নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্পকে জাদু বানানোর প্রচেষ্টায় আছি। যে জাদুর মোহনীয়তায় মানুষ মুগ্ধ হবে, বুঁদ হয়ে ঘুম হারাবে, রাত কাটাবে নির্ঘুম।

তাহসিনুল ইসলাম

অরূপকথার জাদুকর আমি!!

তাহসিনুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাস্তি (অতিপ্রাকৃতিক গল্প)

০২ রা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪



বাড়িটির নাম, নাসু নীড়। বড় বাড়ি। পাখির বাসার মতো ছোট নয়। বাড়ির কর্তা বাড়িটিকে বাড়ি না বলে কেনো নীড় আখ্যায়িত করেছেন-- এটা ঠিক বোধগম্য নয়। নাসুর সাথে মিল রেখেই হয়তো নীড় শব্দটা বসানো হয়েছে। নীড় শব্দটার পরিবর্তে কর্তা অবশ্য নিবাস শব্দটাও বসাতে পারতেন। নাসু নিবাস। ছন্দ মন্দ ছিলো না।



নাসু নীড়ের প্রতি নিশিন্দপুর গ্রামের মানুষ হঠাৎ বেশ কৌতূহলী হয়ে উঠেছে। গ্রামবাসীর এই কৌতূহল অবশ্য অমূলক নয়। মূলক কৌতূহল। বাড়ির কর্তা জনাব নসরত হাওলাদার ওরফে নাসু গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ি থেকে বের হয় নি। বের হয় নি বললে ভুল হবে। সে আসলে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। নাসু দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরের মধ্যেই ঘাপটি মেরে বসে আছে। এক সপ্তাহ ধরে তার পেটেও কিছু যায় নি। যাবে কিভাবে? সে তো এক মুহূর্তের জন্যেও ঘরের বাইরে পা ফেলতে পারছে না। তার স্ত্রী অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ি ছেড়ে আগেই চলে গেছে। গ্রামের মানুষ বাড়ির আশপাশে সকাল সন্ধ্যা ভিড় জমাচ্ছে। উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। এদের মধ্যে দু’ একজন সাহসী মানুষ বাড়ির ভেতরে ঢুকার চেষ্টাও করছে। নাসুকে উদ্ধারের একটা চেষ্টা। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। উদ্ধার করা তো দূরের কথা বাড়ির ভেতরই কেউ পা রাখতে পারছে না। নাসুর এই নাজেহাল অবস্থা দেখে গ্রামের কিছু মানুষ আত্মতৃপ্তিতে ভাসছে। কিছু মানুষ মনঃকষ্টে পুড়ছে। পুড়ন্ত মানুষের চেয়ে ভাসন্ত মানুষের সংখ্যাই অনেক বেশি।



নিশিন্দপুর গ্রামে যে এমন অদ্ভুত একটা ব্যাপার ঘটতে পারে গ্রামের মানুষ এটা কখনও কল্পনাও করেনি। ব্যাপারটা তাদের বোধের বাইরে। অর্ধশত একশত না, হাজার হাজার কাক নাসু নীড়ের চতুর্দিক জমাট বেঁধে আছে। বাড়ির চকচকে ঢেউটিন মাথা কাকেদের কালো শরীরে ছেয়ে আছে। তিল পরিমান ফাঁকা নেই। মনে হচ্ছে বিশাল এক খণ্ড কালো মেঘ বাড়ির মাথায় এসে বসেছে। কাকেদের কোনভাবেই বাড়ি থেকে হটানো যাচ্ছে না। বেশ কিছু কাক ঢিল, লাঠির আঘাতে মারাও পড়ছে। কিন্তু কোন কাককেই ভীত হতে দেখা যাচ্ছে না। বাড়ি ছেড়ে কেউ কোথাও নড়ছে না। সবাই বেশ অনড়। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মৃত্যুতে তাদের সংখ্যা কমছে না বরং ক্রমশ বাড়ছে। প্রতি মুহূর্তে উত্তর, দক্ষিন, পূর্ব, পশ্চিম চতুর্দিক থেকে নতুন নতুন কাক এসে জমা হচ্ছে। বাড়ির ভেতর কোন মানুষ ঢোকার চেষ্টা করলেই ঝাঁকে ঝাঁকে তেড়ে আসছে সবাই। অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার।



