নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারা সবার সুখে হাসব মোরা কাঁদব সবার দুখে......আবৃত্তি করতে করতে গৃহ কর্মিকে পেটায়!

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭


সন্তানকে ক্লাসে প্রথম হতে হবে। অন্যরা পারলে সে কেন পারবে না? এটা একজন মায়ের দাবি নয় সকল মা-বাবার দাবী। ভাল স্কুলে পড়াচ্ছি, হোম টিউটর দিচ্ছি। যা চায় তাই পাচ্ছে। সে কেন প্রথম হতে পারবে না।
আমি বুঝতে পারি না ক্লাসে প্রথম হয়ে কি হবে? সে কি শিখছে কিভাবে নিজেকে তৈরি করছে সেই চিন্তাটা কিন্তু কোন অভিভাবকই করছেন না। তাঁরা মুখস্থ করাচ্ছেন তাঁরা শেখানোর চেষ্টাও করছেন না। এই মুখস্থ বিদ্যা আর তা প্রয়োজন অনুযায়ী উগরে দেয়া এ দিয়ে লাভটা কি হবে?
সন্তান সত্যিই বিকশিত হতে পারছে কিনা তাঁর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে তাকে সহায়তা করছেন কিনা সে চিন্তাটা একবারও কেউ করছেন না।
সে যা পড়ছে তা বুঝতে পারছে কিনা কিংবা তাঁর প্রয়োগ সে বাস্তব জীবনে করছে কি না সেটা দেখছেন না। যদি সে, সবার সুখে হাসব মোরা কাঁদব সবার দুখে............ আবৃত্তি করতে করতে গৃহ কর্মিকে পেটায় তাতে লাভটা কি হবে শুনি?

সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী অজস্র ছেলে মেয়ে দেখেছি যারা একটি লাইন নিজে থেকে লিখতে পারে না। একটি বিষয়ে প্রশ্ন করলে পাঠ্য বইয়ের তত্ত্বকথাটিও নিজের ভাষায় বলতে পারে না। কি হয় এই শিক্ষা দিয়ে?

বেশ কিছুদিন আগে সুইডেন প্রবাসী একজন প্রভাষক Aminul Islam তাঁর ফেসবুকে একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলেন এভাবে-
গত দুই দিন ধরে ছাত্রদের ইন্টার্ভিউ নিচ্ছি। আমার এখানে যারা ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলো, তাদের ইন্টার্ভিউ। বাংলাদেশ থেকে মোট ১১ জন আবেদন করেছিলো। আমার এক সহকর্মী এদের ইন্টার্ভিউ নিয়েছে। ............ আমি আমার সহকর্মী'কে জিজ্ঞেস করলাম
-কেমন করলো আমার বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা?
-কেউ কেউ ভালো, কেউ আবার একদম খারাপ।
আমরা মূলত ছাত্র-ছাত্রীদের মোটিভেশন দেখছিলাম, তারা কেন এখানে পড়তে চায়; সেই সাথে ইংরেজি'র লেভেল'টাও যাচাই করছিলাম। যা হোক, আমি আমার সহকর্মী'কে জিজ্ঞেস করলাম
-খারাপ বলতে কি বুঝাচ্ছ! মোটিভেশন ক্লিয়ার না, নাকি ইংরেজিতে সমস্যা?
-কয়েকজন তো আমার কোন প্রশ্ন'ই বুঝতে পারেনি। ইংরেজি'র লেভেল খুব'ই খারাপ।
যা হোক, শেষ পর্যন্ত ১১ জন বাংলাদেশির মাঝে ৬ জনকে এডমিশন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। বাকী ৫ জন চান্স পায়নি, কারন এদের ইংরেজি এতো'ই খারাপ, কোন ভাবেই এদের এডমিশন দেয়া সম্ভব না।
সব চাইতে অবাক করা ব্যাপার হলো এই পাঁচ জনের সবাই এসএসসি এবং এইচএসসি'তে জিপিএ ৫ পেয়েছে এবং এখন বাংলাদেশের নামকরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়ছে বা পড়েছে। আর যেই ৬ জন'কে আমরা শেষ পর্যন্ত এডমিশন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এর মাঝে একজন ছাড়া কারো এসএসসি বা এইচএসসি'তে জিপিএ ৫ নেই। পাঁচ জন'ই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে বা পড়ছে আর একজন শুধু নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
আমি ঠিক জানি না, আমাদের পড়াশুনার মান আসলে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। অতি সাধারণ ইংরেজি, যেমনঃ তুমি এখানে কেন পড়তে আসতে চাইছ? তুমি এই দেশ সম্পর্কে কি কি জানো? এই পর্যন্ত তুমি কি পড়াশুনা করেছে? এই ইংরেজি প্রশ্ন গুলো তারা বুঝে না; উত্তরও দিতে পারে না। প্রশ্ন করা হয়েছে এক বিষয়ে; না বুঝে উত্তর দিচ্ছে আরেক বিষয়ে। তাও আবার সব'ও ভুল ইংরেজিতে! এর মাঝে একজন আবার বাংলাদেশে ইংরেজি পড়ায় স্কুলে! ভাবুন দেখি অবস্থা! ..................।"

