নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
না প্রেমিক না বিপ্লবী [email protected]
আমি ভাবতাম এত্ত জোরে জোরে বুক আর কাঁধের পেছনটা চাপড়াচ্ছে যে চামড়া ফেটে রক্ত বেরুচ্ছে।। অনেক পরে আবিষ্কার করেছি যেও তারা দু’আংগুলের চিপায় ভাংগা ব্লেড রাখে।
হায় হাসান হায় হোসেন শুনে মনে করতাম যে হোসেনী দালানের মালিক হোসেন আর তার ভাই হাসান নিশ্চয়ই সেদিন সকালেই মারা গেছে এবং তার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবেরা সেই জন্যেই শোকের মাতম করছে।
একটা বিরাট খেলনা মসজিদ(পড়ুন তাজিয়া)কে মাঝে রেখে এক বিশাল মিছিল শুরু হত সকালে হোসেনী দালানের সামনে থেকে। বকশী বাজার হয়ে, রেললাইন (এখন রাস্তা) পার হয়ে, পলাশী, আজাদ, আজিমপুর কলোনী হয়ে সেই মিছিল চায়না বিলডিং এ শেষ হ’ত। সেখানে ও আজিমপুর কলোনীর মধ্যে/পেছনে/আশেপাশে একটা মেলা বসতো। পাওয়া যেত ডুগডুগি, ঢোল, মাটির হাড়ি পাতিল, চিনিতে মোড়ানো, রং দেয়া, আটা ময়দার মিষ্টি (খেতে একটুও মজা না), কদমা, বাতাসা, নানা রকমের খেলনা । পাওয়া যেত দা, বটি এবং শিল পাটা (নোড়া)। সে সময়ে মা-খালারা এই মেলার জন্যে অপেক্ষা করতো কারন শিল পাটা ভেংগে গেলে ঐ ভাংগা গুলো দিয়েই কাজ চালিয়ে নিতে হ’ত এই মেলা পর্যন্ত। ঢাকা শহরে পাথরের শিল –পাটা পাওয়া যেত না।
আমার মায়ের প্রতি বছরই শিল পাটা কিনতে হ’ত কারন বাবা মার ঝগড়ার সময় বাড়ির সব বাসন কোসন, প্লেট গ্লাস পাল্লা দিয়ে দু’জনে মিলে ভেঙ্গে ফেলার পর যখন আর ভাংগার মতন কিছু থাকতো না তখন বাবা আছাড় দিতেন পাটা আর মা ভাংগতেন শিল। সে সময়ে ঢাকা শহরের মধ্য কোন বৈশাখী মেলা হ’ত বলে মনে পড়ে না।
যে খেলার জিনিসটা তখন পাওয়া যেত কিন্তু এখন আর কোথাও পাওয়া যায় না (অন্ততঃ আমার জানা মতে))এবং যেটা নিজের থাকলে সবার কাছে সম্মান বাড়তো ত হ’ল মোষের শিং এর লাটিম। সাধারন কাঠের লাটিমের চেয়ে তার আকৃতি ছিল ভিন্ন আর আকার ছিল ছোট। একটা মোষের শিং এর লাটিমের দামে দশটা কাঠের লাটিম পাওয়া যেত। পাওয়া আরো যেত বিলাতী মার্বেল, শ্বত পাথর দিয়ে বানানো। ষোলোটা কাঁচের মার্বেলের দামে একটা বিলাতী মার্বেল কিনতে হত।
তো সেই মার্বেল ও লাটিম কিনে হাফ প্যান্টের পকেটে রাখতাম এবং প্রায়ই হাফ প্যান্টের পকেট ছিঁড়ে পড়ে যেত মার্বেলগুলো ।
আমরা পিচ্চিরা মহররমের দিন সকাল বেলা হোসেনী দালানের সামনে অপেক্ষা করতাম কখন মিছিল বের হবে বলে এবং মিছিলের পিছু পিছু শহর প্রদক্ষিণ করতাম।
আমার একটা পিচ্চি মেয়ে বন্ধু ছিল। খুবই সুন্দরী। কালো বোরকা পরতো ঐ বয়সেই (ছোট বেলায় মনে করতাম যে সকল বিহারী ও কিছু শিয়া মেয়েরাই শুধু বোরকা পরে)। নাম ছিল ফাতিমা। কেউ ফাতেমা ডাকলে খাঁমচে দিত। তাকে রাগানোর জন্যে আমি সব সময়ই তাকে ফাতেমা ডাকতাম। আমার ওপর এত্ত বেশী রেগে যেত যে খামচে রক্ত বের করে দিত।
তো সেই ফাতিমা ওই পিচ্চি বয়সেই মোহররম মাসের পুরোটাই রোজা রাখতো। গা্ন, বাজনা, হাসি-তামাশা, আনন্দ, নিমন্ত্রন দেয়া বা নিমন্ত্রণে যাওয়া তার জন্যে সে মাসে ছিল নিষিদ্ধ। আমাদের কোন কথায় যদি সে হেসে ফেলতো তাহ’লে পর মূহুর্তেই অনেকক্ষণ ধরে আল্লাহর কাছে সে মাফ চাইতো।
মোহররম মাসে আমার একটাই কাজ ছিল- ফাতিমাকে হাসানো।
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:১৯
ত্রিশোনকু বলেছেন: হাহাহাহাহা।
ভাল আছি লিটন।
২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০১
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
ভালো থাকবেন
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:১৯
ত্রিশোনকু বলেছেন: আচ্ছা থাকবো নে।
৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৭
জনাব মাহাবুব বলেছেন: আজকেও আজিমপুরের সেই মহরমের মেলা বসছে।
আমি অলরেডি সেই মেলায় জয়েন করে ফেলছি।
ছোটবেলার সেই মেলার মজা এখন আর পাওয়া যায় না।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২০
ত্রিশোনকু বলেছেন: বড় হয়ে গেছেন যে!
আমার খুব ইচ্ছে ছিল যেতে। পারলাম না।
৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৮
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনারতো মনে হয় অনেক জায়গায়েই ঘোরা হয়েছে।।শৈশবে আজিম্পুর, মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম।
স্মৃতিকথায় ভাল লাগা রইল।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২২
ত্রিশোনকু বলেছেন: হাহাহাহাহা। আমি বাংলাদেশের প্রাক্তন ১৯ টি জেলার মধ্যে ১৮ জেলার কোন না কোন জায়গায় ঢু মেরেছি।
ভালো লাগার জন্যে ধন্যবাদ।
৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:২৫
নষ্ট অতীত বলেছেন: আহা, দারুন সেই সুখস্মৃতি!
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনাকে দেখেই লগইন করলাম ,
কিরাম আছেন ভ্রাতা ?
আমরা সামুর ভক্তরাও ভাবি - সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।