নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেলিম রেজা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে অধ্যায়নরত । ওয়েব: http://tselimrezaa.wordpress.com

এক্স রে

সেলিম রেজা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে অধ্যায়নরত ।

এক্স রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি শুধু চেয়েছি তোমায় | যৌথ প্রযোজনার ভারতীয় সিনেমা (মুভি রিভিউ)

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৩৬

হলে ঢুকেই লম্বা লাইন দেখে কিছুটা অবাক হলাম। কোনো সিনেমা মুক্তির তৃতীয়-চতুর্থ দিনে এমন লম্বা লাইন দেখা যায়না। ব্যলকনি তে গিয়েই দেখি প্রায় সব সিটই দখল হয়ে গেছে। মহিলা দর্শকের সংখ্যা অন্য সিনেমার তুলনায় অনেক বেশি। এদিক ওদিক তাকিয়ে ফ্যানের নিচে একটি সিটে গিয়ে বসলাম। সিনেমা শুরু হতে হতে আরেকটা মেয়ে এসে বামপাশের সিটে বসল।



উল্লেখ্য গত ১৬ই মে বাংলাদেশ ও ভারতে একযোগে মুক্তি পেয়েছে অঙ্কুশ ও শুভশ্রী অভিনীত "আমি শুধু চেয়েছি তোমায়", সিনেমায় এপার বাংলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র মিশা সওদাগর। কোলকাতার সিনেমা নায়ক নায়িকা কে নিয়েই আবৃত হয়। তাই দেখার বিষয় ছিল মিশা সওদাগরের চরিত্রটি কত গুরুত্ব পায়। পাশে উচ্ছ্বসিত মহিলা দর্শক নিয়ে দেখা শুরু করলাম সিনেমা "আমি শুধু চেয়েছি তোমায়"



কাহিনী সংক্ষেপ:

অভি (অঙ্কুশ) বাল্যকালে ভূমির (শুভশ্রী) সাথে বন্ধুত্বের চেষ্টা করে। কিন্তু ভূমি অভির সাথে বন্ধুত্ব করে না। ঘটনাক্রমে অভি ভারতে পাড়ি জমায়। ঠিক বারো বছর পর ভূমিও দার্জিলিং এ পাড়ি জমায় পড়াশোনার জন্য। এ বারো বছর অভি ভূমির অপেক্ষা করেছে।। ভূমি কে পাওয়ার জন্য অভি একই কলেজে ভর্তি হয় মিস্টার পার্ফেক্ট সেজে। যে কিনা সবার চোখে খুবই ভদ্র ছেলে, ধূমপান, মদ্যপান করে না, মেয়েদের দিকে তাকায় না।



কলেজে ঢুকেই ভূমি অভির সম্পর্কে ইতিবাচক ধারনা পায়। কিন্তু অভি যখন ভূমিকে কিস করে তখনই অভির সম্পর্কে তার ধারনা ইতিবাচক থেকে নেতিবাচকে রূপ নেয়। ভূমি কে কেউ লিফট দিলে অভি তার গাড়ি ভেঙ্গে দেয়, ভূমির সাথে সবসময় ছায়ার মত লেগে থাকে। ঘটনাক্রমে ভূমি বিক্রম কে ভালোবাসে। ভূমির বাবা এটা জানতে পেরে ভূমিকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।



অভি ভূমিকে বিক্রমের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ভূমিদের বাড়িতে আসে। এক পর্যায়ে অভির সাথে ভূমির বিয়েও হয়ে যায়। তবুও অভি ভূমিকে বিক্রমের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করে। বিক্রমের অতিমাত্রায় বিবেক হীনতা, ভূমির পুতুল হয়ে থাকা আর অভির মহাপুরুষ চরিত্র নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে সিনেমা।



সিনেমাটি নিয়ে কিছু কথা:



সিনেমাটি হায়দ্রাবাদের আল্লু অর্জুন অভিনীত আরিয়া এক দিওয়ানা সিনেমার হুবুহু কপি যেটা কোলকাতার বাণিজ্যিক সিনেমার ক্ষেত্রে সাধারন ঘটনা। পরিচালক নিজস্বতা বলতে কিছুই দেখাতে পারেননি। শুধু ভাষা আর অভিনয় শিল্পী গুলো পরিবর্তন করেছেন।



