নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেলিম রেজা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে অধ্যায়নরত । ওয়েব: http://tselimrezaa.wordpress.com

এক্স রে

সেলিম রেজা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে অধ্যায়নরত ।

এক্স রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি বৃষ্টিস্নাত সকাল ও ……… (ছোটগল্প)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল । তাই একটু দেরী করেই বাড়ি থেকে বেরোলো মাসুদ । যখন পুকুর পাড়ে পৌছাল তখন টুং টাং স্কুলের ঘন্টা বাজছে । ঘন্টার বাজনা শুনেই বোঝা যায় জমির চাচা ঘন্টা বাজাচ্ছেন। জমির চাচার বয়স আগের থেকে বেড়ে গেছে। তার সাদা মাথা থেকে এখন আর কালো চুল বের করা সম্ভব নয়। সমস্ত কালো এখন ছায়া হয়ে তার মুখে জমা হয়েছে। এই ছায়াটা হয়ত চিরস্থায়ী । জমির চাচার বয়স হলেও ঘণ্টা তিনি আগের মতই বাজান। ঘন্টার বাজনা টা একটুও বদলায় নি। বদলে গেছে পুকুর পাড়ের এই আম গাছ টা, অনেক বড় হয়ে গেছে। জমির চাচার ঘন্টার বাজনা শুনতে শুনতে পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল মাসুদের। জমির চাচা ছুটির ঘন্টা বাজালেই স্কুল এর সবাই ক্লাস থেকে দৌড়িয়ে বেরিয়ে আসত। পাল্লা লাগাত কে কার আগে বেরোবে। সাথে সবার মুখ থেকে বিজয়ের আওয়াজ ভেসে আসত । স্কুল এর সামনেই ফিরোজ ভাই আচার বিক্রী করত । রূপাও ক্লাস থেকে বেরিয়ে জমির চাচার নিকট ছুটে যেত। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আচার কিনে বাড়ির দিকে ফিরত। মাসুদ দুষ্টুমি করে রূপার আচারে ভাগ বসাত। দুজনেই স্কুল থেকে ফেরার সময় এই পুকুর পাড়, এই আম গাছের নিচ দিয়ে হেটে যেত। আমের সময় ঢিল মেরে আম পাড়া ছিল মাসুদের পেশা রূপি নেশা। রূপা কে বাহাদুরি করে বলত “দেখেছিস আমার হাতের নিশানা?” রূপার সম্মতি মাসুদের মুখে বিজয়ীর হাসি এনে দিত। দুজনের এ বন্ধুত্ব কখন যে ভালবাসায় রূপ নিয়েছিল তা কেউ জানেনা, তবে বড় হওয়ার সাথে সাথে সম্পর্ক টা “তুই” থেকে “তুমি” ঠিকই হয়ে গিয়েছিল। জমির চাচার এই মেয়েটা দেখতে দিন দিন অপরুপা হয়ে উঠেছে। হয়ত নামের সাথে মিল রাখতেই এমন টা হচ্ছে । গরিবের ঘরে জন্ম, তাই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত রূপই তার সম্বল। মাসুদের ভাবনার পুরোটা জুড়ে অপরুপা রূপা। এই পুকুর পাড়ে বসে পুকুরে ডুব না মেরেই রূপার প্রেমে হাবুডুবু খেত মাসুদ। দুজন দুজনের পাশাপাশি বসে বেশ সময় কাটিয়ে দিত । কিন্তু হঠাতই সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। আজ ৫ বছর পর রূপার সাথে দেখা করতে এসেছে মাসুদ। তার জন্যই এই পুকুর পাড়ে ছুটে আসা।

*তুমি এখানে কেন এসেছ?

-তোমাকে দেখব বলে

*আমাকে দেখার কি আছে? যাও ফিরে যাও। আমার জন্য সময় নষ্ট করোনা।

-আমি সময় নষ্ট করছি না। তোমাকে দেখে সময়ের সদ্ব্যবহার করছি।

*এটা পাগলামি।

-আমি পাগল।

*পাগলের তো পাগলা গারদে থাকা উচিত।

-সব পাগলের ঠাই পাগলা গারদে হয় না। কিছু পাগল গাছ তলায় থাকে।

*এটা অভিশপ্ত গাছ।

-পাগলেরা অভিশাপের পরোয়া করে না।

-চুপ করে আছ কেন?

*বল শুনছি।

-আমার হাতের নিশানা দেখবে?

-চুলগুলো মুখের উপর থেকে একটু সরাবে?

*কেন?

