নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্য প্রিয় মানুষ আমি, বাংলা ভাষা চর্চার চেষ্টা করি। মূলত একজন একনিষ্ঠ পাঠিকা।

উজ্জয়নী

পেশায় গবেষক, নেশায় পাঠক

উজ্জয়নী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঐতিহ্য

০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৩:০১

ডোরবেলটা বাজার অপেক্ষায় ভিতরের ঘরে বসে একটা লিটিল ম্যাগাজিনের পাতা উল্টাচ্ছিলেন সমিতা সেন। বসার ঘর থেকে, ভেসে আসছে হিন্দী সিরিয়ালের সংলাপ, নাতির মত তিনিও চোখ বন্ধ করেই বলে দিতে পারেন, নাগিন সিরিয়ালের কোন ক্লাইম্যাক্স চলছে, অবশ্য পুরো সপ্তাহ ধরেই এই ক্লাইম্যাক্স চলবে, শিপ্রা ও তাতান তাতেই মত্ত, মুগ্ধ। আগে তাদের এইসব ছাইপাঁশ দেখা থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। পাঁচ বছরের নাতিকে ক্ষীরের পুতুল আর বুড়ো আংলা কিনে দিয়েছিলেন, খেয়াল ছিল না তাতান বাংলা পড়তে পারে না। অগত্যা নিজেই পড়ে শোনানোর চেষ্টা করলে, বৌমাই আপিত্তি তোলে, এসব কি আজগুবি গল্প বলছেন মা, নাতিকে কি গেঁয়ো ভূত করতে চান। কিনলেনই যখন হ্যারি পটার, নিদেনপক্ষে সিন চ্যাং বা ডোরেমনের কার্টুন কিনতে পারতেন। এযুগে আপনার ঐ বই কে পড়ে আর কোথা থেকে যে আপনি জোটান কে জানে? হেসেই ফেলে শিপ্রা। অপ্রস্তুত সমিতা সাফাই দেন, বাঙালীর ছেলে চিরকালীন বাংলা শিশু সাহিত্য পড়বে না বৌমা? শিপ্রা কমপ্ল্যান গুলতে গুলতে বলে কি হবে পড়ে? স্কুলে কি পারবে কারুর সাথে শেয়ার করতে? মা, একটু বোঝার চেষ্টা করুন, আজকের কম্পিটিশনের যুগে পিছিয়ে পরা মানেই ছিটকে যাওয়া, হেরে যাওয়া - আপনি কি চান তাতান হাসির খোরাক হোক ইস্কুলে? অবন ঠাকুর যে এ যুগে হাসির খোরাক তা মানতে পারেন না বছর সত্তরের সমিতা কিন্তু নাতির স্কাই ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাবসাব তিনি ভালো বোঝেনও না, তাই বিরক্ত মুখে চুপ করে যান।
অশান্তির জের অবশ্য অনুপম পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল বৌমা। তোমার মা কি পড়েন, কি লেখেন, আমরা মাথা ঘামাই? প্লীজ ওনাকে বলে দিও আমাদের মা, ছেলের অবসরটাকে বিষিয়ে না তুলতে, এটা কি কোন অন্যায্য আবদার আমার বল? আমিও তো সারাদিন পরে তাতাই কে নিয়ে ফিরি, আমার একটা জীবন নেই? সখ আহ্লাদ নেই? দুই হাতে গলা জড়িয়ে কান্না ভেজা গলায় শিপ্রার অভিযোগ। আবার কি হল? মনে মনে বিরক্ত হয় অনুপম। তার মায়ের মত নির্ঝঞ্জাট মানুষের সাথেও শিপ্রার বনিবনা নেই। সারাদিন অফিসের খাটুনি শেষে বাড়ি ফিরে, সেই ভাঙা রেকর্ড, অসহ্য। আচ্ছা আমি কাল বলে দেব শিপু, এখন অন্তত চুপ কর, ঘুমে চোখ বুজে আসে অনুপমের। শিপ্রার চোখর ঘুম হারিয়ে যায়। একরকম পাশ কাটিয়ে গেল অনুপম, লক্ষণ ভালো নয়। সোমা বলছিল, এই সব ছোটখাটো ইংগিত থেকেই ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অনুপমের কাছে তাহলে শিপ্রার কথার গুরুত্ব এতই নগণ্য। কিছুক্ষন চোখের নোনা জলে বালিশ ভিজিয়ে, অশান্ত মনে ঘুমিয়ে পরে সেও।
এমনিতে দিনকাটে একই ছাদের তলায় তিনজন জেন তিনটে দ্বীপ। তাতান ও নিত্যকার অভ্যাস গুলি সেতুর কাজ করে। ঐ একসাথে ব্রেকফাস্ট বা ডিনার, তাও সবসময় হয়ে ওঠে না। লেখালেখি নিয়েই থাকেন সমিতা। ছোট একটা লিটিল ম্যাগাজিন দল, তিথির সাথে যুক্ত আছেন তিনি। উত্তর কলকাতার এই পুরনো বাড়িটাতে বিয়ের পর থেকে প্রায় ৫৫ বছর কেটে গেছে তার। সারা জীবনের স্মৃতি এই বাড়ির আনাচেকানাচে গোঁজা। হঠাৎ তারা সামনে এসে দাঁড়ায়, এক লহমায় তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় ফেলে আসা অতীতে। স্মৃতিমেদুর দুপুরগুলোয়, তাকে সংগ দেয় প্রিয়জনেরা, যারা অনেকদিন আগেই নয়ন ছেড়ে চলে গেছেন। দিব্যি কেটে যাচ্ছে শেষ জীবন, বেশী চাহিদা তার নেই।
সারা জীবন অবশ্য আলস্যকে প্রশ্রয় দেননি সমিতা, জীবনে সে সুযোগও বেশী ছিল না। ২৫ বছর বয়েসে এই বাড়িতে, বধু হিসেবে তার প্রথম পদার্পন, নিজেদের শোয়ার ঘরের সংলগ্ন বারান্দা দিয়ে দূরে বহতা গঙ্গা দেখা যেত, বাপের বাড়ির সাথে সেই নদী যেন তার রোজকার যোগসূত্র। সমিতার ছোটবেলা কেটেছে বেনারসে, অলিতে গলিতে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে। বাবা ছিলেন সরকারি চিকিৎসক। মায়ের আকস্মিক প্রয়াণে খুব ভেঙে পড়েন, তার বাবা। চটজলদি একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়ে সংসারের ভারমুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কাজেই, গ্রাজুয়েশন শেষ করতে না করতেই বিয়ের পিঁড়ি বেয়ে উত্তর কলকাতার শ্বশুর বাড়ি।

