নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মার আত্মীয়

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৫৪




লিটন মারা গেছে । কাজের মাঝে এক ফাঁকে ফেসবুকে ঢুকেই এই স্ট্যাটাসটা দেখে চমকে উঠলাম। স্ট্যাটাসটা আমার বোন দিয়েছে । কিভাবে সম্ভব তরতাজা যুবক স্বাস্থবান, শক্তিমান একটা মানুষ এমন হুট করে চলে গেছে ভাবতে পারি না।
লিটন কে, লিটন আমার প্রিয় ভাই। রক্তের সম্পর্ক ছাড়া আত্মার আত্মীয় ।
গত কয়েক দশকের স্মৃতি তার সাথে এই স্মৃতি এক একটা এসে হানা দিচ্ছে আমার মনে। বাস্তব জীবনের চলা থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে বারেবারে। আমার চোখ ভিজে উঠছে আমি কাঁদছি একা একা গতকাল থেকে খবরটা পাওয়ার পর থেকে।
লিটন আমার সামনে হাজির হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। ওর প্রাণ খোলা হাসি মজার মজার বলা কথা, কত স্মৃতি আমাকে আনমনা করছে, চারপাশে লিটনকে দেখতে পাচ্ছি।
মানুষ মৃত্যুর কাছে অসহায় কে কখন চলে যায় কেউ জানে না। লিটনের মৃত্যু আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে মনে করিয়ে দিল।

আমাদের সমাজটা বড় নষ্ট আমরা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করি বড় বেশি। কিসের গড়িমায় সমাজের কিছু মানুষকে আমরা নিচু অচ্ছুত করে রাখি জানি না। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায় যে মানুষগুলোকে অচ্ছুত করে রাখা হয় তারাই অনেক বড় মনের মানুষ।
শোকে দুঃখে আনন্দে বুক পেতে দেয় তারাই, আগলে রাখে তারাই আমাদের।
আমি শিখেছি মানুষকে এক রকম ভাবতে এই শিক্ষাটা এসেছে আমার পরিবার থেকে।
আমার মা বাবা যদি মানুষকে তার জাত ধর্ম অর্থের পরিমাপে বিচার করে তাদের সাথে মিশতে শিখাতেন, আমার হয় তো লিটনের সাথে কোন সম্পর্ক হতো না কখনো। কিন্তু আমি সে শিক্ষা পাইনি। বরং দেখেছি আমাদের পরিবারে সব মানুষ আসে তারা পরিবারের সদস্যর মতনই ব্যবহার পায়।
তিনটি ছোট ছোট ছেলে মেয়ে বিধবা হয়ে যায় আমেনা। তার আগে থেকেই তাদের আমাদের বাসায় আসা যাওয়া। আমার মায়ের ডান হাত আমেনা। আমেনার শ্বাশুড়ি লিটনের দাদীও এসে বসে থাকত আমাদের বাসায়।
তিনটি বাচ্চার সব চেয়ে ছোটটা লিটন। যখন আমাদের বাসায় আসা যাওয়া শুরু হয়েছে কত আর বয়স তার তিন কি চার। স্কুলে যায় কিন্তু পড়ালেখায় মন নেই বিশেষ। আমাদের বাসায় আসা যাওয়া টেলিভিষণের সামনে বসে থাকা এতে বড় আনন্দ।
আমার ছোট বোনগুলোর সাথে খেলে। একজনকে ডাকে রাঙাদি অন্যজন দিদিমনি। তাদের সাথে যেমন ভাব তেমন ভয়ও পায়। ভাইবোনের মতন লাগা লাগি মন কষাকষিও ছিল। কোথাও কিছু পাঠাতে হলে, বাজার থেকে কিছু কিনে আনতে হলে। কোন অনুষ্ঠানের আয়োজনে সব সাজানো গোছানাে, ক্ষণে ক্ষণে বাজার যাওয়া একে তাকে খবর দেয়ায় কোন ক্লান্তি ছিল না । লিটন ছাড়া ওরাও অসহায়।

