নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খীলগাঁও ফ্লাইওভারের নীচ দিয়ে হাটছি... মাঝে মাঝেই গাঁজার গন্ধ নাকে আসছে... কিছুদূরে দেখছি কিছু ছেলেপেলে ছোট পলিথিন ফুঁকছে... ড্যান্ডি নামক এই নেশাটা ছোট বাচ্ছাদের কাছে এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে... একটাকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম ''এসব কি খাও??''
আমাকে হু কেয়ার'স মুডে রিপ্লাই দিল, ''এইডা আপ্নে বুঝবেন্না নে''
জিজ্ঞেস করলাম তোমার মা বাবা তোমাকে বকে না??
বলল, "বাপ আরেক বেডি নিয়া ভাইজ্ঞা গেছে, মা বাইচ্চা নাই... মা মরার পর থেকেই এসব খাওয়া শুরু করছি..."
বললাম তোমার এই কষ্টের জীবনের জন্য তোমার মা বাবার উপর কখনও রাগ হয় না?? আমাকে এক বাক্যে উত্তর দিল, ''না"
.
অথচ ঠিক আমাদের মধ্যেই কিছু মানুষ আছে যারা নিজের ব্যার্থতাকে ঢাকার জন্য অন্যের কাছে মা বাবাকে ছোট করে... নিজের জীবনের খারাপ সময়ের জন্য মা বাবার সামর্থহীনতাকে অপারগতা ভেবে নেয়... আমি নিজের চোখে এমন কিছু মানুষ দেখেছি নিজের পাপের দ্বায়ভার তার মা বাবার উপর ঠেলে দিতে...
.
আপনি হিজাব বোরকা পড়ে পতিতাবৃত্তি করেন আর টুপি পাঞ্জাবী পড়ে চুরি করেন ইট'স টোটালি আপ টু ইয়ু কিন্ত অন্যের কাছে নিজের এসব অপকর্মকে ফ্যামিলির ইস্যু বানিয়ে নিজের মা বাবার গায়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে সাধু প্রমান করার প্রবনতা অনেকটা মস্তিষ্কহীনতার পরিচয় বহন করে...
সমাজে এসব মানুষগুলোর চাইতে রাস্তায় নেশা করা ছেলেটা হাজারগুন পবিত্র...
সে এখনও রাত হলে তার পকেটে রাখা পলিথিনে মোড়ানো মায়ের ছিড়ে যাওয়া ছবিটা দেখে আর ড্যান্ডি ফুকে, অন্যদিকে আপনি তখন আপনার মায়ের হাতে এক গ্লাস গরম দুধ খেয়ে তাকেই অন্যের কাছে আপনার কৃতকর্মের বলি বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন...
.
ছেলেটির ড্যান্ডি খাওয়া প্রায় শেষ, আমি তার পাশে বসে আছি অনেক্ষন যাবত... বললাম চল দুজনে হাটি... দুজন সামনে হাটছি আর সোডিয়াম লাইটগুলো আমাদের বিপরীতদিকে হাটছে... ছেলেটির পিঠে চাপড়ে দিয়ে বললাম, "চল তোর মায়ের কবরের দিকে যাই..."
ছেলেটি বলল, "মায়ের কবর তো নাই..."
.
এক কংকাল ব্যবসায়ী নাকি দেড় হাজার টাকা দিয়ে লাশ কিনে নিয়ে গেছে... ছেলেটির মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম পৃথিবীর বুকে তার মায়ের কোন চিহ্ন খুজে না পাওয়ার হাহাকারের ছাপ... ছেলেটির কাঁধে দুই হাত রেখে বললাম, আরে বোকা! যারা মারা যায় তারা পৃথিবীতে থাকে না... তারা থাকে আকাশে... এখন রাত দশটা বেজে তের মিনিট... দুজনেই হাটছি আকাশের সন্ধানে... এই শহরে কোন আকাশ নেই, সুবিশাল আকাশ ঢেকে গেছে ফ্লাইওভার আর উঁচু মিনারে..
গল্পঃ একটি ফ্লাইওভারের গল্প
লিখাঃ জে. আর শুভ
০৯/০৩/২০১৮ খ্রীঃ
.
ফেসবুকে আমিঃ http://www.facebook.com/zr.shuvo
২| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৩৩
আখেনাটেন বলেছেন: চমৎকার গল্প সাথে ভাবনাকেও নাড়া দিয়ে গেল।
উপরে চমৎকার ফ্লাইওভার নিচে ড্যান্ডির আসর। এটাই এখন সমাজের ভেতর-বাহির।
৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৪২
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন:
৪| ১৩ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৪৭
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: গল্প হোক আর বাস্তব, ভাল লাগল।
৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৫৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমি প্রায় গুলিস্তানে এসব ছেলেদের দেখি কথা বলার সাহস হয় না, ওরা নেশাগ্রস্থ চুরি ছিনতায় ওদের কাছে মামুলি বিষয়,তবে ওদের বুকেও অনেক কান্না জমে আছে, ওদের সাথে না মিশলে যে কান্না বোঝা সম্ভব নয়।
৬| ১৩ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৩৯
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: গল্প ভাল লেগেছে।
৭| ১৩ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমার বাসার সামনেই খিলগা ফ্লাইওভার।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:২১
মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: সত্য কাহিনী?