নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংবর্ত

আমি এই ব্লগের নীতিমালা মেনে আমার সৃজনশীলতা বিকাশের চেষ্টা করব

সুব্রত মল্লিক

আমি একজন শিক্ষক...শিক্ষকতার পাশাপাশি পড়তে লিখতে ভালোবাসি..

সুব্রত মল্লিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উদ্বোধন

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫১

বছর চারেক আগের আষাঢ়ের প্রথম প্রহর। জৈষ্ঠ্যের খরতাপকে বিদায় জানিয়ে প্রকৃতি তখন ভিজে হা্ওয়ার দোলনায় দোল খেতে উন্মুখ। সঞ্চারণশীল মেঘমালার অবিরত ডেকে চলা গুড়ুম-গুড়ুম শব্দ আর হঠাৎ আবির্ভুত বজ্র বিদ্যুতের ঝলকানির পিঠে সা্ওয়ার হয়ে চির যৌবনা বর্ষা তার চিরায়ত রূপের মাধুরীর ডালি আপন মর্জিতে উম্মোচন করে হাজির হয়েছে ধরিত্রির বুকে। অন্যদিকে আমি তখন পরীক্ষা নামক বৈতরণী পার করার মানসে আমার জীবনের সব রূপ-রস-গন্ধকে বিসর্জন দে্ওয়ার ব্রত নিয়ে...নিত্য দিনের মত ডাইনিংয়ের অমৃত সুধা আকন্ঠ পান করে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন-বর্ষার ভিজে হা্ওয়া যেন দুপুরের ঘুমটাকে পরিপূর্ন করে তুলতে সদা তৎপর। এরই মাঝে হলের কেয়ারটেকার এসে সাধের ঘুমটাকে বনবাসে পাঠিয়ে আমাকে চমকে দিলেন। আমার ‘মা’ বসে আছেন গেস্ট রুমে আমারই প্রতীক্ষায়। মায়ের উপস্থিতির কথা জানতেই আমার চিত্তে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হল। আমি ভাবলাম, এই ঘনঘোর বর্ষার মাঝে উনি আসবেন কিভাবে আর কেনইবা আসতে হল! অবশেষে গেস্ট রুমে ঢুকতেই দেখি আমার স্নেহময়ী জননী বসে আছেন আধাভেজা অবস্থায়। আমাকে কাছে পেয়েই মা তার নিত্য অভ্যাসমত আমার গায়ে-মাথায় হাত বোলাতে লাগলেন। কতদিন তিনি আমাকে দেখেননি...মাত্র দুই মাস!



ঘনঘোর বর্ষাকে উপেক্ষা করে আমার কাছে মায়ের ছুটে আসার প্রসঙ্গ তুলতেই জানতে পারলাম আসল কারণ। আমি মায়ের বড় ছেলে। মা আদর করে আমাকে মনু বলে ডাকেন। ছোট বেলা থেকেই আমি আবার আমের মধুর রস আস্বাদনে অদ্বিতীয়। এখন্ও বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসের আম কুড়ানোর স্মৃতি আমাকে নস্টালজিক করে তোলে। ব্যস্ততা সত্ত্বেও প্রতি বছর আম পাকার সময় বাড়ী যা্ওয়া হয় কিন্তু পরীক্ষার কারনে সেবার আর যা্ওয়া হয়নি। ওদিকে আমার নিজ হাতে লাগানো আম গাছে প্রথম বারের মত আম ধরেছে। মা পণ করে বসে আছেন, ঐ গাছের প্রথম পাকা আমাকেই খেয়ে উদ্বোধন করতে হবে কিন্তু আমার আর বাড়ী যা্ওয়া হয়না। মা গাছের আম পেড়ে রেখে দিয়েছেন। কাউকে হাত দিতে দেননা। পাকা আম যখন সৌরভ ছড়াতে শুরু করল তখন মা আর বাড়ীতে বসে থাকতে পারেননি। ঘনঘোর বর্ষাকে উপেক্ষা করে ছুটে এসেছেন তার ছেলের কাছে...মা’র একটাই কথা, তার সামনে বসেই আমার নিজ হাতে লাগানো গাছের পাকা আম খেতে হবে, নইলে তিনি স্বস্তি পাবেননা। আমি ক্যাw›Uন থেকে ছুরি নিয়ে এলাম, মা নিজ হাতে আম কেটে আমাকে খা্ওয়ালেন । সেই মুহুর্তে আমি অবলোকন করলাম-আমার মায়ের মুখপল্লবে ছড়িয়ে পড়া স্বর্গীয় মায়ার আভা, মুগ্ধতার-স্নেহের-পরিতৃপ্তির আবেশ। সেদিনের ঐ ছোট্ট ঘটনার বাতাবরণ আমার ভাবনার সলতেকে প্রজ্জ্বলিত করেছিল। আমি সন্ধান পেয়েছিলাম আমাকে নিয়ে আমার মায়ের ভাবনার দিগন্ত রেখার। বুঝেছিলাম আমার প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে মায়ের কত গভীর মমত্ত্ববোধ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:১৬

দুখাই রাজ বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো লেখাটি , আপনারা ভালো থাকবেন । শুভ সকাল ।

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৭

সুব্রত মল্লিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে..।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.