নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘাসফড়িং

আমি ময়ূরাক্ষী

তবু মনে রেখো যদি দূরে যাই চলে । যদি পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে যায় নবপ্রেমজালে । যদি থাকি কাছাকাছি, দেখিতে না পাও ছায়ার মতন আছি না আছি– তবু মনে রেখ

আমি ময়ূরাক্ষী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ জন্মদিন হুমায়ুন আহমেদ -শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বেঁচে থাকুন চিরকাল কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়ে

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪২



তার ডাক নাম হিমু। ভালো নাম হিমালয়। বাবা আগ্রহ করে হিমালয় নাম রেখেছিলেন যেন বড় হয়ে সে হিমালয়ের মত হয় - বিশাল ও বিস্তৃত, কিন্তু ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নয়। হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। ইচ্ছে করলে তিনি ছেলের নাম সমুদ্র রাখতে পারতেন। সমুদ্র বিশাল এবং বিস্তৃত। সমুদ্রকে হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। তার চেয়েও বড় কথা, সমুদ্রে আকাশের ছায়া পড়ে। কিন্তু তিনি সমুদ্র নাম না রেখে রাখলেন হিমালয়। কঠিন মৌ পর্বতমালা, যার গায়ে আকাশের ছায়া পড়ে না ঠিকই কিন্তু সে নিজেই আকাশ স্পর্শ করতে চায়।

--- দরজার ওপাশে - হুমায়ূন আহমেদ




আকাশের চাইতে বেশি কিছু ছুঁয়েছিলেন তিনি, কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়।তার মত জনপ্রিয়তা কোটি বছরেও আর কোনো কথাসাহিত্যিক পাবে কিনা এই বাংলায়, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে।বিংশ শতাব্দীর বাঙ্গালী জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মাঝে অন্যতম তিনি।উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, গান প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার সফলতা।নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনাতেও ছিল তার সমদক্ষতা। তিনি হিমালয়,আমাদের অতি প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ।



১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আজ ১৩ই নভেম্বর, তার জন্মদিন।





পরিবার ও হুমায়ুন আহমেদ

বাবা ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে পিরোজপুরে এসডিপিও হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ হন তিনি।বাবারও ছিল ছেলের মতনই লেখালিখির নেশা। বগুড়া থাকাকালিন সময়ে তারও একটি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছিলো। গ্রন্থের নাম "দ্বীপ নেভা যার ঘরে"।



ছোটভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল দেশের স্বনামধন্য শিক্ষক এবং কথাসাহিত্যিক; সর্বকনিষ্ঠ ভাই আহসান হাবীব একজন রম্য সাহিত্যিক এবং কার্টুনিস্ট।



ছোটবেলায় হুমায়ূন আহমেদের নাম রাখা হয়েছিল ছিল শামসুর রহমান; ডাকনাম কাজল। তাঁর পিতা নিজের নাম ফয়জুর রহমানের সাথে মিল রেখে ছেলের নাম রেখেছিলেন শামসুর রহমান। পরবর্তীতে তিনি নিজেই নাম পরিবর্তন করে ‌হুমায়ূন আহমেদ রাখেন। হুমায়ূন আহমেদের ভাষায়, তাঁর পিতা ছেলে-মেয়েদের নাম পরিবর্তন করতে পছন্দ করতেন। ১৯৬২-৬৪ সালে চট্টগ্রামে থাকাকালে হুমায়ুন আহমেদের নাম ছিল বাচ্চু। তাঁর ছোট ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম আগে ছিল বাবুল এবং ছোটবোন সুফিয়ার নাম ছিল শেফালি।



বিয়ে, সন্তান ও সংসার

হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রীর নাম গুলতেকিন আহমেদ। তাঁদের বিয়ে হয় ১৯৭৩ সালে। এই দম্পতির তিন মেয়ে এবং দুই ছেলে। তিন মেয়ের নাম বিপাশা আহমেদ, নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ এবং ছেলের নাম নুহাশ আহমেদ। আরেকটি ছেলে অকালে মারা যায়।



২০০৫-এ গুলতেকিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় এবং ঐ বছরই তিনি নাটক-চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাওনকে বিয়ে করেন। এ ঘরে তাদের তিন ছেলে-মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। প্রথম কন্যা সন্তানটি মারা যায়। দুই ছেলের নাম নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন।





শিক্ষা ও কর্মজীবন

তিনি বগুড়া জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন এবং রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে সব গ্রুপে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি পরে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিজ্ঞানে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে পড়াশুনা করেন এবং প্রথম শ্রেণীতে বিএসসি (সম্মান) ও এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ৫৬৪ নং কক্ষে তার ছাত্রজীবন অতিবাহিত করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পলিমার রসায়ন বিষয়ে গবেষণা করে পিএইচডি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।





সাহিত্যকৃতি

নন্দিত নরকে। ছাত্র জীবনেই এ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যজীবনের শুরু। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে উপন্যাসটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭২-এ কবি-সাহিত্যিক আহমেদ ছফার উদ্যোগে উপন্যাসটি খান ব্রাদার্স কর্তৃক গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রখ্যাত বাঙলা ভাষাশাস্ত্র পণ্ডিত আহমেদ শরীফ স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে এ গ্রন্থটির ভূমিকা লিখে দিলে বাংলাদেশের সাহিত্যামোদী মহলে কৌতূহল সৃষ্টি হয়।



শঙ্খনীল কারাগার তাঁর ২য় গ্রন্থ। এ পর্যন্ত (২০০৯) তিনি দুই শতাধিক গল্পগ্রন্থ ও উপন্যাস প্রকাশনা করেছেন। এছাড়া জোছনা ও জননীর গল্প আরেকটি বড় মাপের রচনা যা কি-না ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে রচিত। তবে সাধারণত তিনি সমসাময়িক ঘটনাবলী নিয়ে লিখে থাকেন। তাঁর লেখা শেষ উপন্যাস দেয়াল।





ব্যক্তিজীবনে হুমায়ুন আহমেদ

জীবনের শেষভাগে ধানমণ্ডির ৩/এ রোডে নির্মিত দখিন হাওয়া এ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্লাটে তিনি বসবাস করতেন। জীবনের শেষ এক যুগ ঢাকার অদূরে গাজীপুরের গ্রামাঞ্চলে ৯০ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত বাগান বাড়ী নুহাশ পল্লীতে থাকতে ভালোবাসতেন তিনি।নাটক সিনেমায় তার রচিত অনেকগুলো গান বেশ জনপ্রিয়।তিনি ছবি আঁকতেও ভালোবাসতেন।





চলচ্চিত্র নির্মাণ

টেলিভিশনের জন্য একের পর এক দর্শক-নন্দিত নাটক রচনার পর হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তাঁর পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র আগুনের পরশমণি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে শ্রাবণ মেঘের দিন ও ২০০১ সালে দুই দুয়ারী চলচ্চিত্র দুটি প্রথম শ্রেনীর দর্শকদের কাছে দারুন গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মান করেন চন্দ্রকথা নামে একটি চলচ্চিত্র। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মান করেন শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রটি। এটি ২০০৬ সালে "সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র" বিভাগে একাডেমী পুরস্কার এর জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এছাড়াও চলচ্চিত্রটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। তাঁর সব চলচ্চিত্রে তিনি নিজে গান রচনা করেন। ২০০৮-এ আমার আছে জল চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে তার পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ঘেটুপুত্র কমলা (চলচ্চিত্র)।

এছাড়াও হুমায়ূন আহমেদের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে ২০০৬ সালে মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত দূরত্ব, বেলাল আহমেদ পরিচালিত নন্দিত নরকে এবং আবু সাইদ পরিচালিত নিরন্তর। ২০০৭-এ শাহ আলম কিরণ পরিচালিত সাজঘর এবং তৌকির আহমেদ নির্মাণ করেন বহুল আলোচিত চলচ্চিত্র দারুচিনি দ্বীপ।



টিভি নাটক

১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য নাটক রচনা শুরু করেন তিনি। নাটকে তার জনপ্রিয়তা আকাশ চুম্বি।

তার অন্যতম ধারাবাহিক নাটক- এইসব দিন রাত্রি, বহুব্রীহি, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাত, অয়োময়, আজ রবিবার, তারা তিনজন, আমরা তিনজন, মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন শুভেচ্ছার স্বাগতম।



