নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“নিতান্ত শায়িত আমি / কোথা আছি / কেউ তা জানে না শুধু / মাছেদের / রাষ্ট্রযন্ত্র তটস্থ / সমাজ / তারা জানে আমার / স্ট্যাটাস” -(ব্রাত্য রাইসু)

তাওহিদ হিমু

.

তাওহিদ হিমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবীর সুমনের আগমন ও পুলিশের টালবাহানা

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:১০


কবীর সুমন। নামটাই যেন ছন্দমধুর। যাঁর গান স্রেফ গানের জন্য গান নয়, বরং বাঁচার নিশান হয়ে যুগান্তরের খবরটাকে নিয়ে আসে বয়ে। ১৯৯০'র দশকে তোমাকে চাই-এর ধাক্কায় নাকি প্রেমকাতর মিনমিনে গানের ধারা চুরমাচুর হয়ে বাংলা গানের জগতে বিপ্লব এসেছিল। আমি সংগীত বিশেষজ্ঞ নই, তাই অত কনফিডেন্টলি কিছু বলব না। কিন্তু আমার কাছে জাতিস্বর,
এ তুমি কেমন তুমি,
চেনা দুঃখ চেনা সুখ,
তুমি আসবেই (উত্তর আসবে না),
পেটকাটি চাঁদিয়াল,
খোদার কসম জান,
আমাদের জন্য,
গান তুমি হও,
মন খারাপ করা বিকেল,
দশ ফুট বাই দশ ফুট,
অভিবাদন,
আগুন দেখেছি আমি,
আবছায়াটাই লাগছে ভাল,
বাঁশুরিয়া,
দুন্দুভি,
নদীর গল্প,
নয়নতারা,
পাড়ার ছোট্ট পার্ক,
প্রবাসী বাঙালীর গান,
ভগবান কত ভাল,
রোববার,
শহরে বৃষ্টি
ইত্যাদি প্রত্যেকটাই অসাধারণ গান, একেকটা মাস্টারপিস। টিপিক্যাল নামি গায়কের এমন অসাধারণ গান ৪/৫টার বেশি থাকে না, তাও গীতিকার-সুরকার হয় অন্য কেউ। সেখানে কবীর সুমনের বেলায় তা ৩০/৪০টার মত, বা তারও বেশি। স্বরচিত, স্বসুরারোপিত। তাঁর অন্য গানগুলোও উৎকৃষ্ট মানের। আমাদের অব্যক্ত অনুভূতি, চিন্তাভাবনা, মূল্যবোধ, ছোটবড় পর্যবেক্ষণ, জীবনাচরণের অখ্যাত অপাংক্তেয় বিভিন্ন জিনিস- সবকিছু তিনি ফুটিয়ে তোলেছেন স্বর্গীয় মাধুর্য দিয়ে।