এভাবে এগারো দিন কেটে গেলো। কাকেরা গেলো না। বিরল প্রজাতির কাক। রাতের প্রহরেও জেগে আছে। বিনিদ্র প্রহরী। ঘুম বিসর্জন দিয়ে তারা সারা রাত জেগে কা কা করছে। কিংবা এমন হতে পারে তারা পালাক্রমে ঘুমাচ্ছে। কেউ ঘুমাচ্ছে তো কেউ জেগে কা কা করছে। তাদের এই কর্কশ কা কা রবের কল্লোলে আশপাশের মানুষ ঘুমাতে পারছে না। যারা ঘুমাচ্ছে তারাও মাঝরাতে হঠাৎ বিকট কা কা রবের সম্মিলিত কলরবে জেগে উঠছে আতঙ্কে। রাতে অবশ্য নিশিন্দপুরের মানুষকে নাসু নীড়ের ধারে কাছেও আসতে দেখা যাচ্ছে না। কারণ, রাতের আঁধারে নাসু নীড়কে ভয়ঙ্কর ভূতুড়ে দেখাচ্ছে।



দ্বাদশ দিন দ্বিপ্রহরে একজন বৃদ্ধ মানুষ নিশিন্দপুর গ্রামে এসে হাজির হলো। বৃদ্ধের পরনে সাদা ধবধবে পাঞ্জাবী। মাথার শুভ্র লম্বা কেশ স্কন্ধদেশ পর্যন্ত ছড়ানো। গলায় খয়েরি পুথির মালা। নিশিন্দপুরে এই শুভ্র দীর্ঘকেশী বৃদ্ধকে এর আগে কখনো দেখা যায় নি। বৃদ্ধের সাথে কোন বাহন নেই। পায়ে হেঁটে এসেছেন। কোথা থেকে এসেছেন এটা এখনও পরিস্কার নয়। তবে বৃদ্ধের শ্রান্ত ঘর্মাক্ত শরীর তাঁর দীর্ঘ পথ পরিক্রমণের কথা জানান দিচ্ছে। দীর্ঘ পথের ভারে বৃদ্ধের পা ভারী হয়ে আছে। ভারী পায়ে ধীরে ধীরে তিনি নাসু নীড়ের পাশে একটা বেঁটে কাঁঠাল গাছের নীচে এসে বসলেন।



দ্বিপ্রহরের সূর্য মাথার ওপর। নাসু নীড়ের মাথায় কাকেদের কোলাহল তবু থেমে নেই। বৃদ্ধকে ঘিরে ইতোমধ্যে একটা জটলা বেঁধে গেছে। কানাকানি। ফিসফাস। ঠুসঠাস। কে এই বৃদ্ধ? কোথা থেকে এলো? কাকেদের কর্মকাণ্ডে এই বৃদ্ধের কোন কারসাজী নেই তো? বৃদ্ধ গুরুগম্ভীর। কারও সাথে কথা বলছেন না। একটা চৌদ্দ পনের বছরের মেয়ে হঠাৎ ভিড় ঠেলে বৃদ্ধের কাছে এলো। মেয়েটির হাতে জলপাত্র। মেয়েটি হাঁটু গেঁড়ে বসলো বৃদ্ধের সামনে। এরপর বৃদ্ধের দিকে জলপাত্র এগিয়ে দিলো। বৃদ্ধ মেয়েটির হাত থেকে জলপাত্র নিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করলেন। তাঁর জল পানের ধরন দেখে নিশিন্দপুর জটলা একটু অনুতপ্ত হলো। বৃদ্ধ খুব তৃষ্ণার্ত ছিলেন। জল পান শেষে তিনি কাঁঠাল কাণ্ডে পীঠ ঠেকালেন। নিশিন্দপুরবাসী এবার অনেকেই বৃদ্ধকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরাজোরি করতে লাগলো। অপরিচিত বৃদ্ধ তাদের অতিথি। অতিথির প্রতি কটু ধারনা পোষণ করায় তারা এখন বেশ অনুতপ্ত।



জলকন্যা জল পরিবেশন করেই জটলা ভেদ করে চলে গেছে। সে চলে যাওয়ার পর নিশিন্দপুর জটলা বেশ বিভ্রান্তিতে পড়ে গেছে। মেয়েটি যখন জল নিয়ে এসেছে তখন তারা একটু আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলো। বৃদ্ধের জল পান তাদের পীড়া দিচ্ছিলো। জল দংশন। কাজেই জলকন্যার চেয়ে তখন জল পদার্থটাই তাদের কাছে মুখ্য ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু এখন তাদের কাছে মনে হচ্ছে এই জলকন্যা মেয়েটাও নিশিন্দপুরের মেয়ে নয়। মেয়েটা অপরিচিত। তারা পরস্পর পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। কেউ কথা বলছে না। সবার মনের ভেতরেই একই প্রশ্ন। কে এই মেয়ে? না, কেউই চেনে না মেয়েটিকে। বৃদ্ধকে অবাক করে হঠাৎ তারা সবাই এদিক সেদিক ছুটতে লাগলো। তাদের এই হঠাৎ ছুটাছুটিতে কাকগুলোও যেনো একটু স্তম্ভিত হয়ে গেলো।



