নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ফেসবুক লিংক:-https://www.facebook.com/SyedAlFahad.BD

সৈয়দ আল ফাহাদ

টুকটাক লেখালিখি করি!

সৈয়দ আল ফাহাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ ঈমান ধ্বংসের মহা উৎসব"

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৯


ভূমিকাঃ ইংরেজি সাল গণনার বিষয়টা ইংরেজদের আবিষ্কার নয়। তাই এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়। এটি খৃষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ। ইংরেজরা ১৭৫২ সালে ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসাবে গ্রহণ করে। তার ২৩০ বছর আগে অর্থাৎ ১৫২২ সালে ভেনিসে ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। স্পেন ও পর্তুগাল ইংরেজ তথা বৃটিশদের ১৯৬ বছর আগেই ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে গ্রহণ করে। সেই বিবেচনায় কোন মতেই ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ হতে পারে না। বরং আজকের ১জানুয়ারি খৃস্টানদের গ্রেগরিয়ান নববর্ষ। খৃষ্টীয় বা গ্রেগররিয়ান ক্যালেন্ডারঃ ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী খৃষ্টপূর্ব ৪৬ সালে জুলিয়াস সিজার সর্বপ্রথম ১ জানুয়ারিতে নববর্ষ উৎসবের প্রচলন করে। পহেলা জানুয়ারি পাকাপোক্ত ভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর। খৃস্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক পোপ গ্রেগরিয়ানের নামানুসারে যে ক্যালেন্ডারের প্রচলন হয়, ইতিহাসের পালাবদলে আজকে সেই ক্যালেন্ডারকেই ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে ইউরোপসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইংরেজি নববর্ষ পালন করা হচ্ছে। ইসলামে উৎসবের রূপরেখাঃ আমরা অনেকে উপলব্ধি না করলেও, উৎসব সাধারণত একটি জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়। উৎসবের উপলক্ষগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে প্রবাহিত ধর্মীয় অনুভূতি, সংস্কার ও ধ্যান- ধারনার ছোঁয়া। উদাহরণস্বরূপ খৃষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন তাদের বিশ্বাস মতে স্রস্টার পুত্রের জন্মদিন। মধ্যযুগে ইউরোপীয় দেশগুলোতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ পালিত হত ২৫ মার্চ এবং তা পালনের উপলক্ষ ছিল এই যে, ও দিন খৃস্টীয় মতবাদ অনুযায়ী মাতা মেরীর নিকট ঐশী বাণী প্রেরিত হয় এই মর্মে যে, মেরী ইশ্বরের পুত্রের জন্ম দিতে যাচ্ছেন। পরবর্তীতে ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সূচনার পর রোমক ক্যাথলিক দেশগুলো ১ জানুয়ারি নববর্ষ উৎযাপন করা আরম্ভ করে। ঐতিহ্যগত ভাবে এই দিনটি একটি ধর্মীয় উৎসব হিসেবেই পালিত হত। ইহুদীদের নববর্ষ ‘রোশ হাশানাহ’ ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত ইহুদীদের ধর্মীয় পবিত্র দিন ‘সাবাত’ হিসেবে পালিত হয়। এমনিভাবে প্রায় সকল জাতির উৎসব-উপলক্ষের মাঝেই ধর্মীয় চিন্তা-ধারা খুঁজে পাওয়া যাবে। আর এজন্যই ইসলামে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম পরিষ্কারভাবে মুসলিমদের উতসবকে নির্ধারণ করেছেন, ফলে অন্যদের উৎসব মুসলিমদের সংস্কৃতিতে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ঈদ (খুশী) রয়েছে, আর এটা (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) আমাদের ঈদ। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ) মুসলিম ও অমুসলিমদের উৎসবের পার্থক্যঃ ইসলামের এই যে উৎসব, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এগুলো থেকে মুসলিম ও অমুসলিমদের উৎসবের মূলনীতিগত একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য স্পষ্ট হয়। বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্য করা উচিত। অমুসলিম, কাফির কিংবা মুশরিকদের উৎসবের দিনগুলো হচ্ছে তাদের জন্য উচ্ছৃংখল আচরণের দিন। এদিনে তারা সকল নৈতিকতার সকল বাঁধ ভেঙ্গে দিয়ে অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, আর এই কর্মকান্ডের অবধারিত রূপ হচ্ছে মদ্যপান ও ব্যভিচার। এমনকি খৃষ্টান সম্প্রদায়ের বহুলোক তাদের পবিত্র বড়দিনেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যকে জলাঞ্জলি দিয়ে মদ্যপ হয়ে উঠে এবং পশ্চিমা বিশ্বে এই রাত্রিতে বেশ কিছু লোক নিহত হয় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ী চালানোর