ভূমি যে কলেজে ভর্তি হয়েছিল সেটা দেখে মনে হয়েছে, "পাগল দের এবার গতি হল বুঝি"। কারন এই কলেজের প্রতিটা ছাত্র ছাত্রীই "ফিটনেস বিহীন ক্যারেক্টার"। কেউ কোনো কথা তিন বার করে রিপিট করছে, কেউ বা কখন জাগে কখন ঘুমায় তার ঠিক নেই, আবার কেউ বায়োলজি ডিপার্টমেন্ট ছেড়ে প্রতিবারই ভুল করে সাইকোলজিতে চলে আসে। পুরো কলেজে একটাই মাত্র পার্ফেক্ট স্টুডেন্ট সে হল অভি (মাইরালা টাইপের ইমো, পাগল দের ভিত্রে এইডা কি করে?)। আরো আশ্চর্যের বিষয় হল ভূমির ভর্তি হওয়ার কথা জেনেই অভি কলেজে ভর্তি হয়। তো এর ভিতরেই সে কিভাবে পুরো কলেজে নিজের "মি. পার্ফেক্ট" ক্যারেক্টার বানিয়ে ফেলল সেটা ভাবনার বিষয়।



কলেজে বায়োলজি নামে একটা ক্যারেক্টার আছে যাকে কিনা সবসময় সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টেই দেখা যায়। বায়োলজি ভূমি কে লিফট দেয়ার পর অভি তার কভারে মোড়ানো গাড়ি নিয়ে বায়োলজির গাড়িকে ধাওয়া করে। বায়োলজি গাড়ি থেকে নেমে পড়লে অভি বায়োলজি কে ধাওয়া করে। কিন্তু সেই ফাকে কি করে বায়োলজির গাড়ি অভি হাওয়া করে দিল তা ভাবনার বিষয়।



ভূমির নতুন ফ্ল্যাটে বসে অভিকে মদ খেতে দেখা গেলো। সেটা কি করে অভির ফ্ল্যাট হয়ে গেলো তা বোঝা গেলো না। কভারে মোড়ানো গাড়িটা যে অভির এটা কারো জানার কথা নয়। কিন্তু বিক্রম কে দেখা গেলো সেই কভারে মোড়ানো গাড়ি দিয়ে নিজের গাড়িকে এক্সিডেন্ট করানো। যাতে ভূমি মনে করে অভিই বিক্রম কে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিক্রম জানলো কি করে ওটা অভির গাড়ি? আবার সে নিজেই গাড়িটা ড্রাইভ করলো। তার মানে কি অভি নিজেই বিক্রম কে গাড়ির চাবি দিয়ে বলেছিল, "যা বাবা তোর গাড়িটাকে এক্সিডেন্ট করিয়ে আমার উপর দোষ চাপা"



বিক্রম চরিত্রটাকে সাধারন বিবেক বুদ্ধিহীন ভাবে এবং অভিকে অতি মহানুভব ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা অনেক ক্ষেত্রেই চরম বিরক্তিকর ছিল।



অভির বাবাকে পুরো সিনেমায় দুইবার দেখা গেছে। শেষের দিকে পরিচালক মনে হয় ভুলেই গিয়েছিলেন অভির একজন বাবা রেখেছিলাম। বেশ কয়েকটি চরিত্রের কথা পরিচালক বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন অথবা অনর্থক চরিত্র সৃষ্টি করেছিলেন। গান গুলো এবং চিত্রায়ন সুন্দর ছিল। আমার মনে হয় ভারতীয়রা হৃদয় খানের গান দুটি বেশ উপভোগ করেছে।



সিনেমার অর্ধেকের বেশি অংশ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আবর্তিত হয়েছে। অভি ও ভূমির বিয়ের অংশটাও বাংলাদেশী রীতিতে করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশী অভিনয়শিল্পীরা মোটেও গুরুত্ব পায়নি। পুরো সিনেমায় ছিল ভারতীয়দের আধিপত্য। এমন কি বাংলাদেশ অংশেও ভারতীয়দের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। মিশা সওদাগর কেও ততটা গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়নি। যার অর্থ দাড়ায় এটি যৌথ প্রযোজনার মোড়কে একটি ভারতীয় সিনেমা।



ভারতের ট্রেইলারে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুধু এস কে মুভিজের নাম আছে। বাংলাদেশের এ্যাকশন কাটের নাম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয়, পরিবেশক হিসেবে আছে। "আমি শুধু চেয়েছি তোমায়" যৌথ প্রযোজনার নয় যৌথ পরিবেশনার সিনেমা। এটাকে ভারতীয় সিনেমা ঢোকানোর প্রাথমিক প্রচেষ্টা বলেও ধরা যায়।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:২৫

সোহানী বলেছেন: এটাকে ভারতীয় সিনেমা ঢোকানোর প্রাথমিক প্রচেষ্টা বলেও ধরা যায়...... একদম ঠিক।

ভারতীয় সিনেমা ঢুকতে দিচ্ছে না বলে নতুন কৈাশল মাত্র।.....

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৪

এক্স রে বলেছেন: সেন্সর বোর্ডে তিন টি ভারতীয় সিনেমা এসে জমা হয়েছে। কিছুদিন পর হয়ত সেগুলো মুক্তিও পাবে।

২| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৬

অপ্রতীয়মান বলেছেন: কেন এগুলিকে যৌথ প্রযোজনার মুভি বলে? বাঙ্গালিদের সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে মার্কেট ধরাই কি এই কথার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়?