স্বামীর পারিবারিক ব্যবসা, শ্বশুর মশাই ও এক ননদকে নিয়ে ছোট সংসার কিন্তু বাড়িটি পৈতৃক, তাই বিশাল। শ্বাশুড়ি বিহীন বাড়ির সব দায়িত্বই এসে পরে সমিতার কাঁধে। এছাড়া পাড়ার এক ছোটদের ইস্কুলে পড়ানোও শুরু করেন তিনি। ব্যস্ত জীবনে সময় কেটে যায় বহতা নদীর মতই বাঁধা ছন্দে। তবে নদীতে বান আসার মত বিপদ যেন চিরকাল পিছু করেছে তার, অনুপমের যখন দু বছর বয়েস, তখন মাত্র তিন দিনের জ্বরে ভূগে বিদায় নিলেন শিবতোষ, তাঁর স্বামী। সেই ধাক্কা ভালো করে সামলাতে না পেরে পরের বছরই শ্বশুর মশাই মনতোষ বিদায় নিলেন। এত বড় বাড়িতে সমিতা, শান্তা ও অনুপম। এরপরের বছরগুলি জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় তাকে। নাইটে, বাংলা সাহিত্যে মাস্টার ডিগ্রী করে ফেলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সমিতা। এরপরে জুটিয়ে নেন কলেজে পড়ানোর এক চাকরীও, প্রথমে কন্ট্রাক্টে পরে পাকা। শান্তার বিয়ে থেকে অনুপমের পড়াশুনা সবই একা হাতে সামলেছেন তিনি। সামলেছেন বিশ্বস্ত কর্মচারী মারফত, পারিবারিক ব্যবসাও। ডুবন্ত সংসারের হাল ধরেন তিনি, বাঁচান পরিবারটাকে, ব্যবসাকে, বাড়িটাকেও। অনেকেই তখন ব্যবসা ও বাড়ি বেচে দেবার পরামর্শ দিয়েছিল, তিনি কর্ণপাত করেননি।
কারুর উপর খুব একটা নির্ভর করার মানুষ তিনি নন। বরং তাকে নির্ভর করেই কত ছেলে মেয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। অনুপম বড় হয়ে পৈতৃক ব্যবসার দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায়, শেষে, ব্যবসাপত্র বেচে দিয়েছেন সমিতা। তার নিজের সামান্য প্রয়োজন, পেনশনের টাকাতেই মিটি যায়। অনুপম সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, এক আন্তর্জাতিক কোম্পানির কলকাতার অফিসে ভালো পজিশনে কর্মরত। বৌমা শিপ্রা ছিল অনুপমের সহপাঠিনী, প্রেমের এই বিয়েকে খোলামনে স্বাগত জানিয়েছিলেন সমিতা। মনে হয়েছিল, পুরনো বাড়ির ঘরগুলি আবার নতুন কলরবে ভরে উঠবে। জীবন অদম্য, আবার নতুন প্রানের গান ধ্বনিত হবে দেয়ালে দেয়ালে, মনে মনে বেশ উৎসুক ছিলেন তিনি। কিন্তু মানুষ যা আশা করে, তাই যদি সত্যি হত!