কারণে। অপরদিকে মুসলিমদের উৎসব হচ্ছে ইবাদতের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। এই বিষয়টি বুঝতে হলে ইসলামের সার্বিকতাকে বুঝতে হবে। ইসলাম কেবল কিছু আচার-অনুষ্ঠানের সমষ্টি নয়, বরং তা মানুষের গোটা জীবনকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী বিন্যস্ত ও সজ্জিত করতে উদ্যোগী হয়। তাই একজন মুসলিমের জন্য জীবনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইবাদত,যেমনটি কুরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেনঃ ‘আমি জ্বীন ও মানুষকে আমার ইবাদত করা ছাড়া অন্য কোন কারনে সৃষ্টি করিনি’। (সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত-৫৬) সেজন্য মুসলিম জীবনের আনন্দ-উৎসব আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ ও অশ্লীলতায় নিহিত নয়,বরং তা নিহিত হচ্ছে আল্লাহর দেয়া আদেশ পালন করতে পারার মাঝে। কেননা মুসলিমদের ভোগবিলাসের স্থান ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী নয়, বরং চিরস্থায়ী জান্নাত। তাই মুসলিম জীবনের প্রতিটি কাজের। রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে থাকবে তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের ঈমান, আখিরাতের প্রতি তাদের অবিচল বিশ্বাস, আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালবাসা।
.
থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করাঃ উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ পালন করা নিঃসন্দেহে হারাম। মহানবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুস্মরণ করবে, সে সেই জাতির অন্তর্ভূক্ত বলে গণ্য হবে। ( সুনানে আবু দাউদ) মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন ‘তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি’। (সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াতঃ ৪৮) তাই, একজন মুসলিম খৃস্টান পাদ্রী পোপ গ্রেগরিয়ান- এর নামানুসারে যে ক্যালেন্ডার, সেই ক্যালেন্ডারের পরবর্তী চলন ইংরেজি ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে পালন করলে তার ঈমান কখনও থাকতে পারে না।
.
আমাদের করণীয়ঃ সুতরাং ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ইংরেজি নববর্ষ সংক্রান্ত যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ এতে নিম্নলিখিত শ্রেণীর ইসলাম বিরোধী বিষয় রয়েছে। (এক) শিরকপূর্ণ অনুষ্ঠানাদি, চিন্তাধারা ও সংগীত। (দুই) নগ্নতা, অশ্লীলতা, ব্যভিচারপূর্ণ অনুষ্ঠান। (তিন) গান ও বাদ্যপূর্ণ অনুষ্ঠান। (চার) সময় অপচয়কারী অনর্থক বাজে কথা ও কাজ। এ অবস্থায় প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব হচ্ছে নিজে এগুলো থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা এবং বাঙালি মুসলিম সমাজ থেকে এই প্রথা উচ্ছেদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো নিজ নিজ সাধ্য ও অবস্থান অনুযায়ী। এ প্রসঙ্গে আমাদের করণীয় সম্পর্কে কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া যেতে পারে (এক) এ বিষয়ে দেশের শাসকগোষ্ঠীর দায়িত্ব হবে আইন প্রয়োগের দ্বারা নববর্ষের যাবতীয় অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। (দুই) যেসব ব্যক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কিছুটা ক্ষমতার অধিকারী, তাদের কর্তব্য হবে অধীনস্থদেরকে এ কাজ থেকে বিরত রাখা। (তিন) মসজিদের ইমামগণ এ বিষয়ে মুসল্লীদেরকে সচেতন করবেন ও বিরত থাকার উপদেশ দেবেন। (চার) পরিবারের প্রধান এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন যে তার পুত্র, কন্যা, স্ত্রী কিংবা অধীনস্থ অন্য কেউ যেন নববর্ষের কোন অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়। (পাঁচ) এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকে তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী, সহকর্মী ও পরিবারের মানুষকে উপদেশ দেবেন এবং নববর্ষ পালনের সাথে কোনভাবে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফীক দান করুন এবং কল্যাণ ও শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর, তাঁর পরিবার ও সাহাবীগণের ওপর। “আর তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার পরিধি আসমান ও যমীনব্যাপী, যা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য।” (সূরা আলে-ইমরান, আয়াত-১৩৩)
-ধন্যবাদ

