নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনি এখন এমন একজন \"সাহসী\" মানুষের প্রোফাইলে ঢুকেছেন,যে কিনা ভাগ্যের কাছে সব সময়ই পরাজিত।

টি-ভাইরাস

জীবনে সফল হতে না পারি দুঃখ নেই...একজন ভাল মানুষ হিসেবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে চাই...

টি-ভাইরাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র হাতে কিশোরী ফেলানী হত্যার সাতবছর

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯



৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র হাতে বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী হত্যার সাতবছর। ২০১১ সালের এই দিন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র সদস্যরা বাংলাদেশ ভারত-সীমান্তে কিশোরী ফেলানী খাতুনকে গুলি করে হত্যা করে এবং তার লাশ সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলতে থাকে। কিন্তু আজও ফেলানী হত্যার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ এবং নির্দেশদাতা তার উদ্ধতন কর্মকর্তার কোনো শাস্তি হয়নি। ফেলানী হত্যার প্রহসনমূলক বিচার বিএসএফ’র নিজম্ব আদালত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে (জিএসএফসি) অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ হিসেবে তাদের পূর্বের রায় বহাল রাখা হয়। ফেলানী হত্যা ছিল বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের ওপর ভারত সরকারের আগ্রাসী ভূমিকার একটি নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। শিশু থেকে শুরু করে যে কোন বয়সের বাংলাদেশী নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা-নির্যাতন বিএসএফএর কাছে নতুন নয়। ২০১০ সালে বিএসএফের নির্যাতনে হাসনাত হালশাম ইনু (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্র এবং ২০১৫ সালে গুলিতে হাসানুজ্জামান (১৬) নামে আরেকজন স্কুল ছাত্র নিহত হয়। ২০১৭ সালেও বিএসএফ সদস্যরা সোহেল রানা ও হারূন অর রশীদ নামে দুইজন স্কুল ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করে। আমারা ফেলানীসহ বিএসএফ এর হাতে নিহত বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা-নির্যাতনসহ সমস্ত মানবাধিকার লংঘনমূলক ঘটনাগুলোর এবং ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছে।

প্রতি বছরই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বহু সংখ্যক বাংলাদেশী নাগরিক বিএসএফ’র গুলিতে অথবা নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করছে এবং আহত হচ্ছে। অনেক সময় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করে বিএসএফ’র সদস্যরা অবাধে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে লুটপাট করছে এবং বাংলাদেশী নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

বেসরকারি সংস্থা অধিকার এর তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফ ৪০৩ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করে। এদের মধ্যে ২৬৯ জনকে গুলিতে, ১০৯ জনকে নির্যাতন করে এবং ২৫ জন বাংলাদেশী নাগরিককে বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ৫৯৩ জন বাংলাদেশী বিএসএফ সদস্যদের হাতে আহত হয়েছেন। উক্ত আহতদের মধ্যে ৩৩৭ জন বিএসএফ’র গুলিতে, ২১৯ জন নির্যাতনে এবং ৩৭ জন অন্যান্যভাবে আহত হয়েছেন। এই সময়ে বিএসএফ ৪৬৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী নিজের সীমানা, ভূখন্ডের অখন্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপযোগী হওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বাংলাদেশের সরকার দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দলীয় স্বার্থ রক্ষার্থে ভারত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নতজান পরাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে। এই সুযোগে ভারত সরকার তার বিভিন্ন অন্যায় কর্মকাণ্ড - বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তার স্বার্থ হাসিল করে নিচ্ছে।

