নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুক জুড়ে কেবলি হলদিবাড়ী
জোহরা উম্মে হাসান
ট্রেনটা ছুঁই ছুঁই গন্তব্য পার্বতীপুর রেলওয়ে ষ্টেশন
এরপর হলদিবাড়ী ২২/এক , এটুকুই । তারপর
ভাবনা বদল , টিপ টিপ চলতে চলতে এই তো আর
বড়জোড় আর কয়েক মিনিট , পার্বতীপুর রেলওয়ে ষ্টেশন
গন্তব্য হলদিবাড়ী ২২/এক , এটুকুই !
তেমন কিছুই নেই সাথে, হাতে ধরা ব্যাগ , কিনবা সুটকেস
চামড়ার ! কাঁধে ঝোলানো অজন্তা ব্যাগ বড়জোড় শান্তিপুরী
স্লিপারে পাছে লেগে যায় পাড় শাড়ীর, তাই তাড়াহুড়া বাদ
আলতো খোঁপা নয় বাহারী , তারপরও খুলে উঁচিয়ে বাঁধা
ঝুমকো লতায় আটা কাঁটা!
গন্তব্য হলদিবাড়ী ২২/এক , সারি সারি মানুষ নেমে যায় একে একে
কত রঙ , কত ঢং , কত সাজ, হাঁকাহাঁকি, ডাকাডাকি । তাঁকেই কেবল
চেনেনা কেউ , শুধুই চেনে একজন যে থাকে হলদিবাড়ী ! সিঁড়ি দুই কিংবা
তিন । এরপর লাল ইট বুকে বিশাল প্লাটফর্ম , এপার ওপার
যায় না দেখা লোকের ভিড়ে । মানুষের সমুদ্দুর । যাওয়া আসা
যেন জোয়ার ভাটার খেলা , সারা বেলা !
রেল বাবুর কামরা একটু এগোলেই , ভয়ানক ব্যস্ত । যেন তাঁর
চোখের সামনে রাহুটা । গাড়ীটাকে কাঁটা ধরে না তাড়ালেই নয় !
লাল ঝাণ্ডা , খাকী প্যান্ট , সাদা কোট চোখে চশমা পাশেই । সন্ধ্যে
ছুঁইছুঁই , একে একে জ্বলে উঠে আলোর পাখিরা .। রাতের তারারা যেন
অগুন্তি জ্বলে আর নেবে , রেলের আকাশ মাথার উপরে!
কমলা ঝুড়ি কাঁধে দেহাতি নারী , ছোকরা বুট বাদাম গলে বাবড়ী চুল
জুতা পালিস লাল কালো কালি ঢিব্বা ওয়ালা, পা নুলো ভিখিরি , ক্লান্ত কয়লা শ্রমিক
আলো আঁধারিতে বারোয়ারী নারী আর মিলিত হাসি ফিক ফিক ।
যৌবন ছুঁই ছুঁই বালক বালিকা, চাপা জিন্স ট্রেট্রন যুবক , ঘোমটা বধূ
এক দুই তিন রাবনের দলবল ।
হলদিবাড়ী ২২/এক । লোহার গেট , এক পাশে টিকিট চেকার
উল্টায় পালটায় টিকিট দ্বিতীয় শ্রেণী। দেরী করে যেমন সচারাচর
করে পুরুষ মন্থন নারী ছল ছুতোয় ।এরপর দুই চাকা রিক্সা
অথবা চারচাকা টেম্পো গাড়ী, আগ্রহ মুখ ক্লান্ত চালক
উৎসুক পথচারী , হলদিবাড়ী ২২/এক তাঁর বাড়ী !
ঠিকানাটা হাতে লেখা , দেখে দেখে বারে বারে জীর্ণ পাতা
কালি অস্পষ্ট ফ্যাঁকাসে , নিজের ই মতো যেন ! অন্ধকার অচেনা পথ
আলো আধারী ইটের বাড়ী সার সারি , নিস্তেজ বটের পাতা । বাতাসে
দোল খায় অদেখা নারীর শাড়ী , বেলোয়ারী ! হলদিবাড়ী
২২/এক কোন সে বাড়ী ?
সে কি এখনও সেই ঠিকানায় । এখনও কি একই বাড়ী , একা ?
নাকি দোকা , পাশে অবুঝ রূপসী রমণী ! খোলা চুলে যার বনলতার ছায়া
যেন এক আশালতা দেবী । তবে সে কে ? পরনে সবুজ ফিকে শাড়ী
স্লিপারে ক্লান্ত চরণ। অজন্তা ব্যাগ শান্তিপুরী । বুক জুড়ে কেবলি হলদিবাড়ী !
২| ২১ শে জুন, ২০১৪ রাত ৮:৩৭
জোহরা উম্মে হাসান বলেছেন: ধন্য বাদ ! সামহোয়ার ইন ব্লগের সদস্য হিসাবে স্বাগত জানানোর জন্য । আপনিও ভাল থাকবেন !
৩| ২৪ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
নিঃশব্দ শিশির! বলেছেন: বুক জুড়ে কেবলি হলদিবাড়ী
৪| ২৪ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
নিঃশব্দ শিশির! বলেছেন: ভালো লিখছেন!!
৫| ২৫ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:১৮
জোহরা উম্মে হাসান বলেছেন: অনেক অনেক ধ ন্যবাদ , কবিতা আর গল্প পড়ার জন্য !
৬| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১০
খায়রুল আহসান বলেছেন: অসাধারণ কবিতা!
পার্বতীপুর রেলওয়ে ষ্টেশন আমার চেনাজানা। জানতে ইচ্ছে হচ্ছে কবিতার উৎস কোথায়! একটি ছোট্ট নোট, একটি পাদটীকা হয়তো কিছুটা ক্লু দিতে পারতো।
'হলদিবাড়ী ২২/এক ব্যাস এটুকুই' - বড্ড চমৎকার, মনে গেঁথে র'লো। কবিতার প্রতিটি লাইন চুম্বকের মত মনোযোগ আটকে রাখে।
"দেরী করে যেমন সচারাচর
করে পুরুষ মন্থন নারী ছল ছুতোয়" - টিকিট চেকারের দেরী করার ছলচাতুরীর এ তুলনাটা বেশ চমৎকার লাগলো।
'বুক জুড়ে কেবলি হলদিবাড়ী!' - কবিতার এ শিরোনামটি চমৎকার হয়েছে, খুবই মায়াময়।
'মুক্তমঞ্চ' এবং 'বাংলা কবিতা ডট কম' এর আসরে আপনার কবিতা পড়তাম। সেখান থেকে আকস্মিকভাবে বিদায় নিয়েছিলেন। আজ এখানে আপনাকে খুঁজে পেলাম। আশাকরি ভাল আছেন?
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:০৯
আহসানের ব্লগ বলেছেন: সামহোয়ার ইন ব্লগে আপনাকে স্বাগতম ।
ব্লগিং করুন ,
পড়ুন ।
অন্যের পোস্টে মন্তব্য করে উত্সাহিত করুন ।
আর ভাল থাকুন ।
লেখাটি পড়লাম