নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাতের স্টেশন

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫৯





অতৃপ্তি নিয়ে রেবতীর শরীর থেকে নেমে আসে বিপ্লব।প্রথম থেকেই রেবতীর শরীরী ভাষা মনপুত হচ্ছিলনা ওর।আর তা পরিস্কার হয় যোনীর শুষ্কতায়।
-হয়ে গেলো?
-আজকে সারাদিন পরিশ্রম বেশী হয়েছে।
রেবতী আর কথা বাড়ায় না।বাথরুমে গিয়ে ঢুকে।বাথরুম থেকে এসে দেখে বিপ্লব ঘুমিয়ে পড়েছে।মেয়েটা হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে।মেয়েকে ঠিক করে শুইয়ে দেয়।শুনশান নীরবতা ঘিরে ধরে রেবতীকে।ইচ্ছা না থাকলেও বিপ্লবের ডাকে সারা দিতে হয়।বয়স বাড়ছে কি?কত হলো আর।পঁয়ত্রিশ হয়তো।ঘুমটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।বিপ্লবের শরীরে এক পা তুলে দেয়।বিপ্লব ঘুমে একদম অচেতন।বিয়ের আগে স্বামীকে নিয়ে কত রোমান্টিক ভাবনা ছিল ওর মনে। আর বাস্তবতা?তবে কি রেবতী সুখী নয়?নিজের মনকে প্রশ্ন করে।ঘড়ির কাঁটায় তিনটা বাজে।রেবতী চেষ্টা করে ঘুমিয়ে পড়ার।

এরপর গল্প কোন দিকে বাঁক নেবে?সত্যিকার অর্থে মধ্যবিত্তের জীবনের রঙ কেমন?একদম সাদামাটা,আটপৌড়ে? এই যে বিপ্লব যে কিনা নয়টা পাঁচটা অফিস করেই জীবনীশক্তি শেষ করে ফেলছে, তার যৌন জীবনই বা কেমন?আর রেবতী রক্ষণশীল বাঙালী মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা মেয়ে তার কাছ যৌনতাই বা কি?

মিরপুর এক নম্বরে বাসের জন্যে অপেক্ষা করছে বিপ্লব।আজ বাসা হতে বের হতে দেরী হয়েছে।প্রথম বাসটায় চেষ্টা নেয়,কিন্তু ধাক্কা-ধাক্কিতে কুলিয়ে উঠতে পারেনা।শেষে আট নম্বর বাসেই উঠে পড়ে।বিপ্লব কাউরান বাজারে যাবে।সে একটি পত্রিকা অফিসে কাজ করে।ফার্মগেইট পেরিয়ে যাওয়ার সময় ডেইলী স্টারের বিল্ডিং চোখে পড়ে।আকাশে কালো মেঘ জমেছে।বিল্ডিংটাও কালচে কাঁচের।বিপ্লবের কাছে মনে হয় যেন একটা অশুভভাব ঘিরে রেখেছ বিল্ডিংটাকে।কাউরান বাজারে নেমে পড়ে বিপ্লব।

-কি দাদা,দেরী কেন? সিনিয়র এডিটর আনোয়ার ভাই জিজ্ঞাসা করে।
-রাতে ঘুমোতে দেরী হয়েছে।
আনোয়ার ভাই বিপ্লবের কাছে সরে আসে।ফিসফিস করে বলে,বউদি উপড়ে ছিল না তুমি উপড়ে ছিলে?
বিপ্লব মাথা নীচু করে ফেলে।চেয়ার টেনে ডেস্কে বসে পড়ে।
-আমি উপরে।
-মাঝে মাঝে বউরেও উপরে তুলে দিও।
আনোয়ার ভাইকে বিপ্লব গুরু মানে। জীবনের সব কথাই বিপ্লব আনোয়ারকে বলে।চাকরীটাও অবশ্য আনোয়ার ভাইয়ের বদলে হয়েছিল।আগে সে করোতোয়া অফিসে কর্মরত ছিল।আনোয়ার ভাই তারে এই পত্রিকা অফিসে এনেছে।লাঞ্চের সময় আনোয়ার ভাইকে রেবতীর শুষ্কতার কথা খুলে বলে।আনোয়ার ভাই খেতে খেতে বলে,তুমি ছাত্র জীবনের মত নাদান থেকে গেলে হে।দু’জনে খোলামেলা কথা বলো।সব ঠিক হয়ে যাবে।

পত্রিকার শেষ পাতায় ধর্ষণের খবর ছাপা হবে আগামীকাল।বরিশালের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।এই বিষয়টা একদম সহ্য করতে পারেনা বিপ্লব।ওদিকে খবর পড়তে গেলে কেমন একটু গরম গরম লাগে ওর শরীরে।নিজের মনকে নিজেই বুঝে উঠতে পারেনা।ঘৃণা আর যৌন উত্তেজনা একসাথে কিভাবে খেলা করে ওর মনে,বিপ্লব বুঝে উঠতে পারেনা।

