নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা শহরের ফাস্টফুড আর রেস্টুরেন্টে খেতে খেতে মুখে অরুচি এসে গেছিল। ভাবছিলাম কিছু আনকমন খাবার কোথায় পাব? ইতিমধ্যে খোজ পেয়ে যাই গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার টোক বাজারের হোটেল নিরিবিলির।
তোতা মিয়ার হোটেলের অবস্থানঃ
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার টোক ইউনিয়নের টোক নয়ন বাজারে টোক বাজারের পূর্ব পাশে অবস্থিত বিখ্যাত নিরিবিলি হোটেল। গাজীপুরের কাপাসিয়া, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া আর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এর মিলন স্থানে এই টোক বাজার।
তোতামিয়ার নিরিবিলি হোটেলের কো-অর্ডিনেটঃ N 24°15'35.472" E 090°38'41.768"
(এই কো-অর্ডিনেট কপি করে গুগল ম্যাপে পেইস্ট করে সার্চ দিলেই হোটেলের নির্ভুল লোকেশন দেখা যাবে)
নিরিবিলি হোটেলের ইতিহাসঃ
তোতা মিয়ার জন্ম এই এলাকাতেই। ৮ ভাইয়ের সংসার। তোতা মিয়া প্রায় ২০ বছর আগে কক্সবাজের এক হোটেলে বয় হিসেবে কাজ শুরু করেন, সেখান থেকে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে দীর্ঘদিন বাবুর্চি হিসেবে কাজ করেন। রান্নার হাত ভালো থাকায় চট্টগ্রামের ওই হোটেলের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, সাথে হোটেলের বিক্রিও বেড়ে যায়। তোতামিয়ার রান্নার খ্যাতি একসময় এই টোক বাজার এলাকার লোকজনের কানেও পৌঁছে যায়। এক পর্যায়ে তারা তোতা মিয়াকে অনুরোধ করেন নিজের এলাকায়ই একটি খাবারের হোটেল দেওয়ার জন্য। সে অনুরোধে সাড়া দিয়ে সাত বছর আগে তোতা মিয়া টোক নয়ন বাজারে নিরিবিলি পরিবেশে চালু করেন ‘নিরিবিলি হোটেল’ নামের এই হোটেলটি। তোতা মিয়া, তার ছেলে ও তার একভাই মিলে চালান এটি। সব রান্নার তত্বাবধানে থাকেন তার স্ত্রী সালেহা বেগম। তিনি ও তার স্ত্রী নিজে বাড়িতে রান্না করে হোটেলে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ টি আইটেম তৈরী করা হয়। সকাল ৮টা থেকে একটানা রাত ২টা পর্যন্ত খোলা থাকে তোতা মিয়ার হোটেল। তবে সব ধরনের আইটেম পেতে হলে অবশ্যই দুপুর ১ টার মধ্যে সেখানে উপস্থিত হতে হবে।
তোতা মিয়ার সাথে সেলফি
খাবারের আইটেমঃ
এখানে প্রায় ৭০ আইটেমের খাবার পাওয়া যায়। যার মধ্যে প্রায় ৪০ পদের ভর্তা এবং বাকি ৩০ পদের বিভিন্ন আইটেমের মাছ-মাংস ও ডাল। শুধুমাত্র আচার পাওয়া যায় ১৪-১৬ রকমের। এখান থেকে মাঝেমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও বড় বড় ভিয়াইপিদের জন্য ভর্তা-ভাজির আইটেম নিয়ে যাওয়া হয়। হোটেলের ভিতরে তোতা মিয়ার সাথে তোলা বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপি, সরকারী অফিসারের অসংখ্য ছবি ফ্রেমে বাধাই করে টানানো আছে।
তবে না খাইলে পুরাই মিস আইটেমগুলো হলঃ
মাংসঃ হাসের মাংস, মুরগীর মাংস, কবুতরের মাংস, কোয়েল পাখির মাংস
মাছ: শোল মাছ, রুই মাছ, চিংড়ি মাছ, বাতাসী মাছ, বাইন মাছ, ইলিশ মাছ, গুড়া মাছ, শুটকি মাছ , বেলে মাছ, টেংরা মাছ, কৈ মাছ,
ভর্তা: আলু ভর্তা, সর্ষে ভর্তা, কালো জিরা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, মরিচ ভর্তা, ডিম ভর্তা, পেপে ভর্তা, টাকি মাছ ভর্তা, পেপে ভর্তা, সবজি ভর্তা, ডাল ভর্তা, শিম ভর্তা, আরো অনেক(নাম মনে নেই!)