ছুটাছুটি শেষে তারা আবার একত্রে জটলা বাঁধলো। এবার জটলাটা বৃদ্ধকে ঘিরে না। জটলা বৃদ্ধের থেকে খানিকটা দূরে। আবার সেই মুখ চাওয়াচাওয়ি। লাল শার্ট পড়া এক লোক মুখ খুললো প্রথমে। বললো, এতো কম সময়ের মধ্যে মেয়েটা গেলো কই? আশ্চর্য ব্যাপার। আরেকজন বললো, আমার মনে হয় মেয়েটা কারও বাড়িতে আসছে। অতিথি। আশপাশের বাড়িতে খোঁজ নিয়া দেখলেই হয়। ঝামেলা চুকে যায়। কথাটা বললো জটলার সবচেয়ে যে নবীন সে। যুক্তিসঙ্গত কথা। কিন্তু নবীনের মুখে যুক্তির কথা প্রবীণের পছন্দ হবার কথা নয়। জটলার যিনি প্রবীণ তিনি বেশ রেগে গেলেন। বললেন, আশপাশের মানুষ তো আমরাই বাপু। কই আমাদের কারও বাড়িতে অতিথি আসছে বলে তো আমার জানা নাই। নবীন চুপসে গেলো। যদিও আশপাশের সকল মানুষ জটলাতে উপস্থিত নেই। এটা সবাই জানে। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করলো না। এমন সময় একজন ন্যাড়া মানুষ বোমা ফাটালো। বললো, আমি মেয়েটারে দেখছি। সবার উৎসুক দৃষ্টি ন্যাড়ার উপর গিয়ে পড়লো। ন্যাড়া বললো, মেয়েটা নাসুদার বাড়িতে ঢুকছে। ন্যাড়ার কথায় সবার মুখের মধ্যেই একটা পরিবর্তন দেখা গেলো। তাদের সবার মনেই এমন একটা শঙ্কা কাজ করছিলো। সেই শঙ্কাটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্যই তাদের এই প্রাণান্ত প্রয়াস। ছুটোছুটি। হুটোপুটি। কিন্তু শঙ্কা যখন সত্য হয়ে গেলো তখন সেই সত্যকে স্বীকার করতে সবাই অস্বীকৃতি জানালো। কারণ তারা চাচ্ছিলো না যে তাদের ভেতরের অশুভ শঙ্কাটা প্রাণ পাক। কাজেই নিজেদের বিস্ময় বিমূঢ় ভাবটাকে যথাসম্ভব আড়াল করে উল্টো ন্যাড়া যে ভুল দেখেছে সেটা প্রমাণ করার জন্য সবাই একজোটে তার বিপরীতে দাঁড়ালো কোমর বেঁধে। জটলার যে প্রবীণ মহোদয় কিছু সময় আগে নবীন ছেলেটাকে থামিয়ে দিয়েছিলেন দম্ভে তাঁর কণ্ঠের সুরও বদলে গেলো হঠাৎ। অদৃশ্য জলকন্যা মেয়েটি যে একজন অতিথি এ ব্যাপারে তিনিই এখন সবচেয়ে বেশি নিশ্চিত এবং তাঁর এই নিশ্চিত ভাবনাকে সবার মনে সুদৃঢ়রূপে প্রোথিত করার অভিপ্রায়ে তিনি ন্যাড়াকে একটা ধমক দিলেন সজোরে। বললেন, গাধা চোখে চশমা লাগাইছস। নাসুর বাড়িতে ঢুকবে কিভাবে? কাকেরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে বাড়িতে? ঢুকলে চোখ তুলে নেবে না? প্রবীণের কথার সুরে সুর মিলিয়ে জটলার অন্যান্যরা ‘ঠিক ঠিক’ রবে দ্বিপ্রহরের উষ্ণ বাতাস কাঁপিয়ে তুললো। শুধু প্রবীণের কথায় একাত্মতা ঘোষণা করেই তারা ক্ষান্ত হলো না, একইসাথে ন্যাড়া যে দিবা-দৃষ্টি-বিভ্রাট নামক অদ্ভুত ব্যাধিতে ভুগছে সেটাও তারা আবিস্কার করে ফেললো তৎক্ষণাৎ। জটলার দু’ একজন বিজ্ঞ মানুষ তাকে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ জাতীয় খাদ্য গ্রহন করার সুপরামর্শ দিতেও কার্পণ্য করলো না। বেচারা ন্যাড়া। দ্বিপ্রহরের সূর্যটা এমনিতেই তার ওপর একটু বেশি শত্রুভাবাপন্ন। লেলিহান লাভা ঢালছে। এদিকে জটলার মানুষগুলাও অন্যায় অপমান করছে। সে ভেতর বাহিরে দগ্ধ হতে লাগলো। দগ্ধ হলেও কাউকে জব্দ করার জন্য কোন জ্বালাময়ী বাক্যের বাণ সে ছাড়লো না। ন্যাড়ার এই সহিষ্ণুতা দেখে দ্বিপ্রহরের সূর্য হেসে উঠলো আনন্দে। তার হাসিতে তাপের প্রখরতাও বেড়ে গেলো বহুলাংশে।