মায়ের পানের বাটা ,চায়ের কাপ এগিয়ে দেয়া কখনো। এভাবেই কখন হয়ে উঠে আমার বাবা মায়ের পাশে দাঁড়াবার শক্ত হাত।
আমরা ভাইবোনরা নিজেদের পড়ালেখার জন্য বাসার বাইরে থাকি। ছুটিছাটায় বাড়ি ফিরি। কদিন মেহমানের মতন কাটিয়ে আবার হলে হোস্টেলে ফিরে যাই। আবার আমরা ভাইবোনরা নিজেদের সংসারে ব্যাস্ত বাবা মায়ের সাথে সময় দেয়ার সময় কই নিজেদের ব্যাস্ততায়।
মা বাবার পাশে থাকে তারা দুই ভাই লিটন, খোকন। এখন বড় হয়েছে, শহরের রাস্তা, ডিসি অফিস পরিস্কারের দায় ভাড় তাদের উপরে।
এই কাজের দায়িত্ব শুধু পরিস্কার করায় মধ্যে সরকারি কাজে সীমাবদ্ধ থাকে না। প্রত্যেক অফিসার যারা আসেন শহরে ওরা দুই ভাই হয়ে যায় প্রিয় ভাজন সবার কাছে। তাদের কাছে জানতে চায় ,এত সুন্দর কাজ কি ভাবে শিখেছো? এত ভালো আদব কায়দা তোমাদের,খুব ভালো পরিবারের সন্তানদের মধ্যেও পাওয়া যায় না। কিভাবে শিখলে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে,খুব গর্ব করে তারা বলে, আমার আম্মা ,আব্বার কাছে শিখেছি। কে তোমার আব্বা, আম্মা?
আমার আব্বা আম্মা ডাক্তার সাহেব আর উনার ওয়াইফ। ওদের অফিসে এবং অফিসের বাইরে সাহেবদের বাসায় যত কাজ থাকুক, প্রতিদিন ফাঁক খোঁজে তারা চলে আসে বাবা মায়ের সেবা করতে। তারা জানে ওরা না গেলে অনেক কাজ সম্পন্ন হবে না বাবা মায়ের। তাই সব কষ্ট সহ্য করে সময় বের করে চলে আসে আমাদের বাসায়। সন্ধ্যায় চা বানিয়ে বাবা মায়ের সাথে লুডু খেলার সঙ্গ দিত। গল্প করত মজাদার। যাতে তারা একা মনে না করেন কখনো।
বিশাল বাড়িতে দরজা জানলা বন্ধ করার কাজও কম না। যখন কেউ থাকে না বাড়িতে রাত গভীর পর্যন্ত তারা সাথে থাকে। আবার বাড়ির সবাই বাইরে গেলে তাদের কাছে চাবি দিয়ে আসা হয় বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য। এতটাই আপন হয়ে উঠেছে ওরা আমাদের।

বাড়ি গেলে সকালে লিটনের বানানো চা না পেলে মন ভরত না আমার। আমাদের প্রতিটা উৎসব তাদের উৎসব আয়োজন ছিল।
আমি যখন ঢাকায়। মাঝে মধ্যে লিটন হাজির হতো, বাবা মায়ের বেঁধে দেয়া নানা রকম সামগ্রী নিয়ে। কাঁচা মাছ মাংস থেকে রান্না করা তরকারী, পিঠা পুলি, ঘি কত কিছুর বিশাল লটবহর বয়ে আনতে কোন না ছিল না কখনো।

