নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি \'স্মৃতিকাতরতা \' নামক ভীষণ এক রোগগ্রস্ত, সেই সাথে বিষাদগ্রস্থ মানুষ। আমার চিকিৎসার প্রয়োজন।

স্বপ্নবাজ সৌরভ

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......

স্বপ্নবাজ সৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পটা কাল্পনিক

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১০

মেয়েটাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুড়ো মানুষটি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
আম্মা বসো। কিশোরী মেয়েটি অবলীলায়
বসে পড়লো সিটে, সংকোচহীন... যেনো এটাই তার প্রাপ্য ছিলো।
উপেক্ষা করলো বয়স্ক দাঁড়িয়ালা বাবার বয়সী মানুষটাকে। বলা যেত,
না চাচা আপনিই বসুন।কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে ধন্যবাদ জানানো হয়ত
বেমানান...মিউজিকের তাল কেটে যায়!

আমি ঠিক পেছনের সিটে। বুড়ো মানুষটিকে বসতে বললাম।
তিনি বললেন, 'না বাবা থাক...তুমি বসো, আমি সামনেই নেমে যাবো'।
আমি আর মাথা না ঘামিয়ে ঝাল
মাখানো চিনাবাদাম খাওয়ায় মন দিলাম।
নিয়ন আলোয় ঢাকা শহর... একটার পর
একটা ল্যাম্পপোস্ট পেরিয়ে যাচ্ছি,
পাঁচটাকার চিনাবাদাম শেষ হওয়ার পথে।

বুড়ো মানুষটা দাঁড়িয়েই আছেন। ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়েটির
কানে ইয়ারফোন... প্রতিটি তাল ধরার চেষ্টারত! আজকালকার হিন্দি মিউজিক গুলো 'সেইরকম জোস'।

আমি বললাম, চাচা বসুন! বুড়ো মানুষটির
একই উত্তর। সামনেই নেমে যাবে...
কপাল বেয়ে ঘাম গড়িয়ে দাঁড়ির অগোচরে মুখ ঢাকে...
হয়ত লজ্জায়।

গন্তব্যের বেশ কিছুটা আগেই আমি নেমে পড়লাম। ঝিরিঝিরি কয়েক
ফোটা বৃষ্টি...খারাপ না। নিয়ন আলোয় আলোকিত রাস্তা... আমার যান্ত্রিক
শহর... কখনো আবেগময়।

আমি হাঁটছি...হাঁটাটা জরুরী,মেদ জমেছে। এই বয়সে বুড়িয়ে গেলে চলবে না, মাজা শক্ত করে দাঁড়াতে হবে... সন্তানতুল্যদের বসতে দিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থাকতে শিখতে হবে।

আমি বরং হাঁটি... হাঁটতে হাঁটতে ফেসবুকের জন্য স্ট্যাটাস রেডি করি।
বুড়ো মানুষটা হয়তো এখনো দাঁড়িয়ে আছে... হয়ত সামনেই নেমে যাবেন। মেয়েটার কানে হেডফোন...চমত্‍কার চমত্‍কার গান একের পর এক বেজেই চলেছে। হয়ত মুঠোফোন সংসার সাজাচ্ছে... সংসার ভাঙ্গছে। টিভি, ফ্রীজ, পিসি, আলমারী, এটাচড বাথরুম...গোলাপী রংয়ের বেডসীট, আকাশী বেডরুম... ছোট বাবু, বাবুর বাবার লাল টাই, চকচকে জুতো... হাতাকাটা মেক্সি, ড্রেসিং টেবিল, ওয়াশিং মেশিন, কিচেন,সোফা.... সুন্দর পরিপাটি সংসার। যে সংসারে সব ই থাকবে, শুধু বাবার বয়সী কোন বাবা থাকবে না।

বিঃদ্রঃ গল্পটা কাল্পনিক নয় ।

উংসর্গঃ সকল বাবাদের যাঁরা সন্তানসমতুল্যদের বসিয়ে রেখে আজীবন ঘাম ঝড়িয়ে গেলেন।


আসুন এবার দৃশ্যপট পাল্টে ফেলি। যে দৃশ্য গুলো অহরহ ঘটে ,কিন্তু আমরা দেখিনা কিংবা লিখিনা।


"বুড়ো মানুষটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কানে হেডফোন লাগানো মেয়েটি , কান থেকে হেডফোন খুলে রেখে বললো, চাচা বসুন।
বুড়ো মানুষটি বসতে চাইনা। মেয়ের বয়সী মেয়ে কে উঠিয়ে তিনি কিভাবে বসেন?
নাছোড়বান্দা মেয়েটি দাঁড়িয়ে পড়ে। বাবার বয়সী মাসুষটা কে সে কিভাবে দাঁড়িয়ে রাখবে ?
অতঃপর বুড়ো মানুষ টি বসে পড়েন সিটে। বসে মেয়েটিকে বলেন, 'মা .... তোমার হাতের ব্যাগটি আমার কাছে দাও।'
মেয়েটি ব্যাগ টি দিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে দেয়। তার খুব পছন্দের গান বাজছে ... "আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,. তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো--. নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে ॥"
মেয়েটির চোখ ভিজে উঠে। যারা এই দৃশ্যটা দেখেছে তাদের অজান্তেই চোখ ছলছল করে। নোনতা জলের কান্না। সব কান্নার জলের স্বাদই তো এক ‘নোনতা’..... কিন্তু এই নোনতা জল কে আমরা বলি আনন্দজল!

