নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার শেষ নেই...

ভ্রমরের ডানা

ভালো থাকুক কবিতাগুলো ...

ভ্রমরের ডানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ই-কমার্স ও বাংলাদেশঃ দ্বিতীয় কিস্তি

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৩



১৯৯৮ সালে সকল প্রকার কম্পিউটার সামগ্রীর উপর ভ্যাট ও শুল্কহার তুলে নেওয়া হয়। এর ফলে মানুষ কম্পিউটার কেনার দিকে ঝুকে পড়ে। প্রায় আট লক্ষ কম্পিউটার বিক্রি হয় সে সালে। ইন্টারনেট সংযোগচালু হলে দেশের মানুষ ইন্টারনেটভিত্তিক বিনোদন বা যোগাযোগ সুবিধাদি লাভ করে। কিন্তু ব্যবসা করার দিকেও এদেশের মানুষের মন ছিল।

আজ দ্রুততার সাথে দিন দিন দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিকতম প্রতিবেদন থেকে দেখা যায় যে বাংলাদেশে ৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত এবং আরো ২ কোটি মানুষ শীঘ্রই এর আওতাভুক্ত হবে।

এতে করে যা হচ্ছে বা হবে তা সত্যিই একটি বিপ্লব। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরা সেই সম্ভাবনার দুয়ারে দারিয়ে আছি। ইন্টারনেটে বেচাকেনার যে ওয়েবসাইট গুলো রয়েছে সেগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। তাই ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন কোম্পানি গুলো যেভাবেই হোক না কেন ক্রেতার বিশ্বাস অর্জনের জন্য প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কম খরচে পন্য কিনতে আগ্রহী ক্রেতারা এই অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রতি ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং দিনদিন তা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে ই-কমার্স চালু হবার ইতিহাস বেশী পুরনো নয়। ১৯৯৯ সালে কিছু যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উপহার সামগ্রী আদান প্রদান ও স্থানীয় সংবাদ সরবরাহের জন্য www. munshigi.com নামে একটি বাংলাদেশী ওয়েবসাইট চালু করে।এরপর ২০০০ সালে দেশের চাকুরীজীবি ও চাকুরীপ্রত্যাশীদের জন্য দেশের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ কেরিয়ার ভিত্তিক ওয়েবসাইট চালু হয়।

এরপর শপিং ভিত্তিক অয়েবসাইট "হাটবাজার" চালু হয়। বর্তমানে তাদের প্রায় ১৭০০ কর্মী দেশেবিদেশে নিয়োজিত রয়েছে। কেনাবেচা করার জন্য সম্ভবত সবচেয়ে নিরাপদ ওয়েবসাইট হল "সেলবাজার"। তারা ২০০৬ সালে সেলফোনে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে কেনাবেচার পদ্ধতি চালু করে। ২০০৭ সালেই তারা ওয়েবসাইটভিত্তিক ই-কমার্স চালু করে। এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে দেশের যে কোন প্রান্তে যে কোন মানুষ কোনধরনের কোন নিবন্ধন ও জটিলতা ছাড়াই কেনাবেচা করতে পারে।

অনলাইনে শপিংমল করা কি সম্ভব? যে কাউকেপ্রশ্ন করলেই উত্তর হবে "কি ভাই মস্করা করছেন?" এই কঠিন কাজটিকে সম্ভব করেছে চরকা ডট কম। ইন্টারন্যাশনাল ও ন্যাশনাল ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে যে কোন জিনিস ক্রয় করার সুবিধা এখানে দেওয়া হয়েছে।