১৩ বছর পর ঢাকায় এলেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ প্রায় সকল কর্তৃপক্ষের যথাবিধি অনুমতি নিয়ে জাতীয় জাদুঘর অডিটোরিয়ামে তার কনসার্ট অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসে। মাত্র ৬/৭ শত মানুষের সমাগম। শেষসময়ে পুলিশ ঝামেলা বাঁধিয়ে দিল- তাদের নাকি অনুমতি নেওয়া হয়নি, সেখানে কনসার্ট করা যাবে না। যেন সেখানে কোনো প্রোগ্রাম হয় না, যেন সরকার অনুমতি দিলেও তাদের অনুমতি ছাড়া দেশে কোনো জনসমাগম হয় না, যেন শীতকালে পাড়ায়-মহল্লায় উচ্চশব্দে মাইক বাজিয়ে শব্দসন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাতব্যাপি ওয়াজ হয় তাদের অনুমতি নিয়ে। উক্ত কনসার্টে দেশের প্রগতিশীল, সংস্কৃতিমনা ও নামিদামি মানুষেরা যাওয়ার কথা। বিশৃঙ্খলার প্রশ্নই আসে না। তবে শেষ পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যমে প্রবল সমালোচনার মুখে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে কনসার্টের অনুমতি দেওয়া হয়। প্রশ্ন হলো: পুলিশ কার নির্দেশে এমনটা করল? মটো-তে 'প্রগতি' উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশ পুলিশ যে বিন্দুমাত্র প্রগতিশীল না, তা পাগলেও জানে। কবীর সুমন নিয়ে নিজ থেকে মাথা ঘামানোর মত মাথা তাদের নাই। তাহলে কোন মাথা থেকে এলো এই ঝামেলার ইঙ্গিত। বর্তমান সরকার আওয়ামীলীগ, যারা নিজেদেরকে প্রগতিশীলতার ধারক বলে দাবি করে। সরকারের বিভিন্ন অঙ্গ তো আপত্তি করেনি, অনুমতি দিয়েছে। হয়ত বিচ্ছিন্ন কোনো অঙ্গ পুলিশকে এই নির্দেশ দিয়েছিল। তারা কারা এবং কেন এমনটা করল? ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে খুশি করার জন্য? নাকি কোনো গোয়েন্দা সংস্থা আশংকা করেছে যে, মুসলিম মৌলবাদী ও হিন্দু মৌলবাদীরা যৌথভাবে প্রোগ্রামে হামলা করবে? যেহেতু কবীর সুমন উভয়ের শত্রু। নাকি পুলিশ নিজে অতি-উৎসাহী হয়ে এই হীন কাজটি করল।

দেশী-বিদেশী হিন্দু মৌলবাদীরা তাকে দেখতে না পারার কারণ হলো তাঁর হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী আরএসএস-বিজেপি'র ঘোর বিরোধিতা। আর মুসলিম মৌলবাদীরা তার বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণ হলো শাহবাগ আন্দোলনের পক্ষে, খুন হওয়া ব্লগার রাজিব হায়দারের শোকে এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে গান করা, বলিষ্ঠ বক্তব্য রাখা ইত্যাদি। তাঁর গানেই আছে:
"শুনো মৌলবাদের নাতি, তুমি যে ধর্মেরই হও,
আমি নিরপেক্ষতাবাদী, তুমি আমার বন্ধু নও।"


আর দশজন গায়কের মত সবাইকে খুশি রাখার জন্য উচিতানুচিত সকল বিতর্ক থেকে গা বাঁচিয়ে চলা কবীর সুমনের স্বভাব নয়। তিনি মুখর, প্রতিবাদী, বিপ্লবী ও শক্ত শিরদাঁড়ার মানুষ। তাকে ফোন করে বিরক্ত করায় কদিন আগে ভারতের উগ্র সাম্প্রদায়িক রিপাবলিকান টিভি-কে তিনি ধুয়ে দিলেন অকথ্য ভাষায়; তবে অপ্রকাশ্যে, মুঠোফোনে। [এজন্য বিরোধীরা তার নিন্দা করলেও আমি বাহবা দেব। মার্জিত ও মিনমিনে ভাষায় মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেওয়া বা মন্দকে সহ্য করার চেয়ে অমার্জিত ভাষায় সত্য প্রকাশ করে মন্দকে ধুয়ে দেওয়া শ্রেয়। শিক্ষিত মধ্যবিত্তীয়, সুশীল, রাবীন্দ্রিক, পরিশীলিত ও মার্জিত ভাষায় দিন শেষ হয়েছে আগে।] তিনি মমতার তৃণমূলের হয়ে লোকসভার এমপি ছিলেন; রাজনীতি ও যেকোনো ইস্যুতে সরব থাকেন। তাই ভারতে তার শত্রু থাকা স্বাভাবিক। সমাজে এমন মানুষকে প্রচুর আক্রমন সহ্য করতে হয়, সুমনও করছেন। তাকে কেউ বলে মাওবাদী/নক্সালিস্ট, কেউ বলে মোল্লা, কেই বলে নাস্তিক, কেউ বলে ভণ্ড (যেহেতু তার জটিল চিন্তাভাবনা বুঝতে পারে না); আমি বলি তিনি দেবতুল্য নমস্য লোক, একজন জীবন্ত কিংবদন্তি।