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

মিথী_মারজান বলেছেন: বি:দ্র: এর লাইনটাকেই আমি শিরোনাম হিসাবে নিলাম।
গল্পটা আসলেই কাল্পনিক নয়।
কল্পনায় যারা ভাসে তারা ইয়ারফোনে গানে উন্মাতাল।আর যারা ভবিষ্যতে সন্তানতুল্যদের জায়গা ছেড়ে দেবার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়, বাস্তবিক জ্ঞান সম্পন্ন তো তারাই।
খানিকটা ভাববার মত চমৎকার একটি থিম।
বোধোদয় হোক আমাদের সবার।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: প্রথমত এটা গল্প নয়।
গল্পটা আসলেই কাল্পনিক নয়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: ভাল লেগেছে।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন

৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

ওমেরা বলেছেন: দিন যায় দিন আসে একটা জীবন !
খুব সুন্দর লিখা ।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১২

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ

৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কাল্পনিক নয় বাস্তব।
চাবকানো দরকার এই সকল
হাইব্রিড পোলা-মা্ইয়াদের!!

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১৩

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: গল্পটা আসলেই কাল্পনিক নয়।
অসংখ্য ধন্যবাদ

৬| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

অচেনা হৃদি বলেছেন: |-) গল্পটি ইঙ্গিতময় ।

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: প্রথমত এটা গল্প নয়।
কাউকে ইঙ্গিত করে কিছু বলিনি। তারপরেও আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। :(

৭| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬

সোহানখুলনা বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো এই রকম একটি চিত্র তুলে ধরার জন্য

০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:২৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
আসুন এবার দৃশ্যপট পাল্টে ফেলি। যে দৃশ্য গুলো অহরহ ঘটে ,কিন্তু আমরা দেখিনা কিংবা লিখিনা।

কিছু অংশ জুড়ে দিয়েছি। পুনরায় পড়তে পারেন।

৮| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: নিউ জেনারেশনের খন্ড চিত্র...

০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:২৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
আসুন এবার দৃশ্যপট পাল্টে ফেলি। যে দৃশ্য গুলো অহরহ ঘটে ,কিন্তু আমরা দেখিনা কিংবা লিখিনা।

কিছু অংশ জুড়ে দিয়েছি। পুনরায় পড়তে পারেন।

৯| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৭

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: চমৎকার!
এ বিষয়ে অমত কার?

০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ধন্যবাদ।
আসুন এবার দৃশ্যপট পাল্টে ফেলি। যে দৃশ্য গুলো অহরহ ঘটে ,কিন্তু আমরা দেখিনা কিংবা লিখিনা।

কিছু অংশ জুড়ে দিয়েছি। পুনরায় পড়তে পারেন।

১০| ০৫ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:০১

কানিজ রিনা বলেছেন: এইসব বাবারা ছোটকাল থেকে ইহাই শিক্ষা
পেয়েছিল মেয়ে মানুষ দেখলে সীট ছেড়ে
দিতে হয়। কিন্তু ওইটা মেয়ে নয় ওইটা একটা
বান্দর মেয়ে, আমি হলে ওকে চাপঁকাইয়া
কান ফাটায় দিতাম। যতসব গরুর বাঁচ্চা
ঘরে কোনও শিক্ষা পায়না। গরুর বাচ্চাগুল
যখন ঘরে শিক্ষা পায়না ওদের বাহিরে উচিৎ
শিক্ষা দেওয়া দরকার। ধন্যবাদ।

০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: এগুলো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা আপু। এগুলো সেভাবে গ্রহণ না করায় ভালো।
আসুন এবার দৃশ্যপট পাল্টে ফেলি। যে দৃশ্য গুলো অহরহ ঘটে ,কিন্তু আমরা দেখিনা কিংবা লিখিনা।

"বুড়ো মানুষটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কানে হেডফোন লাগানো মেয়েটি , কান থেকে হেডফোন খুলে রেখে বললো, চাচা বসুন।
বুড়ো মানুষটি বসতে চাইনা। মেয়ের বয়সী মেয়ে কে উঠিয়ে তিনি কিভাবে বসেন?
নাছোড়বান্দা মেয়েটি দাঁড়িয়ে পড়ে। বাবার বয়সী মাসুষটা কে সে কিভাবে দাঁড়িয়ে রাখবে ?
অতঃপর বুড়ো মানুষ টি বসে পড়েন সিটে। বসে মেয়েটিকে বলেন, 'মা .... তোমার হাতের ব্যাগটি আমার কাছে দাও।'
মেয়েটি ব্যাগ টি দিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে দেয়। তার খুব পছন্দের গান ... "আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,. তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো--. নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে ॥"
মেয়েটির চোখ ভিজে উঠে। যারা এই দৃশ্যটা দেখেছে তাদের অজান্তেই চোখ ছলছল করে। নোনতা জলের কান্না। সব কান্নার জলের স্বাদই তো এক ‘নোনতা’..... কিন্তু এই নোনতা জল কে আমরা বলি আনন্দজল!

১১| ০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

মিথী_মারজান বলেছেন: বাহ্!
একই ঘটনার ভিন্ন রূপটাতো আরো বেশি সুন্দর!
বিপরীত বৈচিত্রের শৈল্পিক খেলায় আপনাকে +++

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আমাদের সুন্দর রূপ সবসময়ই সুন্দর আপু।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

১২| ০৫ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুগ্ধতা একরাশ গেথে রইল অনন্তের অসীমে - - -

ভাবনায় অভিবাদন কবি!

+++

০৬ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৮:৪২

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালোবাসা সমেত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.