এ তো গেল তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। আমরা যারা দেশে আছি আমাদের অভিজ্ঞতা তো এর থেকেও খারাপ। নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী বেশ কজন অফিস সহকারীকে দেখি বাংলা শুদ্ধ উচ্চারণটা পর্যন্ত লিখতে পারে না। কখনো কখনো বাংলা নামের ইংরেজি লিখতে গিয়ে এমন সব অদ্ভুত শব্দ বানিয়ে ফেলে যা লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শুনেছি আজকাল সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরিতে শ্রেণি শিক্ষক গন গাইড বইকে বাইবেল বানিয়েছেন?
আমাদের সন্তানেরা তাহলে কি শিখবে বলুন তো?
আমাদের সন্তানদের আদৌ কি আমরা কিছু শেখাচ্ছি, নাকি কেবলই মুখস্থ করাচ্ছি। একবার ভেবে দেখুন তো আর এ থেকে আমরা কীইবা অর্জন করতে চাইছি?
পবিত্র কুরআন মুখস্থ করছি বেহেশতের ফ্রি টিকেট পাওয়ার আশায়! আর পাঠ্য বই মুখস্থ করছি ফ্রি চাকরী লাভের আশায়!
বেহেশতের মালিক কিংবা চাকরী দাতা উভয়ের কাছ থেকেই নির্ঘাত নিরাশ হয়ে ফিরতে হবে। তখন তাঁর দায় নেবে কে?
আমরা সর্বদাই অন্যের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলতে অভ্যস্ত কিন্তু একবারও লক্ষ করিনা যার বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছি তাঁর দিকে তো একটি আঙ্গুল নির্দেশ করছি বাকি চারটি আঙ্গুল তখন আমার দিকে তাকিয়েই ভ্রুকুটি করে।

আজকের অভিভাবকদের অভিযোগ, তরুণ সম্প্রদায় ভুল পথে পা বাড়াচ্ছে তাঁরা ঘরকুনো হয়ে পড়ছে। নিজেদের নিয়ে একটি আলাদা জগত তৈরি করে নিয়ে গুটি সুটি মেরে ঘরের কোণে পরে থাকছে। তাঁরা অসামাজিক জীব হয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে ডুবে থাকছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে সে দায় আসলে কার?

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৫

মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: "পবিত্র কুরআন মুখস্থ করছি বেহেশতের ফ্রি টিকেট পাওয়ার আশায়! আর পাঠ্য বই মুখস্থ করছি ফ্রি চাকরী লাভের আশায়!
বেহেশতের মালিক কিংবা চাকরী দাতা উভয়ের কাছ থেকেই নির্ঘাত নিরাশ হয়ে ফিরতে হবে। তখন তাঁর দায় নেবে কে?"


