নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মৌলবাদী মুসলিম।ইসলামের সাথে অন্য কিছু মিলাতে রাজি না।আমি সেই ইসলামে বিশ্বাস করি যা মধ্য যুগে এসেও সর্বাধুনিক। যারা কুরআন হাদিসের আধুনিকায়ন চায় তারা মুনাফিক।

অবিবাহিত জাহিদ

আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনকারী একজন মুসলিম।

অবিবাহিত জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হানাফী মাযহাবের আলোকে তারাবীর মাসজিদে হাফেজদের জন্য এতিমের মত কালেকশন করার বিধান

০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:২৭

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
খতম তারাবীর বিনিময় লেনদেন উভয়ই সর্বসম্মত হারাম

আর তোমরা আমার আয়াতের পরিবর্তে বিনিময় স্বরূপ তুচ্ছমূল্য গ্রহন করো না এবং আমাকেই ভয় করো। (২:৪১)
অতএব তোমরা মানুষকে ভয় করো না। শুধুমাত্র আমাকেই ভয় করো। আর আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্য গ্রহন করো না। আর আল্লাহ যা অবর্তীন করেছেন সে অনুযায়ী যারা ফয়সালা করে না তারাই কাফের। (৫:৪৪)

যারা আল্লাহ পাকের আয়াতসমুহের বিনিময়ে তুচ্ছমূল্য গ্রহন করে না এরুপ লোকদের জন্য তাদের প্রভুর নিকট উত্তম বিনিময় রয়েছে। (৩:১৯৯)

আর তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকারের বিনিময়ে নগন্য মূল্য গ্রহন করো না। বস্তুত আল্লাহর নিকট যে বস্তু আছে তা তোমাদের জন্য বহুগুনে উত্তম যদি তোমরা অনুধাবন করতে। (১৬:৯৫)

নি:সন্দেহে যারা আল্লাহর অবতারিত কিতাব গোপন করে এবং তৎপরিবর্তে নগন্য সম্পদ আদায় করে তারা তাদের পেটে শুধুই আগুন পুরছে। আর আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে পরিচ্ছন্ন করবেন না, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। (২:১৭৪)

নিশ্চয় যারা আল্লাহর কৃত অঙ্গীকার এবং স্বীয় শপথের বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহন করে তারা পরকালে কোন অংশ পাবে না। আর আল্লাহ তাদের সাথে কোন কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ ও করবেন না। বস্তুত তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। (৩:৭৭)

প্রিয় নাবী (স) বলেন: কুরআন তিলাওয়াত কর এবং তার উপর আমল করো। কুরআন দ্বারা নিজের খাওয়া পরার ব্যবস্থা করো না। (মুসনাদে আহমাদ)

রমজান মাসে বাংলাদেশের অধিকাংশ মাসজিদে খতম তারাবীতে কুরআন তিলাওয়াতের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, সকল মাসজিদেই পবিত্র এই মাসে হারাম লেনদেনের মহড়া চলছে। আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, কোন কোন মুফতি একে হিল্লাহ বাজীর মাধ্যমে বৈধ করে দেয়। এমনকি সূদের টাকাও হিল্লা করে মাসজিদে ব্যবহারের ফতোয়া দিয়ে থাকে। আফসুস হায় আফসুস।

বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে অতি সংক্ষেপে দু’একটি কথা তুলে ধরলাম। আশা করি মুসলমান ভাই ও বোনেরা কথাগুলো অনুধাবন করে নিজে বেচে থাকবেন এবং অপরকেও বাচানোর চেষ্টা করবেন। সাধারন অনেক মানুষের সাথে আলোচনা করে আমি মানুষের মনোভাব দেখেছি। তারা হারাম থেকে বাচতে চায়। কিন্তু স¦ার্থান্বেষী মৌলভীদের পাল্লায় পড়ে তারা দিশেহারা। তাই সাধারন লোকের হাতে বিষয়টি পৌছে দিবার জন্য সংক্ষেপে বিষয়টি তুলে ধরলাম। সাথে সাথে প্রতিশ্রুতি দিলাম এ বিষয়ে যদি কোনো মাসজিদ কমিটি অধিক জানতে আগ্রহী হন, তাহলে আমি আমার খরচে মাসজিদে উপস্থিত হবো। এবং ইমাম সাহেবের অনুমতিক্রমে বিস্তারিত বুঝিয়ে দিতেও র্কাপন্য করবো না । এজন্য আমার মোবাইল নম্বরও দিয়ে দিলাম।

