নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অতি সাধারন। অনিন্দ্য কিছু নই।

উম্মে সায়মা

সখী ভালোবাসা কারে কয়...

উম্মে সায়মা › বিস্তারিত পোস্টঃ

নব্বই এর আনুষঙ্গিক (স্মৃতির পাতা থেকে)

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৭:০৩



যখন আধো বোলে কথা বলতে শিখি তখন মা ক্যাসেট রেকর্ডারে আমার ভয়েস রেকর্ড করে বাবাকে পাঠাত। সে অনেক অনেক আগের কথা। আজকালকার ছেলেমেয়েরা অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকাবে। মাথা চুলকে বলবে 'ক্যাসেট আবার কি জিনিস? হোয়্যাট আর ইউ টকিং অ্যাবাউট?' তাদের কাছে মনে হবে রূপকথা। গুগল সার্চ দিয়ে পরিচিত করিয়ে দিতে হবে। অথচ আমাদের সময়ে এ জিনিস কত মূল্যবান ছিল। মনে আছে যখন দেশের বাইরে ছিলাম তখন কেউ বাংলাদেশে গেলে পছন্দের গায়কের গানের ক্যাসেট নিয়ে যাবার অর্ডার দিতাম। কত কালেকশান ছিল।

সেদিন বাবার অনেক পুরানো ব্রিফকেস ঘাঁটতে গিয়ে আমার পাঠানো একটা ক্যাসেট খুঁজে পেলাম। বাসায় অনেক পুরানো একটা ক্যাসেট প্লেয়ার আছে। বাবা সব পুরানো জিনিস জমিয়ে রাখে। ফেলতে চায়না। স্মৃতি আঁকড়ে রাখা। আমাদের ভাইবোনদের ছোটবেলার কিছু জামাকাপড়ও এখনো আছে। আরো হাবিজাবি কত কী! যাই হোক, অনেকদিনের অযত্নে ধুলো জমে আছে। ঝেড়ে মুছে অনেক কষ্টে চালু করলাম, শুনে কেমন যেন একটা অন্যরকম অনুভূতি হল। ভাবছিলাম এগুলো আমার কথা? আমার কন্ঠ? কি আশ্চর্য! মা আমাকে বলছে 'মা, বল 'আব্বু'। আমি ছোটবেলায় নাকি খুব জেদি ছিলাম। কোন কারনে বোধহয় রেগে ছিলাম, বললাম 'আব্বু না'। মানে আব্বু বলবনা। মা বলে ' বল 'আম্মু', আমি বলি 'আম্মু না'। মা বলে ' বল 'মুন্না', আমি বলি 'মুন্না না'। এভাবেই চলছে। সবই বলবনা বলবনা করে বলে দিচ্ছি। তার মাঝে আবার আমার মানি (পানি) খাব বলে কান্নাকাটি শুরু। পাশ থেকে অন্য একটা বাচ্চা বিরক্ত হয়ে বলছে ' মানি তোমার মাথায়'। এরকম ছন্নছাড়া কত কথা। এগুলো শুনছি আর হাসছি। ইশ কি দিন ছিল সেগুলো! এরপর আরেকটু বড় হবার পর সূরা, কবিতা আবৃতি, গান, গজল রেকর্ড করে পাঠাতাম। কত স্মৃতি! এ যুগের বাচ্চাদের কী এমন মধুর, আবেগময় কোন স্মৃতি তৈরি হচ্ছে?