পুরস্কার

বাংলা একাডেমী পুরস্কার ১৯৮১

শিশু একাডেমী পুরস্কার

একুশে পদক ১৯৯৪

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (শ্রেষ্ঠ কাহিনী ১৯৯৪, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ১৯৯৪, শ্রেষ্ঠ সংলাপ ১৯৯৪ )

লেখক শিবির পুরস্কার ১৯৭৩)

মাইকেল মধুসুদন পদক (১৯৮৭)

বাচশাস পুরস্কার (১৯৮৮)

হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার ( ১৯৯০)

জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদক



নির্বাচিত উপন্যাস

নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, এইসব দিনরাত্রি, জোছনা ও জননীর

গল্প, মন্দ্রসপ্তক, দূরে কোথাও, সৌরভ, নি, ফেরা, কৃষ্ণপক্ষ, সাজঘর, বাসর, গৌরীপুর জাংশান, নৃপতি (নাটক), বহুব্রীহি, আশাবরি, দারুচিনি দ্বীপ , শুভ্র, নক্ষত্রের রাত, নিশীথিনী, আমার আছে জল, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, আকাশ ভরা মেঘ, মহাপুরুষ, শূন্য, ওমেগা পয়েন্ট, ইমা, আমি এবং আমরা, কে কথা কয়, অমানুষ(অনুবাদ), অপেক্ষা, মেঘ বলেছে যাবো যাবো, পেন্সিলে আঁকা পরী, অয়োময়, কুটু ‍মিয়া, দ্বিতীয় মানব, ইস্টিশন, মধ্যাহ্ন (২ খণ্ড একত্রে), মাতাল হাওয়া (২০১০), শুভ্র গেছে বনে (২০১০), ম্যাজিক মুনসি', আমরা কেউ বাসায় নেই (২০১২), মেঘের ওপারে বাড়ি (২০১২), এপিটাফ।





হিমু সংক্রান্ত উপন্যাস

ময়ুরাক্ষী, দরজার ওপাশে, হিমু, হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম, এবং হিমু, পারাপার, হিমুর রূপালী রাত্রি, একজন হিমু কয়েকটি ঝিঝি পোকা, হিমুর দ্বিতীয় প্রহর, তোমাদের এই নগরে, সে আসে ধীরে, আঙ্গুল কাটা জগলু, হিমু মামা, হলুদ হিমু কালো র‌্যাব, আজ হিমুর বিয়ে, হিমু রিমান্ডে, হিমুর মধ্যদুপুর, চলে যায় বসন্তের দিন, হিমুর একান্ত সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য, হিমু এবং হার্ভার্ড Ph.D.বল্টুভাই





মিসির আলি সংক্রান্ত উপন্যাস

দেবী, নিশিথিনী, নিষাদ, অন্যভুবন, বৃহন্নলা, ভয়, বিপদ, অনীশ, মিসির আলির অমিমাংসিত রহস্য, আমি এবং আমরা, তন্দ্রাবিলাস, আমিই মিসির আলি, বাঘবন্দী মিসির আলি, কহেন কবি কালিদাস, হরতন ইশকাপন, মিসির আলির চশমা(২০০৮), মিসির আলি!আপনি কোথায়?(২০০৯), মিসির আলি আনসলভ(২০১০), যখন নামিবে আঁধার(২০১২)



আত্মজীবনী

হোটেল গ্রেভার ইন, আমার ছেলেবেলা,বলপয়েন্ট, কাঠপেন্সিল(২০১০), ফাউন্টেইন পেন, রংপেনসিল(২০১১), নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ(২০১২)





মরিলে কান্দিস না আমার দায়- জীবনাবসান

মলাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ নয় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯ জুলাই ২০১২ তারিখে স্থানীয় সময় ১১:২০ মিনিটে নিউ ইয়র্কের বেলেভ্যু হসপিটালে বাংলা সাহিত্যের এই প্রবাদপুরুষ পরলোকগমন করেন। এর পুর্বে ১২ দফায় তাঁকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর কিছুটা শারীরিক উন্নতি হলেও, শেষ মুহূর্তে শরীরে অজ্ঞাত ভাইরাস আক্রমণ করায় তিনি দ্রুত অবনতির দিকে যান। কৃত্রিমভাবে লাইভ সাপোর্টে রাখার পর ১৯ জুলাই ২০১২ তারিখে ইন্তেকাল করেন হুমায়ূন আহমেদ। তাকে নুহাশ পল্লীতে দাফন করা হয়।





হুমায়ুন আহমেদ।একজন অমর কথা সাহিত্যিকের নাম।মৃত্যু নেই তার। তার মৃত্যু হয়না। তিনি অমর। তার উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র ও কোটি কোটি ভক্ত হিমু, রূপা আর মিসির আলীদের মাঝে বেঁচে রইবেন তিনি পৃথিবী ধ্বংস হবার শেষ দিনটি পর্যন্ত আর অতি অবশ্যই তার ময়ূরাক্ষীর হৃদয়ে।





হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে গাওয়া কবির সুমনের একটি অসাধারন গান



হুমায়ুন আহমেদের লেখা প্রিয় কিছু গান



Click This Link



বই ডাউনলোড লিন্ক

Click This Link



Click This Link



Click This Link



সৌজন্যে- আমিনুরভাই



'তথ্য ও ছবি নেট থেকে নেওয়া'



কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে কাল রাত ১২টা হতে তাকে নিয়ে লেখা পোস্টগুলো-



হুমায়ুন আহমেদের স্বপ্নের নুহাশপল্লী নিয়ে আমার প্রথম ছবি ব্লগ ।



হুমায়ূন আহমেদ আস্তিক না নাস্তিক!!!



বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ পারমাণবিক বোম।



গুরু তোমার জন্মদিনে



হুমায়ূন আহমেদ : একটি ব্যাক্তিগত শোকপত্র



প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ এর জন্য ক'টি চরণ, লিখেছিলাম ২০১২ সালের ২০ জুলাই তারিখে। আজ তার জন্মদিনে রিপোস্ট করলাম লেখাটি।।



হিমু



গল্পের জাদুকরের জন্মদিনে শ্রদ্ধা-



তাঁর জন্মদিনে হিমুদের বিফল খোঁজাখুঁজি!



হুমায়ূন আহমেদের কিছু দুর্লভ ছবি



৩টি অনুগল্পঃ শুভ জন্মদিন কলম জাদুকর!



নন্দিত কথাশিল্পী ও বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ হুমায়ূন আহমেদের ৬৫তম জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা



হিমুস্রষ্টার জন্মদিন



হুমায়ূন আহমেদ এবং একটি অটোগ্রাফ!



শুভ জন্ম বার্ষিকী স্যার।



হিমুর হাতে জ্বলন্ত সিগারেট



যাদুকর



শুভ জন্মদিন হুমায়ূন আহমেদ। যে জগতে আপনি বেঁচে আছেন, সেখানে অনেক ভালো থাকুন।



হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের সূর্য (আপনার জন্মদিনে রইল অসীম শ্রদ্ধা ) ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮- ১৯ জুলাই ২০১২



সাদা হিমু ও আমি



খোলা চিঠি আবেগের খামে

মন্তব্য ৯২ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৯২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৫

আমিনুর রহমান বলেছেন:




হুমায়ুন আহমেদ।একজন অমর কথা সাহিত্যিকের নাম।মৃত্যু নেই তার। তার মৃত্যু হয়না। তিনি অমর।




বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই স্যারকে।


স্যারের জন্মদিনে স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য স্যারকে নিয়ে একটি পোষ্ট সামু কর্তৃপক্ষকে ষ্টিকি করার অনুরোধ রইল

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৩

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: বাংলা সাহিত্যে আমাদের আছেন রবীন্দ্রনাথ, আছেন আমাদের জাতীয় কবি নজরুল, আছেন শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র অনেকেই আছেন। কিন্তু একজন হুমায়ুন আহমেদ কখন যে কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করেছেন তার বহুমুখী প্রতিভা দিয়ে তা হয়তো আমাদের নিজেদেরও অজানা।

তার নাটক, চলচ্চিত্রগুলোও গ্রাম, গঞ্জ, শহর, শহরতলী, দেশ বিদেশে এতটাই সমাদৃত যে হুমায়ুন আহমেদকে চিনিয়ে দেবার আর কিছু নেই। আরও কিছু বছর বেঁচে থাকলে তিনি আমাদেরকে দিতে পারতেন অনেক কিছুই। বাংলা সাহিত্যকে করতেন পারতেন আরও বেশি সমৃদ্ধ। তার সহজ সরল কিন্তু অত্যন্ত গভীর সংলাপ নির্ভর গল্প, উপন্যাস বা নাটক গুলো আমাদের হৃদয়ের গভীরে দাগ কেটে যায় অমোচনীয় সবুজ কালীতে। যা শুধুই স্নিগ্ধতা ছড়ায়। কখনও তুলে ফেলা যায়না,তুলে ফেলতে চাইনা।

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩২

অদৃশ্য বলেছেন:





''আজ নুহাশের বনে পতঙ্গ পাখির রুগ্ন চিৎকার, প্রতিটি সালের দেহে যেন
ঘুনপোকার সমাহার, প্রিয়জনের হাহাকার... হাহাকার''


বিনম্র শ্রদ্ধা...



