নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি বাংলাদেশ...

আবু জুবায়ের মোঃ মিরাতিল্লাহ

লেখালিখি করার চেষ্টা করি।হয় কিনা জানিনা।

আবু জুবায়ের মোঃ মিরাতিল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামী অক্টোপাসের থাবায় বাংলাদেশ / আবু জুবায়ের

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৪০

আওয়ামী অক্টোপাসের থাবায় বাংলাদেশ / আবু জুবায়ের


সব কিছুর একটা প্রাকৃতিক নিয়ম আছে । মানুষের জীবন প্রবাহ থেকে শুরু করে সব খেলা ধুলাতেও নিয়ম পালন করা হয় । সৃষ্টিকর্তা সব কিছু এমনভাবে আবর্তন সৃষ্টি করে রেখেছেন যে এর কোন ব্যত্যয় ঘটলেই সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাবে। বিপর্যয় তৈরি হবে। প্রকৃতিতেও অনেক ধরনের বিপর্যয় হয় যখন প্রকৃতি স্ব নিয়ম ভঙ্গ করতে থাকে। বাংলাদেশে রাজনীতি তাঁর আপন পথে না থাকার কারণে নানা ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্র অনেক আগে থেকেই মর্চুয়ারিতে । এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে অক্টোপাসের মত অগণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ জনগণের সকল অধিকার রহিত করে ফেলেছে। মিথ্যা কথার ফুলঝুরি খুব সাধারণ একটা বিষয় । জনগণের আবেগ এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে উন্মাতাল খেলা খেলছে তা অফুরন্ত বলে মনে হচ্ছে । সরকারের পতনের জন্য কোন ইস্যুর অভাব না হলেও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সরকার হটানোর প্রেরণা না থাকার কারণে কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না । এর পিছনে অনেক গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করা হয়েছে তাঁর মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে সুনির্দিষ্ট সীমারেখায় রেখে দেওয়া, গণমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ, জনগণকে নানাভাবে বিপদে ফেলে রেখে দেওয়া , সৃজনশীল রাজনীতির পথকে রহিত করে রাখা, ভারতের কাছে নিজেদের পররাষ্ট্রনীতি সমর্পিত করে রাখা, দেশকে পুলিশ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন হয় না সরকারে টিকে থাকার জন্য ভিন্ন পথ অবলম্বন করা। কিন্তু অগণতান্ত্রিক সরকারের প্রয়োজন নানা ধরনের রাজনৈতিক ফন্দি ফিকির রচনা করে ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা। আমরা বিপর্যয়ে পড়েছি সেটা বুঝতে পারছি কিন্তু কিছুই করতে পারছি না । সবাই হতাশ হচ্ছে । সবাই কোন বিপর্যয়ের জন্য অপেক্ষায় আছে । ঝড় আসুক , জলোচ্ছ্বাসে ভরে যাক , বড় ভূমিকম্প হোক। কেউ ব্যাকরণ চাইছে না , কারণ রাজনীতিতে তো ব্যাকরণ নেই । জনগণের মধ্যে এক ধরনের অশরীরী আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে । তাঁরা মনে করছে কোন দিক থেকে কিছু একটা হবে । তাদের প্রত্যাশা রাজনীতিতে বড় ঝড় আসুক। লন্ড ভণ্ড করে দিক রাজনৈতিক অনাচার।
আওয়ামী পন্থী বুদ্ধিজীবীরা মাঝে মাঝে আবার রাজনৈতিক ব্যাকরণ মেনে জনগণকে বোকা বানায়।

গত ৯ জুলাই ২০১৭, রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্সটিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আই ক্ল্যাডস)-এর উদ্যোগে ‘রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় । এখানকার আলোচকদের মধ্যে সবাই আওয়ামী লীগের গৃহপালিত বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়। সেখানে ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজনৈতিক ব্যাকরণ দারুণভাবে অনুপস্থিত। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে এই ব্যাকরণ যদি মানা হতো তাহলে একটি সফল নির্বাচন হতো। তাই আগামীতে কাঙ্ক্ষিত মানের নির্বাচনের কোনও বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। তবে এর পূর্বশর্ত হলো- সরকারের ভূমিকা ইতিবাচক হতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকাও ইতিবাচক হতে হবে। অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে সংবিধান অনুযায়ী। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা শক্তিশালী হতে হবে। নাগরিক সমাজের ভূমিকা থাকতে হবে। সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বাইরে রাখতে হবে। সরকার-পন্থি কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় না রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

