নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমবেদনা জ্ঞাপন করার ১৬ টি মাদানী ফুল

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৩



সমবেদনা জ্ঞাপন করার ১৬ টি মাদানী ফুল

নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর (ﷺ) এর তিনটি বাণীঃ

(১) যে কোন বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করবে, তার জন্য ঐ বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির মত সাওয়াব রয়েছে।
(তিরমিযী, ২য় খন্ড, ৩৩৮ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ১০৭৫)
(২) যে মুমিন বান্দা নিজের কোন বিপদগ্রস্থ ভাইয়ের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাকে কারামাতের পােষাক পরিধান করাবেন।
(ইবনে মাজাহ, ২য় খন্ড, ২৬৮ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ১৬০১)
(৩) যে ব্যক্তি কোন চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তিকে সমবেদনা জ্ঞাপন করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে তাকওয়ার পােষাক পরিধান করাবেন এবং রূহ সমূহের মধ্যে তার রূহের উপর রহমত বর্ষণ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন বিপদগ্রস্থ ব্যক্তিকে সমবেদনা জ্ঞাপন করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতী পােষাক সমূহ থেকে এমন দুইটি পােষাক পরিধান করাবেন, যার মূল্য (সারা) দুনিয়াও হতে পারে না।
(আল মুজামুল আওসাত, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪২৯ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ১২১২)
(৪) হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ (عليه السلام) আল্লাহ তায়ালার দরবারে আরজ করলেনঃ হে আমার রব! ঐ ব্যক্তি কে? যে তােমার আরশের ছায়াতলে থাকবে, যে দিন সেটার ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না? আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করলেনঃ “ হে মুসা (عليه السلام)! ঐ লােক যে রােগীদের সেবা শুশ্রুশা করে, জানাযার সাথে চলে এবং কোন মৃত বাচ্চার মায়ের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে থাকে। ”
(তামহিদুল পরশ লিস সুয়ুতী, ২৬ পৃষ্ঠা)
(৫) সমবেদনা জ্ঞাপন এর অর্থ হচ্ছেঃ বিপদগ্রস্থ ব্যক্তিকে ধৈর্যের উপদেশ দেয়া। “ সমবেদনা জ্ঞাপন করা সুন্নাত। ”
(বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৫২ পৃষ্ঠা )
(৬) দাফনের আগেও সমবেদনা জ্ঞাপন করা জায়েজ কিন্তু দাফনের পর সমবেদনা জ্ঞাপন করা উত্তম, আর এটা সেই সময় যখন মৃতের পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি না করে। নতুবা তাদের সান্তনার জন্য দাফনের পূর্বেই সমবেদনা জ্ঞাপন করুন।
(জাহরা, ১৪১ পৃষ্ঠা)
(৭) সমবেদনা জ্ঞাপনের সময় মৃত্যু থেকে তিন দিন পর্যন্ত। এর পর করা মাকরূহ। কেননা এর দ্বারা শােক তাজা হবে। কিন্তু যখন সমবেদনা জ্ঞাপনকারী অথবা যার সমবেদনা জ্ঞাপন করা হবে সেখানে বিদ্যমান না থাকে বা বিদ্যমান আছে, তবে তার জানা নেই, তাহলে পরে সমবেদনা জ্ঞাপন করাতে অসুবিধা নেই।
(প্রাগুক্ত, রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ১৭৭ পৃষ্ঠা)
(৮) (সমবেদনা জ্ঞাপনকারী) বিনয় নম্রতা এবং দুঃখ বেদনা প্রকাশ করবে। কথা কম বলবে আর মুচকি হাসি থেকে বেঁচে থাকবে, কেননা (এরকম পরিস্থিতিতে) মুচকি হাসা (অন্তরে) হিংসা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে।
(আদাবে দ্বীন, ৩৫ পৃষ্ঠা)
(৯) মুস্তাহাব হল, মৃতের সকল নিকটাত্মীয়দের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করবে। ছােট, বড়, পুরুষ ও মহিলা সবাইকে, তবে মহিলাকে তার মুহরিমই সমবেদনা জ্ঞাপন করবে।
(বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৫২ পৃষ্ঠা)
সমবেদনা জ্ঞাপন করতে গিয়ে এটা বলবেঃ আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সবরে জামীল (উত্তম ধৈর্য) প্রদান করুক এবং এই বিপদে আপনার উপর মহান প্রতিদান দান করুক, আর আল্লাহ তায়ালা মরহুমকে ক্ষমা করুক। নবী করীম, রউফুর রহীম (ﷺ) এই শব্দাবলীর মাধ্যমে সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেনঃ
﴿إِنَّ لِلّٰهِ مَا أَخَذَ، وَلَهُ مَا أَعْطَى، وَكُلُّ شَيْءٍ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمَّى فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ﴾