ন্যাড়ার কথা সবাই উড়িয়ে দিলেও নবীন ছেলেটি ঠিকই বিশ্বাস করলো। যারা অবিশ্বাস করলো তারাও কেউ শঙ্কামুক্ত হতে পারলো না, বরং ন্যাড়ার নীরবতা তাদের শঙ্কার শেকড় আরও মজবুত করে তুললো। ফলে তাদের শঙ্কিত মনে জলকন্যা মেয়েটি নানা রূপে আবির্ভূত হতে লাগলো। কারো কাছে মনে হলো মেয়েটি অশরীরী কোন আত্মা। কারো মনে হলো পেত্নি। কারো মনে বা সে পরি রূপে আসন নিলো। কেউ কেউ তাকে মনে করলো কাকমানবী। ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কতো কি। নিশিন্দপুর জটলা যখন এই জলকন্যা-জট খুলতে হিমশিম খাচ্ছিলো ঠিক তখন একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে গেলো হঠাৎ। নাসু নীড়ের মাথা ছেড়ে সবগুলো কাক কাঁঠাল গাছের দিকে ছুটতে শুরু করলো। মুহূর্তেই কাঁঠাল গাছ কালো ডানার চাদরে ছেয়ে গেলো। কাঁঠাল গাছে অবশ্য কাকেরা বসলো না সবাই। তাদের একটা বড় দল বৃদ্ধের মাথার ওপর উড়তে লাগলো সশব্দে। যারা কাঁঠাল গাছে আসন নিলো তারাও কেউ থেমে থাকলো না। কা কা করতে লাগলো অবিরাম। বৃদ্ধকে যেনো কিছু একটা বলতে চায় সবাই। কাকেদের কোলাহলে বৃদ্ধ বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ালো। বৃদ্ধ উঠে দাঁড়াতেই উড়ন্তকাক, কাঁঠালকাক সবাই একজোট হয়ে নাসু নীড়ের উত্তরে সুপারি বাগানের পথ ধরলো। কাকেদের অনুসরণ করে বৃদ্ধও পেছন পেছন ছুটতে লাগলো।



নিশিন্দপুর জটলা একটা সুযোগ পেয়ে গেলো। অনুপম সুযোগ। নাসু নীড় এখন কাকমুক্ত। এমন মুহূর্তে তাদের দ্রুত নাসু নীড়ে ছুটে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু জটলার কাউকেই নাসু নীড়ে ছুটতে দেখা গেলো না। ক্ষণিক সময়ের জন্য হলেও তারা একটু দোটানার মধ্যে পড়ে গেলো। নাসু নীড়ে ঢুকবে না-কি কাকেদের কর্মকাণ্ডের সাক্ষী হবে। দু’ দিকেই রহস্যঘন চাঞ্চল্য। শেষমেশ একদল কাকের পেছন ধরলো। একদল নাসু নীড়ে ঢুকলো। নাসু নীড়ে যে দল ঢুকলো তাদের মধ্যে ন্যাড়া, প্রবীণ এবং নবীন তিনজনকেই দেখা গেলো।