ভাই, বুকে আসেন!
সেইরকম একটা লেখা লিখছেন!

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৯

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ।

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:১৯

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: কুরআনের ব্যাপারটা নিয়ে খেলো মন্তব্যটা বাদ দিলে চমৎকার লেখা। অভিভাবকদের এ ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল দেয়া উচিত।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কুরআনের ব্যাপারে খেলো মন্তব্য করার মত আহাম্মক আমি নই। আমি বলতে চেয়েছি কুরআন মুখস্থ করার বিষয় নয়, বোঝার বিষয়; আত্নস্থ করার বিষয়। যে নির্দেশনা মহান আল্লাহ্‌ পবিত্র কুরআনে নিজেই দিয়েছেন, "আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি ৫৪:১৭।" অথচ আমাদের দেশের হুজুররা শিখিয়ে যাচ্ছেন কুরআন মুখস্থ কর।
সম্রাট অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫

আনুতা বলেছেন: খুব সুন্দর লিখা ! আজকের এই অবস্থার জন্য একক ভাবে কাউকে দায়ী করা যাবে না, এর দা্য পরিবার,সমাজ, রাষ্ট্র সবার ।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আনুতা আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি ঠিকই বলেছেন এর দা্য পরিবার,সমাজ, রাষ্ট্র সবার ।

৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



যারা পড়ছেন, পড়ার সুযোগ পেয়েছেন, তারা কিছু শিখছেন; যারা স্কুলে যাবার সুযোগ পায়নি, তাদের নিয়ে ভাবুন, ওটাই আসল সমস্যা

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:২৩

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: স্কুলে গিয়েই কি হয়? স্বশিক্ষিত বলে একটা বিষয় আছে একদা এদেশের বেশীর ভাগ মানুষই ছিল স্বশিক্ষিত। তাঁরা সত্যিকারের মানুষই ছিলেন। আমরা এখন যখন তথাকথিত শিক্ষিত হতে চাচ্ছি গোলটা কিন্তু তখনই বাধল। না আমরা শিক্ষিত হলাম না অশিক্ষিত রইলাম। মানুষ হবার তালিম এই শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারছে না। পারবেও না কারন আমরা এর নির্যাস নিতে চাই না, পরীক্ষা পাসের জন্য তাঁর প্রয়োজনও হয় না। বাঁকি রইল পরিবার-সমাজ। যেখান থেকে পুড়াতনরা এই শিক্ষা পেতেন। আজকের সমাজ সে দাবী মানে না। পরিবার দায় চাপায় শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। অবক্ষয়ের শুরুটা তো ওখান থেকেই ভাই।

৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: পুরা শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন নাহলে এর থেকে বের হওয়া সম্ভব না।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:৩০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: একদমই তাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা মানুষও বানাচ্ছে না অমানুষও নয়। কিছু যন্ত্র মানব বানাচ্ছি আমরা। আপনি ঠিকই বলেছেন, "পুরা শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন নাহলে এর থেকে বের হওয়া সম্ভব না।"

৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৫

আখেনাটেন বলেছেন: বাংলাদেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে যে একটি মারাত্মক বন্ধাকাল চলছে তা অামাদের পলিসি মেকারদের চোখে এখনো পড়ছে না। এর ফলাফল ভবিষ্যতে যে ভয়ঙ্কর হতে যাচ্ছে তা দেশের গুটিকয়েক দলকানা, লোভী আমলা ও চোখ থাকতেও অন্ধ সুশীল ছাড়া সবাই বুঝছে।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৩

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আমার তো ধারনা তাঁরা জেনে বুঝেই পাল্টানোর ঝুকি নিচ্ছেন না। যদি সব পাল্টেই যায় তাহলে তো ভবিষ্যতে দলকানা, লোভী, অন্ধ সুশীলের আকাল পরে যাবে। তখন তাদের কি হবে?

৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আসলে এর মধ্যেও কেউ কেউ নিজের জায়গা করে নিচ্ছে। যারা পারবেনা, তারা পেছনেই পড়ে থাকবে। তবে এর জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দায়ী। এত এস এস সি, এইচ এস সি তে এত সাবজেক্ট নিয়ে পড়ার কি আদৌ দরকার আছে?

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কেউ কেউ নিজের জায়গা করে নেয়া তো ভবিষ্যতে দেশকে এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়ারই নামান্তর। কাজটা যে জেনে বুঝেই করা হচ্ছে না তাঁরই বা নিশ্চয়তা কি? যেখানে পাশের হার দিয়ে সরকারের সফলতা নির্ণীত হয় সেখানে রাজনীতিবিদদের মানসিক দৈন্যতাই ফুটে ওঠে।

৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:০৭

কালীদাস বলেছেন: কোরানের এক্সাম্পলটা এভাবে না দিলেই সুন্দর হত। বক্তব্যটা স্ট্রং ছিল পোস্টের এমনিতে।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:৪০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কুরআনের ব্যাপারে খেলো মন্তব্য করার মত আহাম্মক আমি নই। আমি বলতে চেয়েছি কুরআন মুখস্থ করার বিষয় নয়, বোঝার বিষয়; আত্নস্থ করার বিষয়। যে নির্দেশনা মহান আল্লাহ্‌ পবিত্র কুরআনে নিজেই দিয়েছেন, "আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি ৫৪:১৭।" অথচ আমাদের দেশের হুজুররা শিখিয়ে যাচ্ছেন কুরআন মুখস্থ কর।

৯| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



কুরআনের ব্যাপারে খেলো মন্তব্য করার মত আহাম্মক আমি নই। আমি বলতে চেয়েছি কুরআন মুখস্থ করার বিষয় নয়, বোঝার বিষয়; আত্নস্থ করার বিষয়। যে নির্দেশনা মহান আল্লাহ্‌ পবিত্র কুরআনে নিজেই দিয়েছেন, "আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি ৫৪:১৭।" অথচ আমাদের দেশের হুজুররা শিখিয়ে যাচ্ছেন কুরআন মুখস্থ কর।

-মেহেদী ভাই,
ধন্যবাদ কষ্ট করে পোস্ট নিয়ে আসায়।
২ নং মন্তব্যের জবাবে দেয়া আপনার উপরোক্ত উত্তরের প্রেক্ষিতে কিছু কথা বলতে হচ্ছে। এই যে বললেন, 'কুরআন মুখস্ত করার বিষয় নয়' কোথায় পেয়েছেন একথা? এত দিন যাবত আমরাতো জেনে এসেছি, কুরআন যুগপৎ মুখস্ত করার যেমন বিষয় ঠিক ততোধিক গুরুত্ব রয়েছে এই মহা গ্রন্থ বোঝার এবং আত্মস্থ করার ব্যাপারেও। এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিচে কিছু হাদিস উল্লেখ করা হল। দয়া করে দেখে নিতে পারেন।

১।
عن أبي أمامة رضي الله عنه قال‏:‏ سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول‏:‏ ‏ "‏ اقرءوا القرآن فإنه يأتي يوم القيامة شفيعًا لأصحابه‏"‏ ‏(‏‏(‏رواه مسلم‏)‏‏)‏‏.‏

Abu Umamah (May Allah be pleased with him) reported:
I heard the Messenger of Allah (ﷺ) saying, "Read the Qur'an, for it will come as an intercessor for its reciters on the Day of Resurrection." [Muslim].

২।
وعن عائشة رضي الله عنها قالت‏:‏ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏:‏ ‏ "‏الذي يقرأ القرآن وهو ماهر به مع السفرة الكرام البررة، والذي يقرأ القرآن ويتتعتع فيه وهو عليه شاق له أجران‏"‏ ‏(‏‏(‏متفق عليه‏)‏‏)‏‏.‏

'Aishah (May Allah be pleased with her) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said, "The one who is proficient in the recitation of the Qur'an will be with the honourable and obedient scribes (angels) and he who recites the Qur'an and finds it difficult to recite, doing his best to recite it in the best way possible, will have a double reward." [Al-Bukhari and Muslim].

