নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: মুম্মিতার বয়ফ্রেন্ড

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৭



গল্প: মুম্মিতার বয়ফ্রেন্ড
সাইয়িদ রফিকুল হক

আজ সকালে মুম্মিতাকে একটা সম্পূর্ণ অপরিচিত লোকের সঙ্গে এক রিক্সায় চড়ে প্রায় জড়াজড়ি করে যেতে দেখে সোহানী খুব অবাক হলো—আর ভীষণভাবে ঘাবড়ে গেল! এইব্যাপারটা তার একটুও ভালো লাগলো না। ওরা একই হলে থাকে।
মুম্মিতা যে ভিতরে-ভিতরে এতোটা—তা সোহানী এতোদিন যেন বুঝতে পারেনি। সে নিজের কাছেই এইমুহূর্তে লজ্জিত হলো। এইরকম একটা মেয়ের সঙ্গে সে এখনও একই হলের একই রুমে থাকে! এটা ভাবতেই লজ্জায় তার মাথাটা আপনা-আপনি নুয়ে এলো।
ভাগ্যিস, এইসময় সে একটা খুব জরুরি কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের বাইরে এসেছিল বলে এতোবড় একটা সত্য তার আজ জানা হলো। মুম্মিতার পাশে বসা ছেলেটা যে কোনো এক পয়সাওয়ালালোকের ছেলে—তা তাকে একনজর দেখেই সোহানী বুঝতে পেরেছে। সে এব্যাপারে কাউকে কোনোকিছু না বলে হলে নিজের রুমে ফিরে এলো।

দুপুরের এইসময়টাতে তার ক্লাস থাকে না। সে ডাইনিংয়ে গিয়ে কোনোরকমে আজ চারটে ডাল-ভাত মুখে দিয়ে আবার ফিরে এলো নিজের রুমে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের চোখের দেখায় সোহানী এখন অনেককিছু বুঝতে পারছে। আর এই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মুম্মিতার সঙ্গে সোহানীর কয়েকবার চোখাচোখিও হয়েছে। এতে মুম্মিতাকে কোনোরকম অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়নি। সে যেন একেবারে স্বাভাবিক। ছেলেটা মুম্মিতাকে যে-ভাবে জড়িয়ে ধরেছিল—তা দেখে সোহানীর মনে হয়েছে—তাদের মুম্মিতা একটা পেশাদার কলগার্ল। এটা মনে হতেই সে আবার শিউরে উঠেছে!
দুপুরের পরে সোহানীর একটা ক্লাস ছিল। সে কোনোরকমে ক্লাস শেষ করে হলে ফিরে নিজের রুমে নিজের বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে পড়লো।
মুম্মিতার আপত্তিকর দৃশ্যটি সে কিছুতেই ভুলতে পারছে না। আর সে ভাবছে—একটা মেয়ে এতোটা নির্লজ্জ হয় কীভাবে? ছিঃ ছিঃ ছিঃ—এদের জন্য আজ মেয়েদের অনেকে ভুল বোঝে।