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:



সবাই মিলে দোয়া করি, ৩১ই ডিসেম্বর যেন রাত না হয়, ৪৮ ঘন্টার দিন যেন হয়; খৃস্টানদের হাত থেকে বাঁচার উপায় হোক।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০১

ধ্রুবক আলো বলেছেন: থার্টি ফাস্ট নাইট’ ঈমান ধ্বংসের মহা উৎসব- খুবই দামী কথা বলছেন! কিন্তু সবাই এখন ঘোরে আছে, কে কে এই উৎসব পালন করব!!? এছাড়াও আরও বেধর্মীদের উৎসব পালন করার জন্য মরিয়া। কি হবে মুসলিমদের, হেদায়তের জন্য দোয়া করি! কারন বললে কথা কানেই নেয় না!

চাদগাজী ভাইও কিন্তু কথা ভালোই বলছে!

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

মিঃ আতিক বলেছেন: "খৃস্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক পোপ গ্রেগরিয়ানের নামানুসারে যে ক্যালেন্ডারের প্রচলন হয়, ইতিহাসের পালাবদলে আজকে সেই ক্যালেন্ডারকেই ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।"
এর সাথে বলতে চাই ইংরেজি মাসের নাম গুলও খৃস্টানদের ধর্মযাজকদের নামে ও ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত। যদি ইসলামিক কোন সৌর ক্যালেন্ডার থাকতো আমরা সেটাই অনুসরন করতাম। একইভাবে গ্রিনিচ মান অনুসারে সময় নিধারন করা,বর্তমানে অবশ্য মক্কা শরিফে একটি ঘড়ি বানানো হচ্ছে যার সাথে মিল রেখে সারা পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে সময় মিলিয়ে নেয়া যাবে। তবে ইসলামিক ভাবধারায় একটি সৌর ক্যালেন্ডার আজ সময়ের দাবি।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৬

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: শুধু থার্টি ফাস্টের রাতে কিছু তরুনের উছশৃংখল আচরণে আপনার কাছে ঈমান ধ্বংসের মতো বিশাল কিছু মনে হচ্ছে ? বাংলাদেশে সারা বছর সরকারি অফিসে সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ঘুষ, দূর্নীতির যে মহাৎসব বসে তা আপনার কাছে কি খুব ঈমানী কার্যকলাপ মনে হয়? দুই নম্বরি বা উপরির পয়সা দিয়ে দেশের আমলা, রাজনীতিবিদরা প্রতিদিন মদ, এবং মা...নিয়ে দেশটাকে পাশ্চাত্যের চাইতেও অনেক বেশি বেহেশ্ততুল্য করে ফেলেছে তা সারা বছর আপনার চোখে পড়ে না ? সত্যি যদি দেশের যুবসমাজের নৈতিক অধঃপতন রোধ করতে চান তবে সকল পাপাচারের মূল দূর্নীতি, অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন সহ সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন |

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.