নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু জাকারিয়া

আমি খুব স্বাধারন মানুষ। স্বাধারনদের থেকেও স্বাধারন। জীবনে জাঁকজমক পছন্দ করিনা। স্বাধারন ভাবে বাঁচতে চাই। সব চেঁয়ে অপছন্দের কারো অধিনে থাকা। \nউক্তিঃ পরাধীনতার চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল, মৃত্যুযন্ত্রনার থেকে পরাধীনতা অনেক ভাল। [email protected]

আবু জাকারিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষকের উপর হামলাকারীদের বিচার চাই!!

১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮

তখন ক্লাস এইটে পড়তাম। বিজ্ঞানের স্যার আমাদের ব্যাকটেরিয়া বিষয়ে পড়ালেন আর পরের দিন ব্যাকটেরিয়া বিষয়ে পড়া না পারলে পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে দেবেন। তাই আমরা সবাই খুব বেশি পড়াশুনা করলাম। ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে বুঝে না বুঝে টানা মুখস্ত করলাম সব কিছু। যাতে ক্লাসে বিজ্ঞান স্যারের মার না খেতে হয়।
আমাদের এক সহপাঠী জালানা দিয়ে বিজ্ঞান স্যারকে আসতে দেখল। তখন সবাই ক্লাসে বসে হইহুল্লোড আর চেঁচামিচি করছিল। সহপাঠী বলল, সবাই থাম আমাদের ব্যাকটেরিয়া স্যার আসতেছে। আমরা সবাই চুপ করে গেলাম। ভয়ে সবার বুক ধরফর করছিল। পড়া না পারলে স্যার আমাদের পিটিয়ে ছাল তুলে ফেলবে।
এমন সময় কেউ একজন স্যারের কাছে নালিশ করে বসল, স্যার আপনাকে ব্যাকটেরিয়া স্যার বলেছে।

তখন স্যার ভিষন রেগে গিয়ে সেই সহপাঠীকে প্রচুর পেটালেন। পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে দিয়েছিলেন। এমন মার আমার জীবনে আমি কমই দেখেছি। মার খাওয়ার পর সেই সহপাঠীর গায়ে জ্বর চলে এসেছিল। সেই থেকে স্যারকে আমরা মারাত্বক ভয় পেতাম। সাবধানে থাকতাম সব সময় যাতে কোন অপরাধ না হয়ে যায় কোন কিছুতে।

সেই সহপাঠীরর অপরাধ ছিল, বিজ্ঞান স্যারকে ব্যাকটেরিয়া স্যার বলেছে।
আমরা জানি, কোন স্যার জীব বিজ্ঞানের ক্লাস নিলে তাকে জীববিজ্ঞান স্যার বলা হয়। বাংলা ক্লাস নিলে তাকে বাংলা স্যার বলা হয়। কিন্তু কোন স্যার ব্যাকটেরিয়ার ক্লাস নিলে তাকে ব্যাকটেরিয়া স্যার বললে গুরুতর অপরাধ হয়, সেইবার প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম। আসলে ব্যাকটেরিয়া স্যার বলতে যা বুঝায়, ব্যাকটেরিয়ার শিক্ষক। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া শিক্ষক বলা কিংবা ব্যাকটেরিয়া স্যার বলা সম্ভবত একটা বিচ্ছিরি গালাগালি। সহপাঠীকে মারতে দেখে তাই মনে হচ্ছিল। যাই হোক সেই স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালবাসা রইল। আমরা তার হাত ধরেই শিক্ষা জীবনের এতগুলো বছর সাফল্যের সাথে পারি দিতে পেরেছি।

এবার আসি মুল প্রসংগে।
শিক্ষাকে বলা হয় জাতীর মেরুদণ্ড। আর এই মেরুদণ্ড তৈরির কাজ করেন শিক্ষকেরা। কিন্তু যারা মেরুদণ্ড তৈরি করেন, তাদেরই যদি মেরুদণ্ড ভেংগে দেওয়া হয়!
সরকারী পিসি কলেজ বাগেরহাট। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের শিক্ষক সাহ আলম স্যার। কোন একটা বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক কোন এক নেতার সাথে ছোট খাঁট তর্ক হয় তার, যতদুর জানতে পারি। কিন্তু এই ছোট খাট তর্কে যে তাকে আক্রমনের শিকার হতে হবে, কে জানত! আমি জানিনা, স্যার কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত কিনা। তবে যুক্ত থাকাটা অসম্ভব নয়। হয়ত কোন না কোন দল সাপোর্ট করেন তিনি। হয়ত প্রত্যক্ষভাবে করেন না। সে রকমভাবে করলে অবশ্যই জানতাম।
যারা স্যারকে আক্রমন করেছে, তারা ওই কলেজেরই ছাত্র নামের কিছু বেয়াদব। যতদুর শুনেছি তারা ছাত্রলীগ করে। ছাত্রলীগ করুক আর অন্য কোন কিছু করুক, এটা বড় কথা নয়। বড় কথা, তারা একটি জঘন্য অপরাধ করেছে, যার ঘৃনা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই। স্যারের উপর আক্রমন করে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে, আনন্দ ফুর্তি করছে। তারা স্যারদের সামনে সামনে বুক ফুলিয়ে হাটছে। তাদের আজও কোন বিচার হয়নি, আর হবে কিনা সন্দেহ। স্যার অনেক দিন খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসা দিন ছিলেন। এখনও সে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেন নি।
এই যদি হয় আমাদের দেশের অবস্থা, তাহলে জাতীর মেরুদন্ড তৈরী হবে কিভাবে?
অনেক দিন হয়ে গেছে কোন বিচার হয়নি ওইসব ছাত্র নামের অছাত্রদের। তারপরেও এতদিনের মাথায় এসে আবার বিচার চাইছি। বিচার চাইব.. যতদিন বিচার না পাব..

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১১

আব্বাস বলেছেন: ছাত্র রাজনীতির কুফল। উচণ্ডামি এখন আমাদের সমাজে পূজনীয় হয়েছে, অসুস্থ সমাজ, রাজনীতির কবলে তাই আমরা এভাবেই মার খেতে থাকব। দেশে একটা তীব্র ঝাঁকুনি দরকার।

২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৬

আবু জাকারিয়া বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই। মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.