নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকাশের চিঠি শেষ; তবে এই পথ .. যেন না শেষ হয় চলুক পীরিতির সাম্পানে

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:৩৮

আকাশের চিঠি ধারাবাহিক চিঠির গল্প। একমাসের বেশী সময় ধরে পাঠকরা পড়ে যাচ্ছেন। কেউ নিয়মিত কেউ মাঝে সাঝে এসে, এক সাথে অনেক গুলো পড়ে নিচ্ছেন। কেউ অপেক্ষায় আছেন, শেষ হলে পুরোটা পড়ার। বিভিন্ন ব্লগে আর ফেইসবুকের গ্রুপে এক সাথে লেখাটা পোষ্ট করে গেছি।

প্রতিদিন একটা লেখা পোষ্ট করা, নিজের উপর অনেকটা ধকল গিয়েছে, সময় বার করে লেখা পোষ্ট করার। চেষ্টা করছিলাম একটা সময়ে প্রতিদিন লেখাটা পোষ্ট করার। প্রতিদিন একটা চিঠি পোষ্ট করার দায়বদ্ধতা ছিল নিজের কাছে। কয়েকবার সে বিষয়টায় ছেদ পরেছে। নিজের মনে একটা চাপ অনুভব করেছি তারজন্য। কিন্তু বাস্তবতা কাজ অনেক বেশি গুরুত্ত্বপূর্ণ তাই হয়ে উঠেনি নিজের শপথ সব সময় ঠিক রাখা। সবার সাথে মত বিনিময় করার সময় হয়নি।

অনেক সময় ধরে পাঠকের এই আগ্রহটা বড় ভালোলাগল। লেখার জন্য পরের ঘটনা জানার জন্য এই অপেক্ষা আগ্রহ দেখে,অনেক সময় মনে হয়েছে পুরো লেখাটা এক সাথে পোষ্ট করে দেই। অপেক্ষার কষ্টটা নিজে অনুভব করেছি।

মনে পড়ে গেছে। এক সময় বনহুর নামের একটা সিরিজ পড়তাম। যুদ্ধের সেই আগের সময়টা, স্কুল বন্ধ অফূরন্ত সময়। আমার এক কাজিন চার আনার বিনিময়ে একটা করে বই নিয়ে আসতেন বনহুর সিরিজের। আমি এক দেড় দিনে, কখনও আধাদিনে সেই বই পড়া শেষ করে ফেলতাম। কিন্তু কাজিনের পড়া শেষ হতো না। বড় মানুষ উনার অনেক কাজ সেরে অবসর সময়ে পড়তে হতো। আর আরেকটা বইয়ের জন্য পরের সিরিজের জন্য কী ভয়াবহ আকুলি বিকুলি করত মন। শেষে আমার তাড়নায় এক সাথে দশটা করে বই নিয়ে আসতেন। আমি একটার পর একটা পড়তে থাকতাম।

বই পড়ার ঝোঁকটা ছিল খুব ছোট বেলা থেকে। সেই ঠাকুর মার ঝুলি রূপকথার গল্প, দিয়ে যা শুরু হয়। বাঙ্গালির হাসির গল্প থেকে। ঘুরে ঘুরে মামার উপহার দেয়া সেই নীল পেয়ালা", তিয়াপা বরকা আর রকেট" চেখব, মার্ক টোয়েনের দরজায় পৌঁছে যাওয়ার মজা গেঁথে দিয়েছিল মনে।

