নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Never Say Never Again

...

মধুমিতা

আমি তোমার কাছে পৌছতে পারিনি পথে হয়েছে দেরী। তবু আজো স্বপ্ন দেখি - বন্ধ দড়জায় কড়া নাড়ি ।। আমি এক অতি সাধারণ মানুষ, আড়ালে থাকতেই পছন্দ করি ...

মধুমিতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়াদি লাজাবঃ গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অব এ্যারাবিয়া (আরব ডায়েরি-৯৮)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬



সামুদ জাতির আল উলা শহর ঘুরে আসার পর আমার ভ্রমণ লিস্টের এক নম্বরে ছিল “ওয়াদি লাজাব” ভ্রমণ। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য দেখে অনেকেই সেখানে যেতে চেয়েছিল। “ওয়াদি লাজাব” আমাদের আবহা থেকে মাত্র ২০০ কিমি দূরে জিজান প্রভিন্সে অবস্থিত। কিন্তু জায়গাটি না চেনার কারনে ও দূর্গম বিধায় সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি।

এর মাঝেই আযম ভাই জানালেন জিজান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ফারুক ভাই প্রায়ই একটি লেকে মাছ ধরতে যান। মাছগুলো বেশ বড় এবং সুস্বাদু। একদম বাংলাদেশের মাছের স্বাদ। এই সুযোগ কে ছাড়ে? আযম ভাইও ভ্রমণপিপাসু মানুষ। ফারুক ভাইয়ের মাধমে বেশ কিছু ছিপ/বড়শি জোগাড় করে ফেললেন।

ফারুক ভাইয়ের মাছের খুব নেশা। লেকটি খুঁজে বের করেছেন, বড় বড় মাছ ধরে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এখন এমন হয়েছে যে, জিজান ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা দল বেধে সেখানে মাছ ধরতে যায়।
৩০ শে জানুয়ারি আমরা আমাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করি। ঠিক করা হল- আমাদের আবহা বাহিনী জিজান বাহিনীর সাথে “হাগু” নামক স্থানে মিলিত হবে (“হাগু” নামটি নিয়ে ব্যাপক হাস্যরস তৈরি হয়েছে)। সেখানেই লেকটি অবস্থিত। তারপর মাছ ধরে আমরা ওয়াদি লাজাব যাব।

কিন্তু বিভিন্ন কারনেই আমাদের পরিকল্পনায় ব্যঘাত ঘটে। পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা যার যার মতো ওয়াদি লাজাব সরাসরি চলে যাব, ফেরার পথে হাগু’তে মাছ ধরব। দুটো রাস্তার কোনাটাই আমরা চিনিনা, জিপিএস ফলো করে আবহা হতে আযম ভাই ও তার ফ্যামিলি, সাইফুল্লাহ ভাই ও তার ফ্যামিলি, ইসরাফিল ভাই, আবুল হাসান ভাই ও আমি রওনা হলাম। আমাদের ৩টি গাড়ী এগিয়ে চলল।
জিপিএস দেখে আমরা একটি শর্টকাট রাস্তা খুঁজে পেয়েছি। তারপরও সকাল ৮ টায় রওনা দিয়ে আবহা থেকে “হাগু” পৌছতে পৌছতে ঘন্টা খানেকের বেশী লেগে গেল। তবে রাস্তা ছিল দারূণ রকমের ভালো। দুপাশে সবুজ আর মরুর সমন্বয়। এখানে সেখানে নালাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে আছে। মাঝে মাঝে বণ্য গাধার পাল রাস্তার পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, তাদের চোখে কোন ভয় দেখিনি। পথে এক জায়গায় থেমে গাধার পালের ছবি তুললাম। আযম ভাইয়ের ছোট মেয়ে ঈমান বলছিল- "আমরা সবাই গাধা।" ছোট মেয়েটির এই দার্শনিক বোধ আমরা কেউই খন্ডাতে চেষ্টা করিনি।



অনেক ক্ষুধা লেগে গিয়েছিল। সকালে কেউই নাস্তা করে বের হইনি। “হাগু” ছাড়িয়ে আরো অনেকটা দূরে রাস্তার পাশে একটা পার্ক পেলাম। আমরা সবাই সেখানে নাস্তা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। পার্কটা পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। ওখান হতে নীচে তাকাতেই নয়ন ও মন উভয়ই জুড়িয়ে গেল। পাহাড় ঘেরা একটি লেক-যেন আঁকা একটি ছবি। কয়েকটি উট আপন মনে হেটে বেড়াচ্ছিল। আযম ভাই জানালেন এটি সেই বিখ্যাত “ওয়াদি বেইশ”।