আমার বাবার সাথে গিয়েছে দেশের নানান জায়গায় । শহরের বাইরে যে বিশাল একটা দেশ আছে তা জেনে মহা খুশি। আব্বা যেমন তাকে চিনিয়ে দিতেন নানা ঐতিহাসিক জায়গা তেমন সে আব্বার পাশে থাকত আব্বার যেন কোন অসুবিধা না হয় তা দেখার জন্য।
একবার শুনলাম আমার ভাইয়ের খুব শরীর খারাপ তাকে যখন গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে লিটন রাস্তা থেকে গাড়িতে উঠে বসেছে। যেমন ছিল সেই অবস্থায়। তার কাজ, আরেক প্রস্ত পোষাক সাথে নেওয়ার কোন হিসাব তার ছিল না।
ভাইয়া অসুস্থ , ভাইয়ার পাশে থাকতে হবে এই ছিল তার প্রধান চিন্তা। ভাইয়া যে কয়দিন হাসপাতালে ছিল সে পাশ থেকে নড়ে নাই। একটু শব্দ করলে অস্থির হয়ে কাছে গিয়ে জানতে চাইত ডাক্তারকে ডেকে আনবে কিনা। তার কোন নার্সিং ট্রেনিং ছিল না কিন্তু সে ছিল দারুণ একজন সেবক। তার যেন দ্বায়িত্ব ছিল মায়ের ছেলেকে ভালো করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে নেওয়ার। নয়তো সব দায় ভাড় তার উপর পরবে।
একবার আমার ছোট বোনের কিশোর ছেলে আমাদের দোতলার ছাদের উপর থেকে পরে যায়। আমাদের বাড়ির কেউ সে খবর পায়নি তখনও। রাস্তা থেকে মানুষ ওকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দিয়েছে। কে যেন দৌড়ে লিটনকে খবর দিয়েছে তোর দিদিমনির ছেলে ছাদ থেকে পরে গেছে । লিটন সবার আগে হাসপাতালে হাজির। বাড়ির কেউ তখনও জানেই না দূর্ঘটনার খবর বা শোনার পর পৌঁছাতে পারেনি হাসপাতালে তখনও। যারা হাসপাতালে নিয়ে গেছে তারা কেউ ছেলেটির পরিচয় দিতে পারছিল না, লিটন তখন সমস্ত দ্বায়িত্ব নিয়ে ছেলেটি তার ভাগনা ডাক্তার যেন ভালো করে চিকিৎসা করে এর জন্য পাশে দাঁড়ায়।
অজ্ঞান অবস্থা থেকে চোখ মেলে ছেলেটি অচেনা মানুষের মাঝে লিটনকে দেখে লিটন মামা বলে জড়িয়ে ধরে, স্বস্থি পায়। লিটনও তাকে বুকের মাঝে আগলে রাখে যখন তার পিঠ জুড়ে ঢুকে যাওয়া অনেক কাঁচের টুকরা ডাক্তার পরিস্কার করছিল। নিজের চোখ দিয়ে পানি পরছিল কিন্তু শান্তনা দিচ্ছিল কিচ্ছু হবে না মামা তোমার, আমি আছি তো পাশে। কঠিন এ গল্প গুলো ও করছিল হাসতে হাসতে পরে কিন্তু আমার চোখ ভিজে যাচ্ছিল বারেবারে।
একবার বাড়ি গেছি আমার মেয়ে তখন খুব ছোট, বিছানায় শুয়ে আছে লিটন এসেছে আমাকে দেখতে বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। আমি বসে আছি বিছানায়। হঠাৎ ভুমিকম্প শুরু হলো সেকেন্ডের কম সময়ে ক্ষিপ্রগতিতে সে আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে দৌড়ে নিচে উঠানে চলে গেল। আমাকে বলে গেলো আমি মাকে নিয়ে গেলাম, আপনি আসেন ধীরে সুস্থে । এই যে ভয়ানক রকম তাতক্ষনিক বুদ্ধি ওর মাথায় ছিল। অনেক শিক্ষিত মানুষের মধ্যে এমন তড়িৎ ভাবনা আসতে আমি দেখিনি।