ময়ূরাক্ষীর জন্য
শুভকামনা...

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ অদৃশ্য।

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জন্য।

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩

আমিনুর রহমান বলেছেন:



হুমায়ূন স্যারের জন্য আমার প্রিয় গায়ক কবীর সুমনের গান...

শাওন মেঘে কি কথার বৃষ্টি ঝরে
তাঁকে ভাবলেই কাহিনীরা ভিড় করে
কাহিনীর পর কাহিনীর সেকি জেদ
দেখিয়ে দিলেন হুমায়ূন আহমেদ।

ছোট থেকে বড় পাঠকসংখ্যা কতো
চরিত্রগুলো তাঁর পাঠকের মতো
ধরাছোঁয়া যায় চেনা যায় আয়নায়
আরও বলও আরও গল্পের বায়নায়।

চলেছে বাক্য তাঁরই কলম ধরে
সহজ কথার গল্প সঙ্গে করে
সঙ্গী হয়েছি গল্পের সড়কেই
স্বর্গ ছুঁয়েছি নন্দিত নরকেই।

এ দুনিয়া ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া
সেখানে নতুন গল্পই খুঁজে পাওয়া
কারুর কারুর পড়েনা পূর্ণচ্ছেদ
আবার লিখুন হুমায়ূন আহমেদ।

অডিও লিঙ্কঃ Click This Link

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৯

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: এ দুনিয়া ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া
সেখানে নতুন গল্পই খুঁজে পাওয়া
কারুর কারুর পড়েনা পূর্ণচ্ছেদ
আবার লিখুন হুমায়ূন আহমেদ।

ধন্যবাদ প্রিয় আমিনুরভাই। গানটি শুনে চোখ ভিজে ওঠে। গানটিতে বোঝা যায় তিনি কতটা প্রিয় আমাদের সকলের।

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫১

জনাব মাহাবুব বলেছেন: শুভ জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা এই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে।


ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার কষ্টসাধ্য লেখার জন্য।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩১

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জন্য শ্রদ্ধা।

৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৭

মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: আকাশের চাইতে বেশি কিছু ছুঁয়েছিলেন তিনি, কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়।তার মত জনপ্রিয়তা কোটি বছরেও আর কোনো কথাসাহিত্যিক পাবে কিনা এই বাংলায়, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে।বিংশ শতাব্দীর বাঙ্গালী জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মাঝে অন্যতম তিনি।উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, গান প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার সফলতা।নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনাতেও ছিল তার সমদক্ষতা। তিনি হিমালয়,আমাদের অতি প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ।


অসাধারণ লিখা।

বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই অতি প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে।


১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধা প্রিয় সাহিত্যিক, গল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার সর্বপরি প্রিয় লেখককে।

ধন্যবাদ আপনাকে আনারুল।

৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৮

আমিনুর রহমান বলেছেন:




গানের লিঙ্কটা কি আপনার পোষ্টে এড করে দেয়া যায়? তাহলে হয়ত সকলের নজরে পড়ত।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: এ্যাড করে দিচ্ছি।

গানটা নতুন করে কাঁদাবে আমাদেরকে তবে সেখানে মিশে আছে ভালোবাসা।


আবারও ধন্যবাদ আমিনুরভাই। গানটি মনে করিয়ে দেবার জন্য আর সুন্দর সাজেশানের জন্য।

৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯

এহসান সাবির বলেছেন: শুভ জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা ।

চমৎকার পোস্ট।

শুভকামনা।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ এহসান।
শ্রদ্ধা প্রিয় লেখককে।

৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৪

আমিনুর রহমান বলেছেন:





গানটা সেই সকাল থেকে শুনেই চলছি। ভীষণ দরদ আর আবেগ মেশানো গান।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: নদীর নাম ময়ুরাক্ষী
আমার সবচাইতে প্রিয় গান।

একটা ছিলো সোনার কন্যা


যদি মন কাঁদে

গান গুলিও অনবদ্য

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আহমেদের লেখা আরও কিছু প্রিয় গান


মাথায় পরেছি সাদা ক্যপ

বরষার প্রথম দিনে

গরুর গাড়ীর দুই চাকা

চাঁদনী পসরে

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: একটি পুরোনো প্রিয় নাটক

http://www.youtube.com/watch?v=TtQc8DT9GGU

৯| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

ফয়সাল মাহাদী বলেছেন:
তুমি বিস্ময়,তুমি অহংকার

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধা সেই বিস্ময় মানুষটিকে।

১০| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪১

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শুভজন্মদিন জানাই প্রিয় লেখককে আর আপনাকে ধন্যবাদ।

১১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫

সপন সআথই বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৩

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলী প্রিয় লেখকের জন্য ও ধন্যবাদ আপনাকে।

১২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: স্বল্প পরিসরে এতো বড় একজন মানুষকে ধরা কঠিন । আপনার চেষ্টার জন্য সাধুবাদ । গানের লিঙ্কটার জন্য ধন্যবাদ । চোখ আর ভেজাতে চাইনা আজ ।

অনেক প্রার্থনা থাকুক তার জন্য ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৪

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ আদনান।

১৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক। যেখানেই থাকুক তিনি ভালো থাকুক।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ভালো থাকুন তিনি।


ধন্যবাদ কাল্পনিক।

১৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: এক সৃষ্টিসৈনিক !
তিনি বেঁচে থাকবেন তার অনন্য সব সৃষ্টির মাঝে!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার চমৎকার পোষ্ট টির জন্য !

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় অভি।
সৃষ্টিসৈনিক বেঁচে থাকুক তার অনন্য সব সৃষ্টির মাঝে!

১৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

তাহমিদুর রহমান বলেছেন: শুভ হোক







View this link

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ হোক সব।

১৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫

কোবিদ বলেছেন:
নন্দিত কথাশিল্পী ও
বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের
পথিকৃৎ হুমায়ূন আহমেদের
৬৫তম জন্মদিনে
ফুলেল শুভেচ্ছা

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ছবিটি অদ্ভুত সুন্দর! আগে এই ছবিটি পেলে আমার এ লেখার প্রচ্ছদে এটিই জুড়ে দিতাম।
ধন্যবাদ কোবিদ। প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে লেখা আপনার লেখাটিও আমার ভীষন ভালো লেগেছে।

১৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮

Saeen বলেছেন: Sobho jonmodin to my dearest writer whose departure always makes me cry. May his departed soul rest in peace.