আরেকটা মধুর ব্যাপার ছিল চিঠি লেখা। যখন কেবল অক্ষর লিখতে শিখি, 'অ আ' লিখে বাবাকে পাঠাতাম। আমার বাবা মেয়ের কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং অক্ষর দেখে চোখ জুড়াতো। নিশ্চয় তখন বাবার চোখ ছলছল করত। ভাবত 'আমার কোলের বাচ্চাটা লিখতে শিখে গেছে!' আরো কিছুদিন পর যখন শব্দ লিখতে পারি তখন মা রাফ্ করে দিত, আমি দেখে দেখে কপি করতাম। কি লিখছি তা নিজেও ঠিক করে জানতাম না। বাবা আমার কপি পেস্ট দেখেই প্রান জুড়াতো। আর তারও কিছুদিন পর যখন নিজে নিজে লিখতে পারি তখন বাড়ির কে কবে ছোট ভাইকে মেরেছে, কে কবে খেলতে গিয়ে পড়ে ব্যাথা পেয়েছে, স্কুলে কি কি মজার ঘটনা ঘটেছে, সবরকম নালিশ, আবদার সব চিঠি লিখে জানাতাম। মাকেও দেখতে দিতাম না। বাবার সাথে মেয়ের গোপন কথাবার্তা। মায়ের লেখা শেষে খামের মুখ বন্ধ করার ঠিক আগে আমারটা ঢুকিয়ে আঠা লাগিয়ে দিতাম। আজও সেসব চিঠি বাবার পুরানো স্যুটকেসে সযত্নে তোলা আছে। এখন তো যুগ অনেক আপডেটেড। সবাই ই-মেইল, হোয়াটস এ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করে। নতুন প্রজন্ম শুনলে তাচ্ছিল্য নিয়ে বলবে 'চিঠি! হুহ, ব্যাকডেটেড!' আমার ছোট ভাইবোনও এমন সুন্দর অনুভূতির স্বাদ পায়নি।



সে সময় এদেশে সবার হাতে হাতে মোবাইলফোন আসেনি। সবার বাড়িতে ল্যান্ডফোনও ছিলনা। গ্রামগঞ্জে তো না ই। বাবা অনেকদিন পরপর স্থানীয় বাজারের একটা দোকানে ফোন দিত। তখন দোকানের ছেলেটা বাড়ি এসে আমাদের ডেকে নিয়ে যেত। আমরা তিন ভাইবোন আর মা এক কিলোমিটার পথ হেঁটে বাবার 'হ্যালো' শোনার জন্য যেতাম। আমি খুব বেশি কথা বলতাম না। অনভ্যাসের কারণে অস্বস্তি বোধ হত। 'আব্বু কেমন আছেন?' 'আমি ভালো আছি'। বেশিরভাগ সময় এ পর্যন্তই। তবু মনটা কেমন আবেগে ভরে যেত।



আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ছিল ক্যামেরা। এখনকার ডি এস এল আর না, স্মার্টফোন তো ছিলই না। পরিবারের সবার জন্য একটামাত্র ক্যামেরা। ক্যামেরায় রীল ভরা থাকত। এক রীলে ৩৬ টা ছবি তোলা যেত। ভালোমতো প্রস্তুতি নিয়ে, অনেক চিন্তা-ভাবনা, হিসাব-নিকাশ করে, রেডি ওয়ান টু থ্রি বলে ছবি তোলা হত। আর সেসব ছবি ছিল মহামূল্যবান। ছবির নেগেটিভ অনেক যত্নে রাখা হত যাতে পরবর্তীতে ছবি নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে পুনরায় প্রিন্ট করা যায়। এখনো বাসায় কয়েক এ্যালবাম ভরা পুরানো ছবি আছে। আর এখন তো সবাই ডানে তাকাতে ছবি তোলে, বামে তাকাতেও। উঠতে, বসতে, খেতে, ঘুমাতে; সারাক্ষণই, আনলিমিটেড। যারা রীলভরা ক্যামেরা ব্যবহার করেনি তারা কি কখনো বুঝতে পারবে সে অনুভূতি? এক মাইল দূর হেঁটে গিয়ে ফোনে প্রিয়জনের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলা, আপনজনকে চিঠি লিখে মনের কথা জানানো, ক্যাসেট রেকর্ডারে ভয়েস রেকর্ড করে পাঠানোর মত অনুভূতির সাথে কি তারা পরিচিত?

১২.০৭.২০১৬
ছবি: নেট

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৭:৪৫

মানবী বলেছেন: ক্যাসেটে রেকর্ড করে ছোট বাচ্চাদের কথা, বড়দের কথাও আদান প্রদানের প্রথাটা আমাদের পরিবারে ছিলো, সেই শৈশবের ব্যাপারটা মনে হতো শুধু আমাদের মাঝেরই। আপনার স্মৃতিচারনে দেখে চমকে উঠেছি!