সোহানী কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল—তা তার মনে নাই। তার ঘুম ভাঙলো মুম্মিতার ডাকে। সে খুব রেগে সোহানীকে বললো, “আমার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আমি যখন রিক্সায় ছিলাম—তখন তুই ওভাবে বারবার তাকাচ্ছিলি কেন? সে কী মনে করবে?”
কাঁচাঘুম ভেঙে যাওয়ায় সোহানীর মন ও মেজাজ দুটোই খারাপ হয়ে গিয়েছে। তারউপরে মুম্মিতার এই অসময়ে এইরকম ঝাড়ি!
সে আজ কোনোরকম ভয়টয় পেল না। তার মনের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন যেন জ্বলে উঠলো। সে একনিমিষে বলে ফেললো, “তুমি বেশ্যা হতে পারবে! রিক্সায় চড়ে কামকেলি করতে পারবে! নিজের খরিদ্দারকে বয়ফ্রেন্ড বানাতে পারবে! আর আমি একটু দেখেছি বলে তোমার জাত চলে গিয়েছে!”
মুম্মিতার কাঁচাঘায়ে লবণের ছিঁটা পড়েছে যেন। সে প্রবল উত্তেজনায় সোহানীর কাছে এগিয়ে যেতেই সোহানী তার হাতটা ধরে ফেলে বললো, “এই নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করবে না। তোমার এইরকম অনেক বয়ফ্রেন্ড আছে—তা আমি জানি। আগে ভাবতাম—তোমার হয়তো একটা-দুইটা বয়ফ্রেন্ড। এখন দেখি, বয়ফ্রেন্ডের একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে তোমার! এতো-এতো বয়ফ্রেন্ড মানুষের থাকে! আমি নাহয় ব্যাপারটা দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে একটু তাকিয়ে ছিলাম—তাই বলে কি তোমার জাত চলে গেছে! আর তুমি যে ঘণ্টার-পর-ঘণ্টা আজকাল রিক্সায় সেক্স করছো—তা কি কোনো অপরাধ নয়? আমাদের এই হলের আরও কয়েকটা মেয়ে তোমার চরিত্রসম্পর্কে এখন জানে। এতোদিন তারা বলাবলি করতো—আমি তা বিশ্বাস করিনি। এখন তোমাকে দেখে আমার সব বিশ্বাস হচ্ছে। তোমাদের মতো মেয়েরা তাদের কাস্টমারকে এখন বয়ফ্রেন্ড বলে চালিয়ে দেয়।”
মুম্মিতা আর-কিছু বলার সাহস পায় না। সে একটা ব্যাগে কিছু কাপড়চোপড় গুছিয়ে নেয়। তার আরেকটি বয়ফ্রেন্ড একটু আগে তাকে হোটেল সোনারগাঁয়ে যেতে কল করেছে। সারারাত সেখানে থাকতে হবে। আর কয়েক হাজার টাকার গন্ধে সে একেবারে উন্মনা হয়ে এইসব সামান্য ঝগড়া ভুলে খুব স্বাভাবিক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে।
তারপর রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে সোহানীর কাছে খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে বললো, “স্যরি, দোস্ত, কিছু মনে করিস না। আমার মাথাটা আসলে ঠিক ছিল না। আর শোন, আমি আজ রাতে ফিরবো না। রাতে হলে প্রভোস্ট-ম্যাডাম কিংবা হাউস-টিউটর কেউ-একজন এলে তুই তাদের বলিস—আমার মায়ের খুব অসুখের কারণে আমি হঠাৎ বাসায় চলে গিয়েছি। ছুটি নেওয়ার কোনো সুযোগ পাইনি।”

সোহানী চুপ করে রইলো কিছুক্ষণ। তারপর সে বললো, “এটা কয় নাম্বার বয়ফ্রেন্ড তোর?”
মুম্মিতা মুচকি হেসে বলে, “নাম্বার তো গুনে রাখিনি। তবে আজ রাতে আমার সেঞ্চুরি হতে পারে!”

সবটা শুনে সোহানী ধপাস করে বসে পড়ে বিছানায়। আরেকটু হলে সে জ্ঞান হারাতো!


সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৪/১১/২০১৯

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: এতটা উত্তেজিত হওয়া ঠিক না। একজনের সাথে রিকশায় বসলেই সব হয়ে যায় না।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: একজনের সাথে রিকশায় বসলেই সব হয়ে যায় না।[/si

রিক্সায় একসঙ্গে ঘোরাফেরার জন্য নয়। বয়ফ্রেন্ড বেশি হয়ে গেছে।

পাশে থাকায় কৃতজ্ঞ ভাই। ;)

সঙ্গে একরাশ শুভেচ্ছা আর শুভকামনা।

২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:০২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
গল্পটা আরো বড় করা যেত। তাহলে সুন্দর সমাপ্তি হত।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৬

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ছোট করেই লিখেছি ভাই।
যাতে, ‘শেষ হয়ে হইলো না শেষ’ হয়।

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা।

৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৮

ইসিয়াক বলেছেন: ভালোই লাগলো।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভালোলাগায় আনন্দিত। ;)

অনেক ধন্যবাদ ভাই।
শুভকামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.