আমি দেশে গেলে লিটন আমার সাথে শহর প্রদক্ষিণ করত। ও বলত আপা আপনি আগে তো এত হাঁটতেন না। এখন হাঁটার দেশে গিয়ে কাজ করতে করতে বসে থাকলে মনে হয় শরীরে জঙ ধরে যায়। তোর ঝাড়ু দিস কাল আমি রাস্তা পরিস্কার করে দিব তোর হয়ে। হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যেত। এসব কি বলেন আপা। আপা একা একা হাঁটতে বের হবেন না। শহরটা আর আগের মতন নাই। খারাপ মানুষে ভরে গেছে। একটা টর্চ নিয়ে আমার সাথে সাথে হাঁটত রাত দশটা এগারোটা পর্যন্ত অনেকক্ষণ আমরা হাঁটতাম সারাদিনের কাজ শেষে কর্ম ক্লান্ত হয়েও সে আমাকে পাহাড়ায় রাখত তার দ্বায়িত্ব বোধ থেকে।
একদিন নদীর পাড়ে গিয়ে বসেছি হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামল। শহরের বেশ কিছু ছেলে ছিল সেখানে রোমেন আমাকে বলল , আমার সাথে হোন্ডা আছে চলেন পৌঁছে দিয়ে আসি। বৃষ্টিতে ভিজে যাবেন। সমস্যা নাই বৃষ্টিতে ভিজেই যাবো আজ। রাত নটার দিকে তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরলাম, লিটন আর আমি ভিজে চুপচুপ হয়ে। পথে অনেকের গাছের আম ঝরে পরেছিল বৈশাখি ঝড়ে, আমরা হাসাহাসি করে সে সব কুুড়ালাম আঁচল ভরে ছোটবেলার মতন আনন্দে।
আমরা মাছ ধরব। নৌকা মাঝ পুকুরে নিয়ে যাওয়া। ছিপে আঁধার লাগানো । মাঝ ধরা পরলে তা যত্ন করে বড়সি থেকে খুলে নিয়ে হাড়িতে রাখা এসব কাজ লিটনের। আমরা শুধু ছিপ ফেলে মাছ ধরার আনন্দ পেতাম।
ওর গল্পের ঝুড়িতে কত যে গল্প ছিল, ও মজা করে হাসত সবাইকে নিয়ে। কিন্তু এত ভালোবাসত আন্তরিকতায় এর কোন তুলনা হয় না। মানুষের ব্যবহারে তাকে বিশাল করে । লিটন অনেক ভালো কাজ করেছে যা তাকে বিশাল করেছে তার অবস্থানের চেয়ে।
আমার বাবা বেখেয়ালি ছিলেন সরল বিশ্বাস ছিল মানুষের উপর সে সুযোগে অনেকে ঠকাত উনাকে। মানুষের এসব অপকর্ম সে বুঝতে পারত । সে, বলত, আব্বাকে বলতাম, "আব্বা, এই সব লোকরে পাত্ত দিয়েন না। সবটা তো বলতে পারতাম না খোলাখুলি ভাবে।" এই যে কথা বলার মাত্রা বোধ এটা সে কেমন করে পেয়েছিল। আব্বা বলতেন, "দূর বেটা বাদ দে এরা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।" "আব্বার তো এমনই কথা কিন্তু আপা, আমার মনটা এমন করত মনে হয় এদের ভালো করে মাইর দেই কিন্তু আব্বার জন্য কিছু করতে পারি না।"
আপা, একদিন দেখি শহরের কয়েকটা ছেলে একটা মেয়ের সাথে লাগছে, (ইভটিজিং করছে)। আমি আড়ালে দাঁড়িয়ে অনেক্ষণ দেখছি মেয়েটা মনে হয় কোচিং শেষ করে বাড়ি যাচ্ছিল আমাদের বাসার পাশ দিয়ে রাস্তা নির্জন। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। যখন দেখলাম ছেলেরা মেয়েটার গায়ে হাত দিয়ার চেষ্টা করছে, দৌড় দিয়ে তাদের সামনে দাঁড়ালাম।