ডিএ্সএলআর ছিলোনা, এসএলআর ক্যামেরা ছিলোন। বাবার এস এল আর ক্যামেরাটা নিয়ে অনেক নাড়াচাড়া করেছি। ওটা দিয়েই ফটোগ্রাফিতে হাতে খড়ি হয়েছিলো, সকল অর্থেই আনাড়ি ছিলাম বলে সেসময় বুঝতে পারিনি এটা আসলে হাতে খড়ি নেবার ক্যামেরা নয়।

৭-৮ বছর আগে, কোন একটা দোকানের ক্লিয়ারেন্স সেকশণে দেখি ওয়াকম্যান। সেই ক্যাসেট প্লেয়ার, কি মনে হলো কিনে বাসায় এনে ক্লজেটে রেখে দিয়েছি। এখনও মোড়ক খোলা হয়নি, মনে হয় যেনো একটুকরো অতীত কে ধরে এনে বন্দী করে রাখার চেষ্টা!!

সুন্দর শৈশব নিয়ে মন ছুঁয়ে যাওয়া স্মৃতিচারন পড়ে ভালো লেগেছে, ধন্যবাদ উন্মে সায়মা।

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:১০

উম্মে সায়মা বলেছেন: ধন্যবাদ মানবী আপু। আমার এলোমেলো স্মৃতেকথন পড়েছেন এবং আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল।
আসলেই আমাদের শৈশব অন্যরকম সুন্দর ছিল। সে সময় ক্যাসেটে রেকর্ড করাটা বোধহয় ভালোই প্রচলিত ছিল, বিশেষ করে যাদের নিকটাত্মীয় দূরদেশে থাকত।
বাবার ক্যামেরাটা যে কি ছিল তাই মনে নেই। খুব ছোট ছিলাম। একটু বড় হবার পর বাবা আমাকে উপরে দেয়া ছবির মত ক্যামরা নিয়ে দিয়েছিল। ছোটবেলায় বাবা একটা ওয়াকম্যান পাঠিয়েছিল। কী যে প্রিয় ছিল সেটা! কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। আহা শৈশব!
আমার ব্লগে প্রথম আসায় স্বাগতম আপু।
ভালো থাকবেন।

২| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৭:৫০

মানবী বলেছেন: আপনার এই লেখাটা মনে হয় প্রথম পাতা থেকে আড়াল করা!

:-)

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:১২

উম্মে সায়মা বলেছেন: আমার লেখা এখনো প্রথম পাতায় এক্সেস পায়নি আপু :)
ধন্যবাদ।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০৬

রফিকুলইসলাম বলেছেন: ক্যাসেটে রেকর্ড করে ছোট বাচ্চাদের কথা, বড়দের কথাও আদান প্রদানের প্রথাটা আমাদের পরিবারে ছিলো, সেই শৈশবের ব্যাপারটা মনে হতো শুধু আমাদের মাঝেরই। আপনার স্মৃতিচারনে দেখে চমকে উঠেছি!

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৯

উম্মে সায়মা বলেছেন: ধন্যবাদ রফিকুলইসলাম ভাই।

৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:২৮

মুশি-১৯৯৪ বলেছেন:

একটা কথা মনে হয় লিখতে ভুলে গেছেন- ভিসিপি (ভিডিও ক্যাসেট প্লেয়ার)। আমার যতদুর মনে পড়ে তখন পাড়ায় পাড়ায় ভিডিও ক্যাসেট ভাড়া দেবার দোকান ছিল, ”রোজ ভ্যালী” দোকানটি মনে হয় খুবই জনপ্রিয় ছিল।
নব্বই এর দশকে আমি সিনেমা তেমন না বুঝলেও কয়েকজন আপু আমাকে প্রায়ই আমাকে ক্যসেটের লিস্ট দিয়ে দোকানে পাঠাতেন ,বিনিময়ে আমি পেতাম চকলেট, বাবল গাম (এখন বাবল গাম মনে হয় বিলুপ্ত হয়ে গেছে) ।

১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫২

উম্মে সায়মা বলেছেন: আরো অনেক কিছুই হয়তো লিখিনি। এলোমেলোভাবে যে কয়টা মনে পড়েছে লিখেছি। আর আমার ভিসিপি নিয়ে তেমন স্মৃতিও নেই। চাচা হিন্দি মুভির ক্যাসেট আনতো। তখন হিন্দি বুঝতাম না। নির্বাক সিনেমার মত শুধু মারামারি আর হাঁটাচলা দেখতাম :P
আর কারো বিয়ে বা কোন অনুষ্ঠানের ভিডিও সবাই মিলে দেখতাম।
লেখা পাঠে ধন্যবাদ ভাই।

৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৪৭

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে..... এগুলো সংগ্রহ করে রেখে দিয়েন ,যখন আপনার নাতি-নাতনি হবে তখন তাদের কাছে এগুলোর গল্প সহ এ জিনিসগুলো দেখাতে পারবেন। B-)

১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৮

উম্মে সায়মা বলেছেন: চেষ্টা করতে হবে। একটা ছোটখাটো মিউজিয়াম বানিয়ে রেখে দিতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য :)
ধন্যবাদ শাহরিয়ার কবীর ভাই।

৬| ১৩ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:২৫

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: যখন আধো বোলে কথা বলতে শিখি তখন মা ক্যাসেট রেকর্ডারে আমার ভয়েস রেকর্ড করে বাবাকে পাঠাত তৎকালীন সময়ে এটা অবশ্যই একটা উন্নত চিন্তা চেতনার বহিপ্রকাশ ছিলো।

মাঝে মাঝে মনে হয়, অাগেকার টেকনোলজিই অনেক ভালোছিলো। রেডিও, ক্যাসেট, টেলিফোন ইত্যাদি। যতো উন্নতি ততো অবোনতী হচ্ছে।

পোষ্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

১৩ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০৭

উম্মে সায়মা বলেছেন: যতো উন্নতি ততো অবোনতী হচ্ছে।
ভালো বলেছেন। আসলে আগেকার সবকিছুই মনে হয় যেন ভালো ছিল।
পাঠে এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ বাবু ভাই

৭| ১৩ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: উম্মে সায়মা ,



ইশ কি দিন ছিল সেগুলো!
ইশ কি দিন ছিল সেগুলো!
ইশ কি দিন ছিল সেগুলো!

এর চেয়ে নষ্টালজিক আর কোনও বাক্য নেই ।
+

১৩ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৫৮

উম্মে সায়মা বলেছেন: এর চেয়ে নষ্টালজিক আর কোনও বাক্য নেই
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না.....
পাঠে এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই। প্লাসে অনুপ্রাণিত।

৮| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৪৩

পুলহ বলেছেন: আমিও সম্ভবত চিঠি/ ক্যাসেট প্লেয়ার/ ল্যান্ডফোন জেনারেশনরেই, সুতরাং আপনি যেসব জিনিসের কথা বলেছেন, তার সাথে খুব ভালোমতই পরিচিত।
"মায়ের লেখা শেষে খামের মুখ বন্ধ করার ঠিক আগে আমারটা ঢুকিয়ে আঠা লাগিয়ে দিতাম।"-- আপনার মায়ের চিঠিটার সাথেই আপনার চিঠি- তুলনাটা অনেকটা মায়ের কোলের শিশুর মতই... এ অংশটুকু আমার কাছে সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের চিরন্তন ভালোবাসার মতই সুন্দর লেগেছে !
লেখায় যত্নের ছাপ; গোছানো এবং সুন্দর। অতীতের বিভিন্ন উপাদান তুলে ধরার কারণে লেখাটার অংশে অংশে প্রাচীন আভিজাত্য....
পড়ার সময় খুবই আনন্দ নিয়ে পড়েছি। ধন্যবাদ এতো চমৎকার একটা লেখা উপহার দেওয়ার জন্য।
কিন্তু বুঝলাম্না, আপনি এখনো প্রথম পাতায় এক্সেস পাইতেছেন না কেন? সম্ভবত ব্লগের পলিসি চেঞ্জ হইছে।
শুভকামনা সায়মা !

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:০৬

উম্মে সায়মা বলেছেন: আপনার এমন সুন্দর এবং আন্তরিকতাপূর্ণ মন্তব্যে অসংখ্য ধন্যবাদ পুলহ ভাই।

তুলনাটা অনেকটা মায়ের কোলের শিশুর মতই
সাধারণ একটা লেখায় আপনার অসাধারণ ব্যাখ্যায় মন ভরে গেল।
আপনি আনন্দ নিয়ে পড়েছেন এতে আমার স্মৃতিচারণ সার্থকতা পেল।
আপনার মন্তব্য সবসময় লেখায় অনুপ্রেরণা জোগায়।