ভারতের ঘরোয়া রাজনীতির ভারতে থাকুক। তাদের কারও পক্ষ নেওয়া বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশীদের জন্য উচিত নয়। আমাদের কাছে কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম সবাই সমান হওয়া উচিত। তাদের কোনো পক্ষের ক্রীড়নক হওয়া আমাদের জন্য লজ্জাজনক। কেউ আমাদেরকে স্বপক্ষে ব্যবহার করতে চাইলে শিরদাঁড়া সোজা রেখে তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। যে-সুমন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য মাগনা গান গেয়ে বিপুল টাকা যুগিয়ে দিয়েছিলেন, সে-সুমনকে জাতীয় জাদুঘর অডিটোরিয়ামে গান গাইতে না দেওয়া বাংলাদেশের জন্য লজ্জার ইতিহাস হয়ে থাকবে।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:৩৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: তাকে কেন অনুমতি দেয়া হয়নি?

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:৩৭

তাওহিদ হিমু বলেছেন: টালবাহানা শেষে অনুমিত দেওয়া হয়েছে। কেন এমন করল, তা তো জানি না। তবে ব্লগ সম্ভাব্য কারণগুলো উল্লেখ করেছি। ধন্যবাদ।

২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার সাথে একমত। কবির সুমনের মতো শিল্পীদের নিয়ে মাথা ঘামানোর মত মাথা তাদের নেই। তারপরেও কেন এমন করলো সেটা ভেবে পাচ্ছি না। যদি নিরাপত্তার স্বার্থে করেও থাকে, শেষ মুহূর্তে এসে কনসার্টে বাঁধা দিয়ে আমরা নিজেরাই ছোট হলাম।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৪৮

তাওহিদ হিমু বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৬

সোনাগাজী বলেছেন:


কনসার্টে ব্যবস্হা কাহারা করেছিলো?

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৪৯

তাওহিদ হিমু বলেছেন: peephole

৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:০৬

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, জাদুঘরের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আমরা এই ধরনের প্রোগ্রামের অনুমতি দিতে পারি না। তবে আয়োজকেরা যদি অন্য কোথাও অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চান, তবে আমরা তা বিবেচনা করব।’

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৫৩

তাওহিদ হিমু বলেছেন: পড়েছিলাম নিউজ। এগুলো তাদের গৎবাঁধা অজুহাত। ওখানে নিয়মিত অন্য অনুষ্ঠান হয়। তখন আপত্তি করে না। এখন আপত্তি থাকলেও আগে বলতে পারত। শেষ মুহূর্তে কেন বলল? আসলে মূল সমস্যা ছিল অন্য কোথাও। কোথায়, তা তারাই ভাল জানে।

৫| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:১১

সোনাগাজী বলেছেন:



মানুষ কেন ধর্ম বদলায়? সব ধর্মই একই লেভেলের বিজ্ঞানীরা বানায়েছে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৫৭

তাওহিদ হিমু বলেছেন: কোনো ধর্ম ধারণ বা গ্রহণ মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। কেউ কোনো ধর্ম গ্রহণ করলে, নিশ্চয় সেটা তার কাছে ভাল লেগেছিল বলে করেছে। এর বেশি মাথা ঘামিয়ে আমাদের কাজ নাই।

৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:১৪

শাহ আজিজ বলেছেন: আমি বেশ অপেক্ষা করছিলাম সুমনের গান লাইভ শুনব কিন্তু বেশ আশ্চর্য কোন মিডিয়াই টু শব্দ করেনি এ নিয়ে । আপনার লেখায় জানতে পারলাম পুলিশ তাকে যাদুঘরে গাইতে দেবে না । খুব অপমানজনক একটি অধ্যায় হয়ে রইল গান না গাইতে দেবার বিষয়টি ।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:০০

