নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেলিম রেজা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে অধ্যায়নরত । ওয়েব: http://tselimrezaa.wordpress.com

এক্স রে

সেলিম রেজা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সে অধ্যায়নরত ।

এক্স রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার পরশ

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০২

১.
যেদিন ভাবি আজ রাতের ভিতরেই নির্দিষ্ট কাজ শেষ করে একটু দেরীতে ঘুমাতে যাবো সেদিন কিভাবে কিভাবে যেন খুব দ্রুতই রাজ্যের ঘুম চোখে এসে জড়ো হয়। আবার যেদিন ভাবি আজ একটু দ্রুত ঘুমিয়ে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা উচিত ঠিক সেদিনই ঘুম বাবাজি কোথায় উধাও হয়ে যায় তার ঠিক নেই। রাত গড়িয়ে ভোর হয়ে যায় অথচ ঘুম আসার নাম নেই। এই যে এখন এই মধ্যরাতে বিছানায় বসে ভাবছি ঘুম তুমি কেন আমার মনের কথাগুলো বুঝে আমার সাথে দুষ্টুমি করো? অবশ্য আমি একাই জেগে নেই। আমার সাথে সাথে কতগুলো মশাও জেগে আছে। আচ্ছা ওরা ঘুমায় না? খপ করে একটা মশাকে মুঠির ভিতর নিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, "এই মশার কন্যা, তোর ঘুম নাই? ঘুম না পেলে বয়ফ্রেন্ডের সাথে ডেটিংয়ে যা। এখানে ঘুরিস না"
মশাটাকে ছেড়ে দেয়ার পর সে হয়তো বলে গেল, "ডেটিংয়েই তো এসেছিলাম। শুধু শুধুই আমার সময় নষ্ট করলি।"
ব্যলকনির দিকে পা বাড়ালাম, মেঘাচ্ছন আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে হল চাঁদ, তারাও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।

সকালে যখন আমার ঘুম ভাঙলো তখন নিজেকে ব্যলকনিতে আবিষ্কার করলাম। কি করে ব্যলকনিতে এলাম সেটা বুঝতে একটু সময় লাগলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯টা বাজতে ৫মিনিট বাকি। আজকের পরীক্ষায় আমি নিশ্চিত দেরী করে উপস্থিত হতে চলেছি। তড়িঘড়ি করি পরীক্ষার হলে পৌছাতে পৌছাতেও আমার দশ মিনিট দেরী হয়ে গেল। কোনোমতে পরীক্ষা দিয়ে হল থেকে বেরুলাম। বিনা প্রিপারেশনে পরীক্ষা দেয়ার সুবিধা হলো পরীক্ষা যেমনই হোক তা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা থাকবে না। যা নাম্বার পাওয়া যাবে পুরোটাই বোনাস মনে হবে। বোনাস পাওয়ার আনন্দ নিয়ে আমি করিডর ধরে হাটছি। হঠাত মনে হলো কেউ আমাকে ডাকছে। দ্বিতীয়বারে ডাকটা বেশ স্পষ্ট মনে হলো এবং লক্ষ্য করলাম একটা মেয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।
"পরীক্ষা তো ফাটিয়ে দিলে, কোনোদিকে খেয়ালই ছিল না।"
মেয়েটার দিকে চোখ বুলিয়ে মনে পড়লো আমার পাশে এই মেয়েটাই বসে ছিল। ক্লাসে একে দেখেছি কিনা মনে পড়েনা। জবাবে বললাম, "পরীক্ষার রেজাল্টে ফাটাফুটো মার্কই পাবো। যাই হোক দশ মিনিট লেট করে ঢুকলে কোনোদিকে খেয়াল করার খেয়ালটাই আসে না।"
মেয়েটার চোখের সামনে এক গোছা চুল, সে বারবার সেটাকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। আচ্ছা এই হেয়ার স্টাইল টাকে কি বলে? অতো জেনে কাজ নেই। চুল ঠিক করতে করতেই সে বললো, "আমি তো বেশ কয়েকটা ক্লাস করিনি। অনেককিছু বুঝতে পারছি না। আমাকে একটু হেল্প করবে?"
কি আশ্চর্য! মেয়েটা আমাকে পড়ুয়া স্টুডেন্ট ভাবছে নাকি! তারপরেও কি মনে করে যেন রাজী হয়ে গেলাম। পরে মেয়েটা নিজেই কেটে পড়বে। ওর কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর মনে হলো আমি মেয়েটার নামই জানি না।