বাড়িতে ঢুকে নিশিন্দপুরিরা দেখলো নাসুর ঘরের ভেতরের দিকের দরজা জানালা সব খোলা। জলকন্যা মেয়েটিকেও দেখতে পেলো না কোথাও। মেয়েটি কি তাহলে ঘরের ভেতর আছে? হুড়মুড় করে তারা সবাই ঘরের ভেতর ঢুকে পড়লো। না ঘরে জলকন্যা মেয়েটি নেই। শুধু মেয়েটি না ঘরে নাসুও নেই। অদ্ভুত কাণ্ড। মেয়েটি না হয় বাড়িতে ঢুকে নি। ন্যাড়া ভুল দেখেছে। কিন্তু নাসু গেলো কই? তাহলে কি নাসু কাকেদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোন এক আঁধার ফাঁকে পালিয়ে গেছে? নাসুর অমঙ্গলকাঙ্ক্ষীরা এমন দৃশ্য দেখে যেনো বেশ হতাশই হলো। তাদের এই হতাশ ক্ষোভটা পড়লো ন্যাড়ার ওপর। জলকন্যা প্রসঙ্গ টেনে ন্যাড়াকে ঝাঁঝালো কিছু কথা শুনিয়ে দিলো আবার। প্রবীণ লোকটা অবশ্য এবার ন্যাড়াকে কিছু বললেন না। তিনি দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে সুপারি বাগানের দিকে হাঁটতে লাগলেন হনহনিয়ে। অন্যরাও একে একে প্রবীণের পথ ধরলো। শুধু ন্যাড়া গেলো না। সে যেনো এটা বিশ্বাস করতে পারছে না। সে তো স্পষ্ট দেখেছে মেয়েটিকে। মেয়েটি নিশ্চয় কোথাও লুকিয়ে আছে। কিন্তু লুকিয়ে থাকবে কোথায়? তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখা হয়েছে চিপা চাপা সব। তাহলে কি সে সত্যি ভুল দেখেছে?



ন্যাড়া নিজেও তার দৃষ্টির স্বচ্ছতার ব্যাপারে একটু দ্বিধায় পড়ে গেলো এবার। কাকেরা এদিকে সুপারিবাগানে চলে এসেছে। প্রবীণ মহোদয় এখনও পৌঁছতে পারেন নি সেখানে। বাগান সুপারির হলেও এর চারিদকের সীমানায় কামরাঙ্গা, কাঁঠাল, তাল ইত্যাদি নানা হৃষ্টপুষ্ট গাছ দাঁড়িয়ে আছে। বাগানের শেষের দিকের অংশটা বেশ জঙ্গলাবৃত। দিনের প্রহরেও কেমন ঘুটঘুটে অন্ধকার লেপটে আছে। মানুষজন মনে হয় এই দিকটায় খুব একটা আসে না। বিশালদেহী একটা জাম্বুরা গাছও দেখা যাচ্ছে। বন্ধ্যা গাছ। কাকেরা এসে এই বন্ধ্যা জাম্বুরা গাছের শাখাতেই আসন গেড়েছে। বেশ শান্ত সবাই। কোলাহল করছে না। কেউ শাখায় বসে ডানা ঝাঁপটাচ্ছে। কেউবা কালো ঠোঁট ডানে বামে খানিকটা নাড়াচ্ছে প্রথমে, এরপর উৎকর্ণ হয়ে কিছু একটা বুঝার চেষ্টা করছে স্থির। কেউ পাশের জনকে একটু ঠোকর মারছে। সোহাগমিশ্রিত ঠোকর। প্রেমিক প্রেমিকা হবে হয়তো। কেউবা আবার বিষ্ঠা বিসর্জন করছে। বিচিত্র কর্মকাণ্ড তাদের।



বৃদ্ধ মনে হয় কাকেদের সাথে তাল মিলিয়ে ছুটতে পারেন নি। একটু পিছিয়ে পড়েছেন। তিনি জাম্বুরা গাছের কাছে আসতেই সবাই আপন আপন কাজ ফেলে কা কা রবে জঙ্গলের ভেতর একটা প্রাচীন কূপের মাথায় গিয়ে বসলো। তাদের এই অকস্মাৎ বিকট কর্কশ চিৎকারে সুনসান সুপারিবাগান সচকিত হয়ে উঠলো। বন্ধ্যা জাম্বুরা গাছটিও যেনো কেঁপে উঠলো আতঙ্কে।



