নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নব নব সৃষ্টি

সোলায়মান সুমন

সৃষ্টির আনন্দে ঈশ্বর এ মন

সোলায়মান সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৃজনশীল পদ্ধতি

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২০

সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ২০০৮ সাল থেকে চালু করা হয়। যা কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে অধিক পরিচিত হয়েছিল।শিক্ষাবিদ আব্দুল্লাহ আবু সাঈদের প্রস্তাবে নাম পরিবর্তন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ধরনের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সৃজনশীল প্রশ্ন ও শিক্ষাপদ্ধতি যেকোন বিবেচনায় আধুনিক ও বিশ্বে সমাদৃত।
সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিকে পাঁচটি সাধারণ স্তরে ভাগ করা যায়-এর প্রত্যেকটি ধাপ নিয়ে আজ আলোচনা করব-
ক. জ্ঞানের স্তর, নম্বর-০১
খ. অনুধাবন দক্ষতার স্তর, নম্বর-০২
গ. প্রয়োগ দক্ষতার স্তর, নম্বর-০৩
ঘ. উচ্চতর চিন্তন দক্ষতার স্তর, নম্বর-০৪
ঙ. বহুনির্বাচনী প্রশ্ন।

ক. জ্ঞানের স্তর :
এই স্তরটি হলো দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন স্তর বিন্যাস। কেননা,এর উদ্দেশ্য হল আগে জানাশোনা বিষয়কে আবার স্মরণ করা। এই স্তরে যেসকল বিষয় অর্ন্তভুক্ত থাকে তা হল-সাধারণ শব্দ ও প্রত্যয় সমূহ,পদ্ধতি,বিশেষ তথ্য,প্রক্রিয়া,নীতিমালা স্মরণ করা বা চিনতে পারা। এই অংশে প্রশ্ন হবে অতি সাধারণ। পাঠ্যপুস্তক হতে কোন কিছু জানা ও চিনতে পারার প্রক্রিয়া এটি-যেমন:কী,কে,কখন,কোথায়,কী বোঝ,কাকে বলে ইত্যাদি বিষয় সমূহ। যে প্রত্যয় বা বিষয়টি লিখতে দেয়া হবে তা দৃশ্যকল্পে আলোচনা করা হয়ে থাকে।

খ.অনুধাবন দক্ষতার স্তর :
অনুধাবন অর্থ হল বোঝা। অনুধাবন দক্ষতার স্তর বলতে বুঝায় কোন কিছু বোঝার দক্ষতাকে। তথ্য, নীতিমালা,সূত্র,প্রয়োগ,নিয়ম,পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া ইত্যাদি বোঝার যে দক্ষতা তা হল অনুধাবন করার দক্ষতা। কেবল মাত্র একটি বিষয় বুঝতে পারলেই তার প্রয়োগ-প্রক্রিয়া,সারনী,চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করা সহজ হবে। বিষয়বস্তু না বুঝলে কোনমতে এই বিষয়টি উপস্থাপন করা যাবে না। এই অধ্যায়ের দৃশ্যকল্পকে সামনে নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। দৃশ্যকল্প যদি সারণী,চার্ট,ছবি হয় তাহলে এই অংশে সেসবের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে-অর্থাৎ‘কী বোঝায়’-তার খোলাসা করতে হবে।

গ.প্রয়োগ দক্ষতার স্তর: প্রয়োগ বলতে বোঝায় আগের অর্জিত জ্ঞান ও অনুধাবনকে নতুন পরিস্থিতিতে কিংবা অপরিচিত পরিস্থিতিতে ব্যবহার করার দক্ষতা। নিয়ম,বিধি,তত্ত্ব,পদ্ধতি,প্রত্যয়,নীতিমালা ইত্যাদি প্রয়োগ করার দক্ষতা এই বিষয়ে পরিলক্ষিত হয়। পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার,প্রদর্শন এবং হিসাব সমূহ সঠিকভাবে করতে পারার বিষয়টিও এই পদ্ধতিতে করা সম্ভব হয়। তাই এই প্রক্রিয়ার প্রশ্ন সমূহের উত্তর পাঠ্য বইয়ে সরাসরি পাওয়া যায় না। এই প্রক্রিয়া প্রয়োগের অর্থই হল শিক্ষার্থী বিশেষ পরিস্থিতিতে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করবে। এখানে ৩টি বিষয়কে মূলত গুরুত্ব দেয়া হয়-
০১ ‘দৃশ্যকল্পের ব্যক্তি’-কেন তিনি এই কাজটি করেছেন?
০২ ‘দৃশ্যকল্পের তথ্য’-অনুসন্ধান বা পরীক্ষণটি বিশেষভাবে বর্ণনা কর।
০৩। ‘দৃশ্যকল্প হতে’-সুনির্দিষ্ট উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বর্ণনা কর।
আবার এই অংশে কোন কোন ক্ষেত্রে বিচার বিশ্লেষণও করতে হয়। এই ক্ষেত্রে প্রশ্নের ধরণ হবে-
০১। নীচের সমস্যাটি সমাধান কর।
০২। প্রদত্ত তথ্যের আলোকে বিশ্লেষণ কর ।
০৩। সাদৃশ্য/ বৈসাদৃশ্য দেখাও।