দীর্ঘশ্বাস ফেলে, বই মুড়ে রেখে, ঘড়ির দিকে তাকান। আজকে অনু এত দেরী করছে কেন ফিরতে? বসার ঘর থেকে শিপ্রার গলা, মা আমি আর তাতান শুয়ে পড়লাম, কাল তো আবার মর্নিং স্কুল। ফ্রিজে খাবার আছে, আপনিও খেয়েই নিন। আপনার ছেলের ফিরতে রাত হবে, ফোন করেছে, কি সব পার্টি আছে আজ রাতে। বসার ঘর অন্ধকার। সমিতা রাতে অল্পই খান, আজ সে ইচ্ছাও নেই। শিবতোষের মৃত্যুদিবস আজ, প্রতিবছর কিছু ফুল আর মোটা একটা মালা নিয়ে আসে অনু। আজ সকালেও মনে করিয়ে দিয়েছেন; কিন্তু...। ফাঁকা ছবিটার দিকে খানিককাল তাকিয়ে থাকলেন তিনি। সময় হয়ে আসছে তোমার কাছে ফিরে যাবার, ধরিত্রীর টান শিরায় শিরায় বাজে আজকাল। মনে মনে মৃত স্বামীর উদ্দেশ্যে বলেন তিনি। আর একটু অপেক্ষা কর।

আবার ম্যাগাজিনে মন দেন সমিতা। বসার ঘরের শৌখিন বিদেশী ঘড়িতে কোকিল ডেকে জানান দেয় মধ্যরাত অতিক্রান্ত। সমিতা দেবী এবার খাতা কলম টেনে নেন। ম্যগাজিনের ছেলে মেয়েরা একটা লেখার জন্য অনেকদিন তাগাদা করছে, বসেই যখন আছেন, সময়টার সদ্ব্যবহার করা যাক।
রাত দুটোয় বাড়ি ফিরল অনুপম, মা দরজা খুলে দিল, যেমনটা সে আশংকা করেছিল। একদিনের জন্যও শিপ্রা কোন অনুরোধ রাখে না। পার্টি থেকে বাড়ি ফিরে মার সামনে দাঁড়াতে এখনো কুন্ঠা হয়, অবিন্যস্ত বেশ, টলমল চরণ, মা যদিও কিছু বলেনা তবুও। আর বল না মা, আজ বস কিছুতেই ছাড়লেন না; কিছু খাবি, শান্ত গলা সমিতার, মাথা ঝাঁকিয়ে না বলে, নিজের বেডরুমের দিকে হাঁটা দেয় অনুপম, দরজা বন্ধ করার আগে, সামনে মা, হাতে ঠাণ্ডা জলের বোতল ও গ্লাস। মা কি করে বুঝলো প্রচণ্ড তেষ্টা পেয়েছে তার? কৃতজ্ঞ ভঙ্গীতে জলের বোতল ও গ্লাস নিয়ে দরজা বন্ধ করে অনুপম।
সমিতা নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে, টেবিলে গিয়ে বসলেন, আবার লেখায় ফিরে যাবেন। আজ রাতের মত ঘুমকে ছুটি দিয়েছেন তিনি। হঠাৎ এই বাড়িতে নিজের প্রথম বিনিদ্র রজনীর কথা মনে পড়ল তার, নিজের অজান্তেই ঠোঁটে মায়াভরা হাসি ফুটে উঠল, চোখ চলে গেল, শিবতোষের ছবির দিকে, সেও যেন নিঃশব্দে হাসছে, মায়াভরা চোখে।