২০১০ সালে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তার বিষয়বস্তু গোপন করে জাতীয় সংসদে কোন আলোচনা ছাড়াই সেটি সম্পাদিত হয়েছিল। এই চুক্তির পর থেকেই বাংলাদেশের ওপর ভারতের আগ্রাসী নীতি অতীতের তুলনায় জোরালো হতে থাকে। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৫ জানয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত ও প্রহসনমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার মধ্যে দিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের চেয়ে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া সরকার ভারতের স্বার্থের অনকূলে যাবে বলে এই বিতর্কিত নির্বাচনে ভারতের সমর্থন দেয়া অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। এই প্রহসনমূলক নির্বাচন বাংলাদেশে ব্যাপক রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে এবং সেই সুযোগে ভারত সরকার বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে। ভারত সরকার প্রায় বিনা খরচে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা আদায় করে নিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে বাংলাদেশের দেড়'শ গজের ভেতরে বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত বাংলাদেশ থেকে সমস্ত বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে, ফলে কোনো প্রকার দরপত্র ছাড়াই ভারতীয় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের ভেতরে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে এবং বাংলাদেশের জনগনের প্রতিবাদ সত্ত্বেও ভারতীয় কোম্পানি সুন্দরবন এবং এর চারপাশের প্রাণ বৈচিত্র্যকে ধ্বংসকারী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে ।

আপনি কি জানেন রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে আমাদের কি লাভ ক্ষতি?

অপরদিকে ভারত সরকার বাংলাদেশকে শুষ্ক মৌসুমে পানির ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে এবং গজলডোবা বাঁধের মাধ্যমে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে তিস্তা পারের হাজার হাজার বাংলাদেশী নাগরিককে বিপদের মধ্যে ফেলেছে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মা অববাহিকাতেও নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা ও গজলডোবা বাঁধের স্লুইস গেইটগুলো খুলে দিয়ে ভারত সরকার কৃত্রিমভাবে বাংলাদেশে বন্যার সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে চলেছে এবং আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশকে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ।

তিস্তায়-পানি-নেই

এছাড়া ভারতের আসামে অবৈধ অভিবাসিদের চিহ্নিত করার নামে বাংলাভাষাভাষী ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের উচ্ছেদ করার কর্মসূচি নিয়েছে আসাম রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য ২০১৬ সালে আসাম প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজেপি সরকার গঠন করে। এই নতুন রাজ্য সরকার বাংলাভাষাভাষী মুসলিম ভারতীয় নাগরিক, যাঁদের পূর্বপুরুষ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগেই আসামে গিয়েছিলেন; তাঁদের এত বছর পর বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার লক্ষ্যে চেষ্টা চালাচ্ছে ।

ছবিঃ priyo.com

আমারা মনে করি, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র কখনোই এর ভূমি ও নাগরিকদের ওপর অপর রাষ্ট্র কর্তৃক আগ্রাসন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন মেনে নিতে পারে না। এই রাজনৈতিক ও অথনৈতিক আগ্রাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সোচ্চার হতে হবে- কারন এই ধরনের আগ্রাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বাংলাদেশকে অস্থিতিশিল করে তুলতে পারে, যা দক্ষিন এশিয়ার জন্যও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফেলানী দিয়ে শুরু, ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন থেকে তিস্তার পানি সবই এসে গেছে! আগামীতে কি নিয়ে লিখবেন?

ফেলানীর ঘটনা পুরো জাতিক কষ্ট দিয়েছে, সেটাকে সঠিকভাবে তুলে ধরুণ; একের ভিতরে ১০ লেখার চেষ্টা করলে মুল বিষয় হারিয়ে যায়

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

টি-ভাইরাস বলেছেন: একটা শিরোনাম দিয়ে সব কিছু শেষ করে দিলাম। আপনাদের মত ভাই পারি না তাই আর কি।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৬

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: একজন নৌবাহী সৈনিক আমাকে একান্তে বলেন, আওয়ামী সরকারের সময়ে ভারত যতটুকু পরিমাণে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বাঙালিদের ভেঙে খেতে থাকে, তা আর কোন রাজনৈতিক দলের সময়ে করতে পারে না।

সবশেষে, ফেলানির আত্মার শান্তি কামনা করি। নিরবে নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকি।

৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

তারেক ফাহিম বলেছেন: ফেলনী খাতুুনের অাত্মার মাগফিরতা কামনা করছি।

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৫

হাসান৬৭৬ বলেছেন: ভাল বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.