নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্পকে জাদু বানানোর প্রচেষ্টায় আছি। যে জাদুর মোহনীয়তায় মানুষ মুগ্ধ হবে, বুঁদ হয়ে ঘুম হারাবে, রাত কাটাবে নির্ঘুম।

তাহসিনুল ইসলাম

অরূপকথার জাদুকর আমি!!

তাহসিনুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

চকলেট আতঙ্ক (অনুগল্প)

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০০

চারতলা বিল্ডিং। বিল্ডিঙটায় কোন ভাড়াটিয়া থাকে না। পুরো বিল্ডিং জ্ঞাতিগোষ্ঠী দিয়ে ভরা। তিন প্রজন্মের বাস। বিল্ডিঙটা আমার স্টুডেন্টের দাদার। আগে আমাকে সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হতো চারতলায়, এখন উঠি তিন তলায়। মাঝে মাঝে এখন সিঁড়িতে পা রেখেই আতঙ্কিত হয়ে উঠি। চকলেট আতঙ্ক।

বিল্ডিঙটায় পিচ্চি আছে অর্ধ-ডজনেরও বেশি। প্রতিটাই অনেক কিউট আর চরম পাকনা। সন্ধ্যার সময় সিঁড়িতে দু’ তিনটার সাথে দেখা হবেই। দেখা হলে চকলেট ধরিয়ে দেই হাতে। চকলেট দিয়ে দিয়ে এখন এমন একটা পরিস্থিতি হয়ে গেছে কোনদিন ভুলে চকলেট নিয়ে না গেলেই এই আতঙ্কে পড়তে হয়। পড়াই তো একজনকে কিন্তু হয়ে গেছি পুরো বিল্ডিঙের স্যার। দেখলেই দৌড়ে এসে বলে, স্যার চকলেট দেন। চকলেট দিলেই খুব খুশি। এদের মধ্যে পাকনাশ্রেষ্ঠার নাম সুমাইয়া-- এ যেদিন চকলেট চেয়ে নিরাশ হয় সেদিন ঢং করে বলে, স্যার আপনি না খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছেন।

পাকনাদের মধ্যে অবশ্য একটা বেশ শান্তশিষ্ট আছে। শান্তর নাম, ইউসুফ। এই যুগের বাচ্চাদের নাম সাধারণত ইউসুফ কেউ রাখে না, কিন্তু এই বাচ্চাটার নাম ইউসুফ রাখা হয়েছে। নামটা অবশ্য বেশ শ্রুতিমধুর। ইউসুফ নামে একজন সুদর্শন নবীও ছিলেন। যাইহোক, এই ইউসুফই একমাত্র ব্যতিক্রম যাকে আজ পর্যন্ত চকলেট দিতে পারলাম না। ছেলেটা আমাকে দশ হাত দূর থেকে দেখলেই সিপাহীর মতো হাত কপালে উঠিয়ে সালাম দেয়। আগে শুধু হাতটা উঠাতো, মুখে কোনকিছু বলতো না। কয়েকদিন থেকে দেখছি হাত উঠার পাশাপাশি সে মুখেও, আসসালামু আলাইকুম স্যার বলছে। আমি ভাবলাম যাক ছেলেটা এবার মনে হয় চকলেট নেবে। হাতে চকলেট ধরিয়ে দিলাম কিন্তু ফলাফল সেই আগের মতোই। চকলেট সে নেয় না।

গতকাল সিঁড়িতে উঠতে গিয়ে দেখি পকেটে কোন চকলেট নেই। আমি বেশ সন্তর্পণে উঠতে লাগলাম। শান্ত ইউসুফের সঙ্গেই দেখা হলো প্রথম। আমাকে দেখেই সে যথারীতি হাত কপালে ঠেকিয়ে সালাম দিলো। সালামের শেষে বাড়তি একটা কথাও যোগ করলো, আসস্লামু আলাইকুম স্যার চকলেট দেন।

ইউসুফের সালামের শেষের অংশ শুনে আমি বিস্মিত হলাম। পকেট শূন্য জেনেও কয়েকবার হাত ঢুকিয়ে চকলেট খুঁজলাম। চকলেট পাওয়া গেলো না। গতকালের চকলেটশূন্য পকেট এই প্রথম আমাকে অনেক বেশি কষ্ট দিলো। এর আগে কখনো চকলেটশূন্য পকেটে এতোটা কষ্ট দেয়নি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৩

ডি মুন বলেছেন: ইউসুফের সামনে বিব্রতকর অবস্থা !!!

বেচারা ইউসুফ ভালো সময়ে চকলেট চাইছে। দুষ্টু পিচ্চি।

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৯

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: হা হা জী ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.