সারা দুপুর তুমুল বৃষ্টি হয় ঢাকা শহরে।বিকেলে বিপ্লব আনোয়ার ভাইয়ের সাথে অফিস হতে বের হয়।পাবলিক পরিবহণের সংখ্যা নিতান্তই কম।যাও যাচ্ছে উঠার কায়দা নেই।দু’জন কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে।তারপর হাঁটতে হাঁটতে ফার্মগেটে চলে আসে।একটা মেয়ে সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।বিপ্লবের চোখ কেমন যেন আটকে যায় মেয়েটির পাছায়।চোখ সরিয়ে নিতে চাইলেও ব্যর্থ হয়।

-কি ভায়া,কই আটকে গেলে? আনোয়ার ভাইয়ের কথায় চোখ সরিয়ে নেয় বিপ্লব।
-আনোয়ার ভাই ঢাকা শহরে মেয়েদের পোষাকের একটা বিষয় খেয়াল করেছেন?
-কি বিষয়?
-মেয়েরা যে পোষাকই পড়ুক,সে হিজাব হোক বা অন্যকিছু,তাদের শরীরের কার্ভগুলি কিন্তু ভীষণ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে।
-হ্যাঁ,তুমি ওদের পাছা দেখো কিম্বা বুক। যাই দেখোনা কেন,ওরা ওতে মজাই পাবে।শুধু হাত দিতে যেওনা তাহলেই সর্বনাশ।
বাসে যেতে যেতে একা একাই হেসে ফেলে বিপ্লব আনোয়ার ভাইয়ের কথাগুলি মনে পড়াতে।

বিপ্লব অফিসে চলে গেলে রেবতীর রান্না-বান্না ছাড়া আর তেমন কাজ থাকেনা।শুধু মেয়েকে স্কুল হতে আনা ছাড়া।আর সারাদিন ওই সময়টুকুর অপেক্ষায় থাকে।মেয়েকে আনার আগে ভাবীদের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া যায়।কত গল্প।সময়টা ভালোই কেটে যায়।এইতো সেদিন এক ভাবী আক্ষেপ করে বলছিল,শালা এরচেয়ে রিক্সাওয়ালা বিয়ে করাও ভালো ছিল।জোরে জোরে গুতা দিতে তো পাড়তো।উপরে উঠে মনে হয় উনার ঘুম ধরে যায়।তা আমি উপরে উঠলে তো আরও সর্বনাশ।তখনই উনার হয়ে যায়।ভাবীর কথা শুনে সবাই খুব মজা পায়। এক যোগে হেসে উঠে।আজ দুপুর হতে খুব বৃষ্টি হচ্ছে।খাইয়ে-দাইয়ে মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।রেবতীর ঘুম আসেনা।বিপ্লবের কথা মনে পড়ে।কাল রাতে বিপ্লব মন খারাপ করেছিল,ও বুঝতে পেড়েছিল।কিন্তু কি করবে?ওর একদমই ইচ্ছা ছিলনা।বিপ্লবের জোরা-জুরিতে রাজি হয়।ওর কাছে জীবনটা কেমন একঘেঁয়ে লাগছে।রান্না কর, খাও,রাতে স্বামীর সাথে শোও। এর বাহিরে আর কোন জগত ওর কাছে নেই।কত স্বপ্ন ছিল জীবনে।খাওয়া আর শোওয়া এই নিয়েই কাটছে ওর জীবন।

একজন রেবতী কিম্বা বিপ্লব এভাবেই কাটিয়ে দেয় জীবন?আপনাদের কি মনে হয়?হ্যাঁ, মধ্যবিত্ত বাঙালীর যৌন জীবন রাতের কোন এক স্টেশনে বসে আছে।যেখানে ট্রেন আসতে দেরী হচ্ছে।রেল লাইনে লালবাতি জ্বলছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৪০

রুহুল আমিন খান বলেছেন: মধ্যবিত্ত বাঙালীর যৌন জীবন রাতের কোন এক স্টেশনে বসে আছে।যেখানে ট্রেন আসতে দেরী হচ্ছে।রেল লাইনে লালবাতি জ্বলছে................

২৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫২

সুদীপ কুমার বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪২

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এইটা মধ্যবিত্তের যৌন জীবন!

২৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫২

সুদীপ কুমার বলেছেন: আরও কিছু আশা করেছিলেন?

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৭:৪৫

টারজান০০০০৭ বলেছেন: সুন্দর চটি হইছে !

২৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫১

সুদীপ কুমার বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্যে টারজানকে ধন্যবাদ।

৪| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:০৩

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: উত্তরটা টারজান দিছে

৩০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১১

সুদীপ কুমার বলেছেন: Thanks for your bright comment.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.