৩।
وعن أبي موسى الأشعري رضي الله عنه‏:‏ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏:‏ ‏ "‏مثل المؤمن الذي يقرأ القرآن مثل الأترجة‏:‏ ريحها طيب، وطعمها طيب، ومثل المؤمن الذي لا يقرأ القرآن كمثل التمرة‏:‏ لا ريح لها وطعمها حلو، ومثل المنافق الذي يقرأ القرآن كمثل الريحانة‏:‏ ريحها طيب وطعمها مر، ومثل المنافق الذي لايقرأ القرآن كمثل الحنظلة‏:‏ ليس له ريح وطعمها مر‏"‏ ‏(‏‏(‏متفق عليه‏)‏‏)‏‏.‏

Abu Musa Al-Ash'ari (May Allah be pleased with him) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said, "The believer who recites the Qur'an is like a citron whose fragrance is sweet and whose taste is delicious. A believer who does not recite the Qur'an is like a date-fruit which has no fragrance but has a sweet taste. The hypocrite who recites the Qur'an is like basil whose fragrance is so sweet, but its taste is bitter. The hypocrite who does not recite the Qur'an is like a colocynth which has no fragrance and its taste is bitter."

[Al-Bukhari and Muslim].

৪।
وعن ابن عمر رضي الله عنهما‏:‏ عن النبي صلى الله عليه وسلم قال ‏:‏‏"‏ لا حسد إلا في اثنتين‏:‏ رجل آتاه الله القرآن، فهو يقوم به آناء الليل وآناء النهار، ورجل آتاه الله مالا، فهو ينفقه آناء الليل وآناء النهارِ‏"‏ ‏(‏‏(‏متفق عليه‏)‏‏)‏‏.‏ (1) ‏.‏

Ibn 'Umar (May Allah be pleased with them) reported:
The Prophet (ﷺ) said: "Envy is justified in regard to two types of persons only: a man whom Allah has given knowledge of the Qur'an, and so he recites it during the night and during the day; and a man whom Allah has given wealth and so he spends from it during the night and during the day." [Al-Bukhari and Muslim].

৫।
وعن ابن مسعود رضي الله عنه قال ‏:‏ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏:‏ ‏ "‏من قرأ حرفًا من كتاب الله فله حسنة، والحسنة بعشر أمثالها لا أقول‏:‏ ألم حرف، ولكن ألف حرف، ولام حرف، وميم حرف‏"‏‏(‏‏(‏راوه الترمذي وقال‏:‏ حديث حسن صحيح‏)‏‏)‏‏.‏

Ibn Mas'ud (May Allah be pleased with him) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said, "Whoever recites a letter from the Book of Allah, he will be credited with a good deed, and a good deed gets a ten-fold reward. I do not say that Alif-Lam-Mim is one letter, but Alif is a letter, Lam is a letter and Mim is a letter." [At- Tirmidhi].

৬।
وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال ‏:‏ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏:‏ ‏ "‏إن الذي ليس في جوفه شيء من القرآن كالبيت الخرب‏"‏‏.‏ ‏(‏‏(‏رواه الترمذي وقال‏:‏ حديث حسن صحيح‏)‏‏)‏‏.‏

Ibn `Abbas (May Allah be pleased with them) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said, "He who does not memorize any part from the Qur'an he is like the ruined house.'' [At-Tirmidhi].

৭।
وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهماعن النبي صلى الله عليه وسلم قال‏:‏ ‏ "‏يقال لصاحب القرآن‏:‏ اقرأ وارتقِ ورتل كما كنت ترتل في الدنيا، فإن منزلتك عند آخر آية تقرؤها‏"‏‏.‏ ‏(‏‏(‏رواه أبو داود والترمذي وقال‏:‏ حديث حسن صحيح‏)‏‏)‏‏.‏

'Abdullah bin 'Amr bin Al-'As (May Allah be pleased with them) reported:
The Prophet (ﷺ) said, "The one who was devoted to the Qur'an will be told on the Day of Resurrection: 'Recite and ascend (in ranks) as you used to recite when you were in the world. Your rank will be at the last Ayah you recite."' [Abu Dawud and At- Tirmidhi].