২.
রাস্তায় হাটতে হাটতে স্যান্ডেল ছিড়ে যাওয়ার মতো বিব্রতকর পরিস্থিতি আর নেই। ছেড়া স্যান্ডেল পায়ে হাটাও যায় না আবার সেটা হাতে নিয়ে হাটতেও অস্বস্তি লাগে। আমি দ্বিতীয় পথটাই বেছে নিলাম। অনেক খুজে একটা মুচির দোকান পেয়ে স্যান্ডেল সারাচ্ছিলাম। পকেটে ফোন বেজে উঠলো। অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন এসেছে। অপর প্রান্ত থেকে কেউ খিলখিল করে হেসে বললো, "স্যান্ডেল হাতে নিয়ে হাটা ধরেছো কতদিন? ভালোই তো লাগছে।" আশেপাশে তাকিয়েও কাউকে খুজে পেলাম না। ফোনটাও কেটে দিয়েছে। আমি আর কিছু না ভেবে বাসার দিকে এগুলাম।

একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম। স্বপ্নে আমার রোল ছিল সুপার হিরো টাইপ কিছু একটা। আমি যে স্বপ্ন দেখছিলাম সেটা বুঝলাম ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর। ক্রমাগত ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেছে। আবার সেই অপরিচিত নাম্বার।

: হ্যালো
-কি ব্যপার ঘুমিয়ে আছো নাকি?
: না চাঁদের আলোয় ফুটবল খেলছিলাম। দুই গোল দিয়েছি। ফোনের শব্দে পেনাল্টি মিস করেছি।
-সরি। রাগ করেছো? আমি সত্যিই দু:খিত। আচ্ছা ঘুমাও।
: এখন ঘুম পাড়ানি মাসি পিসি গান শোনালেও আমার ঘুম আসবে না। আচ্ছা কি কারনে ফোন দিয়েছেন বলুন?
- অন্য কোনো গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেই?
: আপনি সিঙ্গার নাকি? মাঝরাতে আমাকে সিঙ্গার ফোন করে গান শোনাতে চাইছে। দারুন ব্যপার।
-তুমি আমাকে আপনি করে বলছো কেন?
: কারন আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।
- চিনতে পারোনি তো একবারও কেন জিজ্ঞাসা করলে না আমি কে?
: মনে ছিল না।
- আচ্ছা ঘুমাও। চিনোনি যখন তখন না চেনাই থাক।

খারাপ ব্যবহার করে ফেললাম নাকি? কাউকে না চিনতে পারা অভদ্রতা নয়তো? এত ভেবে লাভ নেই। যে স্বপ্নটা দেখছিলাম সেটাই কন্টিনিউ করি। সমস্যা হলো যেটুকু দেখে ঘুম ভেঙ্গেছিল ঘুরেফিরে সেটুকুই বারবার দেখছি।

৩.
আজ ক্যাম্পাসে বেশ আগে ভাগেই এসেছি। মেয়েদের সাজগোজের ব্যপারে আমার তেমন ধারনা নেই। তবে মেয়েটা অন্যরকম ভাবে সেজে এসেছে। ভালোই লাগছে। আমার দিকে এগিয়ে এসে বললো,

:কি ব্যপার কথাই বলছো না যে! কেমন আছো?
-আচ্ছা তোমার নাম কি?
:মৌমি। তুমি দেখি আমার নামটাও জানোনা! আচ্ছা কেমন আছো বলো?
-আগে তো নাম শোনা হয়নি তাই আর কি।
:কি আশ্চর্য! এই নিয়ে আমি কয়বার কেমন আছো জিজ্ঞাসা করলাম একবারও উত্তর দিলে না?
-ও হ্যা ভালো আছি। সরি।

ওর সাথে কিছুক্ষন কথাবার্তার এক পর্যায়ে মনে হলো কন্ঠটা আগে কোথাও শুনেছি। কি ভেবে ফোন টা বের করে সেই অপরিচিত নাম্বারে ফোন দিলাম। সাথে সাথেই মৌমির ফোন বেজে উঠলো। ও ফোন বের করার সাথে সাথেই ওর মুখে লজ্জার একটা ভাব ফুটে উঠলো। লুকোছাপা না করে জানিয়ে দিলো ও-ই আমাকে ফোন দিয়েছিল।

