নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিউলি ফুলের ঘ্রাণ পাচ্ছি

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫২

অন্ধকার তখনও ডানা ছড়িয়ে আছে। আশ্বিনের শীত ভোর শান্ত সতেজ। কাঠের দোতলা বাড়িতে বাচ্চা মেয়েটার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘরের ভিতর মিশমিশে অন্ধকার। চারপাশে দেখে ঘরের অন্যপাশে সাদা ভুতের আভাস দেখে ভয় পেতে পেতে সামলে নেয়। দাদী জায়নামাজে। দাদীর সাদা কাপড়ের উঠা বসা পরখ করতে করতে উঠে বসে বিছানায়। দরজা ঠেলে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। বারান্দার রেলিং ধরে দাঁড়ায়। বটগাছের পাখিগুলো তখনও চোখ মেলেনি। কত রঙের পাখি সারাদিন ভর নেচে বেড়াবে গাছটা জুড়ে।
হালকা কুয়াশায় ঢাকা পাতা নড়ছে ঝিরিঝিরি। শীতের কাঁপন লাগে। শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠে। তবু ধূঁয়া ধূঁয়া পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকে । নিচে সবুজ অঙ্গিনার প্রতিটি ঘাষের মাথায় একটি হীরের কণা।দূরে সরকারি পুকুরের পানি থেকে ধূঁয়া উড়ছে। তারও পরে গাছগুলো সবুজে জড়াজড়ি করে মিশে আছে ধূষর পৃথিবীর সাথে। স্কুলের লাল চালের আভাস দেখা যায় তার ফাঁকে।
দূরে পাহাড়টাকে খুঁজে মেয়েটা। কুয়াশা ঘিরে আছে সব । দৃষ্টির সামনে সব সাদা হয়ে আছে দূরের পৃথিবী।
ঘরে ঢুকে সোয়েটার পরে ছোট ঝুড়ি হাতে নিয়ে, তরতর করে নেমে যায় সিঁড়ি বয়ে নিচে। পেছনের উঠান পেরুলে পুরোটা জায়গা গাছের বন। পশ্চিমদিকে জায়গায় এত গাছ পাতায় পাতায় হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। সেই গাছের বন ওর মনে ভয় ধরায়। কত রকমের ফল আর নাম নাজানা গাছ। উঠোন পেরুলে দুপাশের গাছের সারির মাঝ দিয়ে হাঁটাপথ পুকুরে গিয়ে থেমেছে।
বামপাশে বিশাল একটা মাচায় সীমফুলের বেগুনি ফুলগুলো কেবল রঙ ধরতে শুরু করেছে। সীমপাতা পেরে হাতের উপর রেখে পটকা ফুটানোর খেলা শুরু হবে আরো পরে। যখন বন্ধুরা সব জেগে উঠবে। পূজার ছুটির সময় শুধুই খেলা। আর ঢাকের শব্দে নাচা। মাইকে যখন গান বাজবে, পূজার প্যান্ডেল থেকে, বুকের ভিতর কেমন যেন হুলুস্থুল হবে। এক একটা প্যান্ডেল থেকে এক এক রকম গান, সব গান সব সুর এক সাথে ভালোলাগা দিবে। দিদিরা সব এক সাথে খুশি খুশি মনে ঘুরে বেড়াবে। হাসি হাসি মুখে কথা বলবে। কাছে ডেকে আদর করে হাতে প্রসাদ তুলে দিবে। দূর্গা প্রতিমার সামনে পুরোহিত আর কত রকমের জিনিস সাজানো। মন্ত্র হচ্ছে। ধূপের গন্ধ। সাদা ধুতি পাঞ্জাবী পরে ছেলেরাও সব বাবু হয়ে খুশি মনে ঘুরে। পুজার সব কটা দিন ধরে শহর জুড়ে কেমন ব্যাস্ততা খুশি খুশি ভাব। । বিকালে মাসিমারা দল বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি পরে মন্ডপে যাবে। সবার সিঁথি আর কপালের সিঁদুর যেন বেশী বেশী লাল হয়ে যায় এই কদিন।
বাড়িতে বাড়তি সব খাবার আসতেই থাকে এ কদিন।