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০২

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: সৃ্ষ্টিকর্তা উনাকে ভালো রাখবেন ইনশাল্লাহ। আমাদের এতগুলো মানুষের দোয়া আর ভালোবাসা কখনও বিফলে যেতে পারে না।

১৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪০

ইমরান ভাই ১ বলেছেন: আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আমিন।
মৃত্যুর পর আবার জন্মদিন পালন এটা বুঝলাম না।?????? তার জন্য তো দোয়া করলেই হয়।
:( :( :( :( কোন কাজযে কখোন করতে হয় তাও আজকাল ভুলে গেছি মনে হচ্ছে। :(( :(( :((

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: তার জন্য শ্রদ্ধা, দোয়া ভালোবাসা, সন্মান সবই আছে । রবীন্দ্র, নজরুল জন্মজয়ন্তী নিশ্চয় মনে আছে। ঠিক সেভাবেই অমর মানুষগুলো মৃ্ত্যুর পরেও বেঁচে থাকে তাদের সৃষ্টির মাঝে আর তাই আমরা পালন করি তাদের জন্মবার্ষিকী। বছর ঘুরে যখন ফিরে আসে সেই বিশেষ দিনটি, মনে পড়ে যায় বেশি করে তাদেরকে আমাদের। আর তাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমরা তাদেরকে। জানাই কৃতজ্ঞতা।


ভালো থাকবেন। শুভকামনা আপনার জন্য।

১৯| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পোস্টের প্রেজেন্টেশন খুব সুন্দর হয়েছে।

এই মানুষটিকে তার লেখালেখির জন্য মিস করবে না এমন মানুষ হাতে গোনা। আমার প্রথম পাঠ্য বইয়ের বাইরে বই পড়া শুরু হয় তাকে দিয়ে।

যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন প্রিয় মানুষ

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় অপর্ণা।ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

২০| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১

আমিনুর রহমান বলেছেন:




আমার সংগ্রহে ছিলো গানগুলো এখন এমপি৩ নামিয়ে শুনছি এবং সবগুলো গান আজীবনের জন্য সংগ্রহেও রেখে দিলাম

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: আমিনুরভাই আপনার এই সংগ্রহশালাসহ নীচে দেওয়া বই ডাউনলোড লিন্কগুলো কি আমি আমার পোস্টে জুড়ে দিতে পারি?

২১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬

আমি ইহতিব বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ পাঠকদের অন্তরে বেঁচে থাকবেন অনেক অনেক যুগ ধরে।

একসাথে এই গুনী মানুষের জীবনের সংক্ষিপ্ত রূপ তুলে ধরার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।

গানগুলো শুনতে পারছিনা বলে খারাপ লাগছে, অফিসে সকল প্রকার ডাউনলোডিং বন্ধ :(

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ইহতিব।

গানগুলো আপনি আগেও শুনেছেন। তবুও বার বার শুনতে ভালো লাগে। রাতে বাড়ি ফিরে অবশ্যই শুনতে পাবেন। শুভকামনা।

২২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০১

আমিনুর রহমান বলেছেন:



স্যারের বই ডাউনলোডের জন্য কয়েকটা সাইটের লিঙ্কঃ

Click This Link
Click This Link Ahmed
Click This Link

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অনুমতির অপেক্ষা না করে গানের সংগ্রহশালা আর বই ডাউনলোড লিন্কগুলি আমার পোস্টে জুড়ে দিলাম। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সেই দাবীতে।

২৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এর অমর সৃষ্টি
আনিল বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও সৃজনশীল কাব্য কৃষ্টি ।।
অমর হোক লক্ষ ভক্তের হৃদয় পানে
যেজন বিকশিত ছিল সাহিত্য সম্ভারে প্রানে প্রানে ।।
আজি তার জন্মদিন হোক শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় সিক্ত
গন মানুষের এক বাধন
ভাল থাকুন তিনি জান্নাত বাসী হয়ে
বিদ্যাবিকাশে যিনি সাজাল কাব্য গৌরব উজ্জ্বল বাংলার কানন ।।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর উৎসর্গ কবিতাটির জন্য।


আমরা যারা তার ভক্ত তাদের এক একটি শব্দই প্রমান করে কতখানি ভালোবাসা অন্তরে ধারণ করি আমরা তার জন্য।

২৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১১

কাগজের নৌকা (রাসেল হোসেন) বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম পরে পড়বো

শুভ কামনা

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ কাগজের নৌকা।
শুভকামনা।

২৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫

নীলসাধু বলেছেন: অসাধারণ একটি পোষ্ট-

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ নীলসাধু।

২৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭

মামুন রশিদ বলেছেন: শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক ।



হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে লেখা চমৎকার পোস্টে ভালোলাগা ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১২

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মামুন রশিদ।

শুভকামনা।

ভালো থাকবেন।

২৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯

ফয়সাল মাহাদী বলেছেন: সত্যি অসাধারন লেখা

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ ফয়সাল।

২৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৯

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
খুব চম​ৎকার পোস্ট হৈসে।
ওয়েল ডান তুমি ম​য়ূরাক্ষী ॥

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ মুন।
শুভকামনা।

২৯| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: পড়ার আহবান জানাই
সাহিত্যিকের মৃত্যু এবং আমাদের গদগদে আবেগ
Click This Link

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২২

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ।

আগেও পোস্টটির লিংক দিয়ে গিয়েছিলেন , হুমায়ুন আহমেদের মৃতু্যবার্ষিকীতে লেখা আমার একটি পোস্টে। কাজেই আগেও পড়েছিলাম।

ধন্যবাদ বার বার লিংকটি শেয়ার করবার জন্য।

৩০| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯

সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: এমন একটা পোস্টের জন্য কৃতজ্ঞতা । প্রিয়তে রেখে দিলাম ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৪

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সাবরিনা।

৩১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:




শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক!!!



দুর্দান্ত একটি পোষ্ট!!! ++++++




পোষ্ট সটীকি করায় সমুর মডুদের ধন্যবাদ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ শোভন। ভালো থাকবেন।

৩২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: আমার খুব প্রিয় একজন লেখক,স্যার যেখানেই থাকুন,ভালো থাকুন এটাই দোয়া করি... এমন তথ্যবহুল পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ,প্রিয়তে রাখলাম।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: স্যারের জন্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আর আপনাকে ধন্যবাদ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: স্যারের জন্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আর আপনাকে ধন্যবাদ।

৩৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

খোমেনী বলেছেন: বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে কলম ধরেছেন হুমায়ুন আহমেদ পূত্র নুহাশ হুমায়ূন। যার নামেই বাবা করেছিলেন নুহাশ পল্লী। আবেগ, ভালোবাসা মিশ্রিত লেখাটি খাসখবরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:-

আমার বয়স তখন এগারো। একমাত্র চেনা পথটা ধরে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি। যাচ্ছি আমার মায়ের বাসা থেকে বাবার বাসায়। অনেকে জানতে চায়, বাবা-মা আলাদা হয়ে গেলে বাচ্চাদের কেমন লাগে। এ প্রশ্নের কোনো জবাব আমার জানা নেই। সত্যি বলতে কী, এটা আমার কাছে অবাক করা কোনো ব্যাপারও নয়।

কারণ এই একটামাত্র জীবনই আমার চেনা। পেছন দিকে যতদূর মনে পড়ে, সবসময়ই ব্যাপারটা এ রকমই ছিল। আমার বোনেরা বলে, একসময় একটা বিশাল সুখী পরিবার ছিল আমাদের। কিন্তু সেসব আমার কাছে গল্পই, প্রায় রূপকথা। আমার মনে পড়ে না, মা-বাবাকে কখনও একসঙ্গে দেখেছি। আমার কাছে এটাই জীবন। আমিও সুখী একটা পরিবারই পেয়েছি, শুধু একটু বিচ্ছিন্ন, এইটুকুই পার্থক্য। আর এই বিচ্ছিন্নতা তো একটা অস্থায়ী অবস্থা, তাই না? একটা বড় ঝগড়া, কিছুদিন তো সময় নেবেই ঠিক হয়ে যাবার জন্য।

সবাই জানতে চায়, মায়ের সঙ্গে থাকা আর সপ্তাহে একদিন বা তারও চেয়ে কম বাবাকে দেখতে পাওয়ার ব্যাপারটা কেমন? বন্ধুরা জিজ্ঞেস করে, কার সঙ্গে আমি থাকব সেটা ঠিক করলাম কী করে। এটা কি সিনেমায় যেমন দেখা যায়, কোর্ট, জজ আর প্রচুর নাটকীয়তায় ঠাসা সে রকম কিছু কিনা।

ব্যাপারটা আসলে খুবই সোজাসাপ্টা। আমি যে আমার মা আর তিন বোনের সঙ্গে থাকব, সেটা এক রকম নির্ধারিতই ছিল, কাউকে বলে দিতে হয়নি। বাবা তো ব্যস্ত মানুষ, আমার যত্ন নেবে কখন? তার সঙ্গে দেখা হয় সপ্তাহে একদিন বা তার চেয়েও কম। এই-বা খারাপ কী! আর কার সঙ্গে আমি আছি বা নেই, তাতে কী আসে যায়! আজ, কাল কী পরশু, আবার তো সবাই একসঙ্গেই থাকব। আগেকার সেইসব দিনের মতো।