মাসের দুই রবিবারের দুপুর থেকে সন্ধে একান্ত নিজস্ব সমিতার। তার বাড়িতে বসে তাদের লিটিল ম্যগাজিনের আড্ডা। সাথে চা আর ভাজাভুজি। বেশীর ভাগ দিনই উইকএন্ডে ছেলে আর স্ত্রীর সাথে 'কোয়ালিটি টাইম' কাটাতে 'লঙ ড্রাইভে' যায় অনুপম। খালি বাড়িতে সাহিত্য আসর জমে ওঠে। এক শনিবার হঠাৎ করে আদুরে গলায় শিপ্রা বলে- মা কোথাও তো বের হন না আজকাল, এই রবিবার চলুন না আমাদের সাথে, একটু ঘুরে আসবেন, ভালো লাগবে। সে কি করে হবে বৌমা তিথিরা সব আসবে, তুমি তো জানোই, আরেকদিন যাব। আবার কবে সময় হবে মা, এদিকে দেরী হয়ে যায় যদি? আশংকা মুখ ফস্কে বেড়িয়ে আসে শিপ্রার। সমিতা  অবাক, কিসের দেরী? তাহলে কি তিনি খুব অসুস্থ, হাতে সময় নেই? কোই সেরকম কিছু তো টের পাননি, ডাক্তার ও ছেলে কি কিছু গোপন করেছে তার কাছে? তিনি জিজ্ঞাসু দৃষ্টি রাখেন শিপ্রার মুখে। অপ্রস্তুত শিপ্রার উদ্ধারকর্তা অনুপম। মা আসলে আমরা একটা ডিশিসান নিতে চলেছি, তার আগে তুমিও একটু দেখে শুনে নাও, আফটারওল বাড়ির দলিল তোমার নামে। আর এসব প্রপার্টি, অফার তো আর বেশিদিন পরে থাকে না, তাই একটু তাড়াতাড়ি করাই ভালো। সমিতা হতবাক, কি বলছে এরা, কোন অর্থই তো তিনি বুঝতে পারছেন না। প্রপার্টি, অফার, বাড়ির দলিল, ডিশিসন! কি মানে এসবের? কি বলছিস অনু? হেঁয়ালি না করে, খুলে বল, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। এবার অনুপমকে থামিয়ে দিয়ে গড় গড় করে বলে যায় শিপ্রা। সাত মাস আগে তিন লাখ টাকায় দক্ষিণ কলকাতার এক পশ এপ্যার্টমেন্ট বুক করেছে তারা, সেখানকার পরিবেশ আধুনিক, তাতানের স্কুল খুব কাছে, সব কালচার্ড লোকেদের বাস সেই আবাসনে, জল, আলো, সিকিউরিটি ২৪ ঘন্টার পাকা ব্যবস্থা। নিশ্চিন্ত জীবন। সেই প্রোজেক্ট এখন শেষের পথে, এবার বাকী টাকাটা দিয়ে পোজেশান নেওয়ার পালা। তাড়াতাড়ি না করলে অফার হাত ছাড়া হয়ে যাবে। আগে বুক করেছে বলে বেশ শস্তায় পাচ্ছে তারা হাজার স্কোয়ারফুটের ফ্ল্যাটটা। এবার বাকি এক কোটি মিটিয়ে দিলেই নিশ্চিন্ত। একটানা এত কথা শেষ করে, অল্প হাঁপাচ্ছে শিপ্রা। টেবিলে রাখা জলের গ্লাসটা তুলে নেয় সে। মুহূর্তেই সব বোঝেন সমিতা, তবু অল্পক্ষণ চুপ করে থেকে অবুঝের মতন বলেন, এতো ভালো খবর, তা টাকা দিয়ে দিচ্ছ না কেন? পছন্দ করার কাজ তো তোমরা সেরেই ফেলেছ। টাকার জন্যই তো দলিলটা দরকার মা, আবার অনুপম হাল ধরে। এক কোটি টাকা কি মুখের কথা মা? কাল আগরওয়াল সাহেব ও তার লোকজন আমাদের এখানে বিকেলে চা খাবেন, সাথে উকিল থাকবে, দলিলটার একটা জেরক্স দিতে হবে ওদের। তাই ভাবছিলাম আজ যদি তুমি খেয়ার পরিবেশটা একটু দেখে আসতে, আমি নিশ্চিত তোমার খুব ভালো লাগবে। সমবয়স্ক মানুষ, সব রকম আধুনিক সুবিধা, সারাক্ষনের জন্য ডাক্তার, এই সুযোগ সহজে পাওয়া যায় না। মাঝখান থেকে শিপ্রা যোগ করে, খেয়ার মত আধুনিক জায়গায় কি ঘর খালি থাকে মা? বছর খানেক আগে থেকে এপ্লাই করা আছে, এই গতকাল ফোনে জানালো যে একটা ঘর খালি হয়েছে। টাইমিংটা সত্যি পারফেক্ট বলুন? এদিকে সোনার তরীও পোজেশানের জন্য রেডি।