স্ব স্ব মাসজিদের ইমাম সাহেবকে অনুরোধ করবেন, তিনি যেন বিষয়টি নিজে পড়ে সকল মুসল্লিদের শুনিয়ে দেন। যদি ইমাম সাহেব পড়তে রাজী না হয় তাহলে আপনারা নিজেরা পড়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন।
আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে দয়া করে হেদায়াত নসীব করুন আমিন।

প্রশ্ন-১: পবিত্র রমজান মাসে তারাবীহ নামাজে কুরআন খতমকারী হাফেজ সাহেবকে পারিশ্রমিক বাবদ টাকা পয়সা বা অন্য কিছু লেনদেন করা যাবে কি?

উত্তর: পবিত্র মাহে রমজানে তারাবীহ নামাযে পবিত্র কুরআন মাজীদ খতমকারী হাফেজ সাহেবকে পারিশ্রমিক বাবদ টাকা পয়সা দেওয়া এবং তার পক্ষে তা গ্রহন করা উভয়ই হারাম, কবীরা গুনাহ। দাতা ও গ্রহিতা উভয়েই ফাসেক পাপাচারি বলে গন্য হবে। (ফতোয়া রশিদিয়া ৫১৯/৩৯১ পৃঃ, আহসানুল ফতোয়া ৩য় খন্ড ৫১৫ পৃঃ)

প্রশ্ন-২: ইমামতি ও আজান দিয়ে টাকা পয়সা লেনদেন জায়েজ হলে খতম তারাবীহ পড়ে লেনদেন করা যাবে না কেন?

উত্তর: যারা তারাবীহ নামাজে কুরআন তেলাওয়াত করে শুনানোকে ইমামতির সাথে কিয়াস বা অনুমান করে তারা মস্তবড় বিভ্রান্তিতে লিপ্ত (ফতোয়া রশিদিয়া ৩৯১ পৃঃ) নামাজ আদায়ের জন্য ইমামতি আর পবিত্র কুরআন খতম করার জন্য ইমামতি এককথা নয়। নামাজ আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমামের পারিশ্রমিক বৈধ। পক্ষান্তরে তিলাওয়াতে কুরআন খতম শুনানোর জন্য যে ইমামতি করা হয় তার লেনদেন বা পারিশ্রমিক অবৈধ। (ফতোয়া রশিদিয়া, দারুল উলুম, আহসান-ইমামতের অধ্যায়)

প্রশ্ন-৩: টাকা পয়সার বিনিময়ে শর্ত সাপেক্ষে অথবা নিঃশর্তে পারিশ্রমিক নির্ধারন না করে তারাবীহ পড়াতে দোষ কি?

উত্তর: পারিশ্রমিক বা লেনদেনের মাধ্যমে যে তারাবীহ নামাজ পড়া হয় তা অবশ্যই ইবাদাত নয়। অতএব এ সালাত বা নামাজ পড়াও অনুচিত। ছোট ছোট সুরা দিয়ে একাকি বা অন্যত্র জামাত করে পড়তে হবে। (ফতোয়া রশিদিয়া ৩৯২ পৃঃ) টাকা পয়সা বা বিনিময়-পারিশ্রমিক নির্ধারন না করা ডাবল হারাম দি¦গুন গুনাহ। এক নম্বর পারিশ্রমিক হারাম এবং দুই পারিশ্রমিক অনির্দিষ্ট ও অনুল্লেখ থাকাও হারাম। ( আহসানুল ফতোয়া-৩য় খন্ড-৫১৪ পৃঃ)

প্রশ্ন-৪: রমজানে খতম তারাবীহ পড়ানোর উদ্দেশ্যে একজন বা দুজন হাফেজকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে কি?

