নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু ছােলহ

আবু ছােলহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম উম্মাহর বর্তমান দুর্গতি: পথপ্রাপ্তি ও প্রতিকারে কিছু আত্মসমালোচনা (পর্ব-০১)

১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬



মুসলমানদের বর্তমান দুর্গতির নেপথ্যে

মুসলমানদের বিগত সাড়ে চৌদ্দশ' বছরের জীবনকে ইতিহাসের পাতায় দেখা হলে জানা যায় যে, আমরা ইজ্জাত ও শ্রেষ্ঠত্ব, শান ও শওকত এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির একমাত্র ও একচ্ছত্র অধিকারী ছিলাম। কিন্তু যখন ইতিহাসের পাতা হতে নজর সরিয়ে বর্তমান অবস্থার উপর দৃষ্টিপাত করা হয় তখন আমাদিগকে চরম লাঞ্ছিত ও অপদস্থ, নিঃস্ব ও অভাবগ্রস্থ জাতি হিসেবে দেখি। আমাদের না আছে শক্তি-সামর্থ্য, না আছে ধন-দৌলত, না আছে শান-শওকত, না আছে পরস্পর ভ্রাতৃত্ব বন্ধন, না স্বভাব ভাল, না আখলাক ভাল, না আমাল ভাল, না আচার-আচরণ ভাল–সব ধরণের অকল্যাণ আমাদের মধ্যে, সব ধরণের কল্যাণ হতে আমরা যেন দূর-বহু দূরে। অন্যান্য ধর্মের ব্যক্তিবৃন্দ আমাদের এই দুরাবস্থার উপর আনন্দ বোধ করে। প্রকাশ্যে আমাদের দুর্নাম গাওয়া হয় এবং আমাদের নিয়ে উপহাস করা হয়।

এখানেই শেষ নয় বরং স্বয়ং আমাদের কলিজার টুকরা নব সভ্যতার প্রতি অনুরক্ত যুবকশ্রেনির নয়নমনি সন্তানগ্ণ ইসলামের পূত-পবিত্র বিধানসমূহকে উপহাস করে, কথায় কথায় দোষ খুঁজে বেড়ায় এবং এই পবিত্র শরীয়তকে আমালের অযোগ্য, অনর্থক ও বেকার মনে করে নেতিবাচক ধ্যান-ধারনা পোষন করে আমলের ময়দান থেকে দূরে সরে থাকে। অবাক হতে হয়- যে জাতি একদা পিপাসা মিটিয়েছে, তারা আজ কেন পিপাসার্ত! যে জাতি দুনিয়াকে সভ্যতা ও সামাজিকতার সবক পড়িয়েছে, আজ তারা কেন অসভ্য ও অসামাজিক?



রোগ নির্ণয়ে ভুল

জাতির দিশারীগণ আজ হতে অনেক পূর্বেই আমাদের দুরাবস্থাকে অনুধাবন করেছেন এবং নানাভাবে আমাদের সংশোধনের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু (কবির ভাষায়)– “চিকিৎসা যতই করা হল, রোগ ততই বেড়ে চলল“।

বর্তমান অবস্থা যখন অধিকতর শোচনীয় পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে এবং অতীতের তুলনায় ভবিষ্যত আরও বেশি বিপজ্জনক ও অন্ধকারময় দেখা যাচ্ছে তখন আমাদের চুপ করে বসে থাকা এবং সক্রিয় চেষ্টা না করা এক অমার্জনীয় অপরাধ।

কিন্তু বাস্তব কোন পদক্ষেপ নেয়ার পূর্বে আমাদের অবশ্যই ঐ সকল কারণসমূহ চিন্তা করতে হবে, যে সকল কারণে আমরা এই অপমান ও লাঞ্ছনার আযাবে পতিত হয়েছি। আমাদের অবনতি ও অধঃপতনের বিভিন্ন কারণ বর্ণনা করা হয় এবং উহা দূর করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পদক্ষেপ অনুপযোগী ও বিফল প্রমাণিত হয়েছে। ফলে আমাদের পথপ্রদর্শকগণকেও নৈরাশ্য ও হতাশায় নিমজ্জিত দেখা যাচ্ছে।

বাস্তব সত্য হল এই যে, আজ পর্যন্ত আমাদের রোগ নির্ণয়ই সঠিকরূপে হয়নি। যে সব কারণ বলা হয় উহা প্রকৃত পক্ষে রোগ নয় বরং রোগের উপসর্গ মাত্র। সুতরাং যতক্ষন পর্যন্ত প্রকৃত রোগের প্রতি মনযোগ দেয়া না হবে এবং রোগের মূল উৎসের সংশোধন ও চিকিৎসা না হবে, ততক্ষন পর্যন্ত উপসর্গের সংশোধন ও চিকিৎসা অসম্ভব ও অবাস্তব। কাজেই যতক্ষন পর্যন্ত আমরা প্রকৃত রোগের সঠিক নির্ণয় ও উহার সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে না নিব ততক্ষন পর্যন্ত সংশোধনের ব্যাপারে আমাদের মতামত ব্যক্ত করা হবে মারাত্মক ভুল।

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:০৯

এভো বলেছেন: ভাই একমাত্র মুসলমানরাই তাদের শরিয়তি বিধানের সাথে আকরে আছে , অন্য ধর্মের মানুষ তাদের শরিয়ত থেকে অনেক দুরে সরে গেছে এবং তারা বর্তমানে মুসলমানদের থেকে অনেক আগিয়ে আছে । মুসলমানরাই এখনো সব চেয়ে বেশি শরিয়তি বিধান নিয়ে অবস্থান করছে । যদি অন্য ধর্মালম্বিদের সাথে তুলনা করা হয় তাহোলে মুসলমানরাই সব চেয়ে বেশি ধর্ম কর্ম করে ।
তাহোলে এতে হতাশ হওয়ার কি আছে ?? মুসলমানরাই তো অন্য ধর্মের মানুষের চেয়ে বেশি ধর্ম পরায়ন ।

