নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুকান্ত কুমার সাহা

I like to seek knowledge.

সুকান্ত কুমার সাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ-১

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২৩

মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান যুদ্ধ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। যা মূলত শুরু হয়েছিল তিউনেশিয়া থেকে যার নামকরণ করা হয়েছিল ‘আরব বসন্ত’ বলে। এক পর্যায়ে তা ছড়িয়ে পড়ে মিশর, লিবিয়া হয়ে সিরিয়া, আলজেরিয়া, বাহরাইন ও ইয়েমেনে। সৌদি আরবেও এর রেশ দেখা গিয়েছিল খানিকটা। সৌদি রাজ জনগণের সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিয়ে নিজদেশে এবং বাহরাইনে সেনাদল পাঠিয়ে সেদেশে এই বসন্ত ঠেকিয়ে দিয়েছিল সেই যাত্রায়। কিন্তু এই বসন্তের ধাক্কায় লিবিয়া, সিরিয়া রাষ্ট্র হিসেবে বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। মিশর গেছে কিছুটা ভিন্ন পথে কিন্তু ইরাকে বসন্তের ধাক্কা না এলেও, এর বাতাসে আজ ছিন্নভিন্ন যা আগে থেকেই ধ্বংস প্রাপ্ত ছিল আমেরিকা ও তার মিত্রদের দ্বারা।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিছু ডাক সাইটে নামও; বেন আলী, গাদ্দাফী, মোবারক সহ আরও অনেকে। সিরিয়ার আসাদ এখনো কোনরকমে টিকে আছে ইরান, লেবাননের শিয়া গেরিলা যোদ্ধা গোষ্ঠী ‘হিজবুল্লাহ’ আর রাশিয়ার সমর্থনে। একমাত্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের হুমকি ধামকিতে ও রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলার মাধ্যমে আসাদ আমেরিকার আক্রমণ থেকে নিজেকে আপাতত বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছেন কিন্তু তাদের প্রক্সি যুদ্ধ থেকে এখনো রক্ষা পায়নি সে, যা এখনো চলমান।
আরব বসন্ত আজ আরব কান্নায় পরিণত হয়েছে মূলত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে সরাতে যেয়ে, এখানেই প্রথমে শুরু হয় সহিংস আন্দোলন যা পরবর্তীতে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বে রূপা নেয়, শুরু হয়ে যায় ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ। এখানে শিয়া আসাদের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে জড়িয়ে পড়ে সুন্নি প্রধান সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক, আরব আমিরাত, জর্ডান, বাহরাইন এবং অবশ্যই ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল সাথে ছিল এবং আছে আমেরিকা ও ন্যাটো জোট। তবে অবাক করা বিষয় হল চিরশত্রু সুন্নি ও ইহুদী রাষ্ট্র আজ এক জোটে শামিল হয়েছে। ভাই ভাই! অথবা “শত্রুর শত্রু আমার মিত্র” এই তত্ত্বে অথবা আখ ভাঙ্গার কাহিনী- “আগে জোট করে একটা একটা শত্রু কমাই, পড়ে তোমার পালা” এই চিন্তা থেকে।
অবশ্য একই সময়ে লিবিয়া নেতা গাদ্দাফীও জন অসন্তোষ রুখতে শক্তি প্রয়োগ করতে যেয়ে নিজেই পরিবারসহ নিশ্চিহ্ন হয়ে যান, যা আসলে তরান্বিত করে আমেরিকা- ফ্রান্সের তত্বাবধানে ন্যাটোর বিমান ও বিশেষ বাহিনীর হামলা, পাশাপাশি বিদ্রোহীদের অনিয়ন্ত্রিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ। ক্ষমতা শূন্যের সুযোগে পরবর্তীতে সেখানে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ যা এখনো থামেনি এবং গেরিলা গোষ্ঠী গুলো নিজেদের মধ্যে এলাকা ভাগ করে নিয়ে এখন নিজেরা নিজেরাই কাটাকাটিতে ব্যস্ত অথচ কিছুদিন আগেই সবাই একসাথে লড়েছে গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে।
আবার সৌদি আরব, মিশরের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মুসরিকে তার নিজ সেনাপ্রধান সিসি'কে দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, যিনি মূলত ছিলেন একজন সুন্নি ও ওহাবী মতাদর্শের মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা। কি কারণে সৌদি রাজ এটা করলেন তা আসলে বোধগম্য নয় এবং আমেরিকার বিপক্ষে যেয়েও তারা এটা করেছেন ঝুঁকি নিয়ে। এই হিসাব নিকাশটা বোঝা একটু মুশকিল। সম্ভবত “এক ঘড় কা দো পীর” সমস্যা এটা। মুসরি, সৌদি রাজের চেয়েও বড় হয়ে যাচ্ছিল- বলে মনে করা হয়। যা আপাতদৃষ্টিতে মতাদর্শের চেয়ে স্বার্থকেই মুখ্য করে তুলেছে।
(অসমাপ্ত)
১৪/১০/২০১৪ রাত ৯.৫১

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.