১১ বছর বয়সে আমি প্রথম নিজস্ব মোবাইল ফোন পেলাম। একদিন বাবার বাসায় গেছি। উনি কথাপ্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন, আমার মোবাইল ফোন আছে কি না। বললাম, নেই। কোনো ভাবান্তর দেখলাম না। শুধু পরদিন একটা ঝকঝকে নতুন ফোন নিয়ে হাজির হলেন আমার কাছে (মানে আমার মায়ের বাসায়)। খুব খুশি হয়েছিলাম। ছোট্ট, ধূসর রঙের একটা সেট। আটটা আলাদা রিংটোন বাজে। টর্চও জ্বলে। তার চেয়ে বড় ব্যাপার, আমাদের স্কুলে আমিই প্রথম, যে নিজস্ব ফোনের মালিক। পরদিন স্কুলে গিয়ে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে বললাম ফোনের কথা। সেও উত্তেজিত। দুজনে মিলে আমাদের গ্রেডের সব সেকশনের ব্ল্যাকবোর্ডে ফোন নম্বর লিখে রাখলাম। দুর্দান্ত একটা দিন কাটল।

আমি দুপুরে ঘুমাতে খুব অপছন্দ করি, এটা কি আগে বলেছি? বিকেলে ঘুমানো আমার খুবই অপছন্দের। পরদিন স্কুল থেকে ফিরে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমার বোনের ঘরে ঘুমিয়ে পড়লাম। ভেবেছিলাম, অল্প কিছুক্ষণ ঘুমাব। বোন কলেজ থেকে এসে উঠিয়ে দেবে। সে ওঠায়নি। আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমালাম।

ঘুম ভাঙল রাত আটটার দিকে। ভাবলাম, হোমওয়ার্ক ফেলে সারা দিন ঘুমানোর জন্য বকা খেতে হবে। স্কুলের ড্রেসটাও চেঞ্জ করিনি। আমি সারা বাড়ি হেঁটে বেড়াচ্ছি। সবাই বাসায়। রাত আটটা, স্কুল ইউনিফর্ম পরা আমি, সারাবাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছি– মাথায় কিছু ঢুকছে না! কেউ আমাকে খেয়ালও করছে না! আমি যেন অদৃশ্য!

আমার বোনই প্রথম জানাল, মা-বাবার ডিভোর্স হয়ে গেছে। এর মানে কী, বুঝতে পারলাম না। সবাই দেখি হতভম্ব, বিপর্যস্ত। অনুমান করলাম, এমন কিছু ঘটেছে, যা সেপারেশনের চেয়েও খারাপ। একটা পরিবার শুধু আলাদা থাকছে, ব্যাপারটা এখন আর মোটেও সে রকম নেই। কিন্তু তাতে এখন যে ঠিক কী দাঁড়াল, মাথায় ঢুকছে না। বুকটা ভার হয়ে গেল। মা আর সব কটি বোন এমনভাবে ভেঙে পড়ল দেখে অবাক লাগছে। আমারও কেন ওদের মতো খারাপ লাগছে না? কেন আমিও ভেঙে টুকরা-টুকরা হয়ে যাচ্ছি না? মনে হল, হয়তো ওদের মতোন একটা সুখী পরিবারের স্মৃতি আমার নেই, তাই!

প্রথম কয়েকটা মাস সবকিছু গুমোট হয়ে থাকল। কিছু একটা হয়েছে, কিন্তু কেউ সেটা নিয়ে কথা বলছে না। এই না-বলা দুঃখের কোন দিকটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক, বুঝতে পারছি না। বাবা কি দোষী? তাঁর সঙ্গে কি কথা বলা বন্ধ করে দেব? নাকি এটা তাঁর প্রতি অন্যায় করা হবে? আমি কি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারব? তাতে কি মায়ের প্রতি অবিচার করা হবে? মা কি কষ্ট পাবে? এসব প্রশ্ন বুকে ভার হয়ে চেপে বসল। কী করব! যা-ই করি না কেন, আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলোর কাউকে না কাউকে প্রচণ্ড কষ্ট দেওয়া হবে। ডিভোর্সের শোকের চেয়েও আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছিল এইসব চিন্তা।

তারপর এমন সময় এল, দিনের পর দিন বাবার সঙ্গে দেখা হয় না, কিন্তু ফোনে কথা হচ্ছে সারাক্ষণই। বাবা পেশায় লেখক, অসম্ভব জনপ্রিয়, তবে নিজেকে তিনি বলেন, গল্পকার। তাঁর উপন্যাস প্রতিবছর বেস্টসেলার হয়। তাঁর সিনেমাগুলোও একই রকম জনপ্রিয়। তাঁর টিভি নাটক প্রতি ঈদের প্রধান আকর্ষণ। গল্প লেখার জন্য লেখকদের মাঝেমধ্যে প্রয়োজন পড়ে উদ্ভট সব তথ্যের। তিনি এ রকম অদ্ভুত সব প্রশ্ন নিয়ে আমাকে হুটহাট ফোন করতেন: দশটি বিরলতম ফোবিয়া কী কী? পশুপাখিরাও কি ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে? গোল্ডফিশের স্মৃতি কতক্ষণ থাকে?

বাবা আর ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনের মাঝখানে প্রধান সংযোগবিন্দুটি আমি। এইসব জরুরি তথ্যসেবার বাইরেও সারাদিনে কী ঘটল, স্কুলে আজ কী করলাম না করলাম ইত্যাদি টুকটাক নানা কিছু নিয়ে কথা বলতাম আমরা। খুব অবাক লাগে, ব্যাখ্যা পাই না, কীভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দু’জন কাছাকাছি যেতে থাকলাম!

আমার বয়স তখন তের। বাবার লাইব্রেরি ঘরে বসে ‘আ ব্রিফ হিস্টোরি অব টাইম’ পড়ছি। আর উনি লিখছেন। একদিনে লেখার কোটা শেষ হয়েছে মনে হলে, আমরা ডিভিডি কিনতে বেরিয়ে পড়লাম রাইফেলস স্কোয়ারের উদ্দেশে। উনি বেছে নেন ‘ওয়ান ফ্লিউ ওভার দ্য কাক্কুস নেস্ট’ আর ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’, যেসব ছবি উনি চান যে আমি দেখি। আমি বেছে নিই ‘স্পাইডারম্যান’ আর ‘স্পেস জ্যাম’।

কাউন্টারে ছবির স্তূপ জমে গেলে আমি আবার চোখ বোলাতে থাকি কী কী কিনছি। বেছে বেছে বের করি, কোন কোনটা আগে দেখা হয়ে গেছে, দোকানদাররা বিব্রত হয় (বাবার ভুলো মন, আমি না থাকলে দোকানদাররা এক মাসে একই ছবি তিন-চার কপি ধরিয়ে দেবে)। আমরা সব ধরনের ছবি দেখি। বাজি ধরে বলতে পারি, ওই বয়সে, অন্য যে কারও চেয়ে, বাবার সঙ্গে বসে আমি বেশি ছবি দেখেছি। যখন বাবার সঙ্গে থাকি না, ছুটির দিনটা কাটাচ্ছি মায়ের সঙ্গে, মাঝরাতে টেক্সট পাই– “বাবা, আই মিস ইউ। আই অ্যাম লোনলি।”

বাবা শুধু এতটুকুই বলেন। মা-ও জানতে চান না, বাবার সঙ্গে এতটা সময় কেমন কাটল, কী কী ঘটল। অন্তত আমার কাছ থেকে না। একবার শুনেছি চাচির সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন, “তুমি তো জানো, ও কেমন কথার ওস্তাদ, কথা দিয়ে কীভাবে মানুষকে বশ করে। কীভাবে লোকজনকে মুগ্ধ করতে হয় ওর জানা আছে। নুহাশ বাবার বশে চলে গেছে। ও বাবার সান্নিধ্য পছন্দ করে, আপত্তি নেই, বরং আলাদা হয়ে গেলেই আমার খারাপ লাগত। কিন্তু নুহাশ তো জানে না ওর বাবা আসলে কেমন! ওর বাবা ওকে বেড়াতে নিয়ে যায়, একসঙ্গে সিনেমা দেখে। আর পরীক্ষায় খারাপ করলে আমি বকা দিই। তাতে বাবার প্রতি দরদ আরও বাড়ে ওর। কিন্তু সে যে কখনও ওর দায়িত্ব নেবে না, সেটা নুহাশ বোঝে না। আমায় খুব ভয় হয়, একদিন ছেলেটা খুব কষ্ট পাবে।”

তার কণ্ঠে রাজ্যের উৎকণ্ঠা। কিন্তু আমি বুঝি না এই উদ্বেগ, এই উৎকণ্ঠা কীসের! ততদিনে, দুঃখটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি আমি। মনে মনে একটা তত্ত্ব দাঁড় করিয়ে ফেলেছি, যেটা এখনও মেনে চলি। ভালোবাসা নির্দিষ্ট, প্রত্যেক মানুষের জন্য আলাদা। একজনের থেকে ভালোবাসা কেড়ে নিয়ে অন্যজনের জন্য ভালোবাসা প্রমাণ করা যায় না। চাইলেও সেটা করা সম্ভব না। ভালোবাসা ফেরত নেওয়া যায় না, তাই না?

