নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।।এস যুক্তির আঘাতে মুক্ত করি চেতনার জট।।

ক্ষুদ্র পরিসরের এই জীবনটাকে আমি ইচ্ছেমত উপভোগ করব। নিষিদ্ধ গলিতে প্রবেশ করে আমি শুদ্ধ হয়ে বের হব।।

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক

আমি স্বপ্নের জন্য ঘুমিয়ে পড়তে রাজী নই, আমি জেগে থাকব স্বপ্নের সূর্যোদয় দেখার জন্য...........

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবর্তন নিয়ে একটি চমৎকার বিতর্ক : Huxley–Wilberforce debate

০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৯

মুখবন্ধ



বিবর্তন নিয়ে বিতর্কের যেন শেষ নেই। এই বিতর্ক চলে সৃষ্টিবাদী আর বিবর্তনবাদীদের মাঝে। বিশ্বাস আর যুক্তির এরকম বিতর্ক নিয়ে পড়তে আর দেখতে ভালই লাগে। আমি বিবর্তনবাদী একজন মানুষ। এরকম বিতর্ক নিয়ে কিছুটা সময় কাটাব বলে নেটে সার্ফিং শুরু করলাম। ১৮৬০ সালের একটি বিতর্ক পেয়ে গেলাম। মজার বিষয় এখানে সৃষ্টিবাদী আর বিবর্তনবাদীদের মাঝে বিতর্ক চলছিল না। তার্কিকরা সবাই ছিলেন বিজ্ঞানী। বিতর্কটি ১৮৬০ অক্সফোর্ড বিবর্তন বিতর্ক (1860 Oxford Evolution Debate) নাম পরিচিত। উইকিপিডিয়াতে এটা নিয়ে একটি লিংকও পেলাম। আরো মজার বিষয় হল বিতর্কটি হয় ৩০ জুন। অর্থাৎ আজকের ঠিক আগের দিন। চলুন দেখে নিই বিতর্কটিতে কি হয়েছিল।





1860 Oxford Evolution Debate



৩০ জুন, ১৮৬০ সাল। চার্লস ডারউইনের "On the Origine of Species" বইটি প্রকাশের সাত মাস পরের ঘটনা। ইংল্যন্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি মিউজিয়াম অব ন্যচারাল হিস্ট্রিতে বিতর্কের আসর বসেছে। এতে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ নামকরা বিজ্ঞানী আর দার্শনিকেরা। অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থমাস হেনরি হাক্সলে, বিশপ স্যমুয়েল উইলবারফোর্স, বেনজামিন ব্রুডি, জোসেফ ডালটন হুকার এবং রবার্ট ফিটজরয়(Beagle জাহাজের সাবেক ক্যপ্টেন)।



বিশপ স্যমুয়েল উইলবারফোর্স



এই বিতর্কটি স্মরন করা হয় উইলবারফোর্সহাক্সলের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের কারনে। উইলবারফোর্স ইচ্ছাকৃতভাবে হাক্সলেকে প্রশ্ন করেন - " এটা কি তাঁর দাদা নাকি দাদী, যার কারনে তিনি মনে করেন তার পূর্বপুরুষ বাদর ছিল?"



এবং বলা হয়ে থাকে যে হাক্সলে সাহেবের উত্তরটা ছিল এরকম - "আমি এজন্য লজ্জিত নই যে আমার পূর্বপুরুষ বাদর ছিল, আমি লজ্জিত এজন্য যে আমার সাথে এমন একজন মানুষের পরিচয় আছে যে তার আশীর্বাদপ্রাপ্ত জ্ঞান সত্যের মানহানির জন্য ব্যবহার করে থাকে।"



থমাস হেনরি হাক্সলে



একজন উপস্থিত সাক্ষী মত প্রকাশ করেন যে উইলবারফোর্সের প্রশ্নটি এরকম অর্থে ছিল - "চার্লস ডারউইনের ল যেটি এখনো উন্নতির পথে রয়েছে, এরকম একটি নড়বড়ে ল অথবা হাইপোথিসিস কি একজন মানুষকে এতটা মুগ্ধ করতে পারে যার কারনে সে নিজেকে বাদরের বংশধর মনে করবে?"