অনুবাদঃ “ আল্লাহ তায়ালারই যা তিনি নিয়েছেন আর যা দিয়েছেন এবং তাঁর নিকট প্রত্যেক বস্তু একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রয়েছে, এজন্য ধৈর্য ধারণ করাে এবং সাওয়াবের আশা রাখ। ”
(বুখারী, ১ম খন্ড, ৪৩৪ পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ১২৮৪)
(১০) মৃতের আত্মীয়দের ঘরে বসা যেন লােকেরা তার প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করার জন্য আসে এতে কোন অসুবিধা নেই। আর ঘরের দরজায় বা সাধারণ রাস্তার উপর বিছানা (বা কার্পেট ইত্যাদি) বিছিয়ে বসা মন্দ কাজ।
(আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৬৭ পৃষ্ঠা। রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ১৭৭ পৃষ্ঠা)
(১১) কবরের নিকটবর্তী সমবেদনা জ্ঞাপন করা মাকরূহ (তানযিহী)।
(দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ১৭৭ পৃষ্ঠা)
কতিপয় বংশের মধ্যে মৃত্যুর পর আগত প্রথম শবে বরাত বা প্রথম ঈদের সময় আত্মীয় স্বজনেরা মৃতের পরিবারের ঘরে সমবেদনা জ্ঞাপন করার জন্য একত্রিত হয়। এটা ভুল পদ্ধতি। হ্যা! যে ব্যক্তি কোন কারণে সমবেদনা জ্ঞাপন করতে পারেনি সে ঈদের দিন সমবেদনা জ্ঞাপন করাতে সমস্যা নেই। এ ভাবে প্রথম ঈদুল আযহায় যে সব মৃতের পরিবারের উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে, তাদেরকে কুরবানী করতে হবে নতুবা গুনাহগার হবে। এটাও মনে রাখবেন! শােকের দিনগুলাে অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরে ঈদের আগমনে মৃতের জন্য শােক প্রকাশ করা বা শােকের কারণে ভাল পােষাক ইত্যাদি পরিধান করা নাজায়িয ও গুনাহ। অবশ্য এমনিতে কেউ উন্নত পােষাক পরিধান না করলে গুনাহ হবে না।
(১২) যে একবার সমবেদনা জ্ঞাপন করে আসল, সে পূনরায় সমবেদনা জ্ঞাপন করার জন্য যাওয়া মাকরূহ।
(দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ১৭৭ পৃষ্টা)
(১৩) যদি সমবেদনা জ্ঞাপন করার জন্য মহিলারা একত্রিত হল, যারা বিলাপ করবে, তবে তাদেরকে খাবার দেওয়া যাবে না। কেননা (তা) গুনাহকে সহযােগিতা করা হবে ।
(বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৫৩ পৃষ্ঠা)
(১৪) বিলাপ অর্থাৎ মৃতের গুণাগুণ অতিরঞ্জনের সাথে (অর্থাৎ বাড়িয়ে গুণাগুণ) বর্ণনা করে আওয়াজ সহকারে কান্নাকাটি করা। যাকে 'বায়িন' বলা হয়। সকলের ঐক্য মতে, হারাম। এভাবে হায়! বিপদ! হায় দুঃখ! বলে বলে চিঙ্কার করা।
(প্রাগুক্ত, ৮৫৪ পৃষ্ঠা)
(১৫) ডাক্তারগণ বলেনঃ “ (যে নিজের আত্মীয়ের মৃত্যুতে দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়, তার) মৃতের জন্য একেবারে কান্নাকাটি না করলে কঠিন রােগ সৃষ্টি হয়ে যায়। অশ্রু প্রবাহিত হওয়ার মাধ্যমে অন্তরের তীব্রতা বের হয়ে যায়। এজন্য (বিলাপ ছাড়া) কান্না করা থেকে কখনাে নিষেধ করবেন না। ”
(মিরআতুল মানাজিহ, ২য় খন্ড, ৫০১ পৃষ্ঠা)
(১৬) প্রসিদ্ধ মুফাসসির হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খান (رحمة الله عليه) বলেনঃ “ সমবেদনা জ্ঞাপনের জন্য এমন শব্দাবলী হওয়া চাই, যার মাধ্যমে ঐ দুঃখ ভারাক্রান্ত ব্যক্তির সান্তনা চলে আসে। ফকীরের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যদি এই অবস্থায় দুঃখীদেরকে কারবালার ঘটনাবলী স্বরণ করিয়ে দেয়া হয়, তবে অনেক সান্তনা পাই। সকল সমবেদনা জ্ঞাপনই উত্তম, তবে বাচ্চার মৃত্যুতে (মুহরিম তার) মাকে সান্তনা দেওয়াতে অনেক সাওয়াব রয়েছে। ”
(মিরআতুল মানাজিহ, ২য় খন্ড, ৫০৭ পৃষ্ঠা)

লেখক: মাওলানা মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার ক্বাদেরী
[তাঁর (دامت برکاتهم العاليه)-এর রিসালা থেকে নেওয়া]

কৃতজ্ঞতাস্বীকার: Sayyid Reza Qadri

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের হিসাবে দেশ চলে না। বিশ্ব চলে না। আমিও ধর্মের নিয়মে চলতে পারি না।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৭

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: তবুও আমাদের চলতে হয়।
তবুও আমাদের মানতে হয়।
সবই তাঁর ইচ্ছা।
অশেষ ধন্যবাদ ভাই।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৭

আমি মিয়াবাড়ির ছেলে বলেছেন: অনেক সুন্দর একটা লেখা।
পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪২

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
পাশে থাকায় কৃতজ্ঞ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.