এই সমস্ত কথাবার্তার সব কিছু ঠিক আছে । তাঁরা সব কথায় বলবে । কিন্তু বলাটা যাতে আখেরে আওয়ামী লীগের বিপরীতে না যায় সেটাও খেয়াল রাখবে। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে আবুল মনসুর আহমদ ‘রাজনৈতিক ব্যাকরণ’ লিখেছিলেন, ‘মনুষ্য জাতি যে আচরণের দ্বারা রাজদরবারে নীত হয় এবং তথায় গোপাল ভাঁড়ের মতো সাফল্যের সঙ্গে মনের ভাব গোপন রাখিয়া রাজা-প্রজা উভয়পক্ষকে ফাঁকি দিতে পারে তাকে রাজনীতি বলা হয়।’ আওয়ামী লীগের পোষা কবুতরেরা নিজেদের নামটা ফোকাসে আনার জন্য হরলাল রায়ের ব্যাকরণ মাফিক কথা বার্তা বলেন । যেই আওয়ামী লীগের পরিস্থিতি উলটে যেতে পারে সে অবস্থায় সূর পালতে ফেলে আর বলতে থাকে , দেশে স্বাধীনতার পক্ষের সরকার প্রয়োজন , এক সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন , দেশ স্বাধীন করেছে মুজিব তাঁর মেয়েই আজীবন ক্ষমতায় থাকবে , আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তারমানে হল ইনিয়ে বিনিয়ে যে যাই বলুক না কেনো দিনের শেষে সব বাকশালী।
আওয়ামী কলামিস্ট ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে শাখা উদীচীর এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন , বাংলাদেশের সকল সমস্যার উৎস হচ্ছে সেনাবাহিনী। বঙ্গবন্ধু, ৪ নেতা সহ দেশের সেরা সন্তানদের হত্যা করেছে ওরাই। এরাই এখন চক্রান্ত করছে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনাকে শেষ করার। এজন্য বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া মুক্তির পথ নেই।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেন, বর্তমান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের নয়। ওরা ভাড়াটে পাকিস্তানী। ৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে। আর এবার যুদ্ধ করতে হবে পাকিস্তানী দাসদের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, এই সেনাবাহিনী প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। বাংলাদেশের জাতীয় নেতা ছাড়াও উদীচী ও রমনা বটমূল বোমা হামলার নেপথ্য নায়ক হচ্ছে তারা। এজন্য এদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া জাতি মুক্তি পাবেনা। ( বাংলা রিপোর্ট পত্রিকায় প্রকাশিত) ।
১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ কলকাতা কনফারেন্স ২০০৯ নামে কলকাতার সুবাস ইন্সটিটিউটে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের ৪র্থ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির প্রযোজিত ডকুমেন্টারি মানুষ না মালাউন? ডকুমেন্টারির ধারা বিবরণীতে বলা হয় বাংলাদেশে সংঘটিত সকল নির্যাতন নিপীড়নের জন্য দায়ী হচ্ছে, বর্বর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সেনাবাহিনী ও এর গোয়েন্দা সংস্থা। ইসলাম ও সেনাবাহিনীকে উৎখাত করতে না পারলে এ সংকটের সমাধান হবে না। বাংলাদেশে এত জায়গা থাকতে কলকাতায় গিয়ে কনফারেন্স করতে হয় এদের। কে এর বিশ্লেষণ করবে এই সমস্ত রাজনৈতিক ব্যাকরণ।