আচার: বড়ই আচার, জলপাই আচার, চালতের আচার, মিক্সড আচার(বড়ই+তেতুল+চালতে)
ডাল: মাসকালাই, মশুর ডাল, মুগ ডাল,
সবজি: ১২ রকমের মিক্সড সবজি, ঝিংগা, চিচিংগা, পটল, আলুসীম, বরলা
ডেজার্ট- পায়েস, দধি, মিষ্টি
সবশেষে আসি পানের কথায়। হোটেলের সামনেই আছে স্বপন ভাইয়ের “ভালবাসার মিষ্টি পান”। ১০-৩০ টাকার মধ্যে ৪০ রকম মশলা দেয়া পান পাওয়া যায়। নামের সাথে টেস্টের মিল আছে পানের, মুখে দিলেই মাখনের মত সব গলে যাবে পানের।
তোতা মিয়ার হোটেলের পাশেই আছে ছোট্ট একটি বাজার। ভাগ্য ভাল হলে সেখানে পেয়ে যেতে পারেন আসল গরুর দুধের সর। ৫০ টাকা প্লেট নিবে। না খাইলে পুরাই মিস করবেন।
ভর্তা-ভাজির একাংশঃ
সুস্বাদু বিভিন্ন আইটেমঃ
স্বাদ ও দামঃ
স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় তোতা মিয়ার হোটেল। স্বাদের ব্যাপারে কোন কথা হবে না। মুখে দিলে নিজেই টের পাবেন। তবে দাম গ্রামঞ্চলের তুলনায় একটু বেশী মনে হইছে আমার কাছে, বিশেষ করে কবুতরের মাংস, চিংড়ি মাছ এর। যদিও ঢাকার তুলনায় এই দাম কিছুই না। এছাড়া অন্যান্য আইটেমের দাম ঠিক আছে।
যেভাবে যাবেনঃ
তোতা মিয়ার নিরিবিলি হোটেলে আসতে হলে ঢাকার গুলিস্তান (ফুলবাড়িয়া) থেকে ঢাকা পরিবহন, প্রভাতী বনশ্রী পরিবহন, ঢাকার মহাখালী থেকে ভাওয়াল পরিবহন, জলসিড়ি পরিবহন, বন্যা পরিবহন, অনন্যা পরিবহন, অনন্যা ক্লাসিক পরিবহন, উজান ভাটি পরিবহনের গাড়ি দিয়ে কাপাসিয়া হয়ে টোক নয়ন বাজারে যেতে হবে। এছাড়া গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে সরাসরি রাজদূত বা পথের সাথী পরিবহনের গাড়ি দিয়ে সরাসরি টোক নয়ন বাজারে যাওয়া যায়। মহাখালি থেকে টোক বাজারের ভাড়া পড়বে ১১০-১৩০ টাকার মধ্যে। আর চৌরাস্তা থেকে টোক বাজারের ভাড়া পড়বে ৮০-৯০ টাকার মধ্যে।
মহাখালি থেকে টোক বাজার যেতে সময় লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা, সাথে যোগ হবে জ্যামের সময়। এবং চৌরাস্তা থেকে দেড় ঘণ্টার মাঝেই পৌছে যাবেন টোক বাজার।টোক বাজার নেমে ২০০ গজ বাম দিকের রাস্তায় হাটলেই দেখা মিলবে হোটেল নিরিবিলির।
ফেরার সময় হোটেলের সামনের মেইন রোডে দাড়ালেই পেয়ে যাবেন ঢাকাগামী বাস। যেকোন একটায় উঠে পড়লেই হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে। পোষ্ট বিষয়ক কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করুন, যথাসম্ভব চেষ্টা করবো।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৫
ওয়াসিম সাজ্জাদ বলেছেন: গত ২৮শে জানুয়ারী মানে গতপরশুদিন গিয়েছিলাম। ঢাকায় ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। তাই গতকাল লিখে পোষ্ট করলাম
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৪৯
জগতারন বলেছেন:
এটা পোষ্ট নাকি বিজ্ঞাপন?