১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪৯

আবু ছােলহ বলেছেন:



আপনার কথা ঠিক আছে। তবে, হতাশ হওয়ার জন্য নয়, হতাশা কাটানোর জন্য বিশ্লেষনের প্রয়োজন রয়েছে। আত্মসমালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। নিজেদের উদাসীনতায় এ জাতি আজ তাদের ক্রান্তিকাল দেখছে। বিশ্বময় পড়ে পড়ে মার খাচ্ছে। এ বছরও চীনের মুসলিমদের সিয়াম পালনে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সেখানকার জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলিমরা রোজা রাখতে পারছেন না। রমজান আসার ঠিক পূর্বমুহূর্তে মার্কিন বর্বরদের কূটকৌশলে, তাদের দুতাবাস স্থানান্তরের ছলছুতোয় অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনীর প্রান কেড়ে নেয়া হল দখলদার ইসরাইলীদের মাধ্যমে।

কত আর উদাহরন দেয়া যায়? অত্যাচার নির্যাতন মুসলমানদের নিত্যসঙ্গী। কেন? এই কেন'র উত্তর না খুঁজে গডডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিলে এ জাতির উন্নতির আশা সুদূরপরাহত। সুতরাং, ক্ষুদ্র এই প্রচেষ্টা।

কৃতজ্ঞতা। ভাল থাকবেন সবসময়।

২| ১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


আসল 'রোগ'টা কি? আপনি জানেন?

১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬

আবু ছােলহ বলেছেন:



সামনের পর্বগুলো যদি লিখতে পারি, তাহলে জানা যাবে হয়তো। ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

মিঠু পারভেজ বলেছেন: মুসলমানেরা ধর্ম পালন করে অন্ধের মত।
তাই আজ সভ্য দুনিয়াতে মুসল্মানেরা পথ চোখে দেখেনা।
খুবই দুঃখজনক :((

১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৭

আবু ছােলহ বলেছেন:



ধন্যবাদ।

৪| ১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন:

ছবি দিয়ে মন্তব্য করলাম।

১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৮

আবু ছােলহ বলেছেন:



ছবি দিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন, ক্লিয়ার করলে বুঝতে সুবিধা হত।

৫| ১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৫

ইনাম আহমদ বলেছেন: ধর্মব্যবস্থাকে রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে পৃথকীকরণ, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ ও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নিয়ন্ত্রণ এই তিনটি বিষয় যতদিন মুসলমানেরা নিজেদের সমাজে প্রচলন করতে না পারছে, ততদিন মোল্লাতন্ত্রের আগ্রাসনে মুসলিম বিশ্বের অধঃপতন চলতেই থাকবে।

১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

আবু ছােলহ বলেছেন:



ধন্যবাদ। আপনার বিশ্লেষনের সবগুলোর সাথে সহমত পোষন করতে পারছি না বলে দু:খিত। প্রথম দু'টি করা হলে তা হবে, কুরআনের নির্দেশনার স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরন। রাস্ট্র পরিচালনার বিধান কুরআন দিয়েছে, সুতরাং তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ কোথায়? আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়। ধর্মীয় বিধি বিধান মোতাবেক রাস্ট্র চালাতে হলে ধর্মীয় রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা শিশুরও বোধগম্য। আর শেষেরটির প্রয়োজন রয়েছে। সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এর প্রয়োগ বেশি অনুভূত হয়।

৬| ১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

টারজান০০০০৭ বলেছেন: পুস্তিকা ওয়াহেদ এলাজ?

@ ইনাম আহমদ ! আপনার কি পাঁঠা সম্প্রদায়ের বাতাস লাগিয়াছে ?

একসময় পাঁঠা সম্প্রদায় ছাগু সম্প্রদায়ের কাছে পোঙ্গামারা খাইয়া খুব বলিত "ধর্ম নিয়ে রাজনীতি ,সবচেয়ে বড় দুর্নীতি !" ইহা ছাগু সম্প্রদায়ের জন্য ঠিক আছে ! কিন্তু বাস্তবে দেখা যাইতেছে "ধর্মহীন রাজনীতি তারচেয়েও বড় দুর্নীতি "

১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩১

আবু ছােলহ বলেছেন:



জ্বি, ঠিক ধরেছেন। ধন্যবাদ। তবে সামান্য পরিবর্তিত এবং পরিমার্জিত। মুসলমানদের দুরবস্থা কাটানোর চমকপ্রদ পরামর্শ রয়েছে এখানে।

৭| ১৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯

এভো বলেছেন: বিগত কয়েক দিন বিদাত নিয়ে বেশ কিছু লিখা এই ফোরামে পোড়লাম। সোয়াব পাওয়ার জন্য বা ভালো কিছুর জন্য ইসলামে কোন কিছু সংযোজন করাই বিদাত। সে হিসাবে শরিয়া আইণ যেটা চার জন্য শরিয়া ইমাম কয়েক শত বছর পর বানিয়েছিলেন যেটা এক্ টা নতুন সংযোজন, সেটা বিদাত। ইসলামি রাজনীতি যেটা ও নতুন সংযোজন, সেটাও বিদাত, বিদাতের ব্যাখা অনুযায়ি।
সুতরাং আপনি যে শরিয়ত ও রাজনীতির কথা বলছেন, সেটা বিদাত।

২২ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৩

আবু ছােলহ বলেছেন:



মন্তব্যে আসায় ধন্যবাদের সাথে কৃতজ্ঞতা।

বিদআতকে বিদআতই বলতে হবে। কিন্তু যা বিদআত তো নয়ই, বরং ইসলামের অপরিহার্য অনুসঙ্গ, তাকে বিদআত ঠাওরালে তখন কী করা যায়! কিছু লোক দেখে থাকবেন, যারা সবকিছুতে বিদআতের গন্ধ পান, তারা ইসলামী রাজনীতিতেও বিদআতের গন্ধ পেতেই পারেন। তবে একথা তারাও ভাল করেই জানেন, এবং জেনে বুঝেই মিথ্যাচার আর অপপ্রচার করে থাকেন। কিন্তু প্রকৃত শ্বাশত সত্য হচ্ছে- ইসলামী রাজনীতি ছিল, আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত এর হুকুম অবিকল বহাল থাকবে। ইসলামী শরিয়াহ যারা মানেন না, হাদিস ফলো করার ছুঁতোয়, কুরআন ফলো করার মিথ্যে অযুহাতে যারা শরিয়তের ইমামগন (যাদের কেউ কেউ সাহাবীদের সংস্পর্শ ধন্য ছিলেন, যেমন ইমাম আযম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাবেয়ী ছিলেন, কেউ কেউ তাবেয়ীদের সাহচর্য পেয়েছেন এবং সমকালীন যুগে বিশ্ববরেন্য আলিম, মুফতি, মুফাসসির, মুহাদ্দিস ছিলেন) শত শত বছর পরে শরিয়াহ নির্ধারন করেছেন, যারা বলেন, তারা ইতিহাসে অজ্ঞ অথবা জ্ঞানপাপী নিকৃষ্ট মিথ্যাবাদী। শরিয়া প্রবর্তক মাযহাবের ইমামগনের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে তারা ইসলামের অসংখ্য বিধানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ফাঁকি দেয়ার জন্য কত বাহানা যে এদের!

ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর খলিফাগন কুরআন অনুসারে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। কুরআন পাল্টায়নি। তার নির্দেশনারও বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। সুতরাং, যারা কুরআন না পড়েই, ইসলামী হুকুমতের ব্যাপারে কুরআনের কঠোর নির্দেশনা না দেখার ভান করে ইসলামী রাজনীতি নিয়ে অবান্তর প্রশ্ন তোলেন, বৃথা বাগাড়ম্বর করে থাকেন, তাদের নির্বুদ্ধিতা হাসির খোরাক যোগায়। তাদের জন্য নিচের আয়াতে কারিমাগুলো প্রনিধানযোগ্য। নির্ভরযোগ্য তাফসিরের কিতাব থেকে তারা এসব আয়াতের তাফসির দেখে নিলে আরও কৃতজ্ঞ থাকব।

فَلاَ تَخْشَوُاْ النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلاَ تَشْتَرُواْ بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلاً وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না, যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত ৪৪।

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম। সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত ৪৫।

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ

যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত ৪৭।

অনেক শুভকামনা।

৮| ১৯ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পারিবারিক ভাবে ছোট থেকেই ধর্মচর্চায় উৎসাহিত করতে হবে। আজকালকার অভিভাবকরা এসব ব্যপারে উদাসীন। যে কারণে কিশোর বয়সে ধর্ম থেকে দূরে সরে যায় সন্তানরা। পরে আর ফেরত আনা যায় না...

২২ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭

আবু ছােলহ বলেছেন:



ভাল বলেছেন। কৃতজ্ঞতা।

৯| ২১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

ইনাম আহমদ বলেছেন: টারজান০০০০৭ নামে আইডি খুলে কেউ যখন ইসলামের প্রচার করে, আবার তার মতের সাথে সাধারণ মুসলমানেরা হুঁ-হা জবাব দেয়, মুসলমানদের সমস্যা কোনখানে বুঝতে সমস্যা হয় না।
কথার ধরণ কি! ছিঃ
আর আপনি কোরআনের কোন স্থানে রাজনীতির শিক্ষা পেয়েছেন একটু বলবেন কি পোস্ট লেখক সাহেব? আমি পাইনি। আর মুসলমানদের সমস্যা কোনখানে এটা আপনি সম্ভবত হুজুরদের বয়ান থেকে শিখেছেন, সমাজবিজ্ঞানীদের কিংবা রাজনীতি বিশ্লেষকদের অথবা প্রকৃত শিক্ষিতদের আলোচনাগুলো পড়ে দেখবেন প্লিজ। আমার যুক্তির পক্ষে যথেষ্ট মতামত আছে।
ব্লগে এমন সব পোস্ট দেখলে আমার চিন্তা হয়, দেশটা কোথায় যাচ্ছে। দিনদিন বাংলাদেশ মৌলবাদের আখড়ায় পরিণত হলে সমস্যা হবে।

২২ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭

আবু ছােলহ বলেছেন:



আপনি দয়া করে ৭ নং কমেন্ট এর জবাবটি দেখে নিলে কৃতজ্ঞ থাকব।

কুরআন হাদিসের আলোচনা দেখলে বুঝি আপনাদের 'মৌলবাদ' চোখে পড়ে!