নাসু নীড়ে না ঢুকে যে দলটি কাকেদের পিছু নিয়েছিলো তারাও ইতোমধ্যে চলে এসেছে বাগানে। কাকেদের ইঙ্গিত বুঝতে কারও অসুবিধা হলো না এবার। সবাই কূপের কাছে এলো দ্রুত। কূপ গাঢ় অন্ধকারময়। দৃষ্টি শেষ সীমা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। কূপের মুখ কাঁটাযুক্ত গাছের ডালপালায় সেলাই করা। ডালপালাগুলো এখনও বেশ সজীব। সেলাই যে বেশি দিন আগের নয় এটা বুঝা যাচ্ছে সহজে। রহস্যের একটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো সবার ভেতর। প্রকট উত্তেজনা। সেই উত্তেজনায় উজ্জীবিত হয়ে নিশিন্দপুরিরা অন্ধকার কূপের সব বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে কূপের শেষ সীমায় পৌঁছার উপায় করে ফেললো দ্রুতই। কাঁটাযুক্ত ডালপালা সরানো হলো। লম্বা দাঁতযুক্ত বাঁশ এলো। বাঁশের দাঁত ভেঙে কূপে নামলো দু’ জন। প্রায় পঁচিশ মিনিট পর তারা যখন কূপের বিবর থেকে ফিরে এলো তখন তাদের সাথে একটা নিথর শরীরও দেখা গেলো। নিথর মৃত শরীরটা একটা মেয়ের। নিশিন্দপুরিরা স্তব্ধ হয়ে গেলো যখন তারা আবিস্কার করলো মৃত মেয়েটি হচ্ছে সেই জলকন্যা মেয়েটি যে কিছু সময় পূর্বে বৃদ্ধকে জলপান করিয়েছিলো।



প্রবীণ মহোদয়ও ইতোমধ্যে হাঁপাতে হাঁপাতে কূপের কাছে এসে হাজির হলেন। কূপে ভিড় লেগে গেছে। গোলাকার ভিড়। ভিড় ঠেলে তিনি সামনে গেলেন। মৃত মেয়েটিকে চিনতে তিনিও ভুল করলেন না তিলমাত্র। মেয়েটাকে তিনি এভাবে মৃত অবস্থায় প্রত্যাশা করেন নি। অপ্রত্যাশিত দৃশ্য। প্রবীণ মহোদয় ভাবনায় পড়ে গেলেন। দুর্ভাবনা। এতো কম সময়ের মধ্যে এটা কিভাবে সম্ভব? এইতো কিছু সময় পূর্বে তিনি মেয়েটিকে দেখলেন জল হাতে। তাহলে এই দুর্ঘটনা ঘটলো কখন? আর এতো কম সময়ের মধ্যে কূপের মুখই বা ডালপালায় সেলাই দিলো কে? প্রবীণ মহোদয় বেশ বিভ্রান্ত। বিভ্রান্তিকর এই প্রশ্নটা শুধু প্রবীণ মহোদয় না, প্রত্যেক নিশিন্দপুরির ভেতরই কাজ করতে লাগলো। জলকন্যা মেয়েটির মৃত শরীর যেনো তাদের সেই দুর্ভাবনাকেই উস্কানি দিতে লাগলো। লাশ যে কিছু সময় পূর্বের নয় এটা খুব সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। উৎকট একটা গন্ধ বের হচ্ছে লাশ থেকে।



নিশিন্দপুরিরা জলকন্যা মেয়েটিকে শেষমেশ পেয়ে গেলো ঠিকই কিন্তু রহস্যের ফাঁদ থেকে মুক্ত হতে পারলো না। রহস্য রহস্যই থেকে গেলো। শাখা প্রশাখার সংযোগে রহস্য বরং আরো একটু হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠলো। নিশিন্দপুরিরা এই হৃষ্টপুষ্ট রহস্যের কোন কূল কিনারা খুঁজে পেলো না কেউ। শেষমেশ তারা সবাই বৃদ্ধের শরণাপন্ন হলো। মৃত জলকন্যা মেয়েটির সাথে বৃদ্ধের গুঢ় সম্পর্ক ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত হয়ে গেছে। মেয়েটি এই অতিথি বৃদ্ধের কন্যা। সুকন্যা। অদ্ভুত ব্যাপার এই যে জলকন্যা মেয়েটির লাশ আবিষ্কৃত হওয়ার পরও বৃদ্ধের চেহারায় কোন ভাবান্তর দেখা যাচ্ছে না। তিনি ঠিক পূর্বের মতোই নির্বাক, নির্লিপ্ত।



প্রবীণ মহোদয়ই বৃদ্ধের সাথে কথা শুরু করলেন। বৃদ্ধের পীঠে সান্ত্বনার হাত রেখে বললেন, আহা! লক্ষ্মীর প্রতিমা। চোখের পলকে হারায় গেলো। এইতো ক্ষণিক পূর্বে দেখলাম আপনারে জল পান করালো দেবীর মতো। অথচ দেখেন এখন তার ভস্ম আপনাকে জলে ভাসাতে হবে। হায়! নিয়তি। প্রবীণের কথায় বৃদ্ধের বুকের পাথরটা মনে হয় একটু সরে গেলো। তিনি সজল নেত্রে প্রবীণের মুখের দিকে তাকালেন। বললেন, আপনি কি বলছেন? রোহিণী আমাকে কখন জল পান করালো। সেতো প্রায় পনের দিন থেকে নিখোঁজ।