মায়ের বাসা দূরে নয়। বাবা আর তাঁর জগতে আমি আচ্ছন্ন হয়ে থাকি। কৈশোরের প্রথম বছরগুলো কেটেছে বাবার মতো হয়ে ওঠার তীব্র বাসনায়। উনি যা করেন, যা বলেন, যেভাবে বলেন, আমি গভীর অভিনিবেশে তা করি। যখন উনি কথা বলেন, জগৎ থমকে থাকে। ঘরভর্তি লোকজন সবাই চুপ করে শোনে তাঁর কথা। উচ্চস্বর নন, রাজনীতিবিদদের মতো গলা কাঁপান না, অভিনেতার মতো সৌকর্য দেখান না। তিনি কেবল গল্প বলেন। তার মুখে সবকিছুই গল্প হয়ে যায়। সকালে বেরিয়েছেন মর্নিং ওয়াকে, তাও গল্প। দুপুরে কী খেয়েছেন, সেটাও গল্প। সামান্য ঘটনাকেও অসামান্য করে তোলেন তিনি। কী করে করেন, আমার মাথায় ঢোকে না।

আয়নার সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকি, তাঁর মতো করে কথা বলার চেষ্টা করি, হাত নাড়ি তাঁর মতো করে, তাঁর মতোই কথার মধ্যে বিরতি দিই। গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠা সব বিরতি। একটা গল্পের মাঝখানে এসে তিনি হয়তো থেমে যান, ভ্রু কুঁচকান, দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেবেন। আপনি হয়তো ভেবে বসবেন, উনি প্রসঙ্গে ভুলে গেছেন, ততক্ষণে আরেক গল্পে ঢুকে পড়েছেন তিনি, একই রকম মনোমুগ্ধকর আরেকটা গল্প। এই নিরবতা আপনার হৃদস্পন্দন থামিয়ে দেবে। তিনি আরেকবার কথা না বলে ওঠা পর্যন্ত আর সচল হবে না হৃদপিণ্ড।

আমি তাঁর বই পড়া শুরু করি কেবল এটা দেখতে যে, বাচনভঙ্গির মতোই তাঁর লেখাও এমন জাদুকরি কিনা। তাঁর লেখা আমার জীবন বদলে দিয়েছে। বন্ধুবান্ধবরা যখন ‘হ্যারি পটার’ পড়ছে, আমি পড়ছি ‘হিমু’। হিমু তাঁর উপন্যাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর একটি। বুদ্ধিদীপ্ত এই সদানন্দ যুবকটি হলুদ পাঞ্জাবি গায়ে ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায়। হিমু চরিত্রের প্রতি আমার এই মুগ্ধতা আমার বোনদেরও ভালো লেগেছিল। একজন তো একটা হলুদ পাঞ্জাবিই বানিয়ে দিল।

আমাকে সেই পাঞ্জাবি পরা অবস্থায় দেখে বাবা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন, তাঁর চোখে দ্যুতি খেলা করে গেল। তাঁর কাছে এটা কোনো সামান্য ব্যপার নয়। তাঁর সৃষ্টিকর্মকে আমি ধারণ করছি। তাঁরই বীজ, আরেকটি বাহনে। তাঁর শিশুর মতো উৎফুল্ল হয়ে ওঠা দেখে আমি অবাক হই! আমি যেবার তাকে গিয়ে বললাম, ও-লেভেলে সব বিষয়ে ‘এ’ পেয়েছি, সেদিন এর ধারেকাছে খুশিও দেখিনি। সেদিন শুধু বলেছিলেন, ‘‘তুমি তো পাবেই। তুমি আমার ছেলে না! এর চেয়ে কম তো আশা করি না বাবা।’’

সময় গড়ালে অনেক কিছুই বদলে গেল, তবে একটা রেওয়াজ আমরা বহাল রেখেছিলাম। প্রতি ঈদে ভোর থাকতে চলে যাই বাবার বাসায়, তাকে ঘুম থেকে তুলি। তারপর দুজনে রওনা দিই ঈদগাহে নামাজ পড়তে। বয়স যখন আরও কম ছিল, বাবা ভয় পেতেন, লোকের ভিড়ে হারিয়ে যাব কিনা। তাই ঘাড়ে তুলে নিতেন আমাকে। গোটা ময়দানের চমৎকার দৃশ্য দেখতে পেতাম পিঠে বসে: সাদা টুপি পরে শত শত লোক আসছে ঈদগাহে নামাজ পরতে। দূরে ছোপ ছোপ রঙ– গেটের কাছে বেলুনঅলা ঘুরছে।

যখন আঠারো বছর বয়স, নামাজ শেষ হলে বাবা নাশতার দাওয়াত দিতেন। দাওয়াত যে দিতে হত, এ থেকেই অনেকটা বোঝা যায়– অনেক কিছুই আর আগের মতো নেই। চিপস, চকলেট আর বেবি পাউডারের গন্ধে এখন ভরপুর বাবার বাসাটা। ঝকমকে ম্যাকবুক আর হাই স্পিড ইন্টারনেটে বাসা সজ্জিত। যে অ্যাপার্টমেন্ট একসময় ছিল আমার নিরাপদ স্বর্গ, আমার দ্বিতীয় নিবাস, এখন সেখানে র‌্যাকভর্তি নতুন ধরনের ডিভিডি। টম অ্যান্ড জেরি, ফোর ইন ওয়ান কার্টুন কালেকশন, এইট ইন ওয়ান হিন্দি মুভি কালেকশন। এক ‘বিউটিফুল মাইন্ড’-এরই তিনখানা কপি।

রাত তিনটায় আর এসএমএস এসে উপস্থিত হয় না, যাতে বলা থাকে, তিনি আমাকে মিস করছেন। আমি মনে মনে তাকে বললাম, বেস্ট অব লাক। সুখী হওয়ার জন্য আমাকে আর দরকার নেই তার (একই ছবি বারবার দেখার দিনগুলোকে বিদায়, বাবা)। ভালো হত যদি উনি নিজে আমাকে বলতেন। তা না, আমাকে ট্যাবলয়েড থেকে জানতে হল তাঁর বিয়ের কথা। আমরা কখনও এ নিয়ে কথা বলিনি। সময় গড়িয়েছে, আর এটা আমাদের দুজনের ভেতরটাকে কুড়ে কুড়ে খেয়েছে।

একদিন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ছুটি কীভাবে কাটাব, কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা। আমি সরলভাবে বললাম, পরিকল্পনা আছে, আমার পরিবারের সঙ্গে কাটানোর। বলার পরেই তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখি তিনি অদ্ভুত মনখারাপ করা ভাবে তাকিয়ে আছেন। তিনি যে কতটা কষ্ট পেয়েছেন, বুঝতে বেশ কিছুক্ষণ লেগেছিল। অন্য আরেক দিন আমি ফোন করে বললাম, আমি তাঁর বাড়ির রাস্তায়। বললেন, তিনি বাসায় নেই। তার পরিবার নিয়ে বাইরে বেরিয়েছেন। তিনি দেখতে পেলেন না, আমি কতটা কষ্ট পেলাম।

আমার বয়স তখন উনিশ। ভার্সিটিতে পড়ি। আমার সঙ্গে যারা পড়ে, তারা সবাই আমার চেয়ে কমপক্ষে এক সেমিস্টার ছোট। কারণ, কয়েক মাস আগে বাবার কোলোরেকটাল ক্যানসার ধরা পড়েছে। যখন শুনলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি সেমিস্টার ড্রপ দিলাম। বাবা কথাচ্ছলে একদা বলেছিলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে তাঁর ভালো লাগবে। পরের কয়েকটা মাস ভর্তি পরীক্ষার জন্য পড়া শুরু করলাম। মা আর বোনেরা বলল, সিদ্ধান্তটা ঠিক হল না। কেননা, এত কম সময়ে পরীক্ষায় পাস করা গেলেও ভর্তি হওয়া কঠিন হবে।

