নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুটা অসামাজিক

অনলাইনে করে খাই। লিখতে ভালোবাসি। আমার সেন্স অফ হিউমার ত্যারা।

কিছুটা অসামাজিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্রষ্টা যেমনে আমারে শিখাইলো মানুষ হইতে

২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:২৬

বেশ অনেক বছর আগেকার ঘটনা।থাকি মাগুড়া জেলাতে, আব্বুর চাকরি ছিলো ততকালীন ভকেশনালে। আমি পড়তাম পাশেই পিটি আই স্কুলে। রোজ সকাল সকাল আব্বুর সাথে বেড়িয়ে পড়তাম, আব্বুর অফিসে ঢুকতে হতো ৮ টার আগেই। আমার স্কুল অবশ্য ছিলো সকাল ১০ টায়। এই মাঝখানের সময়টুকু আমি খেলতাম। খেলার উপাদান গুলো ছিলো অদ্ভুত। ট্রানজিস্টর, রেজিস্টার, বড় বড় মোটর। তবে আমার প্রচন্ড আগ্রহ ছিলো সে সময়ের সাদাকালো কম্পিউটার টার দিকে। সাদাকালো না বলে সবুজ কালো বললে মানাবে। তখন কি আমি বা কেউ জানতো বহুবছর পরে এই যন্ত্রটাই হবে জীবিকার মাধ্যম ?

একদিন যেখানে থাকতাম, ( যায়গা টার নাম আমার সঠিক মনে নাই, ভায়নার মোর থেকে আরো এপাসে, কিজানি একটা নার্সারীর সামনে ) একজন চোর ধরা পড়লেন। তাকে বেদম ভাবে পেটালেন বাড়ির মালিক, সাথে তার চুরির সব মালামাল ও জব্দ করা হলো। আমি রোবটের মত দাঁড়িয়ে দেখছিলাম । আমার ছোটবেলা থেকে বিচলিত হবার ক্ষমতা অসম্ভব কম। আমার খুব কাছের কেউ এখনো মারা যায় নি, মারা গেলেন ২০০৬ সালে নানী। কতটা আদর করতেন আজ এত বছর পর মনে নাই। সুধু মনে আছে নানী আমরা পালাপর্বনে রংপুর থেকে ফেরার সময় কাদতেন আচলে মুখ ঢেকে। সে নানী মারা গেলেন, আমরা খবর পেয়ে যতটা দ্রুত সম্ভব রংপুরে চলে গেলাম। বাসা ভর্তি সবাই কাদছে, আমি অনেক বার চেষ্টা করেও কাদতে পারলাম না।

তাকে পেটানোর পর যে ভদ্রলোকের বাসায় চুরি হয়েছিলো তার মনে মায়া হলো। চোর বেচারা খুব মোটাসোটা ছিলেন না, রোগা পাতলা, দেখলেই বোঝা যায় কদিন ধরেই খুব ভালো করে খেতে পান না। তাকে দেখে মায়া হবাই স্বাভাবিক।তাকে বসিয়ে রেখে ভদ্রলোক বাসায় গেলেন খাবার দাবার কিছু আনতে। তাকে পালাতে মানা করে গেলেন, আর নাকি পেটাবেন না।

চোর ভদ্রলোক কে দেখে আমি একটু এগিয়ে গেলাম। আমি ছোটবেলাতেই দেখতে খুব সম্ভবত ইনোসেন্ট ছিলাম। আমাকে দেখে চোর ভদ্রলোক হাসলেন আমার দিকে তাকিয়ে। তার ঠোটের পাশ দিয়ে কাটা যায়গা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়তেছে। হেসে উঠে দাঁড়িয়ে বিরবির করতে করতে চলে গেলেন। “অভাবে স্বভাব নষ্ট” হবার জন্য নিজেকে দোষ দিচ্ছিলেন, গালিগালাজ করতেছিলেন।
সেদিন আমি শিখেছিলাম দুটা ব্যাপার।
মানুষ বিগরে গেলেও তার বোধটুকু ফিরতে পারে। এজন্য আমি ক্ষমা করে দেই, মানুষ যত অপরাধ ই করুক, একদিন সে নিজেকেই অভিসাপ দেয়। যে নিজেকে অভিসাপ দিতে পারে সে পুরোটা অমানূষ হয়ে যায় নাই।
আরেক টা হলো প্রাচীন প্রবাদ, অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়। কোন কারন ছারা দুদিনের রেখে দেয়া ভাত ও নষ্ট হয় না।
যদিও আমাকে এই ব্যাপার দুটো শেখানোর জন্য স্রষ্টা কেনো একজন মানুষ কে মার খাওয়ালেন তার জবাব অনেক দিন তাকে জিগেস করেও পাই নি। স্রষ্টা ব্যাস্ত বেশ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


সারমর্ম নেই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.