-অনেকদিন তোমাকে দেখিনা।

*বলেছি না চলে যাও? আর আসবে না। আমাকে ভুলে যাও

-আমার #স্মৃতিশক্তি খুব একটা দুরবল না যে কাউকে ভুলে যাব।

*তুমি কেন বুঝছ না আমাকে তুমি কোনোদিনই পাবে না।

-তুমি তো আমার কাছ থেকে পালিয়ে চলে গিয়েছ। আমাকে ধোকা দিয়েছ।

*আমি তোমার ক্ষতি চাইনি।

-তুমি আমার হাসিটাকে কেড়ে নিয়েছ

-আবার চুপ কেন?

*জানিনা

-একটু হাসবে?

*আমি হাসতে জানিনা। হাসি কেড়ে নিতে জানি

-আমি তোমার কাছে আসতে চাই।

*আমি চলে যাচ্ছি। তোমাকে আমি ঘৃণা করি। এরপর আর আমার কাছে আসবে না

-তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি আসব তোমার কাছে

*হা হা হা আমি ছলনাময়ী।

-এই যে হাসছ। শুধু শুধু মিথ্যা বললে

*আমি মিথ্যা

-তোমার হাত টা একটু দাও

*কেন?

-আমার চোখের জল জমা দেব

*তুমি একটুও বদলাও নি

-সত্যি বলছ??

*না অনেক বদলে গেছ। মোটা ফ্রেমের চশমা কবে থেকে পরছ?

-তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে। সাদা শাড়ি কবে থেকে পরছ? এটাতে তোমাকে একদম মানায় নি।

*তুমি যেদিন থেকে চশমা পরছ

-একটা মিষ্টি গন্ধ আসছে তোমার শরীর থেকে। তোমাকে একটু ছুয়ে দেখতে চাই

*আমি অদৃশ্য, আমি তোমার কল্পনা, আমি অভিশপ্ত। তুমি চলে যাও

রূপা অদৃশ্য, রূপা রাতুলের কল্পনা, কিন্তু রূপা অভিশপ্ত নয়। অভিশপ্ত ওইসব হায়েনা যারা রূপা কে ধর্ষণ করেছে। রাতুলের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে চিরদিনের জন্য। ছি ছি! রাতুল এসব কি ভাবছে! রূপা ধর্ষিতা হতে যাবে কেন? সমাজ রূপা দের ধর্ষিতা সিল মেরে দিলেই কি তারা ধর্ষিতা হয়ে যাবে?? রাতুল ধিক জানায় সমাজের এইসব নরপিচাশ দের যারা রূপা কে ধর্ষিতা অপবাদ দেয়, যারা রাতুলদের ভালবাসা কেড়ে নেয়। ধিক তাদের যারা রূপা কে পৃথিবীতে বেচে থাকতে দেয় না।

ক্রোধে চোখ লাল হয়ে যায় রাতুলের, মোটা ফ্রেমের চশমার ফাক দিয়ে দু ফোঁটা ক্রোধ বেয়ে পড়ছে। সেটা রাতুলের হাতে জমা হয়। রাতুলের হাত অদৃশ্য নয়।

আমাগাছ টার এখানে একটা মোটা ডাল ছিল, যেটাতে ফাঁসি নিয়েছিল.........ভাবনা গুলো বড় নিষ্ঠুর। ডাল টা আর নেই। গত বছর ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। হয়ত রূপার কষ্টের ভারে ভেঙ্গে গেছে। আমগাছ টার পাশে একটা বট গাছ। ঝড়ে বট গাছের ডাল ভাঙ্গেনি। বটগাছের ডাল সহজে ভাঙ্গে না। হায়েনারা আজও আড্ডা দেয় বট গাছটার নিচে। আমগাছ টা কাঁদছে। সেটা রাতুল ছাড়া কেউ বুঝছে না......

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০

মেহেদী হাসান ভূঁঞা বলেছেন: ভালো হয়েছে..

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০১

এক্স রে বলেছেন: ধন্যবাদ। দোয়া প্রার্থী

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

মামুন রশিদ বলেছেন: কষ্টের গল্প ভাল লেগেছে । ডায়লগ কিছু কমিয়ে ডিটেইলিং বা বর্ণনার আশ্রয় নিলে আরো ভাল হত ।


শুভকামনা ।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৫

এক্স রে বলেছেন: প্রথমেই কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। ফিডব্যাক পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। ইন্টারমিডিয়েটে উঠেই নতুন ব্লগিং করছি। অনেক কিছু শেখার আছে। আবারো ধন্যবাদ

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৮

শূন্য পথিক বলেছেন: সুন্দর

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৫

এক্স রে বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.