ভাল থাকবেন।

২২ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৩৭

আবু ছােলহ বলেছেন:



বর্তমান মুসলিম উম্মাহর দুর্দশার কারন অনুসন্ধানের চেষ্টা করে তা থেকে উত্তরনের পথনির্দেশ খোঁজার প্রয়াসে এই পোস্ট।

ব্লগ আইডি দেখে ধরেই নেয়া যায়, আপনি একজন মুসলিম। তো, ব্লগে স্ব-জাতির দুর্দশার কারন বিশ্লেষন এবং তা থেকে উত্তরনের উপায় অন্বেষনের প্রচেষ্টায় আপনার দুশ্চিন্তা বৃদ্ধির কারন বোধগম্য নয়। এ ধরনের স্ব-বিরোধী কমেন্ট এই জাতীয় আইডির সাথে যায় না।

ধন্যবাদ।

১০| ২১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫০

টারজান০০০০৭ বলেছেন: @ ইনাম আহমেদ ! আমি কখনো অনলাইনে ইসলাম প্রচার করিনা ! ইসলাম প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ইহাকে অবলম্বনও করিনা , বিশ্বাসও করিনা ! তবে ইসলামকে ভালোবাসি বলিয়া পাঁঠা দমন করিয়া থাকি ! বনে জঙ্গলে থাকি বিধায় চুশীল ভাষা এখনো শিখি নাই ! একটা কোর্স খুলিলে ভর্তি হইতাম !

২২ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৮

আবু ছােলহ বলেছেন:



ধন্যবাদ।

১১| ২৪ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

ইনাম আহমদ বলেছেন:
فَلاَ تَخْشَوُاْ النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلاَ تَشْتَرُواْ بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلاً وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না, যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত ৪৪।


وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম। সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত ৪৫।

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ

যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত ৪৭।
এখানেই মুসলমানদের সমস্যা, আপনাদের মতো কমার্শিয়াল হুজুরেরা. যারা সস্তা দরে আয়াতের ব্যবহার করে ব্যবসা পাতান। এগুলোর ব্যবহার করে আপনি কীভাবে রাজনৈতিক দলের যৌক্তিকতা প্রমাণ করলেন আমার বোধগম্য নয়। আপনি কি কোনও মাদ্রাসার প্রোডাক্ট যেখানে সস্তাদরে আয়াতের ব্যবসা শেখানো হয়? আর কোরআন হাদীসের আলোচনা করে করেই আইএসে-আলকায়দায় লোক নেয়া হয়েছে, সুতরাং আপনার আলোচনার বিষয়টা কি সেটা আমি দেখবো না, আলোচনা কীভাবে করছেন সেটাই দেখার বিষয়। আর মানুষের নীতিশিক্ষার আয়াতকে যেভাবে আপনি ইসলামী রাজনীতির পক্ষে দেখালেন, তাতে আপনার উদ্দেশ্য আর জ্ঞানের বহর পরিষ্কার হয়ে গেছে।

বর্তমান মুসলিম উম্মাহর দুর্দশার কারন অনুসন্ধানের চেষ্টা করে তা থেকে উত্তরনের পথনির্দেশ খোঁজার প্রয়াসে এই পোস্ট।

ব্লগ আইডি দেখে ধরেই নেয়া যায়, আপনি একজন মুসলিম। তো, ব্লগে স্ব-জাতির দুর্দশার কারন বিশ্লেষন এবং তা থেকে উত্তরনের উপায় অন্বেষনের প্রচেষ্টায় আপনার দুশ্চিন্তা বৃদ্ধির কারন বোধগম্য নয়। এ ধরনের স্ব-বিরোধী কমেন্ট এই জাতীয় আইডির সাথে যায় না।

এটা আমার সার্টিফিকেট নাম। এবং আমি একজন মুসলমান। তার মানে এই না যে আমি ধর্মান্ধ মৌলবাদী ছাগলদের সাথে ম্যাঁ ম্যাঁ-তে সুর মেলাবো। মুসলিম সমাজের প্রচলিত সমস্যা, মুসলমান দেশগুলোর দুর্গতি ইত্যাদি নিয়ে ওয়াজী বয়ান করে আদৌ কোনও সমাধান না দিয়ে শুধুমাত্র আরও বেশী কোরআন-হাদীস পড়তে বললেই সমস্যার সুরাহা হবে না বরং মোল্লাদের আয়রোজগারটা একটু বাড়বে এই যা।
আপনাদের মতো সুযোগসন্ধানীদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়া প্রয়োজন।

২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

আবু ছােলহ বলেছেন:



ইসলামী রাজনীতি বিষয়ে আপনার ধারনা ক্লিয়ার করলে খুশি হতাম। ইসলামে কি রাজনীতি আছে? থাকলে কোন্ পদ্ধতিতে কিভাবে? দয়া করে বুঝিয়ে বললে কৃতজ্ঞ থাকবো।

এই আইডির বয়স অর্ধ যুগ পেরিয়ে। আপনি কত দিন ব্লগে? ভাষাগত শালীনতা কাম্য।

২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১১

আবু ছােলহ বলেছেন:



আপনি ভাল বলেছেন। আমার জ্ঞান খুবই সীমিত। কুরআন হাদিসের বড় ব্যাখ্যাদাতাও কেউ নই। সামান্য যা জানি, জাতির কল্যান বিবেচনা করে তার কিছু কিছু উপস্থাপন করি। আর ব্লগে মূলত: শিখতে আসা। জানতে আসা। আমি মনে করি, আমার আরও জানা দরকার। সম্ভবত: আপনারও।

'ধর্মান্ধ', 'মৌলবাদী', 'ছাগল' এসব শব্দ দিয়ে নিজের রুচির পরিচয় প্রকাশ করলেন?