তাওহিদ হিমু বলেছেন: আসলেই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি অপমানজনক ও লজ্জাজনক। তবে নিউজ অল্পস্বল্প হয়েছিল। তিনি তো শাকিব খান না যে, তার খবর বেচে মিডিয়া পয়সা পাবে।

৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৮

কামাল৮০ বলেছেন: পুলিশ হবে প্রগতিশীল।হাসবো না কাঁদবো।
সুমন সুমনই,তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নাই।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:০০

তাওহিদ হিমু বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১১

অক্পটে বলেছেন: এর আগেও কবির সুমনের সাথে বাংলাদেশ এমন করেছে। তার একটা ইন্টারভিউতে তিনি নিজেই আক্ষেপ করে বলেছিলেন সে কথা। আমার ভাবতে অবাক লাগে বাংলাদেশে এভাবে পিছনে হাটছে কেন?

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:০৫

তাওহিদ হিমু বলেছেন: দেশের হর্তাকর্তারা খারাপ হলে, সেদেশে সবকিছু খারাপভাবেই চলবে, উলটো পথেই চলবে। কবীর সুমন হয়ত তাঁর ভক্তদের কথা ভেবে ও তাঁদের অনুরোধে এদেশে আবারও এসেছেন। তাঁর জন্য অশেষ ভালবাসা ও শ্রদ্ধা।

৯| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:০৫

সোনাগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন: কোনো ধর্ম ধারণ বা গ্রহণ মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। কেউ কোনো ধর্ম গ্রহণ করলে, নিশ্চয় সেটা তার কাছে ভাল লেগেছিল বলে করেছে। এর বেশি মাথা ঘামিয়ে আমাদের কাজ নাই।

-কোন ব্যাপারেই মাথা ঘামাবেন না, মাথা নষ্ট হয়ে যাবে।

১০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:০০

শেরজা তপন বলেছেন: এর আগেরবার এতটাই নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন যে, তিনি ঘোষনা দিয়েছিলেন আর বাংলাদেশ মুখো হবেন না।
এবার বহু চেষ্টা তদ্বির করে তাকে আনা হলেও ফের সেই চক্র সক্রিয় হোল। এই বয়সে এসে তিনি এক বুক ভরা অভিমান আর কষ্ট নিয়ে ফিরে যাবেন। হয়তো আর কোন্দিন আর এই দেশে তাঁর আসা হবে না।
সত্যিকারে গুণীকে সম্মান দিতে আমরা আর কবে শিখব???????

১৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:৩৭

তাওহিদ হিমু বলেছেন: লজ্জার কথা, দুঃখের কথা, আর কি বলব!

১১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৩৩

বিটপি বলেছেন: কবির সুমন কি মুসলমান হয়ে গিয়েছিল? কেন? সেই কারণ কি এখনো আছে?

অপু বিশ্বাস তো বিশেষ প্রয়োজনে মুসলমান হয়েছিল। প্রয়োজন ফুরিয়েছে, তাই আবার হিন্দু হয়ে গিয়েছে।

১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:৪০

তাওহিদ হিমু বলেছেন: আপনি কি জানেন জানি না। আমি দীর্ঘদিন থেকে তাকে জানি। আমার মতে, যা তিনি নিজেও বলেছেন বারবার, তাঁর ইসলাম গ্রহণের কারণ হলো: (১) আগের ধর্মের জাতপাত প্রথার প্রতি তাঁর ঘৃণা। তিনি বলেছেন, রেসিস্ট 'চক্রবর্তী' পদবী বহন করতে তার গা গুলাত, লজ্জা লাগত ও ঘৃণা হত। (২) ভারতে সংখ্যালঘু-নির্যাতন ও তাদের প্রতি সংখ্যাগুরুদের ঘৃণার প্রতিবাদ। (৩) ইসলামের ভাবাদর্শ তাঁর ভাল লাগা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.