নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Never Say Never Again

...

মধুমিতা

আমি তোমার কাছে পৌছতে পারিনি পথে হয়েছে দেরী। তবু আজো স্বপ্ন দেখি - বন্ধ দড়জায় কড়া নাড়ি ।। আমি এক অতি সাধারণ মানুষ, আড়ালে থাকতেই পছন্দ করি ...

মধুমিতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরবের বেদুঈন, সুক তালাতা এবং হেরিটেজ মিউজিয়াম-শেষ পর্ব (আরব ডায়েরি-৯০)

০৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১০





১ম পর্ব

২য় পর্ব

৩য় পর্ব





বিন হামাসান হেরিটেজ ভিলেজের কথা অনেক শুনেছি। আমার পরিচিত এক টিএ বলেছিল সেখানে নিয়ে যাবে। কিন্তু সে আমেরিকায় চলে যাওয়ায় তা আর হয়ে উঠেনি। আবহা থেকে খুব একটা দূরে নয়। কিন্তু পরিচিত কারো চেনা জানা না থাকায় কাছের জায়গাটিতেই এতদিনেও যেতে পারিনি।



আবহাতে কেউ অফিসিয়াল ভিজিটে এলে, কাজকর্ম শেষে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ভিলেজ পরিদর্শন করলে নাকি আসির প্রভিন্সের ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে খুব দ্রুত একটা ধারণা পাওয়া যায়। ইংলিশ ডিপার্টমেন্টে একটা কনফারেন্স হল, বাহিরের বিভিন্ন দেশের ইউনিভার্সিটি থেকে টিচাররা এসেছে। কনফারেন্স শেষে তাদেরকেও বিন হামাসান হেরিটেজ ভিলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দলের হয়ে সাঈদ সেখানে ঘুরে এসেছে। সাঈদ জায়গাটির দারূণ প্রশংসা করল।



একদিন সে আমাদের সবাইকে সেখানে নিয়ে যেতে চাইল। স্বভাবতই আমি রাজি হয়ে গেলাম। যদিও সাঈদ প্রোগ্রাম আয়োজন করলে আমরা অনেকেই ভীত থাকি। সে নানামূখী তৎপরতার মাধ্যমে প্রোগ্রামকে আকর্ষনীয় করতে গিয়ে মূল লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যায়।



সাঈদ “ওয়াদি বিন হাশবাল” এর মরুভূমিতে রাতে একটা বারবিকিউ পার্টি করবে করবে বলে দুই বছর পার করে দিল। “ওয়াদি বিন হাশবাল” চমৎকার একটি জায়গা, আমরাও খুব আগ্রহী ছিলাম। আমাদের তাগাদায় অতিষ্ঠ হয়ে সে হঠাৎ করেই “ওয়াদি বিন হাশবাল” এর মরুভূমিতে চাঁদ দেখার আয়োজন করল। আমরা প্রায় ৬০ কি.মি. ড্রাইভ করে গিয়ে দেখি সেখানে মেঘের কারনে চাঁদই দেখা যাচ্ছে না। ফলে আমরা রাস্তা থেকেই শুধুমাত্র মেঘ দেখে ফিরে আসলাম। আদিল ভাই কোন কারনে আমাদের সাথে যেতে পারেননি। চাঁদ আর জ্যোৎস্না দেখতে গিয়ে মেঘ দেখে ফিরে আসায় আদিল ভাইয়ের সে কি হাসি!