ঘ.উচ্চতর চিন্তন দক্ষতার স্তর:
দক্ষতা বলতে আমরা বুঝি-বিশ্লেষণ-‘বিশেষ থেকে সাধারণ’ আবার সংশ্লেষণ-‘সাধারণ থেকে বিশেষ’-বিচার বিবেচনা করার ক্ষমতা বা দক্ষতাকে বোঝায়। বিভিন্ন ধরনের একগুচ্ছ তথ্য সংগঠিত করা ও তথ্যগুলোর মধ্যে সর্ম্পক স্থাপন বা চিহ্নিত করা। বিভিন্ন বিষয় থেকে তথ্য ও ধারনা সংগ্রহ করে তা দিয়ে একটি কাঠামো বা নকশা তৈরি করা। এটি চিন্তার দক্ষতা একেবারে সবোর্চ্চ স্তর। এই অংশে শিক্ষার্থীর চিন্তন দক্ষতার মান যাচাই করা হয়।
এই অংশে বিশেষত:বিশ্লেষণ করো,যাচাই করো,মূল্যায়ন করো,বিচার করো,যথার্থতা নিরূপণ করো,পরামর্শ দাও ইত্যাদি শব্দ যোগে প্রশ্নটি তৈরি করা হয়ে থাকে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর যুক্তি ও দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপনের বিষয়টিও আসতে পারে।

ঙ.বহুনির্বাচনী প্রশ্ন:
পূর্বে মুখস্ত করার বিষয়ে বেশি জোর দেয়া হলেও সৃজনশীল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীকে বেশি বেশি মূল্যায়ন করা হবে। এই স্তরে চারটি বিকল্প প্রশ্ন থাকবে। সঠিক বিকল্পকে বলা হয় সঠিক উত্তর এবং ভুল বিকল্পকে বলা হয় বিক্ষেপকসমূহ। চিন্তন দক্ষতার সকল স্তরে প্রশ্ন এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। চিন্তন দক্ষতার সকল স্তরের প্রশ্নের শতকরা হার নিম্নে উল্লেখ করা হল-
জ্ঞানের স্তর: ৩০% থেকে ৪০% ,অনুধাবনের স্তর: ৩০% থেকে ৪০% ,প্রয়োগ স্তর: ১০% থেকে ২০% ,উচ্চতর দক্ষতার স্তর: ১০% থেকে ২০%। জ্ঞান ও অনুধাবনের স্তর থেকে ৭০% এবং প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতার স্তর থেকে মোট ৩০% প্রশ্ন থাকবে।
এখন ৩০% নম্বরের বহুনির্বাচনী ও ৭০% নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নের প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্ন হবে মৌলিক অর্থাৎ যা পূর্বে কখনও ব্যবহৃত হয়নি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ৩ ধরনের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে-

ক. সাধারণ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন:প্রশ্নের আকারে অথবা অসম্পূর্ণ বাক্য হিসাবে দেয়া হয় যা উদ্দীপক হিসাবে কাজ করবে। এরপর থাকবে ৪টি বিকল্প উত্তর। এই প্রশ্নগুলো সকলের কাছে সমাধিক পরিচিত।

খ.বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন: বৈচিত্র আনায়নের এই জাতীয় প্রশ্ন গুরুত্বের দাবিদার। সূচনায় ৩টি তথ্য দেয়া থাকবে। ৩টি তথ্য সর্ম্পকিত ৪টি উত্তর থেকে শিক্ষার্থী সঠিক উত্তরটি বাচাই করবে। এই ধরনের প্রশ্ন থেকে শিক্ষার্থীর উচ্চতর জ্ঞান অর্জনের পথ সুগম হয়।
গ.অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন:একই তথ্য থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন বের করাই এই পদ্ধতির মূল বিষয়। প্রশ্ন গুলো পরস্পরের সাথে সর্ম্পকীত থাকে। প্রশ্নগুলো বহুনির্বাচনী অথবা বহুপদী সমাপ্তি সূচক হতে পারে। এই ক্ষেত্রে জ্ঞান স্তরের যাচাই করা হয় না।

সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতির মূল কথা হচেচ্ছ আত্মচিন্তনের পথকে প্রসারিত করা। নিজের মাঝে লুকিয়ে থাকা ভাবনার জগতকে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট করে তোলা। সৃজনশীলতাকে জাগিয়ে তোলা। এর জন্য নোট ও মুখস্থপদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক জ্ঞান চর্চার পথকে সাদরে গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষাগ্রহণের স্তর তিনটি:
১. পাঠ
২.অনুধাবন
৩.আত্মস্থকরণ।
--- আসুন এই অসম্পূর্ণ আলোচনাটির সাথে কিছু নতুন তথ্যের সংযোগ ঘটিয়ে লেখাটিকে সম্পূর্ণ করি। আপনাদের কমেন্টের প্রত্যাশা করছি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:২১

গুপ্ত চিরকুট বলেছেন: স্যার সৃজনশীলে অল্প লিখে বেশি নম্বর পাওয়ার কি কোন উপায় আছে?
কারণ স্যার লিখতে লিখতে হাত ব্যাথা হয়ে যায় কিন্তু লিখা শেষ হয় না। তাই স্যার সহজে কম লিখে বেশি নম্বর পাওয়ার উপায় বললে খুব ভাল হতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.