নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বিনির্মাণে যাঁরা দিয়েছেন নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ, আমরা তো কেবল তাদের পথের যাত্রী।

সৈয়দ তাজুল ইসলাম

সমাজের সন্তান

সৈয়দ তাজুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্প: অত:পর থ্যাঁতলানো...

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫৫


(ধর্মঘটে গাড়িচালক আন্দোলনকারী ও তাদের সমর্থকদের উৎসর্গে)
--------------
(০১) বসন্তী এক বিকেল। ঘড়ির কাটায় ৩টে হলেই 'জনগণ' নামের পাব্লিক বাসটি এ স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনের দিকে ছুটবে। এখন সময় ২.৩৪ মিনিট। সিটগুলো এখনো পূর্ণ হয়নি, দু'চারজন যাত্রী মাত্র। এই দু'চারজনের মধ্যে একজন হলেন সাংবাদিক আরাফাত। যাত্রী স্বল্পতায় আরাফাত আজ প্রথমসারির শূন্য এক সিটে বসে পড়লেন। হঠাৎ দু'জন যুবতি বাসে উঠতেই আরাফাত সামনের সিট তাদেরকে দিয়ে পেছনে চলে গেলেন। এই পুণ্যার্জনের সুযোগ উনার সবসময় হয়ে উঠে না; যখন কোন অতি রূপসী রূপের ঘ্রাণ ছড়াতে ছড়াতে বাসে উঠেন তখনই আরাফাত এই পুণ্যার্জনে ধন্য হন।
বাস ছাড়ার ৩মিনিট পূর্বেই সিটগুলো যাত্রীতে পূর্ণ হয়েগেছে। এখন যারা আসবে তাদেরকে দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে যেতে হবে। ঠিক সময়েই বাস ছাড়লো, উপবিষ্ট যাত্রিদের অর্ধেক যাত্রী দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। ভাড়া কিন্তু সকলেরই সমান।
অন্যান্য জায়গার ন্যায় নিশ্চিন্তপুরেও গাড়ী থামলো, কিছু যাত্রী নামলেন আর কিছু উঠলেন। নবাগত যাত্রীদের মধ্যে একজন অতিকায় বৃদ্ধ রয়েছেন। চেহারা-সুরত খুব একটা ভাল না। পোশাকেও ধনীব্যক্তির পরিচয় মিলল না। মুখভর্তি ধবধবে সাদা এক ইঞ্চি পরিমাণ লম্বা দাড়ি। এক হাতে লাঠি অন্য হাতে বাজারের ব্যাগ। সিট না থাকায় উনাকেও এখন বাকি পথ দাঁড়িয়ে যেতে হবে। যদি কোন সুপুরুষ উনাকে একটু বসতে দিতেন, তবে হয়ত বাকি পথ একটু আরামে যেতে পারতেন।

(০০) বসন্তীরঙে ফুটে উঠা গ্রামের সবুজ প্রকৃতি আরাফাতকে কিছুটা বিমোহিত করছিল হয়ত। তাই মাঝেমধ্যে আরাফাতকে গ্রামের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে দেখা যাচ্ছে । আকস্মিক আরাফাত অনুভব করলেন, বন্দুকের নল দিয়ে কে যেন তার মাথায় হালকা নক করলো। মাথা উঁচু করে বুঝতে পারলেন দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধ লোকটির লাঠির হাতল এসে তার মাথায় লেগেছে। হাতল লেগে যাওয়ায় বৃদ্ধ লোকটি বারবার তার মাথায় হাত বুলিয়ে অপরাধ-ভরা চাহনিমিশ্রিত থ্যাঁতলানো সুরে বলছেন,
: স্যারি বাবা, দেখিনি! ঝাঁকুনিতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় তোমাকে কষ্ট দিয়ে দিলাম। দুঃখিত বাবা আমার। আমি দেখিনি।
আরাফাত কিছুটা বিরক্তিপ্রকাশ করে আবারো মোবাইলে মনযোগ দিল।
গাড়িটি হাইওয়েতে উঠতেই ড্রাইভার দিল গতি বাড়িয়ে। আকস্মিকভাবে একটি ট্রাকে মুখোমুখি হয়ে আরাফাত সহ প্রায় সবাই এখন হসপিটেলে। ড্রাইভারসহ ছ'জন মর্গে আছে; আত্মাহীন অবস্থায়। এই ছ'জনের মধ্যে এক ইঞ্চি লম্বা ধবধবে সাদা দাড়িওয়ালা অতিকায় বৃদ্ধ চাচাও রয়েছেন। আরাফাতসহ জীবিতরা আফসোস করছে উনার জন্য। সেই যুবতিদ্বয়ের জন্যও তারা আফসোস করছে, যাদের দেহ কিছুক্ষণ পর মর্গে ডুকবে।


বিঃদ্রঃ ইহা সম্পূর্ণই আমার নিজের লেখা। কেউ কপি পেস্ট করে নিজের নামে চালিয়ে দিলে তার ইহকাল ও পরকালের ক্ষতি কামনা করি।

ছবি: গুগল

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় তাজুল ভাই ,

গল্প ভালো হয়েছে । পোস্টে প্লাস ।

শুভ কামনা আপনাকে ।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২১

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: গাড়িচালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে কিন্তু এ ঘটনায় আবার কতেক শিক্ষানীয় দিক আছে।

মাস্টারদা ওরফে চৌধুরী সাহেব ;) , আপনাকে ভাই অনেক অনেক ধন্যবাদ; এতো সুন্দরভাবে প্রথম মন্তব্য করার জন্য।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: আজকের এই অনিরাপদ সরক আসলেই খুব বিপদের কারন।কত আন্দোলন করলো ছাত্ররা। কই এখনো কোন কাজ হয়নি
।ট্রাক ড্রাইবার মন্ত্রী হলে যা হয় আরকি।

ভালো লিখেছেন।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০১

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: সেটাই ভাই, সেটাই।



ট্রাক ড্রাইবার মন্ত্রী হলে যা হয় আরকি।


কথাটা অনেক কঠিন সত্য হওয়ার মত হয়ে গেছে!