আপনি বলেছেন- আপনাদের মতো সুযোগসন্ধানীদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়া প্রয়োজন।

কারন কী? আমি যদি এর উল্টোটা বলি, তাহলে আপনার কাছে কেমন লাগবে? অবশ্য এই ধরনের বেআদবি আমাদের শিক্ষায় নেই। আপনাকে আরও কিছু ইসলামী মনা ব্লগারের সাথে বচসা করতে দেখলাম, আপনার ব্লগ ঘুরে। তার মানে, ব্লগে আপনার কাজ ইসলাম ধর্মের বিপরীতে কলম ধরা? নামের ধার্মিক হয়ে থাকলে, আপনার ধর্ম নিয়ে আপনি থাকুন, দয়া করে গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসবেন না। আপনার কল্যান কামনা করছি।

অনেককেই দেখা যায়, কুরআন জানে না, হাদিস পড়েনি, ইসলামী বিষয়াদিতে তর্ক করতে ওস্তাদ। তেমনি আপনারও বোধ হয় ঝগড়া করার একটা বাতিক আছে। তা ঝগড়া অন্য কোথাও করুন মিয়াভাই।

আল্লাহর রাসূল কি দেশ পরিচালনা করেছেন? করে থাকলে কী দিয়ে করেছেন? তাঁর সংবিধান কী ছিল? খোলাফায়ে রাশেদীন কোন্ সংবিধানের আলোকে দেশ চালিয়েছিলেন? জমিন, মানে পৃথিবী যদি আল্লাহর হয়ে থাকে, তাহলে এখানে আইন চলবে কার? কার্ল মাক্স এর? মূর্খরা যা বলে আপনি শিক্ষিত মানুষ হয়ে তা বলেন কিভাবে?

مَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِهِ إِلاَّ أَسْمَاء سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَآؤُكُم مَّا أَنزَلَ اللّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ إِنِ الْحُكْمُ إِلاَّ لِلّهِ أَمَرَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُونَ

তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের এবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছে। আল্লাহ এদের কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না। সূরাহ ইউসূফ, আয়াত-৪০।

যাই হোক, আপনার মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা চাচ্ছি। আপনি হয়তো অনেক জ্ঞানী। আমাদের জ্ঞান কম। ভাল থাকুন অনেক।

১২| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৩১

এভো বলেছেন: ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ , তবে কিছু বিষয়ে আরেকটু ক্লিয়ার হতে চাই, যেমন আপনি লিখেছেন ---

১) যারা সবকিছুতে বিদআতের গন্ধ পান, তারা ইসলামী রাজনীতিতেও বিদআতের গন্ধ পেতেই পারেন। তবে একথা তারাও ভাল করেই জানেন, এবং জেনে বুঝেই মিথ্যাচার আর অপপ্রচার করে থাকেন। কিন্তু প্রকৃত শ্বাশত সত্য হচ্ছে- ইসলামী রাজনীতি ছিল, আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত এর হুকুম অবিকল বহাল থাকবে।

সত্য কথা সেখানে রাজনীতি ছিল এবং ঐ রাজনীতির বাহিরে সংযোজন বিযোজন বিদায়েতের পর্যায় পড়বে বিদায়েতের ব্যাখা অনুযায়ি । আচ্ছা বলুন তো ঐ সময় রাষ্ঠ্রের বিরুধী দল কোনটা ছিল এবং রাষ্ঠ্র পরিচালনা পরিষদে তাদের কতজন সদস্য ছিল এবং তারা কি জনগণের ভোটের মাধ্যমে এসে ছিল ? এর উত্তর হোল না । এই যে রাজনীতির ভিতরে সংযোজন বিযোজন এটা তো বিদায়েতের পর্যায় পড়ে না ।

২) ইসলামী শরিয়াহ যারা মানেন না, হাদিস ফলো করার ছুঁতোয়, কুরআন ফলো করার মিথ্যে অযুহাতে যারা শরিয়তের ইমামগন (যাদের কেউ কেউ সাহাবীদের সংস্পর্শ ধন্য ছিলেন, যেমন ইমাম আযম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাবেয়ী ছিলেন, কেউ কেউ তাবেয়ীদের সাহচর্য পেয়েছেন এবং সমকালীন যুগে বিশ্ববরেন্য আলিম, মুফতি, মুফাসসির, মুহাদ্দিস ছিলেন) শত শত বছর পরে শরিয়াহ নির্ধারন করেছেন, যারা বলেন, তারা ইতিহাসে অজ্ঞ অথবা জ্ঞানপাপী নিকৃষ্ট মিথ্যাবাদী। শরিয়া প্রবর্তক মাযহাবের ইমামগনের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে তারা ইসলামের অসংখ্য বিধানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ফাঁকি দেয়ার জন্য কত বাহানা যে এদের!

ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর খলিফাগন কুরআন অনুসারে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। কুরআন পাল্টায়নি। তার নির্দেশনারও বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি


রসুল (সা: ) এর সময় তো ভাই হানাফি আইণ , শফি আইণ , হাম্বলি আইণ এবং মালিকি আইণ ছিল না ---- তাহোলে এ সমস্ত আইণ কি সংযোজন বিযোজন নহে ? এই সংযোজন বিযোজন করাটাকে বিদায়েত বলা হচ্ছে না ভাই ? আল্লাহর আইণ এক বিষয়ে ৪ রকম হয় কি করে ভাই ? যে অপরাধের জন্য হানাফি আইণে মৃর্তু দন্ড সেটা অন্য আইণে কয়েক বৎসরের জেল বা খালাস .. এই সমস্ত পার্থক্য কেন ভাই ? আল্লাহর আইণ কি করে এত ভাবে বিভক্ত হয় ভাই ? এগুলো তো সংযোজন , তাহোলে বিদাত নহে কেন ভাই ?