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:২২

এক্স রে বলেছেন: Click This Link

উইকিপিডিয়াতে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুধু এস কে মুভিজের নাম। অ্যাকশন কাটের নাম শুধু পরিবেশক হিসেবে আছে। ইন্ডিয়ায় প্রচারিত ট্রেইলারেও শুধু এস কে মুভিজের নাম। পরিচালকও শুধু অশোক পাতি। আর বাংলাদেশে এসে হয়ে গেলো যৌথ প্রযোজনা। এখানে অনেক বড় প্রতারনা হয়েছে

৩| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫

মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেছেন: এটাকে ভারতীয় সিনেমা ঢোকানোর প্রাথমিক প্রচেষ্টা বলেও ধরা যায়।আমাদের কর্তব্য সচেতন ভাবে বর্জন করা। আমাদের এই শিল্পের বড় দুর্দিন যাচ্ছে।

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:২৭

এক্স রে বলেছেন: এখানে তো আমাদের রীতিমত ধোকা দেয়া হয়েছে। উপরন্তু এদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এ সিনেমায় স্পন্সর করেছে প্রদর্শনের জন্য। অনেক দর্শক ভারতীয় সিনেমা বলে দেখতে যাচ্ছে। আবার আমার মত অনেকে যৌথ প্রযোজনা ভেবে ধোকা খাচ্ছে। জানিনা আমাদের এ শিল্পটা মাথা তুলে দাড়াবে কিনা

৪| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:০২

বাংলার ঈগল বলেছেন: ভারতীয় ছবি এদেশে নিশিদ্ধ করার দাবী যানাচ্ছি। সরকার না করলে প্রতিটি বাংলাদেশীদের উচিত ছবি না দেখা।

লিংক টি দেখুন: হিন্দি সিরিয়াল

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:৩৬

এক্স রে বলেছেন: ভারতীয় সিনেমা দেখা থেকে এদেশীয়দের বিরত রাখা কতটুকু সম্ভব সেটাই অনেক বড় প্রশ্ন। সবার আগে ভারতীয় সিনেমা দেখার সুযোগ বা পথ বন্ধ করতে হবে

৫| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৮

তাসজিদ বলেছেন: তামিল ছবি বিরক্তিকর। তার কপি আরও বিরক্তকর।

দুই একজন বাংলাদেশি অভিনয় শিল্পি দিয়ে নাম দিয়ে দিল যৌথ ছবি। ভালই দেখালো।

তবে হৃদয় খানের গান গুল কিন্তু ভালই চিত্রায়িত হয়েছে।

২৩ শে মে, ২০১৪ সকাল ৮:২৭

এক্স রে বলেছেন: হৃদয় খানের গানের চিত্রায়নের ব্যপার টা তে নাহয় না-ই গেলাম।
যৌথ পরিবেশনার সিনেমা কে যৌথ প্রযোজনার বলে চালিয়ে দিল এটাই বড় সমস্যা

৬| ২৩ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮

মোঃ রুম্মানুল হক রিয়ন বলেছেন: কপির কথাই প্রথমে বলি ,
ছবিটা হুবহু কপি করা হয়নি যেটা করলে সবচেয়ে ভালো হতো । হয়তো কপির কিছু ফাঁক ফোকর দিয়ে ভূল ভাল অসামন্জস্য ঢুকে পরেছে ।
এবার আসি যৌথ প্রযোজনায় ,
যাতে আমাদের দেশের সিনেমাকে ছোট করা হয়েছে । কিন্তু আমরা বুঝেও ছবিটা দেখতে যাচ্ছি । হল গুলোতে এখনো সমানে ভীর ! :-(

২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:২৪

এক্স রে বলেছেন: সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা ছিল অগ্নি। আর এটা অগ্নির চেয়েও ব্যবসাসফল :-( মানুষ দেখবে। দেখতেই থাকবে।
এ দায়বদ্ধতা সাধারন দর্শক দের তুলনায় চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দের অনেক বেশি।

৭| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:১৮

জিউরানা বলেছেন: এটাকে ভারতীয় সিনেমা ঢোকানোর প্রাথমিক প্রচেষ্টা বলেও ধরা যায়...... একদম ঠিক।

ভারতীয় সিনেমা ঢুকতে দিচ্ছে না বলে নতুন কৈাশল মাত্র।....

২৪ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:০৮

এক্স রে বলেছেন: অশোক ধানুকা এর আগেও দুইটা সিনেমা সাইফুল ইসলাম কে দিয়েছিলেন বাংলাদেশে চালানোর জন্য। সেগুলো সেন্সর বোর্ডে মুক্তির প্রতিক্ষায়। তার আগেই এটা রিলিজ হল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.