আমি এতকিছু ভাবছি না তখন, ভর্তি হতে বদ্ধপরিকর। বাসা থেকে বেরোই না, দিনে আট থেকে নয় ঘণ্টা পড়ি। ব্যস্ত সময় কাটে। জীবনে একটা ল্ক্ষ্য খুঁজে পাচ্ছি। আমি তো তাকে সারিয়ে তুলতে পারব না, অন্তত তাকে গর্বিত করে তুলতে তো পারব। রেজাল্ট বেরোল। আমি তাঁকে দেখতে গেলাম। বললাম, চান্স পাইনি। উনি হেসে উড়িয়ে দিলেন। আমরা এ নিয়ে হাসাহাসি করলাম। আমি ব্র্যাকে পরের সেমিস্টার ধরলাম, চিকিৎসার জন্য বাবা দেশ ছাড়লেন।

গণমাধ্যমওয়ালারা এই জনপ্রিয় লেখকের স্বাস্থ্যের নিয়মিত সর্বশেষ খবর প্রচার করে যাচ্ছে। কোনোদিন বলে, উনি ভালোর দিকে, কোনোদিন লিখে, অবস্থার অবনতি। আর সব সংবাদ শেষ হয় এই একই বাক্য দিয়ে: “নিউ ইয়র্কে তিনি তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন…।” আমি ওই বাক্যটি পড়ার আগেই থেমে যাই। আমি সেপারেশন সইতে পারি, ডিভোর্স মানতে পারি, এমনকি ক্যান্সারের খবর সহ্য করতে পারি, কিন্তু নিজেকে অদৃশ্য মনে হওয়া মেনে নিতে পারি না কখনও। শোকে কাতর হতে পারি, কিন্তু নিজেকে কোনোদিন ‘তাঁর ছেলে নয়’ বলে বোধ করার অনুভূতি সহ্য করতে পারি না।

নিউ ইয়র্কে দীর্ঘ যন্ত্রণাদায়ক কেমোথেরাপির পর তিনি ঢাকায় ফিরে এসেছেন। ফোন করে আমাকে তাঁর ওখানে ডাকলেন। বললেন, আমার সঙ্গে কিছু কথা আছে। তাঁর বাসায় লোক গিজগিজ করছে। সারারাত তাদের সঙ্গে কাটালেন তিনি। তাঁর বাসার চারপাশে নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ালাম, ভিড়ভাট্টা আমার ভালো লাগে না। অতিথিরা চলে যেতে শুরু করলে তিনি আমাকে এক কোণায় ডেকে নিলেন। আমি একটু একটু কাঁপছি, মনে হল তিনি সেটা লক্ষ্য করেননি। বললেন, আমার বোনেদের মিস করেন তিনি, তাদের আরও কাছে পেলে তাঁর ভালো লাগত। মনে মনে বললাম, আর কিছু কী বলার নেই বাবা! আমি অপেক্ষা করছি।

তিনি আবার কথা বলতে শুরু করলেন, এখন খুব ধীরে কথা বলেন। বললেন, তাঁর পরিবার নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি চলে গেলে, তাদের কী হবে। বললেন, ছোট দুই ছেলের ভবিষ্যত কী হবে, দুশ্চিন্তায় রাতে তাঁর ঘুম হয় না। তিনি থামেন। আমি অপেক্ষা করি। অনেকক্ষণ থেমে থাকেন তিনি। আমার হৃদস্পন্দন থেমে থাকে। আমি অপেক্ষা করে যেতে থাকি। তারপর বুঝতে পারি, ব্যাপারটা কী। তাঁর কথা আছে, তবে আমাকে বলার জন্য নয়। আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে থাকি, ধীরগতিতে। তখনও আশা, তাঁর হয়তো অন্য আর কিছু একটা বলার আছে। তিনি আর কিছু বলেন না। তাঁর থেমে যাওয়াটা কোনো বিরতি ছিল না। তাঁর সঙ্গে সেই শেষ দেখা।

শীত এসে পড়ছে। এখনও আমার বয়স উনিশ। সেদিন তাঁর জন্মদিন। তিনি তখনও নিউইয়র্কে। আমি ভিডিও কলে তাকে অভিনন্দন জানালাম। বিনা চুলে তাকে চিনতে কষ্ট হল আমার। শীত দ্রুত চলে গেল। এসে পড়ল আমার বিশতম জন্মদিন। আমি কোনো আয়োজন করলাম না। বাবার এক বন্ধু দরজায় হাজির হলেন। হাতে কেক। কেকে হ্যাপি বার্থডে লেখা নেই। একটা প্লেইন চকোলেট কেক। তাতে লেখা: “বাবা, আই মিস ইউ।“আমার দিনটা আনন্দের হয়ে গেল। আমার এই ছোট্ট অদ্ভুত পরিবার নিয়ে আমি সবসময়ই সুখী।

সে বছরের মধ্য জুলাইতে একদিন আমার বোন আমাকে ঘুম থেকে তুলল। বলল, বাবা মারা যাচ্ছেন। তিনি নিউইয়র্কের একটা হাসপাতালের আইসিইউ-তে অচেতন শুয়ে আছেন। আর এক ঘণ্টা আছে। এক ঘণ্টা পর তার শারীরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে। তাকে মৃত ঘোষণা করা হবে। পুরো বাড়ি জুড়ে অসহ্য নিরবতা। প্রায় এ রকমই একটা মুহূর্ত কি আমি আগে কাটিয়েছি! দুপুরের ঘুম আমি ঘৃণা করি।

লেখকরা কষ্টের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেন, “চোখের সামনেটা ঝাপসা হয়ে গেল,” বা “কীভাবে সময় কেটে গেল জানি না,” বা মাঝে মাঝে লিখেন, “আমি কিছু অনুভব করলাম না।“ ওই একটি ঘণ্টা পেরোতে ঠিক একটি ঘণ্টাই ব্যয় হল। ফোনটা পেল আমার বোন। সে বলল, বাবা আর নেই। আমার স্মৃতিতে কিছুই ঝাপসা হয়ে গেল না। এর পরের প্রতিটি মুহূর্ত আমি মনে করতে পারি। সবকিছুই আমি অনুভব করেছি। প্রতিটি ম্যাসেজ, প্রতিটি ফোন কল মনে আছে আমার।
বাবা আর আমি

বাবা আর আমি

যেন আবার জন্ম হল আমার। মৃত হয়ে জন্মালাম। শূন্য হয়ে জন্মালাম। পরের কয়েকটা দিন চলল প্রতিটি বন্ধু, প্রত্যেক পরিচিতজন এবং প্রত্যেক অপরিচিতের সঙ্গে দেখা করা। যতজন মেয়ে আমাকে ভালোবেসেছে, যারা কোনোদিন আমার কথা ভেবেছে বা ভাবেনি, সকলে এসে আমাকে খুঁজে নিয়েছে, সমবেদনা নিয়ে তাকিয়েছে আমার চোখের দিকে। সকল স্নেহ নিংড়ে আমার চোখে তাকিয়েছে তারা, কিন্তু বিনিময়ে সেখানে দেখতে পেয়েছে কেবল শূন্যতা। এটা কোনো ক্ষত নয়, একটা সেপারেশন নয় যেটা সারিয়ে তোলা যায়। এটা বরং ছড়িয়ে পড়ে, শরীরে দানা বাঁধে, হয়ে ওঠে ব্যক্তিগত এক ক্যান্সার।

তখন খুব ভোর। আজ ওরা নিউ ইয়র্ক থেকে বাবাকে নিয়ে আসবে জানাজা আর দাফনের জন্য। সবাই নিঃশব্দে প্রস্তুত হচ্ছে। আমি ঘুম ভেঙে দেখলাম, আয়রন করা সাদা পাঞ্জাবি সুন্দর পরিপাটি ভাঁজ করা আমার বিছানার পাশে। আমার বোন বলল, আর আধা ঘণ্টার মধ্যে আমরা রওনা দেব। আমি কিছু বললাম না। তারা এখনই বেরোবে। আমার প্রস্তুত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

আমি রুম থেকে বেরিয়ে এলাম। দেখে তারা হতবাক। কিছুক্ষণ কেউ কিছু বলতে পারল না।

“তুমি কি সত্যি এটা পরে যেতে চাও?”