সম্ভবত ব্লগের পলিসি চেঞ্জ হইছে
হতে পারে। ব্লগের নিয়ম কানুন খুব ভালো জানিনা।
ভালো থাকুন সবসময়।

৯| ১৫ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: বাবা সব পুরানো জিনিস জমিয়ে রাখে। ফেলতে চায়না। স্মৃতি আঁকড়ে রাখা - আমিও তাই করি। স্মৃতি আঁকড়ে থাকি।
যারা রীলভরা ক্যামেরা ব্যবহার করেনি তারা কি কখনো বুঝতে পারবে সে অনুভূতি? এক মাইল দূর হেঁটে গিয়ে ফোনে প্রিয়জনের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলা, আপনজনকে চিঠি লিখে মনের কথা জানানো, ক্যাসেট রেকর্ডারে ভয়েস রেকর্ড করে পাঠানোর মত অনুভূতির সাথে কি তারা পরিচিত? -- অনেক পুরনো কথা মনে করিয়ে দিলেন।
আমাদের গ্রামের বাড়ীতে একটা রেডিও ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সন্ধ্যের পর পর গ্রামের অনেক লোক এসে আমাদের বাইরের উঠোনে জড় হতে থাকতো বিবিসি'র খবর শোনার জন্য। খবর শোনার পর এটা সেটা আলাপ সালাপ করতে করতে যার যার নিজের বাড়ী চলে যেত।
পোস্টটা পড়ে খুব ভাল লাগলও। + +
মানবীর প্রথম মন্তব্যটাও খুব ভাল লেগেছে।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৫

উম্মে সায়মা বলেছেন: পাঠ এবং বিস্তারিত মন্তব্যে ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই।
স্মৃতি আঁকড়ে থাকি।
বাবারা বোধহয় এমনই হয়। এটাও ভালোবাসার একধরনের বহিঃপ্রকাশ।

গ্রামের অনেক লোক এসে আমাদের বাইরের উঠোনে জড় হতে থাকতো বিবিসি'র খবর শোনার জন্য
নানুবাড়িতে বিদ্যুৎ আসার পর বড় খালা প্রথম টিভি আনে। তখন পুরো বাড়ির সবাই নানুদের ঘরে এসে বিটিভির প্রোগ্রাম দেখত।
সে সময়গুলো অন্যরকম ছিল। আপনার রেডিওর কথা শুনে চোখের সামনে মুক্তিযুদ্ধের নাটক/সিনেমার দৃশ্য ভেসে উঠল।
প্লাসে অনুপ্রাণিত।
মানবী আপুকে পোস্টে পেয়ে আমি খুব আনন্দিত।

১০| ১৬ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৩৪

আজীব ০০৭ বলেছেন: নষ্টালজিক ................

১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:২০

উম্মে সায়মা বলেছেন: স্মৃতি সবসময়ই নষ্টালজিক করে তা সুখের হোক আর দুঃখের হোক।
পাঠে এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ ভাই।
আমার ব্লগে প্রথম আসায় স্বাগতম।

১১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৪১

মুশি-১৯৯৪ বলেছেন:
শৈশবে আমি লুকিয়ে কবিতা লিখতাম, সে ছাইপাঁশ যাই হোক-না, সেখানে বাধা নিষেধের কোন পাঁচিল ছিল না।
সেইখানে আমি পেতাম মুক্তির সাধ, সেইখানে আমি শুধু আমিই ছিলাম।
কিন্তু এখন কবিতা লিখে কেন যানি সেই মুক্তির সাধ আর পাই না।

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৭

উম্মে সায়মা বলেছেন: আমিও লিখতাম। যদিও সেগুলোকে কবিতা না বলে ছড়াই বলা যায়। লুকিয়ে লিখতে হত না। মা বাবা উৎসাহ দিত। কিন্তু হঠাৎ করেই লেখার ইচ্ছে উবে যায়। ছোটদের যা হয় আর কি।
নিজের জন্য লেখ ভাই। তাহলে আবার মুক্তির স্বাদ পাবে।
শুভকামনা

১২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:২৭

টুনটুনি০৪ বলেছেন: +

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

উম্মে সায়মা বলেছেন: ধন্যবাদ টুনটুনি আপু :)

১৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ২:০৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট ছিল। দেরিতে হলেও পড়ে ভালো লাগলো।