উত্তর: “আল উমুরু বিমাক্বাছিদিহা” এবং আল-মারুফু কালমাশরুত” অর্থ্যাৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অনুযায়ী হুকুম ও ফয়সালা প্রদান করা হয়। আবার প্রচলিত ও পরিচিত প্রথা শর্তের স্থলাভিষিক্ত। চার নং প্রশ্ন পাঠান্তে একজন নাদান ও বলতে পারবে যে, এখানে ইমাম নিয়োগ উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হলো খতমে কুরআন। উদ্দেশ্য এবং মাকছুদ হলো খতমে কুরআন তাই লেনদেন পারিশ্রমিক বেতন, বিনিময় সবকিছুই অবৈধ হারাম। (ফতোয়া দারুল উলুম ৪র্থ খন্ড পৃঃ২৭৩) ছোট একটি কথা বুঝে নিন। মাসআলাটি অনুধাবন করতে সহজ হবে। কথাটি হলো – নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে ইমামতি আর খতমে কুরআনের উদ্দেশ্যে ইমামতি, এ দুই ইমামতি এক নয়। স¦ার্থান্বেষী কিছু লোক এই কথাটুকু না বুঝার কারনেই নিজেরা বিভ্রান্তিতে আটকে গেছে। এবং অন্যদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এ ইমামতির উদ্দেশ্য নামাজ আদায় করা এবং অন্য ইমামতির উদ্দেশ্য খতমে কুরআন। এখানে তেলাওয়াতের জন্য নামাজ। তারাবীহ নামাজ তেলাওয়াতের জন্য বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। আর অন্য নামাজে নামাজ আদায়ের জন্য তেলাওয়াত করা হয়। তেলাওয়াতের উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য নামাজ আদায় করা। নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে যে ইমামতি করা হয় তার বেতন বিনিময় বা পারিশ্রমিক জায়েজ। এবং কুরআন তেলাওয়াতের জন্য যে ইমামতি করা হয় তার জন্য বেতন বিনিময় পারিশ্রমিক কোন কিছুই জায়েজ নয়—বরং হারাম।

প্রশ্ন-৫: খুলনার একজন স্বনামধন্য মুফতি তারাবীহ নামাজে কুরআন খতমের বিনিময়ে লেনদেন জায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছিলো। এর কি ফয়সালা দেবেন?

উত্তর: কোন হারাম বস্তুকে যারা ছল চাতুরি হিল্লাবাজি আর অপকৌশলের মাধ্যমে হালাল করে নিতে চায় তাদেরকে কিয়ামতের দিন প্রীয় নবী (স) হে মালাউন বলে সম্মোধন করবেন। (তাফসীর ইবনে কাসির ১ম খন্ড ২৯৯ পৃঃ) তাই ভদ্রলোকেরা কি লিখিত দিয়েছেন তা দেখার দরকার নেই। তাফসীর ইবনে কাসির ১ম খন্ড ২৯৯ পৃঃ এর মধ্যে আরও বর্ণনা এসেছে যারা অপকৌশল আর হিল্লাবাজির মাধ্যমে কোন হারাম বস্তুকে হালাল বানাতে চায় আল্লাহ এবং তার রাসূল তাদেরকে লা’নত করেছেন।

প্রশ্ন-৬: আমাদের মাসজিদে খতম তারাবীহ হয় জাফেজরা কোন দরদাম করে না। শেষ দিকে এসে প্রত্যেককেই ইচ্ছেয় হোক অনিচ্ছায় হোক টাকা দিতেই হয়। চাদা যা ধরা হয় তার কম দিলে অশ্রাব্য কটুবাক্য শুনতে হয়। লজ্জায় মস্তক অবনত হয়ে আসে। বাধ্য হয়েই দিতে হয়। এমতাবস্থায় আমরা কি করতে পারি?

