নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার ফেরার প্রতীক্ষায়!

আমি হাজারবার জেনেশুনে হেরে গিয়েছি,কেবল তোমায় একবার জিতে নেব বলে!

ক্লান্ত তীর্থ

অজঃ নিত্য শাশ্বতোহয়ং পুরাণা; ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে!

ক্লান্ত তীর্থ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ত্রিণুগল্প

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৭

রহস্য

কুঁচকে যাওয়া সাদা শার্ট, খাকি প্যান্ট আর নীল কাঁচের সানগ্লাস। ফিনফিনে ব্যাকব্রাশ করা চুলের উপর দিয়ে হাত বুলিয়ে বিশাল ডুপ্লেক্স বাড়িটার ভেতর ঢুকে পড়লেন নিজাম সাহেব। প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসেবে গুটানো শার্টের হাতা যতটা মানানসই, ঠিক ততটাই বেমানান পায়ের ম্যাভেরিকের ধুলোমাখা কালো জুতা।

শায়লা ধনী ব্যবসায়ী ফারুক চৌধুরীর একমাত্র কন্যা। তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে ছাদে রাখা লোহার দোলনায়। নিজাম সাহেব ঘুরঘুর করতে থাকা সার্জেন্ট আহমেদের কাছ থেকে জেনে নিলেন বিস্তারিত। সন্দেহের তালিকায় তিনজন। কেয়ারটেকার মাহফুজ, কাজের মহিলা রেনু আর ফারুক সাহেবের স্ত্রী মিসেস ফারুক চৌধুরী। ফারুক সাহেব মেয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে রওনা দিয়েছেন বার্লিন থেকে।

নিজাম সাহেব ছাদে উঠে আসেন। বেশ ঠাণ্ডা একটা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। শায়লার মৃতদেহের কাছে ফরেনসিকের কিছু লোকজন ভিড় করে আছে। কিছুক্ষণ মানিপ্ল্যান্টের গাছে হাট বুলিয়ে নিজাম সাহেব হাতের ইশারায় আহমেদকে ডেকে নিলেন। বিরক্তি নিয়ে এগিয়ে এলেন সার্জেন্ট আহমেদ।

-আকাশটা বেশ পরিস্কার।

-আপনার চেয়ে বটেই।

অপমানের সূক্ষ্ম খোঁচাটা দেওয়ার সুযোগ করে দেন নিজাম সাহেব।

-এটা সুইসাইড কেস।

-কিভাবে বুঝলেন?

হতভম্ব অফিসারকে ওই অবস্থায় রেখেই চলে আসতে ইচ্ছা করে নিজাম সাহেবের। নিতান্ত বাল্যবন্ধুর মেয়ে না হলে তিনি এতদূর আসতেনও না।

-মেয়েটা প্রাক্তন প্রেমিকাকে ধরলেই সব পাবেন।

-কে সে?

-মাহফুজ

রাত

অন্যসময় হলে অভ্র এই রাস্তায় আসত না। কিন্তু ফাল্গুনীর সাথে কথা বলতে বলতে কিভাবে কিভাবে যেন এই রাস্তায় চলে এসেছে দুজনেই। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে এসেছে প্রায়। মফস্বলের এইদিকটায় কেউ আসে না বললেই চলে।

-শোনো

-কি?

-চলো, ফিরে যাই।

-আরেকটু হাঁটি অভ্র?

-ঠিক আছে।

বাসায় ফিরতে ফিরতে চোখ জ্বলতে শুরু করল অভ্রর। কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুতেই খানিকক্ষণের মধ্যে জ্বর চলে এলো।

অভ্রর মা এসে রাতের খাবারের জন্য কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করে চলে গেলেন। পরের দিন বেলা বারোটার দিকে ছেলেকে ডাকতে এসে আবিষ্কার করলেন অভ্রর সারা শরীরে ফোস্কা। গলে গেছে কিছু জায়গায়। হাউমাউ করে বাড়ি মাথায় তুললেন তিনি। চারদিন পর হাসপাতালে মারা গেল অভ্র।

ফাল্গুনীকে আর কখনও সেই মফস্বলে দেখা যায়নি।

একলা প্রবাস

ল্যাবের যন্ত্রপাতির মধ্যে মুখ গুজে থাকতে আর ভালো লাগছে না। বাইরের তুষারপাতের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে কোথাও হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করছে। এমন সময় ডেভিড ল্যাবে এসে ঢোকে। হার্ভার্ডের খুনে প্রফেসরদের মধ্যে ডেভিড একজন। জাতে আইরিশ। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ফান্ড ডেভিডের বাম পকেটে থাকে। আর ডান পকেটে হুকারদের বুকলেট। নারীদের প্রতি অতি মাত্রায় আসক্ত থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সের এই মস্তান।

-শোনো রমান, নিউটন ভ্যাবলা মেয়েদের স্তন দেখেই কিন্তু মহাকর্ষ তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিল। ওসব আপেলের গল্প ফাউ!

-David,I will be glad if you don’t disturb me!

আমেরিকানদের সামাজিকতা আমাদের চেয়ে ঢের কম। আমিও খানিকটা আমেরিকান হয়ে উঠেছি গত এক বছরে। সামাজিকতা আমার ভেতর থেকে লোপ পেয়েছে অনেক।

-ওহ!

বলেই ডেভিড ঘাড় ঘুরিয়ে ফেরার পথ ধরে। দরজার কাছে যেয়ে আবার ফিরে আসে,

-রমান, তোমার দেশে প্রেমিকারা কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না, তাই না?

-ঠিক তা নয় ডেভিড!

ডেভিড জানলা দিয়ে বাইরে তাকায়। আমি ডেভিডের চোখে তার চলে যাওয়া প্রেমিকাকে দেখতে পাই। আলতো করে বেরিয়ে আসা দীর্ঘশ্বাসকে ডেভিড লুকিয়ে রাখে। আমার একলা প্রবাস কারো বিরহে মলিনতর হয় না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৪

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ভাল লাগলো।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১০

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১১

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: ধন্যবাদ!

৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৭

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: ভাল লাগসে। গো এহেড ব্রো...

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১১

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: প্রথমটা ঠিক বুঝতে পারিনি| মাথার উপর দিয়ে গেছে| পরের দুটি ভাল লেগেছে| শেষটি তো অনন্য

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১২

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: প্রথমটা আমি নিজেই বুঝতে পারিনি! :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.