তারপরও অন্যদের তুলনায় সাঈদ বিভিন্ন কাজে অনেক পারদর্শী। এক বিকালে সাঈদ আমাদেরকে বিন হামাসানের পথে নিয়ে চলল। কচি ভাইও তনুমা থেকে এসেছেন। আমি গাড়ী না নিয়ে ওসামার গাড়ীতে চড়ে বসি। ওদিকে মিলনও আমাদের সাথে জয়েন করেছে। জায়গাটা খুব কাছেই, পাশের শহর খামিস মোশাইত এ। আমরা চমৎকার করে সাজানো মিউজিয়ামটির সামনে থামলাম। মিউজিয়ামের মালিক জাফর হামসান আমাদের সবাইকে স্বাগত জানালেন। সাঈদ আগেই যোগাযোগ করে এসেছিল। উনি দারূণ ইংরেজি বলেন। তিনি আমাদেরকে মিউজিয়ামটির ইতিহাস ও তার সংগ্রহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন। আমাদেরকে আরবীয় কফি ও বিভিন্ন ধরনের খেজুর খেতে দিলেন।





ভদ্রলোক আমাদেরকে তার সংগ্রহশালা ঘুরিয়ে দেখান। প্রথমেই চোখে পড়ে পাথরের তৈরি Speakers’ Corner-এটা একটি প্রাচীন আরবীয় রীতি। যে কেউ এখানে এসে যে কোন কিছু বলতে পারত। কেউ তাকে বাঁধা দিত না। অনেকটা হাইড পার্ক বা আমাদের দেশের মুক্তাঙ্গনের মতো। আরবদের এই প্রথা নাকি সুপ্রাচীন। ওসামার ছেলে রাফসান এটার উপরে উঠে দারূণ খুশী। কথা বলতে পারেনা, অথচ আংগুল উচিয়ে কি সব জানি একটানা বলে গেল। এই জায়গাটার একটা প্রভাব থাকতেই পারে।





পাশেই একটা ৩/৪ তলা বাড়ী সংরক্ষণ করে হয়েছে। পাথর, মাটি, কাঠ দিয়ে তৈরি এধরনের বাড়ী এক সময় আরবের দক্ষিণাঞ্চলে দেখতে পাওয়া যেত। আমারা সেই বাড়ির ভেতরে ঢুকলাম। ভেতরে ছোট ছোট রুম। বাড়ীটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। রং করা হয়েছে, ভেতরের সিড়িগুলো পাকা করা হয়েছে, ইলেকট্রিক বাতি, মেঝেতে কার্পেট, সোফা- প্রাচীন বাড়িটিতে প্রাচীন আরবকে খুঁজে পেলাম না। দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন ধরণের পেইন্টিং বোঝাই। পেইন্টিংগুলো দেখে পুরনো দিনগুলোকে কিছুটা বুঝা যায়। কিন্তু ছবি ও পেইন্টিং এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার দৃষ্টিকটু লাগল।













বাড়ী থেকে বের হয়ে আমরা পাশেই আরেকটি হল রুমে ঢুকলাম। সেখানে পুরনো কিছু হাড়ি পাতিল, পানি রাখার মশক রাখা ছিল। একদিকে একটা অডিটরিয়াম, সুন্দর করে সাজানো। অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। পাশে নতুন করে একটি কমিউনিটি সেন্টার করা হচ্ছে। সেটাও ভাড়া দেয়া হবে। এটা যতটা না মিউজিয়াম, তার চেয়েও ব্যবসায়িক লক্ষ্য বেশী মনে হল।





আরেকটি রুমে হাজারো ছবি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বিখ্যাত যেসব লোক এখানে এসেছিলেন তাদের ছবি, চিঠি বাঁধাই করে রাখা হয়েছে। দেখলাম এডউইন অলড্রিন, প্রিন্স চার্লস, প্রাক্তন রাজা এই মিউজিয়াম ঘুরে গেছেন। আর তা থেকেই মিউজিয়ামটির এত সুখ্যাতি।













কিন্তু আসির প্রভিন্সের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে তুলে ধরে – যেভাবে বলা হয়েছিল-এমন কিছু খুঁজে পেলাম না। তবে দিন শেষে চমৎকার একটি আউটিং তো হল। তাতেই আমরা সবাই খুশী।