২৭ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫

আবু ছােলহ বলেছেন:




১. এই জন্যই বিদআতে হাসানাহ এবং বিদআতে সাইয়্যিআহ এর শ্রেনিবিভাগ। ইসলামী রাজনীতির সব হুকুম আহকাম আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় প্রয়োগ করে গেছেন, কিংবা প্রয়োগের প্রয়োজন পড়েছে - বিষয়টি এমন নয়। অনেক বিষয় পরবর্তী সময়ে খোলাফায়ে রাশেদার সময়ে চালু হয়। দেশ ও জনগনের কল্যানে গৃহীত সেসব পদক্ষেপগুলো যেমন বিদআত ছিল না, ঠিক তেমনি বর্তমান সময়ে এসেও কুরআন, হাদিস, ইজমা এবং কিয়াসের আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো প্রয়োজনীয় বিধান উদ্ভাবনকে মোটেই বিদআত বলা যাবে না।

২. মাযহাব অর্থ ও এর হাকীকত না জানার কারণে আপনার মনে উপরোক্ত প্রশ্নগুলো উদয় হয়েছে। মাযহাব মানা ছাড়া ইসলামী শরীয়ত মানা এককথায় অসম্ভব।

মাযহাব মানে পথ। যে পথের গন্তব্য হল কুরআন ও সুন্নাহ। তাছাড়া কুরআন ও হাদীসের সবচে’ বিশুদ্ধ ব্যাখ্যার নাম হল মাযহাবের ইমামদের সংকলিত ফিক্বহে ইসলামী। তাই মাযহাব মানা মানেই কুরআন ও হাদীসেরই বিধান মানা।

যারা মুজতাহিদ নয়, তারা মাযহাব অনুসরণ ছাড়া কুরআন ও হাদীসের আলোকে পরিপূর্ণ শরীয়ত মানতেই পারে না। এটি তাদের জন্য অসম্ভব বিষয়।

যেমন অজুর ফরজ কতগুলো? অজু ভঙ্গের কারণ কতগুলো? অজু কতগুলো কারণে মাকরূহ হয়? মুস্তাহাব কতগুলো? অজুর সুন্নাত কতগুলো?

নামাযের শর্ত কতগুলো? নামাযের ফরজ কতগুলো? নামাযের ওয়াজিব কতটি? নামাযের মুস্তাহাব কতগুলো? নামাযের সুন্নত কতগুলো? কতগুলো কারণে নামায মাকরূহ হয়? কতগুলো কারণে নামাযে সাহু সেজদা ওয়াজিব হয়? কতগুলো কারণে নামায ভেঙ্গে যায়? ইত্যাদি বিষয় আলাদা শিরোনাম আকারে, সুনির্দিষ্ট নাম্বারসহ তথা অজুর ফরজ চারটি, নামায ভঙ্গের কারণ ১৯টি ইত্যাদি শিরোনাম ও নাম্বারসহ কুরআন ও হাদীসে বিদ্যমান নেই।

তাই একজন সাধারণ মুসলিমের পক্ষে শুধু কুরআন ও হাদীসের অনুবাদ পড়েই এসব বিষয়গুলোর নির্দিষ্ট সংখ্যা বের করে সঠিক পদ্ধদিতে ইবাদত করা আদৌ সম্ভব নয়।

তাই এমন সাধারণ মুসলিমগন কিভাবে দ্বীন পালন করবে?

তাদের জন্য সহজ পথ হল, কুরআন ও হাদীস বিশেষজ্ঞ খাইরুল কুরুন, তথা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটবর্তী উত্তম জামানার যেসব মুজতাহিদগণ কুরআন ও হাদীস ঘেটে এসব বিষয়গুলো বের করে দিয়েছেন, তাদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা অনুপাতে ইসলামী শরীয়ত অনুসরণ করা। এর নামই হল মাযহাব অনুসরণ।

আর এমন দ্বীন বিশেষজ্ঞদের অনুসরণের নির্দেশ কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য স্থানে এসেছে। যেমন-

وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ [٣١:١٥]

যে আমার অভিমুখী হয়,তার পথ [মাযহাব] অনুসরণ করবে। [সূরা লুকমান-১৫]

মাযহাব মানে পথ। এ আয়াতে আল্লাহ অভিমুখী তথা কুরআন ও হাদীস বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের মাযহাব অনুসরণ করার পরিস্কার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

আরেক আয়াতে এসেছে-

فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ [٢١:٧]

অতএব তোমরা যদি না জান তবে যারা জানে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর। [সুরা আম্বিয়া-৭]

এ আয়াতেও না জানলে, না বুঝলে, বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে জিজ্ঞাসা করে মানতে বলা হয়েছে। আর বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নির্দেশনা অনুপাতে ইসলামী শরীয়ত মানার নামইতো মাযহাব।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। [সুরা আন নিসা-৫৯]

এই আয়াতে বিচারক বলতে মূলত: ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী মুহাক্কিক মুজতাহিদ আলেমদের বুঝানো হয়েছে।

এরকম আরো অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা জ্ঞানীদের পথ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অনুসরণ করতে বলেছেন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের। আর এভাবে কুরআন ও হাদীস বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের অনুসরণে ইসলামী শরীয়ত মান্য করার নামই হল মাযহাব অনুসরণ করা।

মাযহাব ছাড়া দুআ রাকাত নামায পড়াও অসম্ভব

মাযহাব ছাড়া পূর্ণ দ্বীন মানা সম্ভব নয়, তাই চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা আবশ্যক।

যেমন দুই রাকাত নামায মাযহাবের অনুসরণ ছাড়া আদায় করা অসম্ভব।

উদাহরণতঃ



রুকু করা ফরজ কুরআন দ্বারা প্রমাণিত।



রুকুর তাসবীহ পড়া সুন্নত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।



রুকুতে গমণের সময় ইমাম জোরে তাকবীর বলে আর মুসল্লি আস্তে তাকবীর বলে। এ মাসআলা কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই। অথচ তা নামাযের মাসআলা। ইমাম যে জোরে তাকবীর বলে, আর মুসল্লি সর্বদা আস্তে আস্তেই তাকবীর বলে এভাবে আমল করার দ্বারা নামায শুদ্ধ হচ্ছে কি না? তা কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই।