বৃদ্ধের কথায় নিশিন্দপুরিরা থ বনে গেলো। অদ্ভুত কাণ্ড। তাদের গ্রামে হঠাৎ এমন অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা ঘটছে কেনো? তারা প্রায় সবাই রোহিণীকে জল পরিবেশন করতে দেখছে। অথচ বৃদ্ধ বলছেন উল্টো কথা। বৃদ্ধের কথার প্রতিবাদও করা যাচ্ছে না। কারণ রোহিণীর মৃত শরীর বৃদ্ধের কথাকেই সমর্থন করছে। তাহলে তারা এতোগুলো মানুষ একসাথে ভুল দেখলো? যদি রোহিণী বৃদ্ধকে জল পান করিয়ে না থাকে তাহলে তাঁকে কে জল পান করালো? প্রবীণ মহোদয় বৃদ্ধকে প্রশ্ন করলেন আবার, আপনাকে যে মেয়েটি তখন জল পান করালো সে কে ছিলো? বৃদ্ধ উত্তরে বললেন, তাকে তো আপনাদেরই ভালো চেনার কথা। আপনাদের মেয়ে। প্রবীণ বৃদ্ধের উত্তরে মনের ভেতর একটু বল পেলেন। বৃদ্ধ যদি বলতেন যে তিনি জলই পান করেন নি তাহলে ব্যাপারটা আরও ভয়ানক হয়ে যেতো।



রোহিণীর লাশ সুপারিবাগান থেকে বের করা হলো। ভ্যানগাড়ি এলো। ভ্যানগাড়িতে রোহিণীকে নিয়ে বৃদ্ধ নিজ গ্রামের পথ ধরলেন। বৃদ্ধের সঙ্গী হলো দু’ জন। সন্ধ্যার সময় সেই দু’ জন যখন নিশিন্দপুরে ফিরে এলো তখন তারা পোটলায় করে কিছু রোমাঞ্চকর সংবাদও নিয়ে এলো। দু’ জনের সংবাদ যদিও পুরোপুরি মিললো না। তবে দু’ জনের সংবাদের সারমর্ম একই-- রোহিণী মেয়েটাকে হত্যা করা হয়েছে এবং তাকে হত্যা করেছে তাদের নাসুই। আজ থেকে বিশ দিন পূর্বে রোহিণী নিশিন্দপুরের ওপর দিয়ে শমশেরপুর গ্রামে যাচ্ছিলো। শমশেরপুর নিশিন্দপুরের ঠিক পরের গ্রাম। রোহিণীর মাসীর বাড়ি। রোহিণী যখন নিশিন্দপুরে পা রাখলো প্রকৃতিতে তখন সন্ধ্যা নেমেছে। সন্ধ্যার আবরণ ভেদ করে রোহিণী হাঁটতে লাগলো নির্ভয়ে। নিশিন্দপুরে এমন সন্ধ্যা এর আগেও সে পেয়েছে কতো। নাসুর সুপারিবাগানের কাছাকাছি আসতেই সন্ধ্যাটা যেনো আরও গাঢ় অন্ধকারময় হয়ে এলো। চারিদিক সুনসান। মানুষের কোন সাড়াশব্দ নেই। হঠাৎ একটা হাত পেছন থেকে রোহিণীর মুখ চেপে ধরলো। এরপর ওকে টেনে নিয়ে গেলো সুপারিবাগানের ভেতরে। বাগানের শেষ সীমানার জঙ্গলঘন জায়গাটায়। মুখ বেঁধে ফেললো। হাতও বেঁধে ফেললো। এরপর ওর শরীরের ওপর চালাতে লাগলো পাশবিক নির্যাতন। রোহিণী চিৎকার চেঁচামেচি কিছুই করতে পারলো না। মুখ বাঁধার মুহূর্তে একটু চেষ্টা করেছিলো। কাজ হয় নি। আশপাশে কোন মানুষজন নেই। শুধু জাম্বুরা গাছের ডালে পাঁচ ছয়টা কাক বসেছিলো।



