নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চন্দ্রবিনদু

চন্দ্রবিনদু › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার দিন ৭ নভেম্বর : ‘জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবস’-এর স্বীকৃতি চাই

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০১

আজ ৭ নভেম্বর, যে দিনটি সিপাহি-

জনতার বিপ্লব এবং দেশের স্বাধীনতা-

সার্বভৌমত্ব রক্ষার দিন

হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭৫

সালের এই দিনে ১৯৭১-এর পর এদেশের

ছাত্র-জনতা ও সশস্ত্র বাহিনীর আরও

একবার ঐক্য গড়ে উঠেছিল।

তারা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, দেশ ও

জাতির

যে কোনো দুঃসময়ে দেশপ্রেমিকরা ঐক্যবদ্ধ

হন এবং দেশ-বিরোধী শক্তির

বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এজন্য

তারা রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিক

থেকে সিদ্ধান্ত বা আহ্বানের

অপেক্ষা করেন না। সেজন্যই দেশের

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ধ্বংস

করা এবং বাংলাদেশকে দেশবিশেষের

পদানত করে ফেলা সম্ভব হয়নি। এজন্যই

রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি পালিত

হয়েছে ‘জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবস’

হিসেবে। আওয়ামী লীগ সরকার

দিনটিকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়ার

চেষ্টা চালাচ্ছে।

স্মরণ করা দরকার, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট

এক অভ্যুত্থানে একদলীয় বাকশাল

সরকারের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর

রহমানের মৃত্যুর পর

রাষ্ট্রপতি পদটিতে অধিষ্ঠিত

হয়েছিলেন শেখ মুজিবেরই

সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমদ। ৩

নভেম্বর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান

ঘটিয়ে সেনাপ্রধানের পদ দখল

করেছিলেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ

মোশাররফ। তার এই অভ্যুত্থান

ভারতপন্থী পদক্ষেপ

হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় ছাত্র-

জনতা এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড

বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। সিপাহি-

জনতার বিপ্লব শুরু হয়েছিল ৬ নভেম্বর

রাতে। এই বিপ্লবে খালেদ মোশাররফ

মারা গিয়েছিলেন।

অন্যদিকে জিয়াউর রহমান

মুক্তি পেলেও জাসদ ও গণবাহিনীর

আড়ালে একটি বিশেষ

গোষ্ঠী সেনা অফিসারদের হত্যার

অভিযান চালানোর চেষ্টা করেছিল।

প্রতিটি সেনানিবাসে ঝটিকা সফরের

মাধ্যমে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক

করেছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়ার

তত্পরতায় শান্ত হয়ে আসা সশস্ত্র

বাহিনীও বুঝতে পেরেছিল, অফিসার

হত্যার পেছনে ভারতের

ভূমিকা রয়েছে। জিয়ার চেষ্টায়

পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চেইন অব

কমান্ড। সবচেয়ে বড় কথা, স্বাধীনতা-

সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী সশস্ত্র

বাহিনীকে নির্মূল করে দেয়া সম্ভব

হয়নি। সশস্ত্র বাহিনী বরং আরও ঐক্যবদ্ধ ও

শক্তিশালী হয়েছিল।

রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বহুদলীয় গণতন্ত্র

পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল জিয়াউর রহমানের

প্রধান অবদান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর

পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ‘বাকশাল’

