নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নির্ভাণা

নির্ভাণা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈদ উল-আযহ-র একাল সেকাল

২১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:৪১

ঈদ উল-আযহ-র আমেজ টা বরাবরই থাকতো একটু অন্য রকম। ছোট বেলার সৃতি দিয়েই শুরু করি...... এই ঈদ-এ চাঁদ দেখার তাড়া নেই, এই ঈদ-এ নাকি ১০ দিন আগে চাঁদ উঠে। তাড়া আছে...... কুরবানির জন্য কেনা পশু টা কে দেখার, কে আগে দেখবে??? হোক সেটা রাত অথবা দিন, রাস্তার দিকে অপলক চেয়ে থাকা। এই ঈদে নতুন জামা, ম্যাচিং ম্যাচিং কত কি, সব বাদ, বাবা মা কেন জানি খুব বৈষয়িক ভাবে এই ঈদ টি পালন করতেন না, তাই নতুন জামা আর আনুষঙ্গিক জিনিষ গুলোর জন্য কখনই মন খারাপ হয়নি। ছোট বেলায় কতটা অবাক হয়ে, ইব্রাহীম (আঃ)-এর ত্যাগের গল্পটি শুনেছিলাম আর ছোট্ট মাথায় যতটুকু আঁটে, কুরবানির তাৎপর্য বুঝেছিলাম, সেটা কাল টের পেয়েছি, ছোট্ট দুই জোড়া প্রবল কৌতূহলি চোখ দেখে।
গরুটা কে পাতা খওয়া তে হবে...... সেটাও যেন এক বিশাল বড় ডিউটি, সেটার জন্যও লাইন ধরো, কে কার আগে খাওয়াবে!!!! তার উপরে মুরুব্বিদের সাবধান বানী, ‘এই গুঁতা দিবে কিন্তু, বেশি কাছে যাইস না’।
ছোট বেলা টা কেটেছে বেশ বড় এক যৌথ পরিবারে, জাগাটা ছিল কিছুটা পাড়া মহল্লা টাইপ, তাই হেল্পিং হ্যান্ড এর অভাব ছিলোনা, তারপরও এতো মানুষের ভীরে একটা যায়গার রিকুইজেসন তো থাকাই চাই, কোমর বেঁধে সবার সাথে কাজে নামতে হবে না......
একবার ঘটল এক ঘটনা, ঠিক ঈদের আগের রাতে গরু চুরি!!!! পাড়ার সব কাকু মামু দের যৌথ অভিযান চলল, চোর বেটা প্রায় পার করে ফেলেছিলই গরুটাকে, অল্পের জন্য পারেনি, পাড়ার এক স্থানীয় কাকু ধরে ফেলেছিল খপ করে।

আমাদের সময়টায়, গরুর আকার, প্রকার, নিয়ে আলোচনাটা একটু কমই হতো। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে, এই প্রতিযোগিতা যেন এখন তুঙ্গে। এতো টাকার গরু...... তো সেই গরুর সাথে হয়ে যাক একটা সেলফই। ঘরোয়া টেবিল গুলীতেও আলোচনার ঝড়, ‘এতো টাকায় এই সাইজ এর গরু কিন্না জিত্তা আইসি, আর পাশের বাড়ির এরা কি গরু কিনসে... লস খাইয়্যা আইসে’। আবার এমন মন্তব্য কানে আসে, ‘মাত্র একভাগ??? কুরবানিটা-তো আসলে মানুষ কে দান করার উদ্দেশে দেওয়া......আমরা তো এক গরু দেই আর গোস্ত আনি এক পাতিল, বাকি সব বিলাই’ মন্তব্য টি করার আগে বেচারি নিজেই জানে না, এই এক ভাগ টাই ওই ব্যক্তির জন্য কতটা কষ্ট সাধ্য।
আবার মহিলা মহলে শোনা যায় আর এক গুনগুন, ‘ওই বাড়ির সাকিবের শ্বশুর বাড়ি থেকে না পুরা আস্ত একটা খাসী (অথবা গরুর রান) পাঠাইসে’।
‘বিয়ের পরে প্রথম ঈদ মেয়ের বাড়ি থেকে একটা খাসিও পাঠাইতে পারলনা??? কি ছোটলোক রে বাবা’।
কেও কেও আবার জাস্টিফাই করার উদ্দেশে বলেন, ‘না না, ইসলামে না থাকলেও, সামাজিক নিয়ম তো... দেওয়া উচিত ছিল। দিলে মেয়েটার মুখ উঁচা হইত’।

এতো আলাপ আলোচনার দোলাচলে, আমরা কুরবানির আসল উদ্দেশ্য এবং শিক্ষা থেকে হারিয়ে যাচ্ছি না তো??? পশুর আকার, প্রকার, দাম, গোস্তের পরিমাণ, কার শ্বশুর বাড়ি থেকে রান পাঠাল, নাকি থান পাঠাল, নাকি আস্ত খাসী পাঠাল, এ সব কিছু যে মহান স্রষ্টার কাছে খুবই ঠুনকো, সেটা আমরা ভুলে যাচ্ছি না তো???
‘আমার নামায, আমার ইবাদাত, আমার জীবন, আমার মৃত্যু আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের জন্য।’ (সূরাঃ আল আন’আম, আয়াতঃ ১৬২)
এই সূত্রটি মনের মাঝে গেঁথে নেওয়াটা কি আমাদের জন্য খুব কঠিন???

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: দিন বদলায়। যুগ বদলায়।
মানূষও বদলায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.