বড় বড় উপন্যাস কয়েকদিন ব্যাপী পড়ে যখন শেষ হয়ে আসত। পিছনের পাতাগুলো কমে যেত তখন ইচ্ছে হতো ইস এই দু পাতা পড়লেই শেষ হয়ে যাবে আরো যদি অনেক পাতা থাকত পড়ার। সার্থক গল্পগুলো এমনই আগ্রহ তৈরী করত মনে। শেষ হওয়া গল্পের পাত্রপাত্রী, কথা বলত অনেকদিন ব্যাপী, মন জুড়ে থাকত তাদের আনা গোনা।
স্কুলে কোন বন্ধুর কাছে গল্পের বই দেখলে নেয়ার জন্য ব্যাস্ত হতাম। না দিতে চাইলে সারাদিন ব্যাপী পড়ে শেষ করে ফেলতাম। খুব প্রিয় একটা বই এভাবে পড়েছিলাম ক্লাস সিক্সে থাকতে," দ্বীপের নাম টিয়া রঙ" বুকের ভিতর হুহু করা এক কান্না বয়ে বেরিয়েছি কতদিন। দ্বিতীয় যুদ্ধের ভয়াবহতা ছাড়েনি কোন সূদূর দ্বীপের অতি সাধারন মানুষদের।
আমাদের ছোটবেলায় বই পাওয়া তাও সুদূর মফস্বলে বসে বড় দূরহ ব্যাপার ছিল। তাই ঢাকা আসার সুযোগ পেয়েই বই কিনে ঘর ভরে ফেললাম। ছোটরা পড়ে পণ্ডিত বনে গেল। আমার মতন কষ্টটা করা লাগল না। আমার ছোট বোন তো "রানুর প্রথম ভাগ" পুড়ো মুখস্ত করে বসেছিল। আমি তো ওর বয়সে বাবা মার ট্রাংকে আলমারিতে তোলা কয়েকখানা বই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পড়তাম। কত অল্প বয়সে, কেয়াবান সঞ্চারীনি, বা দেশেবিদেশে, ওমর খৈয়ামের রোবায়েৎ কতটা মাথায় নিতে পেরেছিলাম মনে নাই তবে বই পড়ার ঝোঁকটা চেপে গিয়েছিল।
পূজা সংখ্যা শরদিয়া আসত আমার এক বন্ধুর বাসায়। অপেক্ষা চলত কবে তাদের বাড়ির পড়া শেষ হবে। শিশু ভারতীর অনবদ্য গল্পগুলো কী দারুণ টানত। নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের 'টেনিদা" পড়ার জন্য মাসকাবারী অপেক্ষা করতে করতে নিজের পিলেই নড়ে উঠত।
কলকাতার বাজার ঘুরে সেই বই জোগার করে তুলে দিয়েছিলাম ছেলের হাতে। সমান আগ্রহে দুজনে নির্যাস নিতাম এক সাথে। যেমন সুকুমার রায়ের আবোলতাবোল পড়তে বসা। হাসতে হাসতে গড়াগড়ি যাওয়া প্রতিবার।
বই পড়ার সাথে বই কেনা আর বইয়ের জন্য সুদৃশ্য সেলফের আগ্রহও মনে গেঁথেছিল। পত্রিকায় দেখে লণ্ডনের গ্রন্থাগারের এক নতুন ধরনের সেলফের ছবিটি কতদিন ব্যাপী সযত্নে রেখেছিলাম নিজের কাছে। পরবর্তিতে ওমনি একটি সেলফ সাজিয়ে ছিলাম নিজের ঘরে। সেলফ আর ঘর ভর্তি বই তার থেকে দু চারজন আপন মনে করে, কখন তুলে নিয়ে যায়। অনেক সময় সাথে সাথে বুঝতে পারতাম না্, নজরে পরত অনেকদিন পরে। পরে বসার ঘর থেকে সরিয়ে ফেলতে হলো সেলফ। যখন কোন বই খুঁজে পেতামনা। পড়তে গিয়ে। সেই সময়, গোলাপ সুন্দরী, গর্ভধারীনি, কালবেলা, নহন্যতে এবং আরো বই হারিয়ে যাওয়ায় কিযে মন খারাপ ছিল। তবে বই নিয়ে গেলেও অনুভব নিতে পারেনি। বরং যারা নিয়েছে তারাও হয়ত ভালোবেসেছে সে সব গল্প। তাই এখন আর কোন দুঃখ নেই।
একবার কলেজে পড়ার সময়, হোস্টেল থেকে এক কাজিনের বাসায় গেলাম। পরদিন খুব ভোরে বাস ধরতে হবে বাড়ি যাওয়ার। সেই বাসায় পেলাম সপ্তপদী" নামের একটা বই। ভোর চারটায় উঠতে হবে কিন্তু আমি বই পড়া শেষ না করে ঘুমাতে যাচ্ছিনা্। তখন যার বই তিনি বললেন, নিয়ে যাও বইটা। আহা কী যে আনন্দ হলো। পরদিন সপ্তপদী পড়তে পড়তে ঢাকা থেকে বাড়ির পথ পারি দিলাম। পরবর্তিতে উত্তম সুচিত্রার অভিনয়ে, এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বল তো......