:গতরাতে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়ার জন্য সরি। কি মনে হলো একটু দুষ্টুমি করি।
-পরিচয় দিলেই পারতে।
:তাহলে তো মজাই থাকতো না। আজ বিকালে দেখা করতে পারবে। পড়াশোনার ব্যপারে একটু হেল্প লাগতো।

একটু ভেবে নিয়ে বললাম, "ঠিক আছে সমস্যা নেই। দেখা করা যাবে।"

৪.
বাসায় ফিরে কেবলই বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছি। ফোনে রিং বেজে উঠলো। বিরক্তির সাথে ফোনটা হাতে নিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই আমার হার্টবিট বেড়ে গেলো। কানে নিয়ে আস্তে করে বললাম

:হ্যালো
-দেখা করতে ইচ্ছা করছে। দেখা করবো। আজকের মাঝেই।

আমার মাথার ভিতর ঝাঁঝালো একটা অনুভূতি বয়ে গেল। কি বলবো বুঝতে পারছি না। আস্তে করে ফোনটা রেখে দিলাম।
ঝাঁঝালো অনুভূতিটা কখনো বাড়ছে কখনো কমছে। বুকের মাঝে যেন শূণ্যতাও কাজ করছে। আমি একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ই ঘুম আমার থেকে দূরে থাকে। এবারও তাই হলো।

৫.
রাত বাজে ১১:৩৮। মৌমি আমাকে বিকাল থেকে ৭৩বার কল দিয়েছে। একবারও রিসিভ করিনি। কাজটা কি ঠিক হচ্ছে? ১৮টা মেসেজও দিয়েছে। উত্তর দেইনি। আমি এখন একটা দোতলা বাসার ঠিক পেছনে দাড়িয়ে আছি। প্রাচীর টপকালেই আমি বাসার ভেতরে যেতে পারবো। এতরাতে প্রাচীর টপকে কোনো বাসার ভেতরে ঢুকে পড়াকে আমি খুব সহজ ভাবে চিন্তা করছি। প্রাচীর টপকে আমি একটি জানালার দিকে এগিয়ে গেলাম। জানালাটা হালকা খোলা। জানালার কাছে পৌছে আমি বললাম, "আমি এসেছি।"
জানালার ওপাশে সে এসে দাড়ালো। তার চোখে প্রথমে কিছুটা ভয় পরে কিছুটা বিস্ময় দেখা দিলো। এবং শেষে দুফোঁটা জল। মেয়েটা অল্পতেই কেঁদে দেয়। তবে আমি এই কান্নার অর্থ জানি। এটা কাছে পাওয়ার কান্না। কারো মাঝে সুখ খুজে পাওয়ার কান্না।

:কাঁদছো কেন লাজুক? এই যে আমি এসেছি। এখনো বারোটা বাজেনি। আজকের দিনের মাঝেই এসেছি। হা হা হা।

-তোমাকে এ পাগলামি কে করতে বলেছে? কি দরকার ছিল এত দূর থেকে আসার??

:কই এতদূর!? মাত্র ২৬১কিলোমিটার দূরে ছিলাম। ৬ঘন্টার বাস জার্নিতেই চলে এসেছি।

-৬ঘন্টার বাস জার্নি কম?? তুমি কেন এধরনের পাগলামি করো??

বলতে বলতে লাজুক আবার কেঁদে দিলো। সত্যি বলতে কি মুখে যতই বলি কান্না কোরোনা, কিন্তু আমার মন বলে ও কাঁদুক। মন ভরে কাঁদুক। কারন আমি জানি এই কান্নায় ও সুখ খুজে পায়। ও কান্না করে দেখতে খুব ভালো লাগে। ওর হাসি, ওর কান্না সব আমার জন্য এটা ভেবে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়।

ওর জন্য একটা ফুল এনেছিলাম। ফুল টা অবশ্য তাজা নেই। সেটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম। ও ফুল সহ আমার হাত চেপে ধরে। আমার হাতে রক্ত দেখে ও খুবই অস্থির হয়ে পড়ে।

:হাত কাটলো কি করে? এত রক্ত কেন? কখন কাটলো? এতক্ষন কিছু বলোনি কেন?? কত রক্ত!!
বলতে বলতে ওর আবার কান্না।

-এত অস্থির হয়ো না। প্রাচীর টপকাতে গিয়ে হয়তো কেটে গেছে। খেয়াল করিনি হা হা হা। আচ্ছা প্রাচীরে তারকাটা দেয়ার কি দরকার?