ঘুরে এলাম ছোট সময়ের সেই গ্রাম্য জীবন থেকে।
ক্যাসেট, অনেক দূর থেকে এসেও ক্যাসেটে জারিগান শুনতো, আমিও ওদের সঙ্গে নীরবে বসে শুনতাম।
চাকরিতে যোগদানের পর বাড়িতে একটা চিঠি পাঠিয়ে অপেক্ষা করতে হতো, দশ পনেরো দিন, কখনো মাস চলে যেতো উত্তর পেতে!
এখন ভিডিও কলে দেখে দেখে কথা বলা যায়। কি সুবিধা এখন।

শুভকামনা রইল

০৩ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ৩:৪২

উম্মে সায়মা বলেছেন: আমার ব্লগে এসে পুরানো পোস্ট পড়ে মন্তব্য রেখে যাওয়ায় আন্তরিক ধন্যবাদ নয়ন ভাই। কিছুক্ষনের জন্য হলেও আপনাকে ছোটবেলায় ঘুরিয়ে আনতে পেরে ভালো লাগছে। ভালো থাকুন।

১৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১

মাআইপা বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে স্মৃতিচারণ আর ভাষাহীন অনুভূতি।
বুদ্ধি হয়ে দেখেছি বাসায় রেডিও আছে। ক্যাসেট প্লেয়ার অতিথি হয়েছে অনেক পরে।
চিঠিটা ছিল আমার কাছে একটা শিল্প। প্রচুর চিঠি লিখেছি এবং আমাকে দেয়া চিঠিগুলো এখনো যত্ন করে রেখেছি।
আমাদের মত ফ্যামিলিতে টেলিফোন ছিল চাঁদে যাওয়ার মত। প্রথমত: অনেক টাকার ব্যাপার, দ্বিতীয়ত: লম্বা লাইন এবং তৃতীয়ত: টেলিফোন পাওয়ার জন্য টেলিফোন করে নেয়া। মোবাইল আসার পর যখন টেলিফোন পেতে 500 টাকা হয়েছিল; তখন স্বাধ পূরণ করে সারেন্ডার করেছি।
ক্যামেরাটা কোন কালেই ছিল না। তবে সে সময় ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার অনুভূতিই ছিল আলাদা।
শুভ কামনা রইল।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০০

উম্মে সায়মা বলেছেন: পুরনো পোস্ট পরে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে মন্তব্য রেখে যাওয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ।
আহা, আসলেই সে দিনগুলো অন্যরকম ছিল!
ভালো থাকুন।

১৫| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৩৮

জাহিদ অনিক বলেছেন:


স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো।

শুরুটা পড়ে তো হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ ! আম্মু বলতে বললে বলছেন "আম্মু না"-- আব্বু বলতে বললে বলছেন "আব্বু না"
পানি'কে বলছেন মানি। আহারে আধো আধো বোল !

আমি তো ক্যাসেট প্লেয়ার স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে খুলে দেখতাম কথাটা বের হয় কোথা থেকে ! পরে আর জোড়া দিতে পারতাম না, আব্বু পরে নিয়ে যেত মেকানিকের কাছে। আর ক্যাসেটের ফিতা গাছে গাছে বেঁধে রাখতাম বাতাসে সেগুলো সাই সাই শব্দ করত !


পোষ্ট এবং মন্তব্যগুলো সবই ভালো লাগলো।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০৭

উম্মে সায়মা বলেছেন: আহারে আধো আধো বোল !
:`> আমার শুনেই এত্ত ভালো লেগেছিল। খুব মজার ছোটবেলা!
খুলে দেখতাম কথাটা বের হয় কোথা থেকে !
তাইতো আপনি এখন ইঞ্জিনিয়ার কবি সাহেব =p~ ছেলেরা সবসময় হয়ই এমন দুষ্টু। আমার ছোট ভাই আর এক কাজিনের ছোটবেলায় খেলা ছিল খেলনা গাড়ি ভাঙ্গা B:-) কাজিনটা গাড়ির বাক্স নিয়ে এসে বলত, ' চল ভাইয়া গাড়ি ভাঙ্গি!' B-)

পোষ্ট এবং মন্তব্যগুলো সবই ভালো লাগলো।
ধইন্যা ধইন্যা (কপিড ফ্রম বিলি ভাইয়া :P)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.