সপ্তপদীর পড়া আর ছবি মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। পড়ার পথও শেষ না হোক চলুক অনন্তকাল নিয়ে আসুক নতুন চটক, চমক, আবেগ, ভালোবাসা। সুহৃদ পাঠক আমার ভালোবাসা অনেক, সাথে থাকার জন্য। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষার জন্য। প্রথম চিঠি থেকে শেষের অনেকটা জুড়ে অনেকের মনে দ্বন্ধ লেগেছে। চিঠিগুলো আমার নিজের কি না। অনেকে কৌতুক করে মন্তব্য করেছে। অনেক অপেক্ষায় থেকেছে। অনেকে জানতে চেয়েছে চুপিসারে। আমি উপভোগ করেছি পাঠকের অনুভূতি।এই ব্যাপারটা শুধু এই গল্পের জন্য নয়, অন্য গল্প পড়েও এমন প্রশ্ন আমাকে করেছে, অনেক পাঠক।
আমি নই আমার কল্পনা। সাজিয়েছি মনের আনন্দে ভালোবাসায়। চারপাশের ঘটনা থেকে অনেক কিছু কল্পনা করি, সাজাই। সব গল্পের চরিত্র কী হওয়া সম্ভব? একটা সময় বড় লেখকদের গল্প পড়ে সেই চরিত্রটা হয়ে যেতাম। এখন চারপাশ পরখ করি খুব মন দিয়ে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



অনেক সুন্দর একটি সিরিজ শেষ হয়ে গেলো। প্রতিটা পর্বই উপভোগ করেছি।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ভালোলাগল জেনে। কারো মনে লেখা স্থান করে নিলে সে অনেক বড় পাওয়া লেখকের। ভালোবাসা জেনো ..কাণ্ডারী অথর্ব

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: সেভাবে জানান দেয়া হয়নি, তবে পড়েছি এবং ভালো লেগেছে।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১০

রোকসানা লেইস বলেছেন: জনপ্রিয় লেখক হাসান মাহবুবের উপস্থিতি এবং মন্তব্য বরাবর আনন্দদায়ক। সমঝদার মানুষের মন্তব্য উৎসাহীত করে।

শুভকামনা হাসান মাহবুব

৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: আকাশের চিঠির সাথে সাথে থাকতে ভাল লাগছিল। নীলের জন্য আপনার অনুভূতিগুলো খুব সত্যিকারের মনে হচ্ছিল।

প্রথম পর্ব পড়বার অনুভূতি জানতে চেয়েছিলেন। প্রথম পর্বটা খুব সুন্দর, কাব্যিক ছিল। ভাবি নি সেটা এইদিকে যাবে। ভাবি নি এতদিন ধরে এমন একটা গল্প চলবে। তবে চলেছে বলে ভাল লাগছে।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২০

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সমুদ্রকন্যা।
একটা গল্প আপনাকে কাছে রেখতে পেরেছে ভালোলাগা দিতে পেরেছে এই ভালোলাগা আমি উপভোগ করছি।
চরিত্রটা সঠিক ভাবে প্রকাশ হয়েছে তাহলে বুঝলাম।
সুয়োগ পেলে আমার বই পড়ে দেখবেন।

অজানার স্রোতে" উপন্যাসটি পড়ে একজন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার গল্পকি আপনাকে বলেছিলাম? পাঠকের সাথে মিলে গিয়েছিল গল্পের কোন ঘটনা। আমি কল্পনায় সাজাই বাস্তবতার নিরিখে।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোর যাত্রা বইটা প্রকাশের কিছু দিন পরে একটা ব্লগের লেখা পড়ে আমি নিজেই চমকে উঠেছিলাম। গল্পের এক জায়গায়র অদ্ভুত মিল ছিল বাস্তবের সাথে যা প্রকাশ পেয়েছে আমার লেখায় নিজের অজান্তে ।
অনেক শুভকামনা

৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৬

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: সবসময় আকাশের চিঠির সাথে থাকতে চেস্টা করেছি। তবে সেভাবে জানান দেয়া হয়নি। আশাকরি আবার নতুন কিছু্নিয়ে আসবেন।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:১২

রোকসানা লেইস বলেছেন: .ধন্যবাদ ........জেনে খুশি হলাম।

চেষ্টা করব

৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা ......

৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫

রাইসুল সাগর বলেছেন: নতুন কোন কিছুর জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভকামনা রাইসুল সাগর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.