:একটা থাপ্পড় দিবো। একদম হাসবানা। হাসলে মেরে ভর্তা বানিয়ে ফেলবো। কত্ত রক্ত পড়ছে দেখেছো?

-ভর্তা বানিয়ে কি করবা? ভাতে মাখিয়ে খাবা?

:তোমাকে আমি আস্ত খাবো। আগে তোমার ঘরের বউ হয়ে নেই, তখন দেখবা কিভাবে খাই। লক্ষ্মী ছেলের মত দাড়িয়ে থাকবা। আমি স্যাভলন, তুলা নিয়ে আসি।

ও পরম মমতায় আমার হাত রীতিমত ব্যান্ডেজ করে দিলো। কি দরকার ছিল হা হা হা। ওর হাতের ছোঁয়াতেই তো সব ব্যথা উধাও।

রাত সাড়ে বারোটায় আম্মু আমাকে বাসায় দেখে যেন ভূত দেখলো। কখন এলাম, আসার আগে কেন বলে আসিনি আর সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞাসা করলো হাত কি করে কাটলো। এত প্রশ্নের জবাব কি করে দেব বুঝতে পারছি না। বললাম বাস থেকে নামতে গিয়ে আচমকা কেটে গেছে। আম্মু খাবার গরম করে নিজের হাতে খাইয়ে দিলো। যাক হাত কেটে একটা সুবিধাই হয়েছে হা হা হা।

রাতে যেটুকু ঘুমিয়েছি ঘুমটা বেশ আরামের হয়েছে। সকাল ৬টায় ঘুম ভাঙলো লাজুকের ফোনে।

:তুমি ৪মিনিটের মাঝে রেল লাইনে চলে আসবে।
-এখন! এত সকালে!! ঘুমাচ্ছিলাম তো।
:যা বলছি তাই করো। দ্রুত চলে আসো।
-আচ্ছা আসছি। তবে ৪মিনিট কাউন্ট করা আর দুই মিনিট পর থেকে শুরু করো।

আমি একটা গেঞ্জি গায়ে দিয়ে নিলাম। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে আর একটা ছোট পানির বোতল নিয়ে ব্রাশ করতে করতে রেল লাইনের দিকে দৌড় দিলাম। ব্রাশ করতে করতে আমার দৌড়ানো দেখে দুই একজন নিশ্চিত অবাক চোখে তাকিয়েছে। আর যখন দেখেছে আমি দৌড়ানো অবস্থাতেই কুলি করছি, মুখ ধুচ্ছি তখন কয়েকজন পাগলও ভেবে থাকতে পারে। তারপরেও আমি ১মিনিট ২০সেকেন্ড দেরি করে ফেলি।

:তুমি তবুও লেট।
-ব্রাশ করতে করতে এসেছি তো তাই একটু দেরি হয়েছে। সরি।
:কোনো সরি টরি চলবে না। দেরি যেহেতু করেছো সেহেতু শাস্তি পেতেই হবে।
-কি শাস্তি বলো?
:হাটো বলছি। হাতের ব্যান্ডেজ কই?
-আরে অল্প কেটেছিল। এর জন্য ব্যান্ডেজ লাগে নাকি? মাঝরাতে কখন খুলে ফেলেছি মনে নেই।