শ্বাসরুদ্ধকর ঘুটঘুটে অন্ধকার জঙ্গল এবং মুখের শক্ত বাঁধনের কারণে রোহিণীর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো। অল্প সময়ের মধ্যেই সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। মূর্খ নাসু ভাবলো রোহিণী হয়তো মারা গেছে। সে রোহিণীকে বাঁধনমুক্ত না করেই তড়িঘড়ি কূপের মধ্যে ফেলে দিলো। কূপের মুখও সেলাই করে দিলো দ্রুতই। বেচারি রোহিণী। পরবর্তীতে হয়তো তার জ্ঞান ফিরে এসেছে কিন্তু হাত ও মুখের বাঁধনের কারণে কূপ থেকে বের হতে পারে নি। সাহায্যের জন্য চিৎকারও করতে পারে নি।



নিশিন্দপুরিরা রোহিণীর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা শুনে সবাই হায় হায় করতে লাগলো। নাসুকে খুঁজে বের করে কঠিন একটা শাস্তি দেবার জন্যও সবাই বেশ লাফালাফি শুরু করলো। কিন্তু নাসুকে কেউ খুঁজে পেলো না কোথাও। কাকেরাও নিশিন্দপুর ছেড়ে চলে গেলো সেদিনই। রোহিণীর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা তিন চারদিনের মাথাতেই নিশিন্দপুরিদের মাথা থেকে অনেকটা ধূসর হয়ে গেলো। নাসুকে খুঁজাখুঁজি নিয়ে তাদের এখন আর ততো মাথাব্যথা নেই। রোহিণীর লাশ আবিস্কারের পঞ্চম দিন সকালে তাদের এই ধূসর মস্তিস্কে একটা ঝড়ো ধাক্কা লাগলো আবার। ধনাত্মক ধাক্কা। সুপারিবাগানের সেই কূপ থেকে এবার নাসুর ক্ষতবিক্ষত লাশ আবিষ্কৃত হলো। বীভৎস লাশ। কোটরে চোখ নেই। শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাংস তুলে নেয়া হয়েছে। আপাদমস্তক ঠোকর চিহ্ন।



নাসুর এই বীভৎস মৃত্যুতে নিশিন্দপুরিদের কাউকেই কষ্ট পেতে দেখা গেলো না, বরং তারা সবাই তৃপ্ত। তৃপ্ত কারণ রোহিণীর মৃত্যুতে তারা মনে মনে সবাই নাসুকে এমন কঠোর শাস্তি দিতে চাচ্ছিলো। সমুচিত শাস্তি। নাসুর লাশ যখন কূপ থেকে উত্তোলন করা হলো তখন সেই ন্যাড়া মানুষটি কোথা থেকে যেনো হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটে এলো কূপের কাছে। তাকে কোন প্রশ্ন করতে হলো না। এসেই উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে হাত ঝাঁকিয়ে বললো, ভোর বেলা বিশাল এক ঝাক কাক দেখলাম। মনে হয় সেই আগের কাকগুলাই। পুরা আকাশ কালা কইরা এইদিকেই আইছিলো। আমি ভয়ে বাড়ি থাইকা বের হই নাই। ন্যাড়ার কথার উত্তরে কেউ কিছু বললো না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগলো। তাদের মুখ চাওয়াচাওয়ি দেখে ন্যাড়া বেশ দ্বিধায় পড়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো না তার কথাটা সবাই ঠিক কিভাবে গ্রহণ করলো।





















মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩

শায়মা বলেছেন: কি সাংঘাতিক!:(


কিন্তু রোহিনী যখন মারা যাচ্ছিলো সেই খবর বা বর্ণনা কে দিলো বা জানলো যে রোহিনীর লাশ পাবার পর নাসুর গ্রামবাসীরা রোহিনীদের গ্রাম থেকে এত সুক্ষ সংবাদ নিয়ে আসলো?

বুঝতে পারলাম না ভাইয়া। :(

তবে অনেক অনেক ভালো লেগেছে গল্পটা।:)

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৩২

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো প্রশ্ন করেছেন। এমন হতে পারে বৃদ্ধের গ্রামে এমন একটা কথা রটে গেছে। কিংবা স্বয়ং বৃদ্ধই তাঁদের এমনটা জানাতে পারে। বৃদ্ধ দৈবক্রমে তাঁর মেয়ে রোহিণীর মৃত্যুর রহস্যটা জানতে পারে নইলে তিনি নিশিন্দপুর গ্রামে এসে এভাবে হাজির হবেন কেন :)

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

এনামুল রেজা বলেছেন: বেশ জমজমাট গল্প।

বলার ধরণের সহজবোধ্যতায় প্লাস।

শুভকামনা।

০৩ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৪২

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ অশেষ।
ভালো থাকবেন।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮

এম এম করিম বলেছেন: বেশ ভালো লাগলো গল্পটা।

+++

০৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:১৯

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো বেশ।

০৩ রা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:১৫

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.