নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন শিক্ষক...শিক্ষকতার পাশাপাশি পড়তে লিখতে ভালোবাসি..
সময় চলে যায়, স্মৃতি রয়ে যায়। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারো ক্রিকেট ভক্ত এবং মাঠের বাইরে ছড়িয়ে থাকা কোটি ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয়-মন আর্দ্র করে দিয়ে ২২ গজে শেষ প্রনাম করে মাঠ থেকে বিদায় নিলেন ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। ১৬ নভেম্বর থেকে হয়ে পড়লেন সাবেক ক্রিকেটার। ক্রিকেট মাঠ থেকে শচীনের আনুষ্ঠানিক বিদায় ১৫ নভেম্বর সমাপ্ত হলেও লক্ষ-কোটি ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয় থেকে শচীনের বিদায় হয়নি। শচীন তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং শৈলী, শিল্পীত ক্রিকেট নৈপুন্য, পরিমতি বোধ, বিনয়, সাফল্যকে সহজাতভাবে মেনে নেওয়া এবং সর্বোপরি একজন ভালো মানুষের প্রতিমূর্তি হয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন তাবৎ ক্রিকেট প্রেমীদের মাঝে। শচীন আসলে দেশ-কালের সীমনা ভেঙ্গে দিয়েছেন। অনেকেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের সমর্থক নয় কিন্তু শচীন টেন্ডুলকার সম্পর্কে মুগ্ধতা আছে।
অনেকেই শচীনের ক্রিকেট নৈপুণ্যের কথা বলবেন। শচীনের এক বছরের রান, সেঞ্চুরিও অনেক ক্রিকেটারের সারা জীবনের সাধনার সমান। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৯৯৮ সালে শচীন ৩৮ ম্যাচে করেছিলেন ১৮৯৪ রান। এক বছরে ৯ টি সেঞ্চুরি। ভাবুন একবার মোহাম্মদ আজহার উদ্দীনের ওয়ানডে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরি ৭ টি, জাভেদ মিয়াঁদাদের ৮ টি, আর ক্রিকেটের আরেক দিকপাল ভিভ রিচার্ডসের ১১ টি! শচীনের ক্রিকেটীয় কীর্তির এ রকম হাজারো ইতিহাস তুলে ধরা যায়। কিন্তু শচীনের আসল কীর্তি সেখানে নয়। শচীনের আসল কীর্তি হলো মানুষের হৃদয়ে অধিষ্ঠান হওয়া। শচীন তাঁর ২৫ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩ প্রজন্মের মেল বন্ধন ঘটিয়েছেন। শচীন যখন ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন তখন গাভাস্কার খেলা শেষ করেছেন, ভিভ রিচার্ডস, ইমরান খানের ক্রিকেট ক্যারিয়ার প্রায় শেষের দিকে। ফলে গাভাস্কার, রিচার্ডস, ইমরানদের দেখে যারা বড় হয়েছেন তারা অচিরেই শচীনে বুদ হতে শুরু করলেন। এর সাথে সাথে শচীন তাঁর প্রজন্মকে অসাধারণ ব্যটিং শৈলী প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে নিমেষেই আপন করে নিলেন। শচীন হয়ে উঠলেন ঘরের ছেলের মত। এ্রর পর এই শতাব্দীর শুরুতে যাদের জন্ম তাদেরকেও শচীন সহজেই আপন করে নিলেন। ফলে তিন প্রজন্মের আম জনতার সাথে শচীনের যে সম্পর্ক গড়ে উঠল তা ক্রীড়া ইতিহাসে বিরল। আর এখানেই লুকিয়ে আছে শচীনের আসল গ্রেটনেস। ভারতে অনেক তারকা আছে কিন্তু শচীন হলেন তারকাদের তারকা। বস্তির মলিন জামা গায়ে দেওয়া কিশোর থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফিল্ম স্টার সবাই শচীনের বিদগ্ধ অনুসারী। আর তাই নিউইয়র্কের টাইমস সাময়ীকি শচীনকে যখন এশিয়ার হিরো নির্বাচিত করেছিল, সেখানে ছোট্ট একটা ব্যাখা ছিল। আর সেটি ছিল এরকম Many factors divide India , but two things unite it. Cricket and a star named Sachin Tendulkar.
আর তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, শচীন ক্রিকেট মাঠ থেকে বিদায় নিলেও তার প্রভাব রয়ে যাবে অনন্তকাল। শচীন ক্রিকেট মাঠে যে সুর রচনা করে গিয়েছেন তার রেশ রয়ে যাবে অনাদিকাল। আর যাবার বেলায় শচিীনের সেই আবেগময় ভাষণ আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় মানুষ হিসেবে শচীনের অসাধারণত্ব। সতীর্তদের কাঁধে চড়ে পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ করার পর শচীন যখন সবাইকে একা ফেলে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন ২২ গজ জমিটার দিকে তখন কেউই আন্দাজ করতে পারেন নি কি ঘটতে চলেছে। শচীন একাকী গেলেন সেই ২২ গজের কাছে যার সাথে ২৫ বছর ধরে তাঁর এক আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, বিড়বিড় করে কি যেন বললেন, তারপর মাথা নিচু করে দুহাত দিয়ে পিচটাকে প্রনাম করে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না, দুচোখ বেয়ে নেমে এল অশ্রুধারা, ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে চললেন ড্রেসিং রুমের দিকে, পেছনে পড়ে থাকলো হাজোরো ক্রিকেট কীর্তি কিন্তু থেকে গেল স্মৃতির মণিহার। শচীনের ভাষায় বলি “টাইম হ্যাজ ফ্লোন বাই রাদার কুইকলি বাট দি মেমোরিজ ইউ লেফট উইথ মি উইল অলওয়েজ বি উইথ মি ফর ইভার এন্ড ইভার। স্পেশালি শচীন শচীন উইল রিভাইব্রেট ইন মাই ইয়ারস টিল আই স্টপ ব্রিদিং।” এই কথাটায় আমি ঘুরিয়ে বলছি তুমি রয়ে যাবে ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদি-মাঝে, যতদিন ক্রিকেট বেঁচে থাকবে। তাই তুমি সাবেক ক্রিকেটার নও, চির জাগরুক একজন পথ প্রদর্শক।
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: আমরা ক্রিকেট প্রেমীরা আসলেই মিস করি সেই যাদুকরী ব্যাটিং
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৭
বাংলার রাবণ বলেছেন: সচিন হৃদয়ে ছিল....আছে.....থাকবে.....অনেক মিস করি ওই অসাধারণ ব্যাটিং .....