লাজুক আমার দিকে তাকালো। মিষ্টি হাসি দিলো। এ হাসির অর্থ অনেক গভীর।
আমি আর লাজুক রেললাইন ধরে হাটছি। এত সকালে রেললাইনও খুব ফাকা মনে হচ্ছে। মানুষজনও কম। হাটতে হাটতে এক পর্যায়ে ও আমার হাত চেপে ধরলো। ওর প্রতিটা স্পর্শই আমার শিহরণ জাগিয়ে দেয়। এভাবে হাত ধরে তো আমি অনন্তকালও কাটিয়ে দিতে পারবো। কি সুন্দর বাতাস বইছে, এর মাঝে আমরা হাত ধরে হেটে চলেছি। কিছুক্ষন হাটার পর একটা ব্রীজ বাধলো। রেলের ব্রীজ মাঝখানে বেশ ফাঁকা থাকে। নিচ দিয়ে পানি দেখা যায়। ও পার হতে বেশ ভয় পাচ্ছিল। বলল, "থাক পার হওয়ার দরকার নেই, যদি পড়ে যাই?"
আমি কি ভেবে ওকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিলাম। ও আমার আকস্মিক কাজে হকচকিয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে হাত দিয়ে আমার গলা শক্ত করে পেচিয়ে ধরলো। এ ভালোলাগার অনুভূতি বলে বোঝানো যাবেনা। ও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল, আমি ওকে নিয়ে ব্রীজ পার হচ্ছি। ব্রীজের মাঝামাঝি এসে ওকে বললাম, "ফেলে দেবো কিন্তু"
-"শক্ত করে তোমার গলা জড়িয়ে ধরেছি। তুমি ফেলে দিতে পারবে না হি হি হি । আমি জানি তুমি আমাকে চিরদিন এভাবে আগলে রাখবে। কখনো ফেলে দেবে না"
ব্রীজ পার হওয়ার পরও আমি ওর চোখে চোখ রেখে ওকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে যাচ্ছি। আমার হাত লেগে গিয়েছিল বিধায় কিছুদূর গিয়ে ওকে নামালাম। ও তো নামার কথা ভুলেই গিয়েছিল। আর কিছুক্ষন হেটে আমরা দুজন রেললাইনের পাশে গিয়ে বসলাম। পাশে বলতে রেললাইন থেকে অল্প দূরত্বে।
ও আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে। কখনো হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরছে। ছাড়তেই চাইছে না।
:"তুমি কি যেন শাস্তি দেবে বলেছিলে?"
-"হ্যা দেবোই তো। চোখ বন্ধ করো।"

ওর কথা অনুযায়ী চোখ বন্ধ করলাম। চমকে উঠেছি আমার ঠোটে ওর ঠোটের স্পর্শ পেয়ে। আমি কাপছি। আচ্ছা এটা কি আমার জীবনের সেরা মূহুর্ত? সম্ভবত। এক অদ্ভুত ভালোলাগা আমার পুরো শরীর জুড়ে। চোখ খুলে দেখি ওর চোখই বন্ধ। পাশ দিয়ে আন্ত:নগর ট্রেন যাচ্ছে। কিছু যাত্রী হয়তো আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। আমি আমার জীবনের সেরা শাস্তি উপভোগ করছি।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
বাহ, চমৎকার তো!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩

এক্স রে বলেছেন: হে হে হে ধন্যবাদ

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০০

অভ্রনীল_৫০ বলেছেন: পুরোটাই পড়লাম।
ভাল লাগলো

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৪

এক্স রে বলেছেন: ধৈর্য ধরে পুরোটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ :)

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৪

আর্টিফিসিয়াল বলেছেন: ভাই, রাস্তা ঘাটে কি শুরু করলেন,,???
ভাল লাগল,, গল্পটা,

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭

এক্স রে বলেছেন: হয়ে যাক নাহয় রাস্তাঘাটেই একটু ভালোবাসাবাসি ;)

ধন্যবাদ গল্পটা পড়ার জন্য

৪| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০০

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: বেশি রোমান্টিক!!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৯

এক্স রে বলেছেন: মাঝে মাঝে বাস্তব জীবন একটু বেশিই রোমান্টিক হয়ে যায় ;)

৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩

ব্যাক ট্রেইল বলেছেন: যে ছবিটাতে সুপার হিরোর অভিনয় করছিলেন সেটা কি বাংলা ছবি??
ছেলেমানুষি গল্প, প্রথম দিকে ভালই মজা হয়েছে। শেষের দিকে ভাল লাগেনি।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৫

এক্স রে বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: আছিলো মৌমি, হৈলো লাজুক। কেম্নে কী? :||

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

এক্স রে বলেছেন: মৌমি ছিল ফ্রেন্ড, ক্লাসমেট। আর লাজুক হলো গার্লফ্রেন্ড। দুজন আলাদা ;)
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য :)

৭| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮

রুহুল গনি জ্যোতি বলেছেন: খুব রোমান্টিক গল্প। ভাল লাগলো।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

এক্স রে বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য :)

৮| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৬

বর্ণিল হিমু বলেছেন: ৬ ঘন্টার পথে পারি দিয়ে লাজুক কতো সকালে ছেলেটার সাথে দেখা করতে রেললাইনে আসছিলো......?

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪

এক্স রে বলেছেন: ৬ ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে ছেলেটাই লাজুকের সঙ্গে দেখা করতে আসে। রাতে তাদের দেখা হয়। আবার ভোর ছয়টাতেও তাদের দেখা হয়।

৯| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: মিষ্টি গল্প তো!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.