নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুটা অসামাজিক

অনলাইনে করে খাই। লিখতে ভালোবাসি। আমার সেন্স অফ হিউমার ত্যারা।

কিছুটা অসামাজিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা রুপকথা আর সাথে একটু বাস্তব

০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:৫৪

অনেক কাল আগের কথা। এক রাজ্যে এক রাজা বাস করতো। রাজার মেয়ে রাজকুমারী হবে এত জানা কথা।নাম তার চাদনী।চাদের মতই দেখতে স্নিগ্ধ, নিষ্পাপ সে।

তো রাজকুমারী একদিন সখিদের সাথে বাগানে ঘুরছিলো। তাকে দেখে খুব পছন্দ হয় শহরের ধনী ব্যাবসায়ীর একমাত্র ছেলে ডালিম কুমারের।ডালিম কুমার সুযোগ পেয়ে চাদনী কে জানায় তার মনের কথা।

চাদনী চেয়ে দেখে খানিকক্ষন ডালিম কুমার, বেশ শান্ত ভদ্র ছেলেটা, এর ই যোগ্যতা আছে তাকে পাবার, কিছু না ভেবে হ্যা বলে দেয় রাজকুমারী। শহরের ধনী ব্যাবসায়ীর ছেলে, তার উপর নম্র, ভদ্র , বুদ্ধিমান। সব জেনেও তাদের ভালোবাসায় বাধা দেন নি তিনি।

রাজকুমারী সপ্ন দেখে সুখের। মনে বুজে যায় সুখের বীজ।



এভাবে তারা আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠে, একসময় ডালিম কুমার বিদ্যা নিতে পাশের বিখ্যাত শহর শান্ত নগরে যায়। রাজকুমারী হয়ে পড়ে একা। প্রথম প্রথম ডালিম কুমার রোজ চিঠি লিখে দুত কে পাঠিয়ে দিত রাজকুমারীর সাথে। একসময় সে অনেক টাই ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। সময় করে উঠতে পারে না রাজকুমারীর জন্য।

আমাদের গল্পের রাজকুমারীর আবার বড্ড অভিমান। তার মনে হতে থাকে ডালিম কুমার তাকে ভুলে লিপ্ত হয়েছে অন্য কিছুতে, তাকে চিঠি লেখার অল্প খানিক টা সময় কি তার হয়ে উঠে না ? এভাবে একা একা খুব অভিমান নিয়ে বসে থাকতো রাজকুমারী, কেটে যাচ্ছিলো একলা সময়।

এদিকে ভালোবাসার দেবতা কিউপিড দেবরাজের ক্রোধে বাধ্য হয়ে একদিন নেমে আসেন মর্তে। সর্গের সুখ তার কপালে সয়নি তো। মানব রুপে জন্ম নিলেন এবার পৃথিবীতে, বলা হয় মানুষের ভালোবাসা ছারা নাকি দেবতা রাও অচল, উনি এবার দেখতে চান মানুষের ভালোবাসার স্বরুপ।

একদিন দেবতা কিউপিড এর পরিচয় হয় রাখাল ছেলে সেলিমের সাথে, দুজনে খুব ভাব হয়ে যায় তাদের, সেলিমের আকিয়ে হাত খুব ভালো ছিলো, কোন কিছুর বা কারো বর্ননা শূনলেই একে ফেলতে পারতেন তাকে। সেলিম যে শিল্পের দেবতা এ্যাকিউলাস এর পুত্র তা তিনি নিজেও জানতেন না, যাহোক আমরা গল্পে ফিরে আসি।

কিউপিড একদিন বাগানে ফুলেদের সাথে গল্প করছিলেন, তাদের কাছে পৃথিবীর মানূষের সুখ দুঃখের গল্প শূনছিলেন, এমন সময় রাজকুমারী এর সাথে দেখা হয় তার।

সয়ং দেবতা, তাকে কি আর মর্তের মানূষ উপেক্ষা করতে পারে ? রাজকুমারী আর দেবতার বেশ ভাব হয়ে যায়। রাজকুমারী কাউকে না বলা তার দুঃখের কথা, ডালিম কুমারের তাকে উপেক্ষার করার কথা সব খুলে বলেন দেবতা কে। মর্তের মেয়ের এত কষ্ট দেখে মন গলে যায় দেবতার, তার উপর প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়ে যান উনি। তাই সিদ্ধান্ত নেন একেই তার সর্গের রানী করবেন, মর্তের মেয়ে দেবী হয়ে আবর্তিত হবে সর্গময়। তিনি রাজকুমারী কে জানান তার মনের কথা। ভালোবাসার দেবতার ভালোবাসা, সে যাতা কথা ? কজন বা পায় সে সর্গের হাতছানী, প্রবল ভালোবাসায় নিজেকে ধরে রাখতে পারেন না রাজকুমারী, নিজেকে সপে দেন দেবতার হাতে, দেবতা দুহাত পেতে মাথা নিচু করে আকে অভিবাদন জানান দেবী হিসেবে।