এর সমাধান মাযহাবের ইমামদের ইজমা তথা ঐক্যমত্ব এর দ্বারা প্রমানিত হয়েছে।



রুকুতে গিয়ে যদি কেউ ভুল তাকবীর না বলে, রুকুর তাসবীহের বদলে কেউ সেজদার তাসবীহ বলে ফেলল, তাশাহুদের বদলে সূরা ফাতিহা পড়ে ফেললো, জোরে কিরাতের স্থলে আস্তে কিরাত পড়ল, আস্তের স্থলে জোরে পড়ল এসব মাসআলার সমাধান ছাড়াতো সহীহ পদ্ধতিতে নামায পড়া সম্ভব নয়।

আর এসব মাসআলাসহ নামাযের অসংখ্য মাসায়েলের সমাধান না কুরআন দ্বারা প্রমাণিত, না হাদীস দ্বারা প্রমানিত। বরং এসব সমাধান মাযহাবের ইমামগণ কুরআন ও হাদীসের গভীর থেকে মূলনীতি বের করে এর আলোকে উদ্ভাবন করেছেন। আর তাদের উদ্ভাবিত সেসব মাসআলার নামই হল মাযহাব।

এইতো গেল শুধু নামাযের একটি ছোট্ট অংশের উদাহরণ। এমনিভাবে মানুষের জীবনঘনিষ্ট এমন অসংখ্য মাসআলার উপমা পেশ করা যাবে, যার সরাসরি কোন সমাধান কুরআন ও হাদীসে নেই। কিংবা অনেক স্থানেই বাহ্যিক বিরোধপূর্ণ।

তাই মাযহাব মানা ছাড়া সাধারণ মুসলমানদের কোন গত্যান্তর নেই। অন্তত দুই রাকাত ও পূর্ণ করে পড়ার জন্য প্রতিটি মুসলমান মাযহাবের প্রতি মুখাপেক্ষী।

তাই যেহেতু মাযহাব ছাড়া দুই রাকাত নামাযও পড়া যায় না, পূর্ণ দ্বীন মানাতো বহু দূরের কথা, তাই গায়রে মুজতাহিদ ব্যক্তিদের জন্য মাযহাব মানা ওয়াজিব।

আপনার মনে উক্ত প্রশ্নটি আসার মূল কারণ হল, “মাযহাব” শব্দটি আপনি কুরআনে খুঁজে পাচ্ছেন না। তা’ই মনে হচ্ছে উক্ত বিষয়টি কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

কোন শব্দটি কুরআনে না থাকা মানে উক্ত বিষয়টি কুরআন দ্বারা প্রমাণিত নয়, বলা বাচ্চাসূলভ কথা হবে। এমন যুক্তি কোন আকলমন্দ ব্যক্তি দিতেই পারে না। কারণ অনেক বিষয় আছে, আমাদের সমাজে প্রচলিত শব্দ। কিন্তু তার হুবহু শব্দটি কুরআন বা হাদীসে নেই। কিন্তু এর অর্থবোধক বিষয় কুরআন ও হাদীসে আছে।

তো যে বিষয়টির শব্দ না থাকলেও তার অর্থ কুরআন ও হাদীসে থাকার মানেই হল, উক্ত বিষয়টি কুরআন ও হাদীসে আছে। যদিও হুবহু শব্দ না থাকুক।

যেমন, মুসলমানদের কাছে একটি প্রচালিত ও স্বতসিদ্ধ একটি শব্দ হল “তাওহীদ”। যা না থাকলে কোন ব্যক্তি মুসলমানই হতে পারে না। কিন্তু কুরআনের কোথাও “তাওহীদ” শব্দটি নেই। এর মানে কি আপনি বলবেন কুরআন দ্বারা তাওহীদ প্রমাণিত নয়? [নাউজুবিল্লাহ]

হুবহু শব্দ না থাকা মানেই উক্ত বিষয়ের অস্তিত্ব অস্বিকার করা মুর্খতা বৈ কিছু নয়। কুরআনে কারীমে আল্লাহর একাত্ববাদ সম্পর্কিত সকল আয়াতই তাওহীদ বিষয়ক। হুবহু শব্দ না থাকুক।

মাযহাব বিষয়ে আরো পরিস্কার ধারণা পেতে হলে পড়ুন-http://ahlehaqmedia.com/3002-4/

মাযহাব কোনটি অনুসরণ করবো?

এর উত্তরও আমরা পবিত্র কুরআনে পরিস্কার ভাষায় দেখতে পাই-

ইরশাদ হচ্ছেঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ [٤:٥٩]

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর,নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং “তোমাদের মধ্যে” যারা জ্ঞানী ও প্রাজ্ঞ তাদের। [সূরা নিসা-৫৯]

উক্ত আয়াতে খেয়াল করুন। আল্লাহ তাআলা ও রাসূল সাঃ এর অনুসরণের নির্দেশের পরেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে “উলিল আমর” তথা বিচারক বা জ্ঞানী প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের অনুসরণ করতে।

আল্লাহ ও নবীজী সাঃ এর বিধান বিশেষজ্ঞ জ্ঞানীদের বলা হয় মুজতাহিদ।

এখন প্রশ্ন হল, সারা বিশ্বে অসংখ্য মুজতাহিদ থাকতে পারে। ব্যক্তি কোন মুজতাহিদের অনুসরণ করবে?