৮।
عن أبي موسى رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال ‏ "‏تعاهدوا هذا القرآن فوالذي نفس محمد بيده لهو أشد تفلتًا من الإبل في عقلها‏"‏‏.‏ ‏(‏‏(‏متفق عله‏)‏‏)‏‏.

Abu Musa Al-Ash'ari (May Allah be pleased with him) reported:
The Prophet (ﷺ) said, "Read the Qur'an regularly. By the One in Whose Hand Muhammad's soul is, it escapes from memory faster than a camel does from its tying ropes." [Al-Bukhari and Muslim].

৯।
وعن ابن عمر رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال‏:‏ ‏ "‏إنما مثل صاحب القرآن كمثل الإبل المعقلة، إن عاهد عليها أمسكها، وإن أطلقها، ذهبت‏"‏ متفق عليه‏.‏

Ibn 'Umar (May Allah be pleased with them) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said: "The parable of one who knows the Qur'an by heart is as the parable of an owner of hobbled camel. If he remains vigilant, he will retain it; and if he neglects it, it will go away." [Al-Bukhari and Muslim].

১০।
وعن أبي هريرة رضي الله عنه قال ‏:‏سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول‏:‏ ‏ "‏ما أذن الله لشيء ما أذن لنبي حسن الصوت يتغنى بالقرآن يجهر به ‏"‏ ‏(‏‏(‏متفق عليه‏)‏‏)

Abu Hurairah (may Allah be pleased with him) reported:
I heard the Messenger of Allah (ﷺ) saying, "Allah does not listen so attentively to anything as He listens to the recitation of the Qur'an by a Prophet who recites well with a melodious and audible voice." [Al-Bukhari and Muslim].

১১।
وعن أبي موسى الأشعري رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال له ‏:‏‏"‏ لقد أتيت مزمارا من مزامير آل داود ‏"‏ ‏(‏‏(‏متفق عليه‏)‏‏)‏ ‏.‏
وفي روايه لمسلم ‏:‏ أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال له ‏:‏ ‏"‏ لو رأيتني وأنا أستمع لقراءتك البارحة‏"‏‏.‏

Abu Musa Al-Ash'ari (May Allah be pleased with him) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said to him, "You have been given a Mizmar (sweet melodious voice) out of the Mazamir of Prophet Dawud (David)." [Al-Bukhari and Muslim].

১২।
وعن أبي لبابة بشير بن عبد المنذر رضي الله عنه قال، أ‏ن النبي صلى الله عليه وسلم قال‏:‏ من لم يتغنَ بالقرآن فليس منا ‏"‏‏.‏‏(‏‏(‏رواه أبو داود بإسناد جيد‏)‏‏)‏ ‏.‏

Abu Lubabah Bashir bin 'Abdul-Mundhir (May Allah be pleased with him) reported:
The Prophet (ﷺ) said, "He who does not recite the Qur'an in a pleasant tone is not of us." [Abu Dawud].

১৩।
وعن أبي هريرة رضي الله عنه قال‏:‏ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم‏:‏ ‏ "‏ما اجتمع قوم في بيت من بيوت الله يتلون كتاب الله، ويتدارسونه بينهم، إلا نزلت عليهم السكينة، وغشيتهم الرحمة، وحفتهم الملائكة، وذكرهم الله فيمن عنده‏"‏ ‏(‏‏(‏رواه مسلم‏)‏‏)‏‏.‏

Abu Hurairah (May Allah be pleased with him) reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said, "Any group of people that assemble in one of the Houses of Allah to recite the Book of Allah, learning and teaching it, tranquility will descend upon them, mercy will engulf them, angels will surround them and Allah will make mention of them to those (the angels) in His proximity." [Muslim].