আর কোন রাখ ঢাক নেই। সমিতার কাছে, পুরো চিত্রটা স্পষ্ট। মাকে বলে ফেলতে পেরে শিপ্রা ও অনুপমও জেন অনেক সহজ। তাহলে তোমরা তৈরি হয়ে নাও মা, আমি গাড়ি বের করছি, এই এঁদো গলিতে পার্কিং এক রোজকারের ঝামেলা, এবার এসব থেকে রেহাই পাব সবাই। শিপ্রা ও অনুপম দুজনেই উঠে দাঁড়ালো। সমিতা দেবী তখনো বসে। শিপ্রা চোখের ইশারায় অনুপমকে এগিয়ে যেতে বলে; মাকে একটু ম্যানেজ তো করতেই হবে। ওরা তো ভয় পাচ্ছিল, উনি কি ভাবে রিএক্ট করবেন? কিন্তু শান্তভাবেই নিয়েছেন উনি ব্যপারটা। মা আপনি কোন শাড়িটা পড়বেন, তসর সিল্কটা বের করে দি? আজ রাতে কিন্তু বাইরে খেয়ে ফিরব আমরা সবাই, তাতানকে ক্যারাটে ক্লাসের শেষে তুলে নেব। নিশ্চুপ সমিতা, মা উঠুন, গাড়ি নিচে দাঁড়িয়ে আছে, জানেনই তো, এই সরু গলিতে বেশীক্ষণ গাড়ি রাখা মানেই কুরুক্ষেত্র, তসরটা বের করি? তাগাদা শিপ্রার; কর, সংক্ষিপ্ত উত্তর সমিতার। কিছুক্ষন পরে, গাড়ি মহানগরের রাজপথে, দক্ষিনমূখী। অনু একটা কথা, কি বলছ মা? ভালো কথা মা, দলিলটা নিয়েছ তো, জেরক্স করাতে হবে আজই। হ্যাঁ সাথেই আছে, আশ্বস্ত করেন সমিতা, বলছিলাম, তোদের ওসব রেস্তোরাঁতে খাওয়া আমার পোষায় না। ঐ খেয়া দেখিয়ে আমায় সাদার্ন এভিনিউতে একটু নামিয়ে দিয়ে যাস। ওখানে তিথির এডিটর মেঘার বাড়ি, কিছুক্ষন গল্প করে যাব। মনে মনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল শিপ্রা, যাক, মায়ের তবু বোধবুদ্ধি আছে, আমাদের সন্ধ্যেটা মাটি করবেন না। শাশুড়িকে এখন একটু ভালোই লাগছে তার। সোমার শাশুড়ি যা জাঁদরেল। নিজের প্ল্যানের জন্য নিজের উপরেই খুশি হয়ে ওঠে সে। অনুপম কিছু বলার আগে, তাড়াতাড়ি সায় দেয়, ঠিকই তো, মা বরং মেঘাদের বাড়িতে কিছুক্ষণ থাকুন, ফেরার পথে আমরা ওনাকে তুলে নেব। না তার দরকার নেই, নির্লিপ্ত গলা সমিতার। আমি ঠিক ট্যাক্সি ডেকে নেব, কলকাতার অনেক ট্যাক্সিই এখনো উত্তরের। আর বেশী কথা বলতে সাহস পায় না অনুপম ও শিপ্রা।
খেয়ার পরিচালক তন্ময় রায় তাদের স্বাগত জানালেন, ঘুরে ঘুরে দেখালেন খেয়া। বিভিন্ন ঘাটে আসন্ন খেয়ার অপেক্ষায় যাত্রীরা। নীরব বিষন্ন পরিবেশ। আবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, যাকে বলে 'পশ' পরিবেশ। দম বন্ধ লাগছিল সমিতার। পেশাদারি হাসি হেসে তন্ময় বাবু সমিতাকে বললেন, আমি সাহিত্যপ্রেমী, আপনার মত সাহিত্যিক মানুষ এখানে থাকলে আমরা সবাই গর্বিত হব। আপনার ঘরের আগের বাসিন্দাও কিন্তু বিখ্যাত গায়িকা ছিলেন। আমাদের এখানে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আছেন। শেষ কি