২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ২০ দলীয় জোট নেতা ও জাগপা সভাপতি মরহুম শফিউল আলম প্রধান বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী দেখতে চায়নি। এই কারণেই দিল্লির নীলনকশায় স্বাধীনতার পরপরই আর্মির বিকল্প রক্ষীবাহিনী গঠন করা হয়। আর একদলীয় বাকশাল কায়েম করে কারা গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে দেশবাসী তা জানে। ইতিহাস সাক্ষী ’৭৫-এর ৭ নভেম্বরের পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার নেতৃত্বে রক্ষীবাহিনী বিলুপ্ত করে আধুনিক সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন শুরু হয়। তিনি আরো বলেছিলেন আফসোস আবারো আওয়ামী শাসনে পিলখানায় নির্মম সেনা হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আর্মির মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার চেষ্টা চলে। জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবকে সমর্থন করে তিনি বলেন, যারা এর বিরোধিতা করে তারা ভারতের দালাল। নিজ দেশের নির্বাচনে দেশপ্রেমিক সৈনিকদের ভূমিকা পালনে বাধা কোথায়? এই নেতার কথায় প্রমাণ পাওয়া যায় যখন সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন
কলকাতার ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফকে দেওয়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন আমাদের এখানে সুশীল সমাজের একটি অংশ ক্ষমতা চায়। কিন্তু তাদের কেউ কখনও নির্বাচনে জিততে পারেনি। যেহেতু একমাত্র সেনা সমর্থনেই তাদের ক্ষমতায় আসার পথ তৈরি হতে পারে, সেহেতু তারা সামরিক হস্তক্ষেপের কথা বলে। তবে আমি আপনাকে বলে দিতে পারি, বাংলাদেশের মানুষ এটা মানবে না। আমাদের সরকার এতটাই সাফল্য দেখিয়েছে যে, মানুষ একটি নির্বাচিত ও বৈধ সরকারের ওপরে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না, যে সরকার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি আপনাকে একটি অভ্যুত্থানের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোও খুঁজে দেখতে হবে। এ মুহূর্তে এমন কোনো জেনারেল বা সেনা কর্মকর্তা নেই, যার অভ্যুত্থানের খায়েশ থাকতে পারে। একটি অভ্যুত্থান সফল করতে হলে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য আগে শেখ হাসিনার নাগাল পেতে হবে। কিন্তু যারা তার বাড়ির (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবন) নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, তারা সবাই শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত। তারা কাউকে সুযোগ দেবে না। তা ছাড়া সামরিক অভ্যুত্থানে বিপুল রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে। সেনাবাহিনী সেই ঝুঁকি নেবে বলে আমি মনে করি না। আর শেখ হাসিনা তেমন কোনো ঘটনায় ক্ষমতা ছাড়বেন না।
এর আগে সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর লেখা একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর শতকরা ৩৫ ভাগ সদস্য জঙ্গি। তিনি বলেছিলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সব নির্মূল করা হবে । ঠিক এরপর ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের জনগন বিডিআর হত্যাকান্ড দেখেন। সেনাবাহিনীকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য রাখলেও সেনাবাহিনী এতটাই মৌন থেকেছে যে মনে হয়েছে তাঁরা হয়তো জয়ের প্রবন্ধকে মেনে নিয়েছে। যদি তাই হয় তাহলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব মিলিয়ে দুই লক্ষ সেনা সদস্য থাকে তাহলে দেশে কেবল মাত্র সেনাবাহিনীর মধ্যেই ৭০ হাজার জঙ্গী রয়েছে। এই সব ব্যাকরণ মিলানো কঠিন ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

"সরকারের পতনের জন্য কোন ইস্যুর অভাব না হলেও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সরকার হটানোর প্রেরণা না থাকার কারণে কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না । "

-মানুষ আওয়ামী লীগকে সরাতে ভয় পাচ্ছে, শেষে আপনাদের মত কিছু চলে এলে কি হবে? বাঘ তাড়াতে গিয়ে হায়েনার হাতে কেহ পড়তে চাচ্ছে না।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৮

ফয়েজ উল্লাহ রবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন কিন্তু তাল গাছ আমার!

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৪

এম আর তালুকদার বলেছেন: লেখায় সত৽তা বিদ৽মান।তবুও জাতি নিরুপায়...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.