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২৭
ওয়াসিম সাজ্জাদ বলেছেন: ভাই আপনার কাছে যেটা মনেহয় আমি তাতেই খুশি। তবে বাড়িয়ে মিথ্যা কিছু বলিনি এটা নিশ্চিত থাকতে পারেন।
ধন্যবাদ
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: খাওয়ার সৌভাগ্য হবে কী না জানিনা। তবে জানার সৌভাগ্য হলো, এতেই আমি খুশি। আল্লাহ চাইলে হয়তো একদিন খাওয়ার সৌভাগ্যও হতে পারে।
ধন্যবাদ ভাই ওয়াসিম সাজ্জাদ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০২
ওয়াসিম সাজ্জাদ বলেছেন: ইনশাল্লাহ আপনার একদিন সুযোগ হবে তোতা মিয়ার হোটেলে খাওয়ার।
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২২
পূরান পাগল বলেছেন: হোটেলে খেতে সারাদিন জার্নি !!! মানুষ পারেও
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬
ওয়াসিম সাজ্জাদ বলেছেন: ভাই ঢাকার রুটিন মাফিক খেয়ে খেয়ে অরুচি এসে গেছিল। ওখানে একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে রান্না আর পরিবেশন করা হয়। স্বাদও অনেকটা বাড়ির রান্নার মত। তাই সারাদিন লাগলেও খারাপ লাগেনি একটুও। এবং রাজেন্দ্রপুর ক্যন্টনমেন্টের ভিতরের রাস্তার দুপাশের সৌন্দয্যও কম নয়। সব মিলিয়ে ভাল লেগেছে
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩৮
কালীদাস বলেছেন: খিদা লাইগা গেল ছবিগুলা দেইক্ষ্যা
৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৪৮
দুর্দান্ত কাফেলা বলেছেন: যতটা আশা নিয়ে গিয়েছি ততটা হতাশ হয়েছে
১) বলা হয় ৬০ প্রকার ভর্তা - বাস্তবে ১২/১৫ প্রকার
উত্তর - আজ সুধু এ কয়েক প্রকার
২) টেস্ট - সিলেটের পাঁচ ভাই বা জাবির বাংলা হোটেলের কাছাকাছি ও নয়
৩) দাম - ভর্তা ভিজি দিয়ে ৫ জনের বিল ১১০০/=
(এটি সুধু এফ বি অপ প্রচারনা - সম্পুর্ণ ব্যক্তিগত মন্তব্য )
কিছু মন্তব্য -
নাসরিন সুলতানা totallly faltu ekta place....joghonnno khabar
Samiour Sani kotha sotto vi..tasteless khabar! tobe oder chatni ta valo
Himu Ahammed তাহলে তো বলা যায় "নিরিবিলি বাটপারি"!!
Nazmul Haque একেবারে বাজে খাবার।
Raihan Minhaz পুরাই ফালতু একটা জায়গা।
মেহেদী হাসান নিলয়: এইখানের কয়েকজন চিনেনাই নিশ্চিত, এইটা কোন্ নিরিবিলি; আর রসনা তো জিভের উপর।
আমরাও কিন্তু ৬০ পদ ভর্তা পাইনাই, কিন্তু ভর্তা আর ভাজি মিলায়ে অন্তত ২০-২৫ পদ ছিলোই। ইনি সম্ভবত দুই প্লেট করে ভর্তা-ভাজি নিয়ে বসছিলেন- দাম ওরম হওয়ার আর কোনো লজিক দেখিনা। প্রতি প্লেট ২০০ টাকা সাধারণের হিসাবে তো বেশিই। আমাদের পোষায়ে গেসিল টেস্টের কারণে।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি ওখানে খাওয়ার কত ঘন্টা পর পোস্ট লিখেছেন?