পড়লেন? আচমকাই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় সমিতা; হতভম্ব তন্ময়- মানে? না জিজ্ঞেস করছি আপনার কোন ধরনের সাহিত্য ভালো লাগে? ভারী বেখাপ্পা লাগে প্রশ্নটা তন্ময়ের, কিন্তু বুড়ো বুড়ি দের নিয়ে কাজ করতে করতে তাদের খামখেয়ালি /অসংলগ্ন কথায় তিনি অভ্যস্ত। সহজেই সামলে উঠলেন। রবীন্দ্রনাথ তো ক্লাসিক মাসীমা, আজকাল চেতন ভগতও খুব ভালো লিখছেন, অবশ্য ইংরেজিতে। হ্যাঁ দিল্লী বোর্ডের সিলেবাসে শিশু-কিশোর পাঠ্য, সামান্য হাসলেন সমিতা। তন্ময় একেবারে অপ্রস্তুত। পরিস্থিতি সামাল দিতে অনুপম বলে, আজ উঠি তন্ময় বাবু। পরের সপ্তাহে কন্ট্রাক্ট সই করে যাব, আর সেদিনই চেকটা দিলে হবে তো? হ্যাঁ হ্যাঁ নিশ্চই, আপনি অমরের বন্ধু, মানে আমারো বন্ধু, এসব তো জাষ্ট ফর্মালিটি, দেঁতো হাসি তন্ময়ের। আবার গাড়িতে তিনজন, সাদার্ন এভিনিউএর মেঘাদের সাদা বাড়িটা দেখা যাচ্ছে, গলির মোড়েই নামিয়ে দে আমায়; নেমে গেলেন সমিতা, হাত নেড়ে এগিয়ে গেল তার ছেলে ও বৌমা।
বেশ রাত করেই ফিরলেন সমিতা। বসার ঘরে টিভি চালিয়ে জেগে অনুপম ও শিপ্রা, তাতান শুয়ে পড়েছে।
এত দেরী করলে যে মা? আপনাকে এবার একটা স্মার্ট ফোন গিফট করব মা, মোবাইল থাকলে, আপনাকে সহজে ধরা যাবে। সবাই কি সহজে ধরা দিতে চায় শিপ্রা? স্মিত হেসে বললেন সমিতা, তারপরে, নিজের ঘরের দিকে হাঁটা দিলেন। মা, অনুপমের গলা, দলিলটা রেখে যাও, কাল হারুকে দিয়ে জেরক্স করিয়ে আনবো সকালে। আমি এনেছি জেরক্স করিয়ে, মাথা ঘুরিয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন সমিতা, আর হ্যাঁ অনু, কাল বিকেলে আমারো দুজন অতিথি আসবেন।
ধীর পায়ে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করলেন তিনি। বিছানায় বসে রইলেন বহুক্ষণ, এই বিছানায় শেষ নিশ্বাস ফেলেছেন অনুর বাবা। ঐ আরাম কেদারায় বসে বারান্দায় রোদ পোহাতেন শ্বশুর মশাই। প্রায় ক্লাস ফাইবে পড়া পর্যন্ত তো এই বিছানাতেই মায়ের বুকে মাথা গুঁজে ঘুমাতো অনুপম। আজ সে বড় হয়ে গেছে, সোনার তরীতে নিজের জায়গা করে নিয়েছে, মাকেও রাস্তায় ফেলে দেয়নি, খেয়াতরীর ব্যবস্থা অন্তত করেছে, রাগ করবেন নাকি কৃতজ্ঞ হবেন, সমিতা? দক্ষিণের জানালার পর্দা বাতাসে উড়ছে, দূরে হয়ত কোথাও বৃষ্টি হয়েছে, সোঁদা মাটির গন্ধ গঙ্গার বাতাসে। উঠে গিয়ে জানলায় দাঁড়ালেন তিনি, অদূরে খালি রাস্তা ঘুমন্ত সরীসৃপের মত গা বিছিয়ে আছে। জীবনের সিংহভাগ এ পথেই আনাগোনা সমিতার, আনন্দে-শোকে-আশায়-হতাশায়। এই রাস্তার একপ্রান্তে তার নীড়। সেই নীড়ে আজ ফাটল ধরেছে, উল্টো দিকের বোসেদের বাড়ির দেয়ালের ফাটলের মত। শিকড় চাড়িয়েছে চারা গাছ। আর সময় নেই।

