চোখের কোনে
সামান্য সুস্বপ্ন এঁকে দেবে ।

আমার যখন অমানিশা রাত্রি কাটতে চাইবে না
তখন সে ভোরের সূর্য হয়ে
আমায় শুভ্র ভোর উপহার দেবে ।
যখন বুকের ভেতর কষ্টেরা জমাট বাঁধবে
ঠিক বরফের মতো
তখন সে বরফ থেকে পানি ঝরাবে ।

যখন পৃথিবীর সব অসৌন্দর্য,
অসভ্যতা ও কুরূপ দেখে দেখে
আমার দু চোখ অন্ধ হবে
তখন সে আমার চোখে আলো হবে ।
জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণাগ্রস্থ হয়ে যখন
রেললাইনে হাটবো
যাতে রেলপিষ্ট হয়ে মারা যাই
তখন সে আমায় আত্নহত্যা থেকে বাঁচাবে ।

আমার মৃত্যুর পর যদি
আমাকে কবর দেয়ার উপযুক্ত জায়গা না মেলে
তখন সে তার বক্ষ পিন্জিরায় আবদ্ধ
হৃদ জমিনে আমাকে কবর দেবে ।
সযতনে সে কবরের উপর
কয়েক মুঠো ভালোবাসা ছড়িয়ে দেবে।

৩৩৩ খৃষ্টাব্দ
তোমার শিয়রে জেগে আছে চাঁদ
রাত গভীর হলে দেখে নিও
মহুয়া বনের মাতাল পবনে
ইশারায় তাকে ডেকে নিও ।

রাত গভীরের নিপতিত দেহ
মন্থিত হলে বুঝে নিও
আসবে সে বুঝি সহসা তোমাতে
প্রণয়ের জলে ঝেঁপে নিও ।

রাত গভীরের প্রণয়ের জলে
ভিজে গেলে দেহ ঢেকে নিও
প্রণয় প্রাণের সৃজিত দেহটি
উষ্ণ আবেগে মেপে নিও ।


"কালাতিপাত"
সেই কবে শিশির স্নাত কারো পায়ের স্পর্শ
বেধ করেছিল আমার কর্ণকুহর।
মনের স্পন্দনে-
পালিত ভালবাসা জেগে উঠেছিল
দীর্ঘ বিরতির পর।

একসময় বৃষ্টির স্পর্শে আবেগতাড়িত হত মন।
এখন প্রায়ই শিশিরের কোমল স্পর্শে
স্পন্দিত হয় হৃদয়।
তারপর ও শূন্যতা-
কি যেন নেই, কার যেন স্পর্শের অভাব।
কবেকার মনোহর মনে আজ হেমন্তের কুয়াশার চাদর।

মর্মর শব্দে হেমন্তের ঝরা পাতার সাথে
প্রতিদিন আমার শরীর হেঁটে যায়
গাছের মরণ পাতার সাথে হয় বন্ধুত্ব।
তবুও কেহ ফিরে নাহি চায়,
দীর্ঘশ্বাস ফেলে এখনও চমকে তাকাই কারও অপেক্ষায়।

সে সব শুধু আমার ছিল আয়োজন
ছিল মনের আত্মসমর্পণ।


"অমানিশা"
দুর্বৃত্ত প্রেম ভাসিয়ে নিয়ে যায়
সুতানলি সাপের মতন গলায় ঝুলে থাকে।
প্রাপ্তিতে ঋণ বাড়ে, বন্ধনে অটুট
স্বার্থের বীজ বোপিত হয় কামনার রংয়ে।

দ্রুত কেটে যায় স্বপ্নালু প্রহর
ঘোর ভাঙায় প্রতিবেশী
কাঁটাতারের বেড়া তুলে
সীমানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।

পড়শিকে ডেকে বলে,
"দেখো ঐটা আমার, এটাও!"
কেউ ঈর্ষায় পোড়ে, কেউ নিশ্চুপ!
অবলা নয় সে
এবার ঠিক কাজটিই করুক।

দানাপানি নেই সাপুড়ের ঝাঁপি
বিষদাঁত ভেঙ্গেছে কবেই
তবুও ঐন্দ্রজালিক ফণা তোলে
ফোঁস ফাঁস।
লালা গড়িয়ে পড়ে। প্রতিশোধের দাঁত
কামড়ে খায় গোটা অস্তিত্ব।

নির্জলা সত্য জ্বলছে সতর্ক প্রহরায়
কারো কোন ক্ষতি না করেও
আজ সে কাঠগড়ায়।



"জানি, আমি আজো পারিনি কারো প্রিয় হতে"
হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে দিগন্তজুড়ে,
যে শীতল হলদে হাওয়ারা ভেসে বেড়ায়-
সেতো আমারই আকাঙ্খিত আরাধনা।

রাতভর জোছনার আলো বিলিয়ে দেয়ার পর-
রাত্রিশেষের অর্ধমৃত চাঁদটাকেও
সীমাহীন আবেগে আমি আপন করে নেই।

হিমাদ্র শীতের কুয়াশাঝরা ভোরে,
ঘাসের গালিচায় নগ্ন পায়ে রোজ হেঁটে বেড়াই-
সেতো শীতকে ভালোবাসি বলেই।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড উত্তাপে ক্রোধান্বিত সূর্যটা যখন
অগ্নিভষ্ম করতে চায় শান্ত পৃথিবীটাকে,
ঠিক তখনই করি আমি সূর্যের সাথে আলিঙ্গণ।

উত্তাল সাগরের ভয়ানক গর্জনে
সকলেই যখন ছোটে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে,
আমিই তখন করি শুধু সমুদ্রস্নান।

জীবনের এতটা বসন্ত পেরিয়ে এলাম।
কত দুঃস্বপ্ন আর দুর্জনকেও প্রিয় করে নিলাম
অথচ আজো আমি পারিনি কারো প্রিয় হতে !

[আমার চোখ নেই, আমার অশ্রু নেই]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:০৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: এ যে দেখি মহাকাব্য সম্ভার এক সাথে
পড়া বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যপার ।
তাই এখন নিয়ে গেলাম প্রিয়তে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.