উত্তর: হারাম লেনদেনের মাধ্যমে যে নামাজ পড়া হয় তা কোন ইবাদাত হয় না বরং গুনাহ হয়। তাই এমন গুনাগার ফাসেক হাফেজের পিছনে নামাজ পড়াই অনুচিৎ অবৈধ। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ বা অন্য ফরজ নামাজের ইমাম ফাসেক হলেও জামাত পরিত্যাগ করা যাবে না। প্রতিবাদের সাথে সাথে জামাতে উপস্থিত থেকে নামাজ আদায় করতে হবে। কিন্তু ফাসেক হাফেজের পিছনে কোন ক্রমেই তারাবীহ পড়া যাবে না। মসজিদে ফরজ আদায় করার পর অন্যত্র একাকি বা জামাত করে ছোট ছোট সুরা দিয়ে তারাবীহ পড়া উত্তম।( আহসানুল ফতোয়া ৩য় খন্ড ৫১৪ পৃঃ)
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, পবিত্র রমজান মাসটাও শয়তান তার দখলে নিয়ে ফেলেছে। তার পর যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জেনে রাখা প্রয়োজন যে,
১. যারা ইচ্ছে করেই জেনে শুনে হারাম কাজে বা কবিরা গুনায় লিপ্ত তাদেরকে ইসলাম শরিয়তে ফাসেক বা পাপাচারি বলা হয়।
২. যারা আল্লাহ রাসূলের দ্বীন তথা ইসলামি শরিয়াতের কোন একটি অকাট্য হারাম বস্তুকে হারাম বলে বিশ্বাষ করে না বা মান্য করেনা। তারা ইমান হারা হয়ে যায়। এদেরকে মুরতাদ বলে।
৩. আর যারা অপকৌশলের মাধ্যমে কোন হারাম বস্তুকে হালাল বানাবার অপচেষ্টায় লিপ্ত তারা অভিশপ্ত মালাউন।
বিঃদ্রঃ এক গ্রান্ড মুফতি নাকি বলেছেনঃ তারাবীহ নামাজে খতম পড়া জরুরীয়াতে দ্বীন যা না হলে দ্বীন বিল্প্তু বা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই “আযযরুরাতু তুবি হুল মাহযুরাত” জরুরাত বা আনন্যপায় অবস্থা হারাম বস্তুকে হালাল করে দেয়- এই মূলনীতি অনুযায়ী তারাবীতে খতম পড়ে টাকা পয়সা লেনদেন হারাম থাকলেও হালাল হয়ে যায়, কারন তারাবীতে কুরআন খতন না করলে দ্বীন বিলুপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

বন্ধুগনঃ এহেন এতিম মুফতি সম্পর্কে কি আর বলার আছে? জরুরিয়াতে দ্বীন কি? বিস্তারিতভাবে অন্যত্র বলবো।
তবে ফতোয়ায়ে রশিদিয়া ৩৯১ পৃঃ খুলে দেখুন, সমস্ত পৃথিবীতে বিশেষতঃ পাক ভারত উপমহাদেশে দ্বিতীয় আবু হানিফা বলে খ্যাত, কুতুবুল ইরশাদ মাওলানা রশিদ আহমাদ সাহেব গঙ্গুহী (রঃ) বলেছেন, তারাবীহ নামাজে খতমে কুরআন জরুরিয়াতে দ্বীন নয়। যারা মুরব্বী আর আকাবেরের ডংকা বাজায় তাদের করুণ অবস্থা দয়ার উদ্রেগ করে বটে। এদেরকে পয়সা করি দিয়ে সব হালাল করে নেওয়া যায়। (নাউযুবিল্লাহ)



আরও জানতে

আব্দুল মজিদ
ইমাম ও খতীব, বাইতুন নাজাত জামে মাসজিদ,
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিসের পাশে) বয়রা।
শিক্ষক, তালিমুল মিল্লাত মাদ্রাসা, সোনাডাঙ্গা, খুলনা।
ফোন নংঃ ০১৯১৩-৩৪৭৩৬৮

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৫২

তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: উপকারী লেখা।ধন্যবাদ।

২| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:২৭

অবিবাহিত জাহিদ বলেছেন: Wc

৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ২:৫৫

হানিফঢাকা বলেছেন: Dear Brother, What you pointed out is right. No doubt about it. But, this is not enough. We have to understand, we like it or not many people (Mollah) in our society lives on it. They also need to earn to run their family as we do. So, better besides pointing out this problem, if you can come up with some solution. Or somebody can come up with some logical solution to avoid it while the Mollah also can avoid the financial hardship.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.