পরের দিন, রবিবারটা একটু অন্যরকম। সকাল থেকেই আনমোনা সমিতা। অনুপম একটু অপরাধ বোধে ভুগছে, শিপ্রা সান্ত্বনা দেয়, প্রথম প্রথম মার তো একটু মন খারাপ লাগবেই, কিন্তু দেখো পরে উনিই তোমার সুবিবেচনার প্রশংসা করবেন। তোমার মা আর যাই হোন, মোটেই অবুঝ নন। মায়ের এত প্রশংসা শুনে, একটু অবাক হলেও ভালো লাগে অনুপমের। মা ও শিপ্রার মধ্যে যে মনমালিন্য ফল্গুর মত বইত, তার ধারা শুকিয়ে আসছে, সহজ হচ্ছে শিপ্রা। তাই যেন হয় শিপু, প্রায় স্বগতোক্তি অনুপমের।


আগরওয়াল ও তার দলবল বিকেল পাঁচটায় এসে গেছেন। বসার ঘরে আড্ডা জমে উঠেছে। অনুপমের বন্ধু অমরও এসেছে, আগরওয়াল তারই পরিচিত। বাইরে থেকেই বাড়ি দেখে মুগ্ধ আগরওয়াল, বহুত বড়িয়া রিভার ফেসিং ফ্ল্যাট হোবে এখানে ওনুপোম বাবু, আমি তো বলি আপনিও একটা নিয়ে রাখুন, পরে আর এ প্রোপার্টি বাংগালীরা কিনতে না পারবে। হামি তো সুপার এপার্টমেন্ট বানাবে, গঙ্গা মাঈ ফেসিং, নীচে শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, এ জাগা আর চেনা যাবে না। শিপ্রা আলাপ জোড়ে, অন্তত একটু ডেভেলপ তো করবে জায়গাটা, একবার একটা বড় প্রোজেক্ট হলে, দেখা দেখি আরো হবে। সত্যি ভোল পালটে যাবে এঁদো গলির। রাস্তার নামটাও যদি পালটানো যেত -যদু  মিস্ত্রী লেন - মাগো শুনলেই কেমন লোয়ার ক্লাস মনে হয়, আক্ষেপে ঠোঁট বেঁকে যায় শিপ্রার, তাতানের বন্ধুদের মায়েদের তো আমি ভূয়ো এড্রেস বলে কাটাচ্ছি এতদিন, তাতানকেও শেখাতে হয়েছে। হেসে ওঠে অন্যরা। চুপচাপ বসে থাকা সমিতা হঠাৎ বলে ওঠেন 'তাতানকেও শেখাতে হয়েছে?' কেউ কোন কথা বলে না। তাতান এখন বাড়িতে নেই,বেহালার ক্লাসে।
মাজী একবার ভিতোরটা একটু ঘুরে দেখি যদি আপনার পারমিশন মিলে, চা পানের পরে আগরওয়ালের আবেদন। মাথা নেড়ে সায় দেন সমিতা। শিপ্রা ও অনুপম ঘুরে ঘুরে ঘর দেখাচ্ছে সবাইকে। বসার ঘরে, সমিতার নিজেকে ভীষণ বেআব্রু লাগে। মেঘা এখনো আসছে না কেন? দুমিনিট পরে দরজায় বেল বাজে, মা বোধহয় আপনার গেষ্ট, ভিতর থেকে শিপ্রার গলা, ইংগিত স্পষ্ট, আপনি সামলান। ঠিকই বলেছে শিপ্রা, মেঘা এসেছে, সাথে নামকরা আইনজীবী অনাদিবাবু, মেঘার মামা।
সবাই আবার বসার ঘরে একত্রিত। বড়িয়া বাড়ি মাজী আপনার, পুরানো কন্সট্রাকশান, দামী কাঠ, ভালো দাম হভে, সত্যি ভালো প্রপার্টি - প্রশংসায় উদার আগরওয়াল।
তাহলে এবার দলিলের কপিটা অনুপম বাবু, আগরওয়ালেত উকীল, সিন্ধে হাত বাড়ালেন। এত তাড়া কিসের, আমার গেষ্টদের সাথে আলাপ করবেন না? অনেক্ষন পরে সহজ হয় সমিতা। অনাদি বাবু তো আমার সিনিয়ার আছেন, বিনয়ের অবতার সিন্ধে। হ্যাঁ আর মেঘা আমার বন্ধু, উনি সম্পর্কে, মেঘার মামা, পরিচয় করান সমিতা। সমিতার অসম ব্য়সী বন্ধুর দিকে কৌতুহল নিয়ে তাকায় সবাই, আর কিছুটা উদ্বেগ নিয়ে তার মামার দিকে। ঘরে কয়েক মিনিট নীরবতা, বিকেল থেকে চালু নাটকের ক্লাইম্যাক্স উপস্থিত। হাতের ব্রীফকেস থেকে একটা খাম বের করে সমিতাকে দেন অনাদি মুখার্জী। আপনিই যদি একটু পড়ে দেন, অনুরোধ সমিতার। এসব কি মা? অনুপম বিস্মিত, ক্ষুব্ধ। আমার দলিল অনু। সমিতার কঠিন গলা। অনাদি বাবু বুঝিয়ে বললেন, এটা আপনার মায়ের উইল অনুপম বাবু, উনি গতকাল বানিয়েছেন, আজ আমি সব ফাইনাল করে এনেছি। মুহূর্তে নীরব সবাই। অনাদি বাবু পড়ে  যেতে থাকেন উইলের সারাংশ। সমিতার জীবদ্দশায়, এই বাড়ি কোনদিন বিক্রি হবে না। তাঁর অবর্তমানেও এই বাড়ি ভাঙা বা বিক্রি করা যাবে না। তিনি পুরো বাড়িটা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেছেন, বাংলা সাহিত্য চর্চায় কাজে লাগাতে। সমিতা দেবীর সঞ্চিত অর্থের ৭০% পাবে তার নাতি তাতান, তবে প্রাপ্তবয়স্ক হলে। বাকি ৩০% পাবে লিটিল ম্যাগাজিন তিথি গ্রুপ। তিনি একটি ট্রাস্ট গঠন করেছেন যার মূল দায়িত্বে থাকবে মেঘা ও অনাদি বাবু।