এভাবেই ধীরে ধীরে বাজারে এসেছে "এখানেই ডট কম", "বিক্রয় ডটকম " ইত্যাদি। বই কেনার ওয়েবসাইটভিত্তিক "রকমারি ডটকম " বইপ্রেমীদের জন্য নিয়ে এসেছে হরেক রকম বই। অন্যরকম ওয়েব সার্ভিসেস লিমিটেডের এই ই-কমার্সভিত্তিক ওয়েবসাইটটি ১৯শে জানুয়ারি ২০১২ সালে বই, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, সিডি, ডিভিডি, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদি পন্য সেবা নিয়ে হাজির হয়। যতখুশি তত পরিমান পন্যে সরবরাহ খরচ ৩০ টাকা ধরা হয়, এরপর বই প্রতি ২০ ভাগ ছাড় ও ৩০ দিনে নষ্ট মাল ফেরত ইত্যাদি লোভনীয় প্রস্তাব ক্রেতাদের ভেতর আলোড়ন সৃষ্টি করে। "বইমেলা" নামে আরেকটি অনলাইন বুক ষ্টোর গত তিনবছর ধরে দেশের বড়বড় পাবলিকেশন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনে অর্থ আদান প্রদানের অনুমতি দিলে ই-কমার্স খাতে পরিবর্তনের নতুন হাওয়া বয়ে যায়। অনলাইনে অর্থ আদানপ্রদান করার সুবিধাকে ভিত্তি করে ২০১০ সালে গড়ে ওঠে ফ্রি-ল্যান্সিং। সেই সালে GARTNER Inc. এর একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ফ্রি-ল্যান্সিং সম্ভাবনাময় দেশে গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম সেরা দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৩ সালে ওডেক্স ও এলেন্স নামের দুটি ফ্রি-ল্যান্সিং ওয়েবসাইটের জরিপে বাংলাদেশ ১৮০ টি দেশের মধ্যে ৭ম ও ৮ম স্থান দখল করে। ফ্রি-ল্যান্সিং এ বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের এমন সাফল্যে আসে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সময় উপযোগী সিধান্তের কারনে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ফ্রি-ল্যান্সারদের জন্য ৫০০ ডলার পর্যন্ত অনলাইন পেমেন্ট সুবিধা চালু করে এবং ভবিষ্যৎ সময়ে তা বাড়ানোর সিধান্ত নেয়। ফলে অনলাইন ভিত্তিক এই ই-কমার্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখতে সমর্থ হয়। এরপরেই বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বিএএসআইএস) সাথে ওয়েস্টিন হোটেলে একটি ই-কমার্স মেলার আয়োজন করে। মেলার থিম ছিল " অনলাইন শপিংঃ এনিথিং, এনিটাইম"।

গতবছর বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেছে। ফলে দেশের মানুষ চাইলেই এখন যেকোন বিদেশী পন্য ঘরে বসেই কিনতে পারবেন। ই-কমার্স বাংলাদেশের অর্থনীতির পালে নতুন হাওয়া বইয়ে দিতে শুরু করেছে। এই খাতের দ্রুত প্রসার ও উন্নতির প্রতিচ্ছবি দেখে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩

বিজন রয় বলেছেন: গুড পোস্ট। ++++

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: ধন্যবাদ বিজন ভাই। শুভকামনা জানবেন।

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ই-কমার্স বাংলাদেশের অর্থনীতির পালে নতুন হাওয়া বইয়ে দিতে শুরু করেছে। এই খাতের দ্রুত প্রসার ও উন্নতির প্রতিচ্ছবি দেখে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী।

আশাবাদী আপনার সিরিজের পূর্নতারও :)

আশাকরি দারুন কিছু দেবেন, জানাবেন যাতে লাখো কোটি বেকারের সহজ চেতনা সহজে জাগ্রত হয়- অনলাইনের পথ বেয়ে :)
++++++++++++++

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: অনলাইনে আমার আগেই এই বিষয়ে অনেক পোস্ট অনেক টিউটরিয়াল ভিডিও করা আছে। আমি চেষ্টা করব যতটুকু সম্ভব তথ্য একত্রিত করার। ভবিষ্যৎ সময়ে এমন করার পরিকল্পনা আছে। অনেক কার্যকরী বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। :)

অনুপ্রাণিত হলাম। ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভিগু ভাই।

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৪

ইনফেকটেড মাশরুম বলেছেন: বাংলাদেশ এখনো ই-কমার্সের প্রাথমিক স্তরেই আছে অন্যদেশের তুলনায়। এখানে ই-কমার্সের চেয়ে ই-মার্কেটিং বেশি হচ্ছে আসলে। যদিও এটাকেও ই-কমার্সের একটা স্তর বলতে পারেন। দেখবেন প্রায় সব সাইটেই আইটেম লিস্ট আর অর্ডারের জন্য নাম্বার কিংবা এমন কিছু তথ্য দেয়া থাকে। সরাসরি কেনা যায় না। এখন কিছু সাইটে যায়, পেমেন্ট গেটওয়ের ঝামেলা মেটানো হয়েছে। কিন্ত দিল্লী এখনো বহু বহু দূর...