উপরোল্লেখিত প্রায় সবগুলো হাদিসই কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন মুখস্ত করা সম্মন্ধে। এছাড়া আরও গুরুত্বপূর্ন কিছু হাদিস রয়েছে যেগুলোতে হাফেজে কুরআনের মর্যাদা বিবৃত হয়েছে। এছাড়া হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা থেকে বর্নিত বিখ্যাত হাদিস মনে হয় নিশ্চয়ই আপনার জানা রয়েছে। যার মূল কথা নিম্নরূপ- কুরআনের ধারক-বাহক যিনি কি না কুরআনে বর্নিত হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম হিসেবে গ্রহন করেছেন, তাকে এমন দশজন নিকটাত্মীয়র ব্যাপারে সুপারিশ করার ক্ষমতা দেয়া হবে, যাদের প্রত্যেকের জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিল। উপরন্তু, হাফেজে কুরআনের মাতা-পিতাকে কিয়ামতের কঠিন দিনে মহান প্রভূ নূরের টুপি পড়িয়ে দিবেন বলে যে হাদিসে ঘোষনা এসেছে সে হাদিসখানাও সহীহ, নির্ভরযোগ্য। সুতরাং, এত পরিমান সহীহ হাদিসে বর্নিত তিলাওয়াত এবং কুরআন মুখস্ত করা বিষয়ক বক্তব্য কি আপনি অস্বীকার করতে চান? তা কি পারবেন? আদৌ কি সম্ভব? একজন মুসলিম কি কখনও তা পারে?

ভাই, ক্ষমা করবেন। দীর্ঘ সময় নেয়ায় দু:খ প্রকাশ করছি। বিনীত অনুরোধ রেখে যেতে চাই, কুরআন হাদিস বিষয়ক কোন আলোচনা বা উদ্ধৃতি দেয়ার প্রয়োজন হলে দয়া করে একটু যাচাই করে নিন। অন্য কোন বিষয় হলে ভিন্ন কথা, কিন্তু না জেনে অন্তত: কুরআন-হাদিস নিয়ে মনগড়া কথা বলা ধৃষ্টতা এবং রীতিমত পাপের কাজ বলে আমরা বিশ্বাস করি।

আল্লাহ পাক আপনাকে এবং আমাদের সকলকে মাফ করুন। ভাল থাকুন।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ভাই নতুন নকিব আপনার কন্ট্রাডিকশন তো নিজের সাথেই আমার সাথে নয় আমি যেমনটি বলেছেন আমি তো ঠিক তেমনটি বলেছি, কুরআন বোঝার বিষয় জানার বিষয় সর্বোপরি অনুসরণের বিষয়। আপনি ভিন্ন ভাষি হয়ে মুখস্থ করলে তা আপনাকে কি সাহায্য করবে? আমি অজস্র মানুষ দেখেছি যে জানেইনা নামাজে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহর সাথে কি কথা বলল কি কি ওয়াদা করল। আর জানে না বলেই সে মসজিদ থেকে বেড়িয়েই ওয়াদা খেলাপ করতে পারছে।
আমি এমনও শিক্ষার্থি দেখেছি যার ১৫ পারা কুরআন মুখস্থ হয়ে গেছে অথচ সে জানে না আল্লাহু আকবর অর্থ কি! সেই শিক্ষার্থিও আমায় বলেছে সে কুরআনে হাফেজ হয়ে কজন মানুষকে নিয়ে জান্নাতে যেতে পারবে।
আপনি যদি কুরআন না বুঝে হাজার বার পড়েন সম্ভবত তাঁর থেকে একবার বুঝে পড়ার গুরত্ব অনেক বেশি। আমি কিন্তু কুরআন মুখস্থ করার বিপক্ষে বলি নি। আমি কেবল বুঝে পরার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছি। সম্ভবত আপনি আমার লেখার মূল সূরটিই ধরতে পারেন নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.