এখন ভোরবেলা কেউ জাগেনি।
উঠানের এককোনে শিউলিগাছটা ডাকছে ওকে। গাছেরতল ফুলের বিছানা। সাদা পাপড়ি, কমলা বোটার রঙ নিয়ে ফুলগুলো অপেক্ষায় করছে ওর হাতের ছোঁয়া পাওয়ার। মেয়েটা বারান্দায় খানিক দাঁড়িয়ে গুটিগুটি পায়ে নেমে এলো উঠানে। ঝরকা কাটা মাচার পাশ ঘেষে এগিয়ে গেল জলপাই, আমড়া কাঠাল গাছটার পাশেই ছোট শিউলিফুলের গাছ ডালপালা মেলে ছাতার মতন দাঁড়িয়ে আছে। ছোট ছোট হাতে কুড়াতে লাগল ঝরে পরা সব ফুল। ঝুড়ি উপচে উঠেছে গাছে তখনও অনেক ফুল। টুপ করে শিশির বিন্দু, ঝরে ভিজিয়ে দিচ্ছে চুল। শিউলি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে ভরে উঠছে শরীর। মেহদি রঙের মতন রাঙা হয়ে গেছে আঙ্গুল।


মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০৯

আবু তালেব শেখ বলেছেন: ভালো লাগলো

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:৪৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা আবু তালেব শেখ

২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:০৯

মলাসইলমুইনা বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার লেখা |

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২২

রোকসানা লেইস বলেছেন: শারদিয় শুভেচ্ছা মলাসইলমুইনা

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১০

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: সুন্দর লেখা।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সৈয়দ মশিউর রহমান

৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: শারদীয় কাব্য, চমৎকার হয়েছে। শিউলি ফুলের মতই স্নিগ্ধ।
ভাল লাগা + + রেখে গেলাম।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:১১

রোকসানা লেইস বলেছেন: শারদীয় শুভেচ্ছা আপনার জন্যও।
ভালো থাকুন সব সময়

৫| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:৪৩

এম এ কাশেম বলেছেন: শিউলি ঝরা ভোরের কথা কাব্যে হারানো দিনের স্মৃতি - সুখপাঠ্য।

শুভেচ্ছা জানবেন।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:১১

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য। শুভেচ্ছা

৬| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:২৮

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।






ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:০৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভেচ্ছা আপনিও অনেক ভালো থাকুন........দেশ প্রেমিক বাঙালী

৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৫:১৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ভাল লেগেছে গল্প। শেষটায় এসে অভিভুত হলাম ।
কাঠাল গাছটার পাশেই ছোট শিউলিফুলের গাছ ডালপালা মেলে ছাতার মতন দাঁড়িয়ে আছে। ছোট ছোট হাতে কুড়াতে লাগল ঝরে পরা সব ফুল। ঝুড়ি উপচে উঠেছে গাছে তখনও অনেক ফুল। টুপ করে শিশির বিন্দু, ঝরে ভিজিয়ে দিচ্ছে চুল। শিউলি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে ভরে উঠছে শরীর। মেহদি রঙের মতন রাঙা হয়ে গেছে আঙ্গুল।

আপনার লেখায় সীম ফুলের কথা উঠে এসেছে ।

দেখুন না সীম ফুলকে নিয়ে লেখা যায় কিনা কোন সুন্দর গল্প কবিতা ।

শুভেচ্ছা রইল

৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:০৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: শিউলিকুড়ানো ভোরগুলো মধুর স্মৃতি হয়ে বসে আছে হৃদয়ের মনিকোঠায় তা থেকে একটু ঢেলে দিলাম সবার জন্য।
সীমের নীলচে বেগুনী অন্যরকম ফুলগুলো সবসময় অন্য রকম আকর্ষণ নিয়ে তাকিয়ে থাকত আমার দিকে।
আচ্ছা দেখি কিছু এসে যায় কিনা গতিময়তায় আপন ঝর্ণাধারায়।
শুভেচ্ছা আপনার জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.