আমি চায়নাতে থাকতে যা কেনার তার ৯০% তাওবাও থেকেই কিনতাম। সম্ভবত তাওবাওয়ের ব্যবসার পরিমান আমাজনের চেয়েও বেশি। আমার এক বন্ধু বলছিলো চায়নার কেনাকাটার বেসিরভাগই হয় তাওবাওতে। সকল দোকানের একটা স্টোর তাওবাওতেও থাকে। আর সেখানেই চলে সবার আসল ব্যবসা। পণের মান এবং অন্য অনেককিছু নিয়ন্ত্রনের জন্য রয়েছে নানা ব্যবস্থা। যেমন ক্রেতা যখন কনফার্ম করবেন পণ্য পেয়েছেন এবং গ্রহনযোগ্য, তখনই পেমেন্ট ক্লিয়ার হবে। আবার নির্দিস্ট সময়ের মধ্যে ফেরত দিতে চাইলে সেটাও নিশ্চিত করে তাওবাও, বিক্রেতা নিতে না চাইলে দায় নেয় তাওবাও আর বিক্রেতার শপ ক্লোজ হয়ে যায়। আর নতুন শপ খুলতে সরকারী নানা ভেরিফিকেশনের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়। আমাজন কিংবা ই-বে থেকেও যখন কিছু কিনি সেটা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকি না।

আমাদের দেশে এটা আসতে কিংবা পরিপুর্নরুপে চালু হতে আরো দেরী হবে, কারন শিক্ষার আর যাই হোক, মান এখনো স্মার্টফোন কোনভাবে চালানোর উপযোগী হলেও পড়ে এবং বুঝে ই-কমার্স পর্যন্ত চলে যাওয়ার মত হয়নি। তাই বিশাল জনসংখ্যার দেশ হলেও টার্গেট গ্রুপ লিমিটেড হয়ে যায়। আর আমাদের দামাদামি আর অনেক দেখে শুনে কেনার মানসিকতা তো আছেই। তবে ভবিষ্যতে এটাই প্রধান ধারা হয়ে যাবে কেনাবেচার...

পোস্টে ভালোলাগা রইলো...

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: আসলে ই- কমার্স বলতে শুধু নেটে বসে জিনিস কেনাবেচা তা কিন্তু নয়। আমি কিন্তু এই বিষয়টা আমার লেখাতে তুলে ধরেছি। আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ইন্ডেক্স দেখেন তবে ৭-৮ নাম্বারে বাংলাদেশকে পাবেন। এমন সম্ভাবনাময় সেক্টর আমার মতে বাংলাদেশে পোষাক শিল্প ছাড়া আর দ্বিতীয়টি নেই। এই বিষয়ে আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৮

সাহসী সন্তান বলেছেন: চমৎকার একটা পোস্ট! শুভ কামনা জানবেন!

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: ধন্যবাদ সাহসী ভাই, আপনার উপস্থিতিতে অনুপ্রাণিত হলাম।

৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০২

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ভালো পোস্ট :)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৪

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: ধন্যবাদ :D

৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৫

রিকি বলেছেন: পোস্টে অনেক অনেক ভালোলাগা রইলো। দরকারী পোস্ট। :) :) :) :) :) :) :)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৫

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: ধন্যবাদ রিকি ভাই, আপনার মন্তব্যে উৎসাহিত হলাম। সামনে আরো কিছু পোষ্ট দিব ভাবছি।

৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৩৪

মিহির মিহির বলেছেন: খুবই তথ্যবহুল লেখা।খুব ভালো লাগল।
শুভকামনা রইল।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ মিহির ভাই!


অনেক অনেক শুভকামনা রইল!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.