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৩

নীল আকাশ বলেছেন: বাস্তব গল্প। ভালো লিখেছেন। দেশে এখন সকালে বের হলে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতে পারবেন কিনা কোন নিশ্চয়তা নেই।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০২

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: আসলে ভাই, আমি কোন লেখক না, এই যা সময় সুযোগে একটু লেখার চেষ্টা করি আরকি!

আসলেই দেশে এখন সকালে বের হলে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতে পারবেন কিনা কোন নিশ্চয়তা নেই। 

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪১

আহমেদ জী এস বলেছেন: সৈয়দ তাজুল ইসলাম ,




চলনসই । তবে উৎসর্গকারীদের জন্য ভাঙাচোরা পাবলিক বাসটির আরও একটু স্পীড থাকা দরকার ছিলো । ছিলো তাদের মতো খিস্তি-খেউড় টাইপের লেখা ।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: তৃতীয় প্রতিমন্তব্যটির স্বল্পক এখানেও বলবো,  আসলে ভাই, আমি কোন লেখক না, এই যা সময় সুযোগে একটু লেখার চেষ্টা করি আরকি! 
হ্যা, আরেকটু ভাঙাচোরা ও স্পিড হলে তাদের সাথে খুব ভালভাবেই যেত ;) আর খিস্তি-খেউর তাদের একান্ত অধিকার , তারা তো এখন দেশের আরেক অপশক্তিতে রূপ দেখিয়েছে।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও নির্মল শুভকামনা

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯

হাবিব বলেছেন: প্রিয় তাজুল ইসলাম ভাই। অনেক সুন্দর লিখেছেন। ভালো লেগেছে।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার ;)

মন্তব্যে ভাল লাগলো, শুভকামনা।

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১২

আরোহী আশা বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো। সুন্দর লিখেছেন।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ বোনটি,
ভালো লাগা প্রকাশে শুভকামনা থাকলো

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৮

রাকু হাসান বলেছেন:

বাস্তবতার আলোকে লেখা হওয়ায় পড়তে ভালো লাগছে । তবে থ্যাঁতনালো সুর এটা কেমন ! যদি করুণ পরিণতির কথা বিবেচনা করি ,আহত অবস্থায় থ্যাঁতনালো সুর বলাটা স্বাভাবিক লাগে । বৃদ্ধ যখন গাড়িতে ছিলো তখন থ্যাঁতলানো সুর ! স্বাধীনভাবে মন্তব্য করলাম । কিছু মনে করবেন না আশা করি ।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২২

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: গল্পটা যে আপনি পড়েছেন সেটা নিশ্চিত হয়ে পেরে ভালই লাগলো। আসলে অনেকে গল্প না পড়ে ফালতু প্রশংসা করে চলে। আপনি যে তাদের থেকে আলাদা সেটাই আমার মনে ধরেছে। আর মন্তব্য তো এমনই হবে, সেখানে আপনি যদি স্বাধীনভাবে গঠনমূলক মন্তব্য করতে না পারেন তাহলে তো সেটা মন্তব্যের ঘর না হয়ে প্রশংসার ঘর হওয়া কথা। ভাল লেগেছে আপনার এই মন্তব্য।

হ্যা, কণ্ঠটা বৃদ্ধের ছিল আর বৃদ্ধ ব্যক্তি জীবনের দীর্ঘপথ পারি দিতে গিয়ে অনেক কষ্ট ও ব্যথায় জর্জরিত হয়ে থ্যাতলানো সুরের অধিকারী হয়েছেন কিন্তু এই থ্যাতলানো করুণ সুরটা যে আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না, সেটাই বুঝাতে চেয়েছি।

৮| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

রাজীব নুর বলেছেন: আম্র লেখা কেউ কপি করলে আমি খুশি হই।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: রাজীব ভাই,


এই কথা কেন বলছেন?
উপলক্ষ কী?

৯| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৫

নজসু বলেছেন: বর্তমান সময়ের বাস্তব চিত্র।
খুব দুঃখজনকভাবে আমরা জীবন অতিবাহিত করছি।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় নজসু।

আজ বড় দুর্দিন! কেউ কারো পাশে দাঁড়াবার নাই! সত্যি বড় দুঃখজনকভাবে জীবনা কাটাচ্ছি!

১০| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০০

আরোগ্য বলেছেন: অনুগল্প ভালো লাগলো। সৈয়দ ভাই ফুটনোটে এ কি বললেন?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৪

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:
ভাল লাগলো জেনে খুশি হলুম পুরান ঢাকাইয়্যা (!)
ফুটনোট হে হে হে হে =p~

১১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৫

নজসু বলেছেন: ভাই আজকে (৪ নভেম্বর) ব্লগে আসলেন না। :(

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৯

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:

ব্যস্ততার বস্তাগুলো এখান থেকে ওখানে সরাতে গিয়ে কত দিন যে আপনাদের থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে (!)

আপনানি যে এতো আন্তরিকতার সাথে আমার খভর নিচ্ছেন সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.