নামে একটিমাত্র দল রেখে অন্য সব

দলকে নিষিদ্ধ এবং একদলীয় শাসন

প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সর্বময়

ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছিল শেখ

মুজিবের হাতে। প্রধানমন্ত্রীর পদ

ছেড়ে রাতারাতি তিনি রাষ্ট্রপতি পদে বসেছিলেন।

বাকশালেরও চেয়ারম্যান ছিলেন

তিনি। তাকে সরানোর বা সরকার

পরিবর্তন করার কোনো ব্যবস্থাই

বাকশালে রাখা হয়নি।

ফলে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভয়ঙ্কর

ধরনের ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসন। এই

সুযোগে আওয়ামী-

বাকশালীরা দেশে লুটপাটের রাজত্ব

কায়েম করেছিল। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ

এবং সরকারবিরোধীদের উত্খাত করার

জন্যও একযোগে নিষ্ঠুর অভিযান শুরু

হয়েছিল। ওই দিনগুলোতে প্রায় ৩৭

হাজার রাজনৈতিক নেতা-

কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। বড় কথা,

কোনো হত্যা বা নির্যাতনের বিরুদ্ধেই

তখন প্রতিবাদ জানানোর উপায় ছিল

না। গোটা জাতি বন্দি হয়ে পড়েছিল।

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশ ও দেশের

মানুষকে ওই শ্বাসরুদ্ধকর

অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ

সৃষ্টি করেছিল। ঘটনাক্রমে ক্ষমতায় আগত

জেনারেল জিয়াউর রহমান বাকশালের

একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাতিল

করেছিলেন। তিনি সেই

সঙ্গে খুলে দিয়েছিলেন বহুদলীয়

গণতন্ত্রের দরজা। এই পথ ধরেই বাতিল

হয়ে যওয়া দলগুলো আবারও রাজনৈতিক

কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ পেয়েছিল।

শুধু তা-ই নয়, ধর্মনিরপেক্ষতা ও

সমাজতন্ত্রের নামে শেখ মুজিব

ইসলামী ও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল

মাত্রকেই নিষিদ্ধ করেছিলেন।

জিয়াউর রহমান

সে দলগুলোকে রাজনীতি করার

অনুমতি দিয়েছিলেন।

কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার

পরিবর্তে আওয়ামী লীগকে ফিরে আসার

সুযোগ দেয়াও ছিল জিয়াউর রহমানের

এক উল্লেখযোগ্য অবদান। শেখ হাসিনাও

জিয়ার বদান্যেই

দেশে ফিরে আসতে পেরেছিলেন।

জিয়ার এ উদার নীতির সুযোগেই মুসলিম

লীগ থেকে শুরু করে ইসলামিক

ডেমোক্র্যাটিক লীগ পর্যন্ত বেশ কিছু

ইসলামী দলের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও

আবির্ভাব ঘটেছিল।

পরবর্তীকালে জামায়াতে ইসলামীও

পুনর্গঠিত হয়েছিল জিয়াউর রহমানের এই

নীতি ও সিদ্ধান্তের সূত্র ধরে। শুধু

বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়, সুষ্ঠু

নির্বাচনের ব্যবস্থাও নিশ্চিত

করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তার

আমলেই ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের

মতো দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন

অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৯ সালে সংসদ

নির্বাচনও করিয়েছেন জিয়া। ৯০ ভাগ

মুসলমানের দেশ বলেই সংবিধানের

শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির

রাহীম’ সংযোজন করেছিলেন জিয়াউর

রহমান। তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার

পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজের

ক্ষেত্রে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর

আস্থা ও বিশ্বাস’ কথাটাকে স্থাপন ও

বাধ্যতামূলক করাও ছিল জিয়াউর

রহমানের অন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

এসবই সম্ভব হয়েছিল ৭ নভেম্বরের কারণে।

ছাত্র-জনতা ও সশস্ত্র বাহিনীর ঐক্যবদ্ধ

প্রতিরোধ ও সফল বিপ্লবই পরিবর্তনের

ভিত্তি ও পথ নির্মাণ করেছিল। সব

মিলিয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তাই

স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য

দিক-নির্দেশনা হয়ে রয়েছে, যার

নেতৃত্বে ছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু

দুঃখ ও ক্ষোভের বিষয় হলো, জাতীয়

জীবনের অমন একটি দিক-

পরিবর্তনকারী দিবসকে নিয়েও

দেশে কুটিল রাজনীতি করা হয়েছে।

দিনটিকে কেন্দ্র

করে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে। এরও

সূচনা করেছে আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬

সালে ক্ষমতায় আসার পর দলটি ‘জাতীয়

সংহতি ও বিপ্লব দিবস’কে বাতিল

করেছে, এর ছুটি থেকেও

জাতিকে বঞ্চিত করেছে। ২০০১

সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয়

জোট সরকার ৭ নভেম্বরকে আগের সম্মান

ফিরিয়ে দিলেও তত্ত্বাবধায়ক নামের

মইন-ফখরুদ্দীনদের অসাংবিধানিক

সরকার আওয়ামী লীগের দলীয়

সিদ্ধান্তকে কার্যকর করে গেছে। শেখ

হাসিনার বর্তমান সরকারের আমলেও

‘জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব

দিবস’কে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

দিনটিকে ক্ষমতাসীনরা বরং আরও

একটি হত্যা দিবস হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত

করতে চাচ্ছেন। অন্যদিকে সব

মিলিয়ে প্রমাণিত সত্য হচ্ছে, দেশের

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয়

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ জাতিকে সমৃদ্ধির

পথে এগিয়ে দিয়ে গেছেন জিয়াউর

রহমান। তার এই নীতি-কর্মকাণ্ড ও

সাফল্যের পেছনে ছিল ৭ নভেম্বরের

অনুপ্রেরণা। আমরা দিনটিকে যথাযথ

মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ ও পালন করার

দাবি জানাই।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১০

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: জাতীয় বিপ্লব এবং সংহতি দিবস সফল হোক
গনতন্ত্র মুক্তি পাক
যালিম শোষক নিপাত যাক
বিজয় আসুক মেহনতি জনতার ।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.