নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা আছে বলে এখনো স্বপ্ন দেখি, নিজেকে নির্মাণ করার চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত...

সাইন বোর্ড

সব কিছুর উর্ব্ধে উঠা যায় না, তবু মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়...

সাইন বোর্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে দুর্গাপূজা এক সময় সার্বজনীন উৎসব ছিল

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:২৩


খুব ছোট বেলার কথা। আমাদের গ্রামে তখন প্রায় দুই-আড়াইশো হিন্দু পরিবার বাস করত, এদের অধিকাংশই ছিল পাল বংশের; তারা মাটির কাজ করত মানে মাটি দিয়ে হাড়ি-পাতিল সহ অন্যান্য জিনিস পত্র বানাতো এবং সেগুলো বাড়ি থেকেই বিক্রি করে দিতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে; যারা এগুলো কেনার পর তা গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করতো । তবে এসব পালেদের মধ্যে কিছু অতি গরীব হিন্দু পরিবার ছিল, যারা নিজেরাও তাদের তৈরী জিনিস পত্র গ্রামে ফেরি করতো। একটা সময় পর এসব পরিবার থেকে কিছু শিক্ষিত ছেলেও বের হতে দেখা গেল, যারা পরবর্তিতে গ্রাম-ডাক্তার, টেইলারিং এর ব্যবসাসহ অন্যান্য ব্যবসার সাথেও জড়িয়ে পড়তে দেখেছি। এতে করে বোঝা যায়, তাদের জীবন যাত্রার মান উত্তর উত্তর ভাল'র দিকেই যাচ্ছিল।

যাইহোক, এবার শিরোনামের কথায় আসি। তৎকালীন সময়ে আমার গ্রামের পূজা উৎসব দিয়ে হয়ত সারা বাংলাদেশের চিত্র পাওয়া যাবেনা, তবু আমি তখন পূজা উপলক্ষ্যে সব শ্রেণীর মানুষের মাঝে যে উৎসাহ-উদ্দিপনা লক্ষ্য করেছি, তাতে এমনটা না ভাবার অবকাশ নেই। কারণ এ পূজা উৎসবে শুধু আমাদের গ্রামের মানুষই না, আশে-পাশের অারো অনেক গ্রামের মানুষও অংশগ্রহণ করতো এবং তারা অপেক্ষা করতো এই উৎসবের জন্য। সেখানে গান-বাজনা হতো, বিভিন্ন যাত্রা পালার আয়োজন থাকতো, বিশাল পরিসরে মেলা বসত, এর মধ্যে মাটির তৈরী পুতুল, হাতি, ঘোড়ার ছোট ছোট মূর্তি বাচ্ছারা খুব আগ্রহ সহকারে কিনতো। খই, মুড়কি, বাতাসা, জিলাপি, পিয়াজি থাকতো খাবারের তালিকায়। এই পূজার আয়োজন ছিল নিয়মিত প্রতি বছর। এতে কখনো কোন বোমাবাজি বা বিশৃঙ্খলার কথা শুনিনি। পূজার পরেও বছরের অন্যান্য সময় এসব হিন্দুদের উপর বড় কোন আক্রমন হয়েছে বলে মনে পড়েনা।

তারপরও একটা সময়ে এসে এদের সংখ্যা কমতে শুরু করলো এবং পরবর্তিতে সেটা আশংকাজনকহারে। এখন আর মাত্র ৪/৫ টি হিন্দু পরিবার আছে আমাদের গ্রামে। সব চেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এরা সবাই ভারতে পাড়ি জমিয়েছে রাতের অন্ধকারে। কবে, কখন, কোথায় কার কাছে তাদের জমি জমা, ভিটে মাটি বিক্রি করেছে, তারা চলে যাবার আগে কেউ জানতে পারেনি। যদিও পরবর্তিতে আমরা জেনেছি, ঘটি-বাটি বিক্রি করে যারা চিরতরে ওপারে চলে গেছে, তাদের কেউই অর্থনৈতিকভাবে ভাল অবস্থায় নেই।

এবার বর্তমানের কথায় আসি, কয়েক দিন আগে আমার একজন অফিস কলিগ আফসোস করে বলেছিল, মার্কেটে তার পোশাকের দোকানের পাশে একজন হিন্দু লোকের দোকান আছে, পূজা উপলক্ষ্যে তার দোকানে সব সময় কাস্টমারের ভিড় লেগে আছে; আর আমার দোকানে কোন কাস্টমারই আসছে না, কারণ এসব কাস্টমার সবাই হিন্দু । অথচ ঈদের কেনা-কাটার সময় আমরা কোন হিন্দু-মসুলমানের দোকান বাছ-বিচার করিনা।

এখন পূজার মত বাঙালীর এত বড় একটা উৎসব বাংলাদেশে যে সর্ব্বজনীন উৎসব হতে পারছে না, তার জন্য আমার মনে হয় হিন্দুরাই দায়ী। কারণ আশংকাজনকহারে তাদের ইন্ডিয়ায় গমন এবং যারা আছে, তারা বাংলাদেশকে এখনো পুরোপুরি আপন ভাবতে না পারা। কথিত অাছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ হিন্দুরাই টাকা-পয়সা আয় করে বাংলাদেশে আর জমা রাখে ইন্ডিয়াতে এবং শোনা যায় এদের কারো কারো ইন্ডিয়াতে বাড়িও আছে। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে-মিশে এক সাথে বাস করবে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪

সামিয়া বলেছেন: ভালো বলেছেন.।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৮

সাইন বোর্ড বলেছেন: পড়া ও মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.