উপস্থিত ছিলেন এমন আরেক ব্যক্তি মনে করেন প্রশ্নটি ছিল এরকম -" তিনি নিজে কি তার দাদার বাদর হবার ফলাফল সামান্য হলেও বহন করছেন কিনা?" [১]





বিতর্ক নিয়েই বিতর্ক



হাক্সলে এবং উইলবারফোর্স দুজনেই "On the Origine of Species" নিয়ে বিশ্লেষন লিখেছিলেন। ২৬ ডিসেম্বর ১৮৫৯ সালে হাক্সলে "The Times" এ ৫০০০ শব্দের একটি বিশ্লেষন লিখেন, যেটিতে বইটির প্রসংশা করা হয়েছিল। বিশপ স্যমুয়েল উইলবারফোর্স ছিলেন শখের পাখিবিশারদ, গনিতে প্রথম শ্রেনীতে ডিগ্রীপ্রাপ্ত এবং তিনি ছিলেন বৃটিশ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। তিনিও ১৮৬০ সালে ১৯০০০ শব্দের বিশ্লেষনধর্মী লেখা লিখেছিলেন, যেটি প্রকাশিত হয়েছিল "The Quarterly Review" তে। তার রিভিউ পড়ে চার্লস ডারউইন মন্তব্য করেছিলেন - “It is uncommonly clever; it picks out with skill all the most conjectural parts, and brings forward well all the difficulties.”



উইলবারফোর্স প্রায় ৩০ মিনিট তার বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলেন। তবে তিনি কুসংস্কার ও ধর্মীয় অনুভুতিকে সামনে রেখে তার বক্তব্য সাজিয়েছিলেন, এটা ভাবলে ভুল হবে। তিনি তৎকালীন বৈজ্ঞানিক অসম্মতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন সার্বিকভাবে। তিনি তুলে ধরেছিললেন এই তত্বটি ছিল বৈজ্ঞানিক সত্য মিথ্যার মাঝে দোদ্যুল্যমান।



যে উইলবারফোর্সকে উপরে উপস্থাপন করা হয়েছে, তার সাথে কি তার বক্তব্যের মিল খুজে পাওয়া যায়? মনে হয়না! জে আর লুকাস "The Historical Journal" এ একটি দীর্ঘ প্রবন্ধে(যেটি পরবর্তীতে "Nature" এ সংক্ষেপে প্রকাশিত) দেখিয়েছেন বিতর্কের এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ঘটেইনি। তিনি তুলে ধরেছিলেন - এই বিতর্কটির শ্রোতা ছিল "House of Commons" এর চেয়েও বেশী। এরকম জনসমুদ্র এবং তর্কযুদ্ধের একটি পরিবেশে সবাই হয়ত সবকিছুই শুনতেও পারেনি। এমনকি এই বিতর্কের কোন অডিও তো দুরের কথা আক্ষরিক কোন নথিও নেই।



বিতর্কটিতে বিশপ স্যমুয়েল উইলবারফোর্স এর পর বক্তব্য উপস্থাপন করেন রবার্ট ফিটজরয়(Beagle জাহাজের সাবেক ক্যপ্টেন), এরপর জোসেফ ডালটন হুকার এবং থমাস হেনরি হাক্সলেজোসেফ ডালটন হুকার ছিলেন ডারউইনের বন্ধু। এই বিতর্কের দুই দিন পরে ডারউইনকে লেখা চিঠিতেও তার বন্ধুর এরকম কোন ঘটনার উল্লেখ ছিল না।



লুকাস উল্লেখ করেন, কোন সাংবাদিকই এই বিষয়টি নিয়ে কোন রিপোর্ট করেননি। "The Athenaeum", "Jackson’s Oxford Journal" এগুলোর কোনটিই ঐ অসাধারন ঘটনাটি প্রকাশ করেনি। এমনকি পরবর্তি দিনের “the Evening Star" এও এ নিয়ে কোন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি।



তাহলে কি ঘটেছিল?



উপরে উল্লেখিত তথ্য উপাত্ত দিয়ে আমরা এই উপসংহারে পৌছুতে পারি-



"বিতর্কের কোথাও উইলবারফোর্স হাক্সলিকে বাদর নিয়ে কোন প্রশ্ন করেননি।"



"মানুষ যখন তত্বটির সত্যতা নিয়ে দ্বিধা দন্দ্বে ছিল, তখন এরকম একটি গল্প উটে আসতেই পারে। ইতিহাস হয়ত এই অংশটুকুই ভুল করেছিল উল্লেখ করতে।"





তথ্যসুত্র:



উইকিপিডিয়া



christianity.com



creation.com



branchcollective.org



wayoflife.org



studymode.com



ছবি : গুগল

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:১২

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ভাল পোস্ট। ++

০১ লা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩০

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ।।। :)

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২২

সাইফুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। প্রিয়তে নিলাম, :D B-)

২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ :D

৩| ০৬ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৪

মাসুম রৌদ্র বলেছেন: মাশাল্লাহ । ভালা ই লিখছেন ।

২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৩২

বিকারগ্রস্থ আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ :D

৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৪

মাসুম রৌদ্র বলেছেন: মাশাল্লাহ । ভালা ই লিখছেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.