চার পাঁচজন ছেলে প্রথমে ভয় পেলেও আমার দিকে তেড়ে আসল। কিন্তু একলা মেরে দৌড়ায়ে দিছি। পরে মেয়েটাকে বাসায় দিয়ে আসছি। নিজের জীবন বিপন্ন করে এ ভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া এটা সবাই করে না।
এমন অনেক ঘটনা অনেক গল্প লিটনকে ঘিরে স্মৃতির পাতায় ছায়াছবি হয়ে ভাসছে।
একদিন খুব বিনিত ভাবে বলল, আপা একাটা কথা বলি রাখবেন।
আমি ওর বিনয় দেখে শংকিত হলাম কি না জানি বলবে। বললাম বলে ফেল শুনি রাখার হলে রাখব। আপা কাল সন্ধ্যায় আমার বাড়িতে আপনার নিমন্ত্রণ। এ কথা বলার জন্য এত ভনিতা করছিস কেন? যাবো তবে নিমন্ত্রণ করতে হবে না। না আপা আব্বা নাই একদিন যদি আমার বোনকে বাসায় নিয়ে খাওয়াতে না পারি আমার আব্বার মন খারাপ হবে না। ওর নিমন্ত্রণের আড়ালে যে কত বড় ভাবনা কাজ করছিল যা শুনে আমার হৃদয় ভরে গেলো। পরদিন সন্ধ্যায় ওর বাড়ি গিয়ে দেখি বিশাল আয়োজন। নিজেদের রান্না ছাড়াও অনেক কিছু কিনে এনেছে। আমি বললাম তুই জানিস আমি বাইরের খাবার খাইনা তবে খাবার কিনেছিস কেন এতো। ওর বউয়ের বানানো খাবার খেলাম মজা করে। ওর ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে গিয়েছে তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। মেয়েটার বিয়ে দিবে, ঠিক হয়েছে। আরেকটু পড়ালেখা করাতি মেয়েটাকে ।
আপা পরিবেশ ভালো না কখন খারাপ কিছু হয়ে যায় তার চেয়ে বিয়ে দিয়ে দেই। কথা ঠিক আমি অনেক কিছু বলতে পারি কিন্তু অবস্থার সাথে মানিয়ে তাদেরকেই চলতে হয়। সে ভাবে ব্যবস্থা নিতে হয়।
করোনা কালে তাদের বাসায় আসা সীমাবদ্ধ করে দিয়েছিল আমার বোন। শহরে সারা জায়গায় তারা ঘোরা ফেরা করে। তাও আসে দূরে থেকে সাহায্য করে যতটুকু করতে পারে। মন মানে না। একদিন দুই ভাই মিলে আসল আমার খবর নেয়ার জন্য বিদেশে নাকি খুব খারাপ অবস্থা আপারা সবাই কেমন আছে? একটু কথা বলতে চাই দিদিমনি, আপার সাথে। আমার বোন ফোন করে কথা বলিয়ে দেয় আমাদের সাথে।
লিটনের হাতে চা না হলে আপনার চা মজা লাগত না আপনি কেমনে কি করেন,সব কাজ একা একা। তার অবাক প্রশ্ন আমার কাছে্। আমি বলি তোর আম্মার কাছে সব কাজ করা শিখেছিলাম এক সময় কিন্তু কিছু করা লাগত না তোরা ছিলি বলে, সেই শিখা কাজে লাগিয়ে চলিরে। আপা আমারে নিয়ে যান আপনার কাছে। আপনার কিচ্ছু করা লাগবে না। খুব ভালো হবে তোকে নিতে পারলে, তুই সব কাজ করবি আর আমি বসে বসে লিখব।
ঐটাই আপনার কাজ। আপা শুনেছি আপনার ওখানে খুব ঠান্ডা আমার জন্য খুব ভালো হবে, আমার ঠান্ডা দরকার। আমার খুব গরম লাগে ।
এটা কি হলো লিটন । আমার কাছে আসার আগেই তুই কোথায় চলে গেলি ফাঁকি দিয়ে। ঠান্ডার দেশে আসার আগেই তুই ঠান্ডা হয়ে গেলি কেনরে ভাই।








মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




বোন আমার, আপনার সাথে আমিও শোকাহত। লিটনের বয়স কতো হয়েছিলো আনুমানিক। তিনি কিভাবে মারা গিয়েছেন হার্ট এ্যাটাক/ স্ট্রোক / বা অন্য কোনো অসুখ? আপনাকে শান্তনা দেওয়ার লিখিত কোনো ভাষা আমার জানা নেই। সম্ভব হলে লিটনের ছেলে মেয়ের পাশে থাকুন। তাঁদের শান্তনা দিন।

মানুষের মৃত্যুর কোনো টাইম টেবিল নেই। লিটনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৪

রোকসানা লেইস বলেছেন: হঠাৎ করে স্ট্রোক এবং চলে গেছে অল্প সময়ে। বয়স পয়তাল্লিশের মতন হবে।

আসলে মানুষের মৃত্যুর কোনো টাইম টেবিল নেই। লিটনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ধন্যবাদ ঠাকুরমাহমুদ

ওরা আমাদের ছায়ায় আমরা ওদের ছায়ায়ই রয়ে যাবো সব সময়। পরিবারটি জড়িয়ে আছে আমাদের সাথে।

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: লিটন ভালো থাকুক ঐ জগতে।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর

৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৬

স্প্যানকড বলেছেন: আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। এ জগতের সিস্টেম এটা কেউ আগে কেউ পরে যাবে। ভালো থাকবেন সব সময়।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ স্প্যানকড
নিয়মটা বড্ড গোলমেলে বেহিসাবী। যা চিন্তা করা যায় না তেমন কিছু হয়।
ভালো থাকবেন আপনিও

৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৬

নতুন বলেছেন: রক্তের সম্পর্কের চেয়েও আত্নার সম্পর্ক অনেক বেশি কাছের হয়।

লিটন ভালো থাকুক তার নতুন জগতে...

০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১১

রোকসানা লেইস বলেছেন: সেই অনেক কাছের সম্পর্ক আত্মার সম্পর্ক ধন্যবাদ নতুন

ভালো থাকুক লিটন

৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: এ পোস্টে লাইক দেয়া যায় না। আমি বুঝিনা- আজো পর্যন্ত কেন ব্লগে অনুভুতি প্রকাশের মাত্র একটা অপশন রাখা হয়েছে!!!!! :(

তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। ভাল থাকুক সে ওপারে। এ শোক প্রকাশের ভাষা নেই।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন। লিটনের আত্মার শান্তি পাক এটাই আমাদের কামনা।

ব্লগে আসলে লেখার মাধ্যমেই অনুভুতি প্রকাশ করা হয়।
লাইকটা মনে হয় লেখাটা ভালো লেগেছে এটা প্রকাশের জন্য দেয়া হয়। লেখা যে বিষয়ে হোক সুখ বা শোকের।
আমার এমনটাই মনে হলো।

৬| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৯

আখেনাটেন বলেছেন: লেখাটি পড়ে লিটনকে কল্পনা করতে করলাম। মাগফিরাত কামনা করছি উনার। ভালো থাকুক লিটন ভাই অজানা সেই দেশে।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ আখেনাটেন লিটনকে কল্পনা করে নেয়ার জন্য।
অজানা সেই দেশে ভালো থাকুক সে যেখানে আমাদেরও যেতে হবে ।
মনে হয় মা বাবার কাছে সে আগে চলে গেলো তাদের দেখে শুনে রাখতে।

৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

মিরোরডডল বলেছেন:




আমার চোখ ভিজে উঠছে আমি কাঁদছি একা একা গতকাল থেকে খবরটা পাওয়ার পর থেকে।
লিটন আমার সামনে হাজির হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। ওর প্রাণ খোলা হাসি মজার মজার বলা কথা, কত স্মৃতি আমাকে আনমনা করছে, চারপাশে লিটনকে দেখতে পাচ্ছি।


আপু আমি জানি তোমার মনের অনুভুতি এখন ঠিক কেমন হচ্ছে।
প্রিয় মানুষ সে যেই হোক, না ফেরার দেশে চলে গেলে সেই কষ্ট অসহনীয়।

লিটনের মৃত্যু আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে মনে করিয়ে দিল।

যে কোন মৃত্যু একটা রিমাইন্ডার দিয়ে যায়, সবারই এই দিন আসবে।
কি হয়ে গেলো জানিনা, ইদানিং ইয়াং মানুষগুলো হুটহাট করে চলে যাচ্ছে।
সব মৃত্যুই কষ্টের কিন্তু কোন তরুণ প্রাণ এভাবে চলে গেলে শূন্যতা বেশি অনুভূত হয়।

এখানে বেশি সময় দিও।
আমি দেখেছি সবার মাঝে এখানে থাকলে সময়টা ভালো কাটে।
অনেক কিছু ভুলে থাকা যায়।