আরবিতে পাহাড়ের পাদদেশের নীচু ভূমি যেখান দিয়ে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হয় কিন্তু অন্যান্য সময় শুকনো থাকে তাকে “ওয়াদি” বলে। “ওয়াদি বেইশ” এর এই অংশটিতে বাঁধ দেয়ার কারনে তা লেক ধারণ করেছে। সৌদি আরবের অন্যতম বৃহৎ একটি লেক। এর বাঁধটি উচ্চতায় সৌদি আরবে সবচেয়ে বড়। “ওয়াদি বেইশ” এর পানির একটি ফ্লো “ওয়াদি লাজাবের” সাথে কানেক্টেড।

আমরা নাস্তা সেরে লেকের কাছে গাড়ী নিয়ে যাই। অনেক বিশাল একটি লেক। গভীর ও টলটলে কালো জল। লেকে জিজান ইউনিভার্সিটির দুইজন বাংলাদেশি শিক্ষককে মাছ ধরতে দেখলাম। ওনারা কথা প্রসঙ্গে জানালেন- ফারুক ভাই এখানেই মাছ ধরে থাকেন। আমরা তখন কনফিউজড। আমাদেরতো “হাগুতে” মাছ ধরার কথা ছিল। ফারুক ভাইকে ফোন করলে বিষয়টি খোলাসা হল-আমরা “ওয়াদি বেইশ” এর লেকেই মাছ ধরব। ফারুক ভাই পাশের সিটি “হাগু’র” নাম বলেছেন বোঝার সুবিধার্থে। ঘটনাচক্রে আমরা মাছ ধরার স্থানটিতেই পৌছে গেছি।





সাইফুল্লাহ ভাই জানালেন উনি এখন আর “ওয়াদি লাজাব” যাবেন না। এখানেই মাছ ধরে কাটাবেন। ইসরাফিল ভাই ও আবুল হাসান ভাই তাতে জোড় গলায় সায় দিলেন। ইসরাফিল ভাইয়ের মাছ ধরার খুব নেশা। কোথাও মাছ ধরার কথা শুনলেই সবার আগে উৎসাহ নিয়ে তাতে যোগ দিবেন। সারা রাত ধরে জাল বানাবেন। কিন্তু কোন কারনে তার জালে বা বড়শিতে মাছ আর ধরা দেয় না। তারপরও তিনি উৎসাহ হারান না, পরের প্রোগ্রামের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। মাছ ধরা এক অদ্ভুত নেশার নাম।

জিজানের দলটি ততক্ষণে “ওয়াদি লাজাব” পৌছে গেছে। আমি ও আযম ভাইয়ের ফ্যামিলি বাকী সবাইকে এখানে রেখেই “ওয়াদি লাজাব” এর পথে রওনা দেই। আযম ভাই ড্রাইভ করছিলেন। পাহাড়ের ভেতর দিয়ে চলা সর্পিল রাস্তাটি বিভিন্ন জায়গায় অনেক সরু হয়ে যাচ্ছিল। এক জায়গায় রাস্তাটি এত খাড়া ছিল যে গাড়ী বন্ধ হয়ে গেল। প্রায় ঘন্টা খানেক পরে আমরা “ওয়াদি লাজাব” এর একটি সাইন বোর্ড দেখতে পাই।





পিচ ঢালা রাস্তা থেকে একটি মাটির রাস্তা বের হয়ে গেছে। আর মাটির রাস্তাটি হঠাৎ করেই যেন পাহাড়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। ছোট পাথর আর নুড়ি বেছানো অপ্রসস্থ রাস্তার দুই পাশে ওয়াদি লাজবের উঁচু দেয়াল- গিরিখাতটিকে বলা হয় গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন অব এ্যারাবিয়া।




পরের পর্ব


মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯

কামরুল হাসান বলেছেন: বেশ ভাল লাগল।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৫

মধুমিতা বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব আগ্রহ নিয়ে পরের পর্বের অপেক্ষা করছি।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৬

মধুমিতা বলেছেন: কেমন আছেন? দু/এক দিনের মাঝেই পরের পর্ব দিয়ে দেব আশা রাখি।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: +++

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৬

মধুমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ভালো আছি মধুমিতা ভাই! আশা করি আপনিও ভালো আছেন। নেক্সট পোস্টে যেন দেখি মাছ ধরছেন আর গ্রীল করছেন। হাহা

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

মধুমিতা বলেছেন: মাছ গ্রিল না দেখাতে পারলেও মাছ ভূনা দেখাতে পারব। =p~

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩

আবু শাকিল বলেছেন: যায়গার নাম হাগু !!
বাঙ্গালীরা নামেই বেশ মজা পাবে।
পড়তে ভাল লাগল ।
আগামীর পর্বের অপেক্ষায় ।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪

