নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু জাকারিয়া

আমি খুব স্বাধারন মানুষ। স্বাধারনদের থেকেও স্বাধারন। জীবনে জাঁকজমক পছন্দ করিনা। স্বাধারন ভাবে বাঁচতে চাই। সব চেঁয়ে অপছন্দের কারো অধিনে থাকা। \nউক্তিঃ পরাধীনতার চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল, মৃত্যুযন্ত্রনার থেকে পরাধীনতা অনেক ভাল। [email protected]

আবু জাকারিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

পথশিশুঃ দয়া নয়, ফিরিয়ে দিতে হবে প্রপ্য অধিকার /// This is our society and it is our মানবতা...!

২০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:০৬

আমাদের দেশের শহরের রাস্তায় রাস্তায় অনেক পথ শিশুকে দেখা যায়। তারা মানবেতর জীবনযাপন করে। কেউ যদি এমন একটি শিশুর সাথে মন খুলে কথা বলেন, জানতে পারবেন এদের জীবনের করুন ইতিহাস।
একটু চোঁখ খুলে তাকিয়ে দেখবেন, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রাস্তায় রাস্তায় রোদে পুড়ে হকারি করছে; কেউ ফেলে দেয়া পুরানো জিনিসপত্র কুড়াচ্ছে, কেউ অল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে দিন রাত পরিশ্রম করছে আবার কেউবা ভিক্ষা করছে।

আমাদের সমাজ এদের কেমন দৃষ্টিতে দেখছে?
খুব সাধারন প্রশ্ন আর উত্তরও খুব স্বাধারন। সবাই বলবে, যারা রাস্তায় রাস্তায় হকারী করে বেড়ায় তারা হকার, যারা ফেলে দেয়া পুরানো জিনিস কুড়িয়ে নেয় তারা টোকাই, যারা টাকার বিনিময়ে পরিশ্রম করে তারা দিন মজুর আর যারা ভিক্ষা করে তারা ভিক্ষুক। এভাবে এসব পথ শিশুদের চিহ্নিত করা হয়।
কিন্তু এদের সবচেয়ে গুরুরপূর্ন একটা পরিচয় আছে তা আমরা প্রায়ই ভূলে যাই। আর তা হল এরা সবাই শিশু। এসব শিশুদের আর দশটা শিশুর মত বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আর দশটা শিশুর মতই আনন্দে বেড়ে ওঠার অধিকার আছে। আছে শিক্ষার অধিকার। কিন্তু সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। না পাচ্ছে আনন্দে বেড়ে ওঠার অধিকার; না পাচ্ছে শিক্ষার অধিকার। আমাদের সমাজ তাদের এসব প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।

বলা হয়ে থাকে শিশুরা ফুলের মত, তাদের মনও ফুলের মত পবিত্র আর নিষ্পাপ। ছোট বেলায় মানুষকে বলতে শুনতাম, ছোট ছেলেমেদের সাথে নাকি অনেক ফেরেস্তা থাকে। নিষ্পাপ হওয়ার কারনে ফেরেস্তারা তাদের সাথে থাকে সব সময় আর বিপদ আপদ থেকে মুক্ত রাখে। ছোট বেলায় এমন কথা যখন শুনতাম, তখন ফেরেস্তাদের দেখতে ইচ্ছা করত। কিন্তু সবাই বলত ফেরেস্তাদের দেখা যায় না, তারা অদৃশ্য হয়ে থাকে সব সময়।
মুসলমান হিসিবে আমিও এই কথাটা বিশ্বাস করি যে ফেরেস্তাদের দেখা যায় না আর শিশুরা নিষ্পাপ হওয়ার কারনে তাদের সাথে থাকে।
তাই যদি হয়; নিশ্চয়ই পথ শিশুদের সাথেও অনেক ফেতেস্তা থাকে কারন ওরাওতো নিষ্পাপ।

সেদিন রাস্তায় দেখলাম অনেকগুলো প্রাইভেট কার রাস্তায় জ্যামে আটকে আছে। জ্যাম কখন ছাড়বে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই সবাই ধৈর্য্য অধৈর্যের মধ্যে অপেক্ষা করছে।
নতুন আর চক চকে কারে করে ছোট ছোট ছেলেমেরা স্কুলে যাচ্ছে। কষ্ট কাকে বলে হয়ত ওরা বুঝতে শেখেনি আর তা শেখার বয়সও এটা নয়।

অপর দিকে আরেকদল শিশু আছে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। কেউ হকারী করছে, কেউ ফেলে দেয়া পুরানো জিনিস কুড়াচ্ছে, কেউ দিন মজুর খাটছে আবার কেউ ভিক্ষা করছে। শিক্ষার আর আনন্দ কি জিনিস ওরা তা বোঝেনা। বুঝবে কিভাবে, যেখানে বেঁচে থাকাই কষ্টকর সেখানে আবার আনন্দে বেড়ে ওঠা আর শিক্ষিত হওয়া!!!
একই সমাজের দুইটা বিপরীত দিক। এক দল শিশু তাদের অধিকার পাচ্ছে আরেক দল শিশু তাদের প্রপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর জন্য আমি, আমরা, সবাই দায়ী।

কারো যদি গায়ে পড়ে করার কিছুই নেই। আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন তারা এসব শিশুদের দয়া দেখান। ঈদ কোরবানী বা বিশেষ দিন আসলে দুই টাকা দান করে আর দুই টাকা দামের পোশাক কিনে দিয়ে মহা মানবতা দেখান! তাতে তারা সাময়ীক আনন্দ পাবে ঠিক, কিন্তু এই দয়ার বিনিময়ে তাদের অবস্থানের কি কোন পরিবর্তন ঘটবে?
আর আমাদের সমাজের ছোট ছোট পথ শিশুরা কি দয়ার পাত্র!?
ওরা আমাদের সমাজে মোটেও দয়ার পাত্র নয়। ওদের ও আত্মসম্মান বোধ আছে, আছে সমাজের প্রতি তাদের মৌলিক অধিকার। সে মৌলিক আমাদের সমাজ তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না। বরং দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে, দুইটাকা আর দুইটাকা দামের পোশাক দিয়ে তাদের আত্মসম্মান বোধে হানা দিচ্ছে। শুধু মাত্র ওদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে আমাদের সমাজ ওদের ছোট করে দেখছে।

আপনি যদি সত্যি সত্যি ওদের কথা ভেবে থাকেন তাহলে সবার আগে ওদের প্রাপ্য অধিকারগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। প্লিজ ওদের দয়া করবেন না, শুধু মাত্র ওদের অধিকার ফিরিয়ে দিন আর ওদের পক্ষে কথা বলুন। আপনার একটা কথা পুরো সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে পারে।
আর কিভাবে তাদের আর দশটা স্বাভাবিক শিশুর মত বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয়া যায়, ভাবুন। আপনার সামান্য ভাবনায় সমাজে আসতে পারে অনেক বড় ইতিবাচক পরিবর্তন।

সমাজে ওদের শিক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে, আনন্দে বেড়ে ওঠার অধিকার আছে। ওদের অধিকারগুলো ফিরিয়ে দিতে কাজ করুন।
আপনার ছোট একটা কাজের মাধ্যমে এসব পথ শিশুরা অনেক দুরে এগিয়ে যেতে পারবে...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

বাংলার জমিদার রিফাত বলেছেন: ha

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:২৪

আবু জাকারিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.