আই উইশ তুমি এই শোক দ্রুত কাটিয়ে উঠো।
ভালো থেকো আপু।


০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:২৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মিরোরডডল
আসলে কিভাবে যে আমাদের সম্পর্কগুলো বেড়ে উঠে সে এক আশ্চর্য বিষয়। এই যে অজানায় অচেনায় তোমাদের সাথে কথা হয় প্রত্যেকের সুখে দুঃখে কেমন জড়িয়ে যাই।
অনেক কষ্টে মন ভারাক্রান্ত সময়ে লিখতে বসলাম কতবার যে চোখ ঝাপসা হয়েছে তারপরও লিখতে পেরে সবার সাথে শেয়ার করে হালকা লাগছে।
জীবিত লিটন নয় মৃত লিটনের গল্প শুনে তবু অনেকে জানলে, সুদুর এক শহরে ভালো মনের একটা মানুষ ছিল আমাদের দেশে।
আমাদের বাড়ির সবার মন খুব খারাপ।
ভালো থেকো তুমি অনেক শুভেচ্ছা

৮| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬

শায়মা বলেছেন: লিটনের কথা শুনে তার গল্পগুলো পড়ে মন খারাপ হয়ে গেলো আপু।:(

আল্লাহ লিটনকে ভালো রাখুন ওপারের দেশে।

৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩০

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা
আসলে ভালো সময়গুলোও আমাদের কষ্ট দেয় যখন মানুষটি আর থাকে না।
লিটনের অনুপস্থিতি আমরা পরিবারের সবাই সব সময় অনুভব করতে থাকব।
মানুষের কাছে আসার অনেক ভালো একটা গুণ ছিল ওর।
ভালো থেকো অনেক শুভেচ্ছা

১০| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:০৩

কামাল১৮ বলেছেন: আপনার লেখা বড় হয় তার পরও পড়ি।কিন্তু এই লেখাটা কেন জানি শেষ করতে পারলাম না।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: লেখাটা বেশি কষ্ট মাখা তাই হয়তো।
ভালো থাকবেন

১১| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৩:১২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



সব মৃত্যুই কষ্টের বিশেষ করে কোন তরুণ প্রাণ এভাবে চলে গেলে শূন্যতা
বেশি অনুভূত হয়। প্রিয় মানুষ সে যেই হোক, না ফেরার দেশে চলে গেলে সেই
কষ্ট অসহনীয়। আপনার লেখাটি হতে বুঝতে পারছি লিটনের অনুপস্থিতি আপনার
পরিবারের সকলে সব সময় অনুভব করবেন । দোয়া করি লিটনের শোক কাটিয়ে
উঠোন, আর লিটন ভাল থাকুক পরপারে ।

শুভেচ্ছা রইল

১২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:০২

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী সহমর্মিতার জন্য।
মনের ভিতর কষ্ট নদী বইতেই থাকবে এটা সঠিক

১৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:১৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



প্রতিমন্তব্য লেখার সময় অনুগ্রহ করে রিপ্লাই বাটন চেপে তার পরে লিখুন ।
তাতে করে মন্তব্যকারী আপনার প্রতিমন্তব্যের নোটিশ পেয়ে তা দেখতে
আসতে পারেন যথাসময়ে । এখন দেখতে এসেছিলাম আপনি আমার
করা মন্তব্যটি দেখেছেন কিনা । তাই আপনার প্রতিমন্তব্যটি দেখার
সৌভাগ্য হয়েছে । অন্যথায় অদেখাই থেকে যেতো ।

শুভেচ্ছা রইল

১৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৩৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: দুঃখিত কেন যে আমার এই ভুলটা হয়ে যায়। মাঝে মাঝে। সতর্ক থাকার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ আবারও ফিরে আসার জন্য

১৫| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৩:১৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


এবারেও ভুল করেছেন ।
কি আর করা , মনে একাগ্রতা আসবে
কবিগুরুর শ্যামা চিত্রনাট্য দেখুন

০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:০১

রোকসানা লেইস বলেছেন: কঠিন সর্তকতা অবলম্বন করা হবে এখন থেকে।
শ্যামা তো অনেক দেখেছি দেখব আবার সময় করে আপনি যখন দিয়েছেন।
নতুন লেখাটা দেখবেন আশা করি।
শুভ কামনা নিরন্তর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.