আল্লাহ তাআলা এ প্রশ্নের সমাধান জানিয়ে দিয়েছেন আয়াতের “মিনকুম” শব্দ দ্বারা। এর অর্থ হল, তোমাদের মাঝের” তথা তোমাদের মাঝে, তোমাদের সমাজের, তোমাদের এলাকার যিনি মুজতাহিদ হবেন, তোমরা তার অনুসরণ করো। দূরের মুজতাহিদের অনুসরণের কথা বলেননি। অর্থাৎ যার থেকে ফায়দা হাসিল করা সম্ভব নয়, তাদের পিছনে ছুটতে বলা হয়নি। বরং যে মুজতাহিদের ইজতিহাদ পাওয়া যায়, সহজলভ্য, যে মুজতাহিদ নিজেদের এলাকায় থাকেন, সেই মুজতাহিদের অনুসরণ করার কথা পবিত্র কুরআনে পরিস্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়ে আমাদের জন্য বিষয়টি সহজ করে দিয়েছেন।

এবার আমরা দেখি এ উপমহাদেশে কোন মুজতাহিদের ইজতিহাদ অনুপাতে ইসলাম আসার পর থেকে ইসলামের যাবতীয় মাসায়েল এসেছে?

নিশ্চয় হানাফী মাযহাবের।

যেদিন থেকে এ উপমহাদেশে ইসলাম নামক জান্নাতী ধর্ম প্রবেশ করেছে, সেদিন ইসলামের সাথে সাথে ইসলামের যেসব বিধানাবলী প্রবেশ করেছে, তা সবই হানাফী মাযহাবের ইমামের ইজতিহাদ অনুপাতে সুবিন্যস্ত কুরআন ও হাদীসের বিধানাবলী।

এ কারণে এ উপমহাদেশের মানুষ মাসায়েল নামায, রোযা, অজু, গোসল ইত্যাদি যাবতীয় মাসায়েলের সুনির্দিষ্ট মাসায়েলগুলো, ওয়াজিব, সুন্নাত, ভঙ্গের কারণ, মাকরূহাত ইত্যাদি সবই হানাফী মাযহাব অনুপাতেই জেনে আমল করে আসছে। এ উপমহাদেশে এ বিষয়ক অসংখ্য গবেষণাগার মাদরাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কুরআন ও হাদীসের সহীহ ব্যাখ্যা নির্ভর এ মাযহাব অনুসারী অসংখ্য শাইখুল হাদীস, মুহাদ্দিস, মুফতী, মুফাককিরে ইসলাম জন্ম নিয়েছেন। তারা আরো সুবিন্যস্তভাবে এ মাসায়েলগুলোকে মানুষর সামনে তুলে ধরেছেন। এখন একজন মানুষ ইচ্ছে করলেই দ্বীনের যেকোন মাসআলা সুনির্দিষ্ট হুকুমসহকারে আলেম উলামাদের কাছ থেকে জেনে আমল করতে পারে।

কিন্তু এ উপমহাদেশের কোথাও শাফেয়ী, হাম্বলী, মালেকী মাযহাবের মাদরাসা দেখা যায় না। দেখা যায় না, এসব মাযহাব বিশেষজ্ঞ শাইখুল হাদীস, মুফতীয়ানে কেরাম। দেখা যায় না ব্যাপক আকারে তাদের কোন কিতাব।

ফলে এ উপমহাদেশে কোন ব্যক্তি অন্য মাযহাব মানতে চাইলে, তার পক্ষে সেই মাযহাব অনুপাতে সকল মাসায়েল জানতে পারা সম্ভব নয়। কারণ না বিশেষজ্ঞ খুঁজে পাবে। না পর্যাপ্ত কিতাব।

এ কারণে সহজ সমাধান হল, যে এলাকায় যে মুজতাহিদের ইজতিহাদ অনুপাতে কুরআন ও হাদীসের মাসায়েল ইসলাম আসার পর থেকে আমলী সূত্রে এসেছে, উক্ত এলাকায় উক্ত মাযহাব অনুপাতেই ইসলামী শরীয়ত পালন করবে। তাহলে আর কোন ফিতনা ও বিভ্রান্তি থাকবে না।

এদিকেই আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়ে সুরা নিসার ৫৯ নাম্বার আয়াতে বলেছেন “মিনকুম” তথা তোমাদের মাঝের বিশেষজ্ঞকে অনুসরণ কর।

তাই উপমহাদেশে হানাফী মাযহাব, শ্রীলংকাতে শাফেয়ী মাযহাব, ও মক্কায় হাম্বলী ও মদীনার লোকেরা মালেকী মাযহাব অনুসরণ করে থাকে। এভাবে যে এলাকায় যে মাযহাবের অনুসারীরা দ্বীন এনেছে ও কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক মাযহাবের আমল জারী হয়েছে, উক্ত এলাকায় সেই মাযহাবই মানবে। তাহলে আর কোন বিভ্রান্তি থাকবে না।

আল্লাহ তাআলা আপনাকে আমাকেসহ সকলকে সহীহ দ্বীনের উপর চলার তৌফিক দান করুন।

১৩| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৫২

হবা পাগলা বলেছেন: সুন্দর পোস্টের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ব্লগে আমি নতুন। আমার ব্লগটা একটু ঘুরে আসার নিমন্ত্রণ রইলো।

২৭ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৭

আবু ছােলহ বলেছেন:



আপনাকে স্বাগত। ব্লগ ঘুরে এসেছি। অাবার সময় যাওয়ার ইচ্ছে থাকলো।

আপনার সুন্দর সময় কাটুক এখানে।

১৪| ২৭ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর বিষয় নিয়ে লিখেছেন।

ধন্যবাদ।

২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৩

আবু ছােলহ বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহু আহসানাল জাজা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.