(শেষ)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২৮

কাবিল বলেছেন: আগের পর্ব গুলো পড়া হয়নি।

ছবিগুলোও ভাল লাগল।

০৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩

মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

মোঃমোজাম হক বলেছেন: সুক তালাতা না দেখার দুঃখ এখনো ভুলতে পারছিনা।আমাকে আবহা আবারো হাতছানি নিয়ে ডাকছে।

শীঘ্রই এখানে মনের ভাব প্রকাশ করতে যাচ্ছি B-)

ভাল থাকবেন।

০৭ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৬

মধুমিতা বলেছেন: আমারও ইচ্ছে ছিল- আপনাকে নিয়ে সুক তালাতা যাবার। কিন্তু সময়ের কারনে হয়ে উঠেনি। ভার্সিটিতেও ঠিক মতো ঘোরা হয়নি।
সময় পেলে আবার আসবেন।

আপনার লেখার অপেক্ষায় আছি।

৩| ০৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার কারনে সৌদির কত কিছু দেখা হলো প্রিয় মধুমিতা ভাই!! ধন্যবাদ দিয়ে কি আর তা শেষ করা যাবে ? তাই দিচ্ছি না। :)

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

১০ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩

মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদের জন্য কিন্তু লিখি না, আমি নিজের জন্য লিখি। একদিন এই স্মৃতিচারণ আমার অবলম্বন হয়ে থাকবে। আপনারা আমার লেখাগুলো পছন্দ করেন এটা আমার বাড়তি পাওনা।

আপনি মাঝে মাঝে লেখার জন্য উৎসাহ দেন- এটা আমার লেখার গতিকে আরো বাড়িয়ে দেয়। ভালো থাকবেন।

৪| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:০৩

এস আলভী বলেছেন: অনেক প্রতিক্ষার পর ফ্রন্টপেইজ একসেস দেওয়ায় ব্লগ কর্তৃপক্ষকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আপনার লেখায় আমি আজ প্রথম মন্তব্য করার সুযোগ পেয়ে গর্ব বোধ করছি।
নতুন ব্লগার হিসাবে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।

১০ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

মধুমিতা বলেছেন: সহযোগিতার কিছু নাই... লিখতে থাকুন।

৫| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১:২৮

তুষার কাব্য বলেছেন: তাও শেষ পর্বে এসে জয়েন করলাম!!চমৎকার অভিজ্ঞতা।খুব ভালো লাগলো।

শুভকামনা জানবেন।

১০ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ১১ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫৮

জুন বলেছেন: আপনি সত্যি একজন নিভৃতচারী ব্লগার মধুমিতা । অনেক আগে একবার পড়েছিলাম আপনার ডায়েরী। আসলে শিরোনাম একই (আরবের ডায়েরী )হওয়ায় আমি কনফিউজড ছিলাম । মোজাম ভাইয়ের কথায় বুঝতে পারলাম আপনি পর্বের পর পর্ব লিখছেন । এরপর এসে পড়ে গেলাম ভাবীর শাল আর ব্রেসলেট কেনার গল্প ।
সুন্দর ঝরঝরে লেখা পড়তে খুব ভালোলাগলো । আরব দেশটার সহজ সরল বর্ননা ।
+

১১ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৯

মধুমিতা বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে। আপনার ভ্রমণ কাহিনীগুলো আমার অনেক ভালো লাগে। আসলে বিভিন্ন পোস্টে আমার সেভাবে কমেন্ট করা হয়ে উঠে না। তবে আমি পড়ে থাকি। আমি টাইপিং এর ব্যাপারে বরাবরই আলসে। আমার পোস্টগুলি কোনমতে টাইপ করে থাকি। এক কারনেই হয়তো আমাকে কিছুটা নিভৃতচারী মনে হয়।

আরবের যা কিছু দেখছি, তা সহজ সরলভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করি। সহজ সরল বর্ননায় চিন্তা ভাবনা কম লাগে, লিখে আরাম পাওয়া যায়।

ভালো থাকবেন।

৭| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬

দস্যু বনহুর বাই রোমেনা আফাজ বলেছেন: ভাল লাগল

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩

মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.