আমি কিছু বললাম না।

“সবাই এটা নিয়ে কথা বলবে, বুঝতে পারছ! তোমার ভালো লাগবে না। সবাই ভাববে– সবাই মনে করবে তুমি …”

আমার আরেক বোন তাকে থামিয়ে দিল। এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।

“মোটু, তোর যা খুশি তুই পর। তোর যা ভালো লাগে। যা করলে বাবার ভালো লাগবে বলে তোর মনে হয়, তাই কর।“

বোনেরা আমাকে মোটু বলে, পটকা বলে। ছোটবেলায় গোলগাল ছিলাম, সেই ডাকনাম আজও থেকে গেছে।

বাবার মৃত্যু জাতীয় ঘটনা। পুরো দেশ শোক করছে। ক্যামেরা জ্বলে উঠছে। কোথাও নৈঃশব্দ নেই, এক মুহূর্তের নির্জনতা নেই। বাবাকে আমার শেষ বিদায় জানানোর মুহূর্তটি লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে, সারা দেশবাসীর দেখার জন্যে। আমার কিছুই যায় আসে না। আমি এখানেই থাকতে চেয়েছি। তাঁর জানাজার সময় হয়ে এল। তাঁকে দাফন করার আগে শেষ মুনাজাত। সকলের চোখ আমাদের ওপর নিবদ্ধ। ঈদগাহ মাঠে জনসমুদ্রের মধ্য দিয়ে তাঁর মরদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমি।

এই প্রথম যে তিনি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছেন, তা নয়। কিন্তু এইবারই প্রথম, আমি আমার কাঁধে বহন করতে পারছি তাঁর ভার। এইবার আমি জানি, আমি কে। আমি তাঁর সবচেয়ে বড় ভক্ত। তাঁর সবচেয়ে কট্টর সমালোচক। আর তাঁর সবচেয়ে বড় ছেলে। আমি জানি, আমি কে।

এখন আমার একুশ বছর বয়স। একটা খুবই সুবিধাজনক জীবন আমি কাটিয়েছি। এ নিয়ে কক্ষণও কোনো অভিযোগ ছিল না আমার। একটা অসাধারণ মা পেয়েছি আমি, যিনি আমাকে বুঝতে পারেন, আমি যা-ই করিনা কেন, সমর্থন যোগান। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বোন পেয়েছি আমি, তাদের সকলের এখন নিজেদের সন্তান আছে, মামা হওয়া খুবই চমৎকার এক অভিজ্ঞতা– মজা আছে, কিন্তু দায়দায়িত্ব নেই।

আর আমি এমন এক বাবার গর্বিত সন্তান, যিনি সেরা গল্পগুলি বলতে পেরেছেন। অবাক লাগে, এত কিছুর পরেও আমরা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলাম। ধীরে ধীরে কীভাবে আমরা দূরে সরে গেছি, ভাবতে কষ্ট হয়। যখন একা হই, কোনো কাজ থাকে না, আমার মন ছুটে যায় এক অন্ধকার কোণে, যেখানে একটা ক্ষীণ স্বর ফিসফিস করে বলে, আমি ছিলাম তাঁর নিতান্তই এক সখের বস্তু, অন্য কোথায় সুখ খুঁজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত যার দিকে তিনি স্বল্পকালীন মনোযোগ ব্যয় করেছিলেন মাত্র। তাঁর বাহবা পাওয়ার পেছনে আজীবন ছুটেছি আমি, আমার সকল আগ্রহ আর অভ্যাস গড়ে উঠেছে এই এক প্রবণতা থেকেই। তা আর ত্যাগ করতে পারিনি। তাঁর জন্যেই তৈরি হয়েছি আমি, কিন্তু পর্যাপ্ত হতে পারিনি।

ওই ফিসফিস করা কণ্ঠস্বরে আমি কান দিই না, আমার বাবা আর তাঁর গল্প ওই কণ্ঠস্বরের চেয়ে জোরালো। আমার কাছে তিনি নেই, কিন্তু তাঁর গল্পগুলো থেকে গেছে। তিনি আমাকে ভালোবাসতেন। আমি নিশ্চিত, ভালোবাসতেন। হয়তো তাঁর মনোযোগ অন্যত্র সরে গেছে, হয়তো সুখ খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি, আর একা বোধ করেননি।

কিন্তু এটা তো ঠিক যে, কেউ কারও বিকল্প হতে পারে না। ভালোবাসা ফিরিয়ে নেওয়া যায় না।

নুহাশ হুমায়ূন: ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী, লেখক হুমায়ূন আহমেদের পুত্র।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫২

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ নুহাসের চিঠিটি শেয়ার করবার জন্য।আমার ধারনা চাইলেই সে বাবার মত বড় গল্পকার হতে পারবে।

৩৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

মশিকুর বলেছেন:
অমর লেখককে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধা প্রিয় লেখককে।

৩৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৭

ভাইটামিন বদি বলেছেন: .......অনেক অনেক ভাললাগা রইল। আমাদের বেড়ে উঠাই হুমায়ুন আহমেদ কে সাথে নিয়ে....কি হতো আরো ক'টা দিন আমাদের সাথে থাকলে???

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ভালো থাকুন তিনি, বেঁচে থাকুন আমাদের হৃদয়ে।

৩৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৫

ফোনেটিক বলেছেন: গল্পের জাদুক হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিনে শ্রদ্ধা

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধা প্রিয় লেখককে।

৩৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩০

সুমাইয়া বরকতউল্লাহ বলেছেন: অনেক দরকারী ও মূল্যবান পোষ্ট এটি। পড়ে ভালো লেগেছে।
অনেক কিছু জানলাম। অনেক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ আপনাকে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৯

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমাইয়া। ভালো থাকবেন।

৩৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৪

তুষার কাব্য বলেছেন: শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক!!!

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: উনার জন্য অন্তর থেকে দোয়া জানাই।

৩৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৩৫

খেয়া ঘাট বলেছেন: আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: স্বল্প পরিসরে এতো বড় একজন মানুষকে ধরা কঠিন । আপনার চেষ্টার জন্য সাধুবাদ । গানের লিঙ্কটার জন্য ধন্যবাদ । চোখ আর ভেজাতে চাইনা আজ ।

অনেক প্রার্থনা থাকুক তার জন্য

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: প্রার্থনা তার জন্য।

৪০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১৫

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: জনাব মাহাবুব বলেছেন: শুভ জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা এই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে।


ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার কষ্টসাধ্য লেখার জন্য।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৩

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ রেজোওয়ানা

৪১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জন্মদিনে শ্রদ্ধা ।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৩

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: শ্রদ্ধা স্যারকে।

৪২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

খোমেনী বলেছেন: একটা বিষয় মাথায় ঢুকলো না। আমরা অনেকেই হুমায়ুন আহম্মেদ এর জন্ম বার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা সহ অনেক অভ্যর্থনা জানিয়েছি। কিন্তু একজন পরলোকগত মানুষের সবপেয়ে বড় প্রাপ্তী হলো নাজাত। মুসলিমদের জানার কথা। তার মাগফেরাত কামনা করছি।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৪

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।

৪৩| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৯

ইখতামিন বলেছেন:
তিনি আমাদের মাঝেই আছেন, থাকবেন.

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: ধন্যবাদ ইখতামিন

৪৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৮:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: শিল্প ও সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গণে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি তার সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। হুমায়ুন আহমেদ তার অগণিত ভক্তকূলের হৃদয়ে দীর্ঘকাল শ্রদ্ধার আসনে বেঁচে থাকবেন।
আপনার লেখাটা চমৎকার হয়েছে। অনেক তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন। + +

৪৫| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ৩৩ নং মন্তব্যের জন্য খোমেনী কে ধন্যবাদ। নুহাশ এর গল্পটা চোখ দুটোকে আর্দ্র করে দিয়ে গেল!
“তার মুখে সবকিছুই গল্প হয়ে যায়“ - নুহাশ হুমায়ূন এর এ ছোট্ট কথাটা অসামান্য। তিনিও হয়তো তার বাবার মতই লেখার হাত পাবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.