এভাবেই বেশ চলতে থাকে দিন, এবার রাজকুমারীর সাথে দেবতার প্রেম দেখে জ্বলে উঠেন কামনাময় প্রেমের দেবী আফ্রদাইতি।তিনি ঠিক করেন এদের আলাদা না করলে কবে জানি কিউপিডের উপর দেবরাজ জিউসের মন প্রসন্ন হয়ে যায়, আর কিউপিড নতুন দেবী কে নিয়ে সর্গে উঠে আসেন। তিনি রাজার কানের কাছে মন্ত্রনা দেন, রাখাল রুপি দেবতার পরিচয় দেন একজন লুকিয়ে থাকা অপদেবতাকে। অসত্য আর কুটিলতার দেবতা হেরাটোডাস কেউ আদেশ করেন রাজকুমারীর মনে বাসা বাধতে।



রাজকুমারীর চাপা পড়া সপ্ন যা দেবতা কিউপিডের ভালোবাসায় লুকিয়ে ছিলো তা আবার প্রকাশ হয়ে পড়ে। তিনিও শান্তিনগরে যেতে চান বিদ্যা অর্জন করতে, বাধা দেন কিউপিড। কিউপিড ভালোবাসার দেবতা, এ নিয়েই আর এ জন্য ই তার জন্ম, তিনি সবি জানেন, বুঝেন, তিনি চান না দেবী সর্গের মোহ ছেরে পৃথিবীর মায়ায় পড়ুক, তিনি মানা করেন চাদনীকে অন্য কোথাও যেতে।

এবার বাধা শুনে হেসে উঠেন রাজকুমারী, তিনি বলেন দেবতা হয়তো ধারনা করছেন যে চাদনী শান্তিনগরে যাচ্ছেন ডালিম কুমার কে খুজতে, উনি দিব্যি দিয়ে বলেন ডালিম কুমারের সাথে তার দেখাও হবে না, কথা তো দূরে থাক, তবু দেবতার মনে কিসের জানি সংকা কাজ করতে থাকে, উনি চেষ্টা করেন, কিন্তু রাজকুমারী থামে না, দেবতা কে প্রতিজ্ঞা করে যায় সে তার কাছেই ফেরত আসবে।

এরপর রাজকুমারী আর দেবতার যোগাযোগ হতো ফেয়াক্রিস নামক সর্গের পাখির মাধ্যমে, এ পাখি চোখের পলকে পৌছে যেতে পারতো পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে।দেবরাজ জিউস কিউপিডের উপর খুশি হয়ে অনেক আগে উপহার দিয়েছিলেন এ পাখি।



কয়েক মাস পড়ের কথা, মানবরুপী কিউপিড অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে থাকেন দেবী কবে ফেরত আসবেন, কিন্তু বিধি তো বাম।

চাদনী এদিকে খুজে বের করেছে ডালিম কুমার কে, খুব নিয়মিত তাদের দেখা না হলেও মাঝে মাঝে দেখা হতো। তারা ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতেন, একসাথে খেতে যেতে পারস্যের বিখ্যাত রাধুনীর সরাইখানায়। সয়ং দেবতার সাথে এরুপ অন্যাইয় হতে দেখে ফুসে উঠেন দেবরাজ জিউস, কেপে উঠে সর্গ। পাতালের দেবতা হেইডাস কিন্তু আরো ভয়াবহ, মানুষের মৃত্যুর পরের জীবন তিনি নিয়ন্ত্রন করেন, উনি রাজকুমারীর উপর প্রচন্ড রাগে ক্রুদ্ধ হয়ে তাকান রাজকুমারীর দিকে। সে চোখের দৃষ্টি ভয়াবহ , চোখে পড়া মাত্র জ্বলতে শুরু করে রাজকুমারীর শরীর, পুড়ে কালো হয়ে যেতে থাকে শরীর, মনে হয় সে তাপে গলে যাবে সে।

অন্যদিকে জিউস দুত মারফত কিউপিড কে সব খবর ই জানিয়েছেন, ছুটে আসেন কিউপিড, মৃত্যু দেবতার কাছে প্রার্থনা করে রাজকুমারীকে বাচান।