উইল পাঠ শেষ। আগরওয়ালের দলবল ও অমর প্রায় সাথে সাথেই বিদায় নিয়েছে। দুদিনের মধ্যে আমার এডভান্স ফিরত করিয়ে দিবেন অনুপম বাবু, শান্ত কিন্তু প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে বলে গেছেন আগরওয়াল। অমর মুখ লাল করে তাদের সাথেই বেড়িয়ে গেছে। শিপ্রা নিজের ঘরে ট্রলি ব্যাগ গোছাচ্ছে, অনুপম গেছে গাড়ি আনতে; এই অপমানের পরে একরাতও এ বাড়িতে থাকবে না শিপ্রা। তাতান ফিরে এসে পরিস্থিতি খারাপ দেখে, ঠাকুমার কোল ঘেঁষে বসে আছে, কিন্তু সে আর কতক্ষন? তাকে সাথে নিয়েই যাবে শিপ্রা।
অনাদি বাবু আর মেঘাকে বিব্রতকর অবস্থা থেকে মুক্তি দিলেন সমিতা। কি বলে যে ধন্যবাদ দেব আপনাদের, বলে বিদায় জানালেন তাঁদের। যে কোন সমস্যায় আমায় নির্দ্বিদ্ধায় যোগাযোগ করবেন মিসেস সেন। অনাদি বাবুর গলায় প্রশংসা মিশ্রিত সান্ত্বনা। আমি তোমার জন্য গর্বিত সমিতা মাসী, মেঘা গলা জড়িয়ে আদর করে, বিদায় নেয়। এর কিছু পরেই তাতানকে টেনে নিয়ে অন্য হাতে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে শিপ্রার প্রস্থান।

তাতানের কান্নাটা শুধু কানে বাজছে সমিতার, ফাঁকা এই বাড়িতে প্রতিধ্বনিত তাতানের কান্না কি শুধু তার একার? চারপাশে চোখ বোলান সমিতা, সন্ধ্যা নেমেছে, উঠে আলো জ্বালাতে ইচ্ছা করছে না। ঐ আলো আঁধারে যেন কারা এসে দাঁড়িয়েছেন, সারি সারি মুর্তি, তাদের মুখগুলি ভারী স্বস্তিতে ভরা। অনুপমের কত জন্মের পূর্বপুরুষ ওরা, সবাই যেন আশীর্বাদ করছেন তাকে। ক্লান্তিতে দুচোখ বুজে আসে সমিতার, কাল কি হবে কে জানে? কিন্তু আজ এই ক্ষনের বুক ভরা শান্তিটা উপভোগ করতে থাকেন তিনি। তিনি পেরেছেন, এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পেরেছেন, তার বাড়ি, সংসার, ঐতিহ্যকে বাঁচাতে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৩:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপনি একটি পোস্ট দুইবার দিয়েছেন একসাথে। একটা ডিলেট করুন। (ধন্যবাদ)

১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:০১

উজ্জয়নী বলেছেন: ধন্যবাদ একটা মুছে দিলাম

২| ০৮ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:০১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর। তবে আরো গতিশীল লেখা চাই আপনার কাছে।

৩| ০৮ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:৫০

প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল। ধন্যবাদ

১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:০২

উজ্জয়নী বলেছেন: চেষ্টা করব

৪| ০৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৪০

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: অনেক বড় পোষ্ট।

১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:০২

উজ্জয়নী বলেছেন: ঠিক

৫| ০৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমারও স্মাট ফোন ব্যবহার করে ইদানিং তাকে সারাক্ষনই মোবাইল টিপাটিপি করতে দেখা যায়।

৬| ০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:১২

নবজলে ভিজামন বলেছেন: বেশ....

ভালো লাগলো ।

১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:০২

উজ্জয়নী বলেছেন: আজকের বাস্তব

৭| ০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার লেখ্নী। আপনাকে সামহোয়্যারইন ব্লগে স্বাগতম। আমি মনে করি ব্লগে আপনার লেখার পরিপূর্ন মুল্যায়ন পেতে অন্যদের ব্লগে যান, মন্তব্য করুন।

১০ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:০৪

উজ্জয়নী বলেছেন: চেষ্টা করব, আপনার অনুপ্রেরণার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.