মধুমিতা বলেছেন: মজা তো পাবারই কথা। আগামী পর্ব শীঘ্রই আসবে।

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

পুলহ বলেছেন: আমি মদিনায় ছোট একটা খাল টাইপের দেখেছিলাম, তা ছাড়া আপনার এখানেই প্রথম এত বড় এক জলাধারের দেখা পেলাম। যে দেশে মাইলের পর মাইল শুধু শুষ্ক, নিষ্প্রাণ মরু- সেখানে এমন টলটলে বিশাল হ্রদ নিঃসন্দেহে খুব আনকমন....
কিছুটা নস্টালজিক হলাম আপনার পোস্ট পড়ে; ভালো লাগলো :)

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই :)

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০২

মধুমিতা বলেছেন: আমাদের আশেপাশে বেশ কয়েকটি এমন লেক আছে। সবগুলোই বাঁধ দিয়ে পানি জমিয়ে তৈরি করা। শুষ্ক, নিষ্প্রাণ মরুভূমির এই লোকদের কাছে জলাধার খুবই প্রিয়। যেখানেই পানি দেখবে, তার চারপাশে পিকনিক স্পট বানিয়ে ফেলবে।

কেয়ামতের লক্ষণ অনুযায়ী এই আরবে আবারো নদী প্রবাহিত হবে। তার আলামত দেখা যাচ্ছে।
আগামী পর্ব শীঘ্রই আসবে।

৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন এক ঘোরের মাঝে যেন ঘুরিয়ে আনলেন.. এর মাঝেই হঠাৎ গ্রান্ড খ্যানিয়নের দেয়ালে যেন আটকে যেতে হল ;) পরের পর্বের অপেক্ষায়!!! :)

রইলাম -মধুর সে অপেক্ষায় :)

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

মধুমিতা বলেছেন: “ওয়াদি বেইশ” এর সৌন্দর্য্য আমার বর্ণনার চেয়েও সুন্দর। ওয়াদি লাজাবে আবারো যাব, আরো ভেতরে দেখার জন্য।
ঘোর লাগাতে পারার জন্য তৃপ্তি বোধ করছি। ভালো থাকবেন।

৮| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: যেখান থেকে আগ্রহ বেড়ে গেলো সেখানেই শেষ !! পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ।

'হাগু' জায়গার নাম !! আমাদের দেশে তো এই নামটা বেশ ঐতিহাসিক !!

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৬

মধুমিতা বলেছেন: পরের পর্ব শীঘ্রই দিয়ে দেব। =p~ =p~

৯| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২১

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: মাছের ছবি দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৬

মধুমিতা বলেছেন: :D

১০| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৫

নাজমুস সাকিব রহমান বলেছেন: আমার আব্বা অনেকদিন আবহা ছিলেন। তাই পড়ে আনন্দ পেলাম। শুভেচ্ছা।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৮

মধুমিতা বলেছেন: আবহা'র গল্প নিশ্চয়ই শুনতে পান। অন্য শহরের চেয়ে অনেক আলাদা- আবহাওয়া, কালচার, খাবার । আপনাকেও শুভেচ্ছা।

১১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৬

Farjana Srabon বলেছেন: মাছের ছবি দেখার অপেক্ষায়....

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৮

মধুমিতা বলেছেন: :-B

১২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: দুই পর্বই একসাথে পড়ব :P

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৯

মধুমিতা বলেছেন: অবশ্যই। পরের পর্বটি তাড়াতাড়িই হয়ে যাবে।

১৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৪

জুন বলেছেন: অসাধরন সুন্দর এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য । টলটলে লেকের পানি , কালো রঙের গাধা আর গিরিখাত সবই সুন্দর মধুমিতা ।
+

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৮

মধুমিতা বলেছেন: আগে খেয়াল করিনি- আসলেইতো গাধাটি কালো রঙের। তবে এদের আসল সৌন্দর্য্য আমার বর্ণনার চেয়েও সুন্দর।
ভালো থাকবেন।

১৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সুন্দর ছবি আর বর্ননা
অপেক্ষায় পরের পর্বের :)

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮

মধুমিতা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। পরের পর্ব লেখা শুরু করেছি।

১৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২

শ।মসীর বলেছেন: কি মাছ পাওয়া যায়....।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৯

মধুমিতা বলেছেন: সঠিক চিনতে পারিনি। তবে গ্রাসকার্পের মতোই দেখতে। স্বাদে দারূণ।

১৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২

আঃ হাকিম চাকলাদার বলেছেন: ভালই লাগল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.