কিন্তু রাজকুমারী এমন কিছু করতে পারে বিশ্বাস করেন না কিউপিড, তার কাছে তার রাজকুমারী তার দেবী। নিজের বিশ্বাসে অটল থাকেন দেবতা বেচারা।



শুরুতে সেলিম নামে দেবতার এক রাখাল বন্ধুর কথা আপনাদের বলেছিলাম যে খুব ভালো ছবি আকে , মনে আছে পাঠকের ? একদিন সেলিম আসেন দেবতার সাথে দেখা করতে, সাথে নিয়ে আসেন একখন্ড মখমলের কাপড়ে আকা ছবির অর্ধেক অংশ।দেবতা কে দেখিইয়ে বলেন তিনি চিনছেন কিনা। কিউপিড বলেন আরেহ এ তো তার রাজকুমারী চাদনীর ছবি, সেলিম কোথা থেকে পেলো।

সেলিম জানায় রাজকুমারী কে সে আগেও দেখেছে যেহেতু এ রাজ্যের ই সন্তান সে, কিন্তু এই কিউপিডের ভালোবাসার দেবী কিনা তা জানতেই তার এ ছবি একে নিয়ে আসা।

ছবি দেখে দেবতা যথেষ্ট খুশি,কতদিন দেখেন না তার দেবীকে, চোখ ভোরে দুটো দন্ড দেখবেন কি, তার আগেই সেলিম ছবির বাকি অংশ দেখান, যাতে দেখা যায় রাজকুমারী একা না, তার সাথে ডালিম কুমার ও বসে আছেন। কিছুক্ষন দেবতার মনে হয় তিনি ভুল দেখছেন, না এ হতে পারে না, তখন উপর থেকে দৈব বাণী ভেসে আসে জিউসের, তিনি নাকি আগেই জানিয়েছেন কিউপিড কে তার সাথে হবা অন্যায় এর কথা। কিউপিড কিছুই বলেন না, চুপ করে থাকেন তিনি। এরপর যতদিন বেচে ছিলেন মানব রুপে কেউ তার মুখ থেকে একটি কটু বাক্য ও শুনে নি।

এ ঘটনার মাস খানেক পরের কথা, দেবতা এখন নিজেকে সামলে নিয়েছেন অনেক টা। রাজকুমারী কে একবার ও জিগেস করেন নি এসব কিছুর কথা, খুব কষ্ট লাগলে অন্য কিছু নিয়ে কষ্টে আছেন দেখিয়েছেন, তবু তার সাথে হবা মিথ্যা, অন্যায় এর ব্যাপারে একটি শব্দ ও করেন নি। তিনি দিন গুনছেন সর্গে ফিরে যাবার। মানুষের কাছ থেকে জেনে নিয়েছেন কষ্ট পেলে মানুষ কি করে। তাই করেন, নেশায় বুদ হয়ে এখনো নিজেকে সামলে নিয়ে ফেয়াক্রিস পাখিকে দিয়ে তার মনের কথা পাঠান প্রেমিকা চাদনীর কাছে, চাদনীও তাকে অনেক ভালোবাসেন তিনি জানেন, কিন্তু খুব ছোট মিথ্যা গুলো তার ক্ষতি না করলেও অনেক বড় মিথ্যা তার পাখা গলিয়ে দিতে পারে দেব রুপে, এতই তাতে পাপ।



দেবতা রাজকুমারীকে ভালোবাসেন, শেষ মুহুর্ত টা পর্যন্ত ভালোবাসতে চান, দেবী করতে না পারেন, ভালো রাখতে চান যতক্ষন পারেন। এভাবেই কেটে যায় সময়, মহাকালের মত গভীর, অসত্য আর ক্লান্ত সময়। হাজার হলেও উনি ভালোবাসার দেবতা কিউপিড,প্রতিহিংসা আর যুদ্ধ দেবতা এ্যারিস না ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:০৫

পংবাড়ী বলেছেন: সময়ের অপচয়

১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩৩

কিছুটা অসামাজিক বলেছেন: আরেহ আমি তো নিজেরে দেবতা কিউপিড ধরে লাইফ স্টোরী লিখলাম !!!!!!!!!!!

২| ০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: পংবাড়ী বলেছেন: সময়ের অপচয়

৩| ১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:০১

রাহাত লতিফ তৌসিফ বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন : পংবাড়ী বলেছেন: সময়ের অপচয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.